পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে জলবায়ু অর্থায়ন তহবিল থেকে বাস্তবায়িত প্রকল্পে চরম অস্বচ্ছ্তা, অনিয়ম ও দুর্নীতি বিরাজ করছে বলে জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি। একই সঙ্গে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় নেয়া প্রকল্প অনুমোদনে প্রভাবশালীদের সুপারিশ ও প্রভাব খাটানো হয়েছে সংস্থাটির গবেষণা প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে। এসব থেকে উত্তরণে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণে ১৪ দফা সুপারিশ উত্থাপন করেছে দুর্নীতি বিরোধী আন্তর্জাতিক সংস্থাটি। গতকাল সংস্থাটির ধানমন্ডিস্থ কার্যালয়ে ‘জলবায়ু অর্থায়ন ও প্রকল্প বাস্তবায়নে সুশাসন: প্রেক্ষিত বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড শীর্ষক এক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করে সংবাদ সম্মেলনে এ সংক্রান্ত তথ্য তুলে ধরেন ক্লাইমেট ফাইন্যাস গর্ভনেন্স ইউনিটের প্রোগ্রাম ম্যানেজার গোলাম মহিউদ্দিন। এতে উপস্থিত ছিলেন টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান, অধ্যাপক ড. সুমাইয়া খায়ের, উপদেষ্টা, নির্বাহী ব্যবস্থাপনা এবং ক্লাইমেট ফাইন্যাস গর্ভনেন্স ইউনিটের সিনিয়র প্রোগ্রাম মানেজার এম জাকির হোসেন খান। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে পরিচালিত ছয়টি প্রকল্প নিয়ে নিজেদের গবেষণায় পাওয়া তথ্য তুলে ধরো হয়। গবেষণাটি মার্চ ২০১৫ -জুলাই ২০১৭ সময়কালে পরিচালিত হয়েছে।
গবেষণায় বলা হয়, এই প্রকল্পগুলোর একটিতে একজন সচিব, একটিতে ক্ষমতাসীন দলের একজন কেন্দ্রীয় নেতা, সাবেক এক মন্ত্রীর আত্মীয় ও স্থানীয় সংসদ সদস্য এবং বাকি দুটিতে স্থানীয় সংসদ সদস্য প্রভাব খাটিয়েছেন।
গোলাম মহিউদ্দিন মূল প্রবন্ধে বলেন, আমরা ছয়টি প্রকল্প গবেষণার জন্য ঠিক করি,তার চারটি প্রকল্পেই প্রভাব খাটিয়ে অনুমোদন দেয়ার মতো অনিয়ম পাওয়া গেছে। তিনি বলেন, সংস্থাটি এ খাতে চলমান প্রকল্পের মধ্যে এ পর্যন্ত ১৪১টি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে, যা মোট অর্থায়নের ৪০ শতাংশ। জলবায়ু তহবিল ব্যবহারে সুশাসনের চ্যালেঞ্জ চিহ্নিত করার পাশাপাশি চিহ্নিত চ্যালেঞ্জগুলো উত্তরণের সুপারিশ করা, বাস্তবায়নে সুশাসনের চ্যালেঞ্জ এবং জলবায়ু অর্থায়নে বাস্তবায়িত প্রকল্প ব্যবস্থাপনা সংশ্লিষ্ট আইন-নীতিমালা পর্যালোচনার উদ্দেশ্যে এ গবেষণা পরিচালনা করা হয়।
ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক পরিচালিত জলবায়ু প্রকল্পসমূহ বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ায় কিছু ইতিবাচক উদ্যোগ থাকলেও, সার্বিক বিবেচনায় শুদ্ধাচার, অনিয়ম ও সুশাসনের ঘাটতি লক্ষ্য করা যায়। তথ্যের উন্মুক্ততার ব্যাপারে আইনী বাধ্যবাধকতা থাকলেও তার যথাযথ প্রয়োগের ক্ষেত্রে ব্যত্যয় পরিলক্ষিত হয়েছে এবং প্রকল্পসমূহের গুণগত মানও নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি। তিনি বাংলাদেশ পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় ও পানি উন্নয়ন বোর্ডকে টিআইবি কর্তৃক প্রদত্ত সুপারিশসমূহ ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গিতে গ্রহণ করে এ বিষয়ে দ্রæত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহŸান জানান। উন্নত বিশ্বের কাছ থেকে ফান্ড পাওয়ার ক্ষেত্রে তারা স্বচ্ছতার বিষয়টি তুলে ধরেন। তিনি বলেন, প্রকল্পের মধ্যে চারটি প্রকল্পই অনুমোদনের সময় বিভিন্ন পর্যায় থেকে সুপারিশ এবং প্রভাব খাটানো হয়েছে বলে তথ্য দাতারা জানিয়েছেন। এর মধ্যে একটি প্রকল্পে জনৈক সচিব, একটি প্রকল্পে ক্ষমতাসীন দলের কেন্দ্রীয় নেতা, সাবেক মন্ত্রীর আত্মীয় ও স্থানীয় সংসদ এবং দুটি প্রকল্পে স্থানীয় সংসদ সদস্য প্রভাব খাটিয়েছেন বলে জরিপে অংশগ্রহণকারীরা জানিয়েছেন। এমনকি এর জের ধরে স্থানীয় জনগণের সঙ্গে ঠিকাদারের লোকজনের সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে।
গোলাম মহিউদ্দিন বলেন, একটি প্রকল্পের ঠিকাদার খাল খননের মাটি বাঁধের পাড় টেকসই করার জন্যে না দিয়ে নিজের ইটভাটায় ব্যবহার করেছেন। আবার আরেকটি প্রকল্পের ১০-১৫টি গাছ কেটে আত্মসাৎ করেছেন। এই প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে জনগণকে অন্ধকারে রাখা হয়েছে বলে টিআইবির দাবি।
ছয়টি প্রকল্পের কোনোটিরই প্রকল্প কার্য়ক্রমের শিডিউল জনগণের সামনে প্রকাশ করা হয়নি। প্রকল্পের গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় জনগণকে জানানোর কথা থাকলেও ৮৯ শতাংশ অংশগ্রহণকারী জানেন না কোথায় তথ্য পাওয়া যাবে। এতে আরো জানানো হয়, স¤প্রতি হাওরে ভয়াবহ বিপর্যয় হয়েছে। সেখানে ১ দশমিক ৮ লক্ষ হেক্টর আবাদি ভূমির ফসল নষ্ট হয়েছে। এর পাশাপাশি এক হাজার ২৭৬ টন মাছ এবং তিন হাজার ৮৪৪টি হাঁস মারা গেছে। এই বিপর্যয়ের অত্যতম কারণ বাঁধ নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণে অনিয়ম ও দুর্নীতি।হাঁওরে বাধ নির্মাণে সুনামগঞ্জ পাউবো এর সুশাসন সম্পর্কিত টিআইবি এর গবেষণায়ও (২০০৯) উঠে আসে পাউবো কর্মকর্তা এবং ঠিকাদারের যোগসাজশে দুর্নীতির বিষয়টি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।