Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ৩১ বৈশাখ ১৪৩১, ০৫ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় ঐক্যের ডাক দিলেন বি. চৌধুরী ও ড. কামাল

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৪ আগস্ট, ২০১৭, ৩:৫২ পিএম

বৃহত্তম একটি রাজনৈতিক শক্তির উত্থান ঘটানোর প্রয়োজনে আবারও জাতীয় ঐক্যের ডাক দিলেন সাবেক রাষ্ট্রপতি ও বিকল্পধারার সভাপতি অধ্যাপক এ.কিউ.এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী (বি. চৌধুরী) ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন। বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে দেওয়া এক যৌথ ঘোষণায় তারা এই ঐক্যের ডাক দেন। বি. চৌধুরীর প্রেস সেক্রেটারি জাহাঙ্গীর আলম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ ঘোষণা দেওয়া হয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘আমরা তো দীর্ঘদিন ধরেই একটি জাতীয় ঐক্যের কথা বলে এসেছি। এটি আজকে যৌথভাবে দিলাম। আর এটি একেবারেই প্রাথমিক আহ্বান, সবাই আমাদের ডাকে আশা করি সাড়া দেবে।’

যৌথ ঘোষণায় বাংলাদেশের স্বাধীনতার পটভূমি ব্যাখ্যা করে বলা হয় ১৯৭১ সালে ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী সংগ্রামে মুক্তিকামী জনতার আত্মত্যাগের বিনিময়ে বাংলাদেশের জনগণ জাতীয় স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে। ত্রিশ লাখ শহীদের রক্তে লেখা সংবিধান বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আইন। সংবিধানে স্পষ্ট ভাষায় ঘোষণা করা হয়েছে যে, ‘‘প্রজাতন্ত্রের সকল ক্ষমতার মালিক জনগণ’।

এতে বলা হয়, ‘জনগণ সে ক্ষমতা প্রয়োগ করবে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মাধ্যমে। জনগণের ভোটে নির্বাচিত প্রতিনিধিগণ সংবিধানের আলোকে জনগণের মৌলিক চাহিদা, ন্যায্য অধিকার ও আশা-আকাঙ্ক্ষাগুলো বাস্তবায়নের লক্ষ্যে জনগণের পক্ষে জনগণের ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করবে। স্বাধীনতার লক্ষ্য, চেতনা ও মূল্যবোধকে অবহেলা করা হলে কিংবা জনগণের অধিকারগুলো বাস্তবায়িত না হলে বুঝতে হবে জনগণ ক্ষমতার মালিকানা হারাতে বসেছে। এ পরিস্থিতিতে জনগণের ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে একটি অহিংস বিকল্প রাজনৈতিক ধারা গড়ে তোলা সময়ের দাবি।’

ঐক্যবদ্ধ জনগণকে একটি মহাশক্তি উল্লেখ করে যৌথ ঘোষণায় এই দুই বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ আরও বলেন, ‘জনগণের ঐক্যবদ্ধ শক্তির কাছে পৃথিবীতে অনেককেই মাথা নত করতে দেখেছি। ’৫২ থেকে ‘৯০—এর বিভিন্ন গণআন্দোলনে এবং ’৭১-এর স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ জনগণ বিজয় ছিনিয়ে এনেছে। ভবিষ্যতেও বাংলাদেশের জনগণকে রাষ্ট্র ও সমাজ ব্যবস্থার অর্থবহ পরিবর্তনের জন্য ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।’

যৌথ ঘোষণায় তারা আরও বলেন, ‘আগামী সংসদ নির্বাচনে সব রাজনৈতিক দল ও ব্যক্তির অংশগ্রহণ এবং অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সুনিশ্চিত করার লক্ষ্যে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন, নির্বাচনী আইন ও নির্বাচন ব্যবস্থার দাবিতে এবং দারিদ্রমুক্ত, দুর্নীতিমুক্ত এবং সন্ত্রাসমুক্ত একটি সুখী ও সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোর পাশাপাশি ছাত্র সমাজ, শিক্ষিত ও সুধীজন, আইনজ্ঞ, চিকিৎসক, শিক্ষক, মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবার, ব্যবসায়ী, শ্রমিক, কৃষক, সাবেক সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তা, কর্মচারী ও অন্যান্য পেশাজীবী মানুষের সমন্বয়ে বৃহত্তম একটি রাজনৈতিক শক্তির উত্থান ঘটাতে হবে।’

দেশের এই শীর্ষ দুই রাজনীতিবিদ আরও বলেন, ‘দেশকে যারা ভালবাসেন, যারা দেশের মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বে বিশ্বাসী তাদেরকে একটি প্রগতিশীল, পাহাড় ও সমতলের মানুষসহ সব সম্প্রদায়ের পূর্ণ অধিকারসম্পন্ন একটি বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।’

উল্লেখ্য, এর আগে ২০১২ সালে একটি হোটেলে এবং পরবর্তী সময়ে প্রেসক্লাবে আয়োজিত অনুষ্ঠানেও ড. কামাল হোসেন ও বি. চৌধুরী জাতীয় ঐক্যের আহ্বান জানিয়েছিলেন। তাদের ওই আহ্বানে খুব একটা সাড়া মেলেনি। যদিও ইতোমধ্যে নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নাকে সমন্বয়ক করে একটি প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এই প্রক্রিয়ায় বি চৌধুরীর বিকল্প ধারা, ড. কামাল হোসেনের গণফোরাম, আসম রবের জেএসডি ও নাগরিক ঐক্য আছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ