Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মানববন্ধন শেষে বিক্ষোভ মিছিল -রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাদ দেয়ার রিট বাতিল করতে হবে-ওলামা লীগ নেতৃবৃন্দ

প্রকাশের সময় : ১৩ মার্চ, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : সংবিধানের অপরিবর্তিত অংশ রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বিষয়ক রিট বাতিল করা। সংবিধানে আল্লাহপাকের উপর আস্থা ও বিশ্বাস পুনঃস্থাপন করা, কুরআন-সুন্নাহবিরোধী কোনো আইন পাস হবে নাÑ এটা সংসদে পাস করা এবং মুসলমানদের আনুপাতিকহারে প্রশাসনসহ সর্বত্র নিয়োগ করাসহ ৭ দফা দাবীতে আওয়ামী ওলামা লীগ ও সমমনা ১৩ সংগঠন গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিরাট মানববন্ধন করেছে। মানববন্ধন শেষে প্রেসক্লাবের সামনে থেকে বিরাট বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
আওয়ামী ওলামা লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা, মাওলানা মুহম্মদ আখতার হুসাইন বুখারীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেনÑ হাফেজ মাওলানা মুহম্মদ আব্দুস সাত্তার, নির্বাহী সভাপতি- বাংলাদেশ আওয়ামী ওলামা লীগ। কাজী মাওলানা মুহম্মদ আবুল হাসান শেখ শরীয়তপুরী, সাধারণ সম্পাদক- বাংলাদেশ আওয়ামী ওলামা লীগ, শায়েখ মুফতি মাসুম বিল্লাহ নাফেয়ী, সভাপতি-বঙ্গবন্ধু ওলামা ফাউন্ডেশন, মাওলানা মুহম্মদ আবু বকর ছিদ্দীক্ব, সভাপতি- জাতীয় কুরআন শিক্ষা মিশন, মাওলানা মুহম্মদ শওকত আলী শেখ ছিলিমপুরী, দপ্তর সম্পাদক- বাংলাদেশ আওয়ামী ওলামা লীগ, মাওলানা মুজিবুর রহমান চিশতি- সহ-সভাপতি বাংলাদেশ আওয়ামী ওলামা লীগ। হাফেজ মাওলানা মোস্তফা চৌধুরী বাগেরহাটি-সভাপতি বাংলাদেশ এতিমখানা কল্যাণ সমিতি প্রমুখ।
মানবন্ধনে উত্থাপিত ৭ দফা দাবীর মধ্যে অন্যান্য দাবীসমূহ হচ্ছে- বাবা-মা কর্তৃক শিশুহত্যা ও নির্যাতন বন্ধ এবং মাদক-দুর্নীতি প্রতিরোধসহ সামাজিক মূল্যবোধের চরম অবক্ষয় রোধে সংবিধানে সর্বশক্তিমান আল্লাহর উপর আস্থা ও বিশ্বাস পুনঃস্থাপন, আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারের অংশ ‘কোরআন-সুন্নাহ বিরোধী কোন আইন পাস করা হবে না’Ñ এটা সংসদে পাস করতে হবে, যেমনিভাবে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে বিল সংসদে পাস করা হয়েছে, ‘৭২ সাল থেকেই হিন্দুদের উপর আওয়ামী নির্যাতন চালাচ্ছে,’ ‘বঙ্গবন্ধু সাম্প্রদায়িক’, ‘৯৫ ভাগ মুসলমানের এদেশে গরু কুরবানী করা যাবে না’- এরকম চরম উস্কানীমূলক বক্তব্য প্রদানকারী কট্টর সাম্প্রদায়িক সংগঠন হিন্দু-বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ঐক্যপরিষদ এদেশে নিষিদ্ধ করতে হবে, মুসলমানদের মেধা ও যোগ্যতা এবং জনসংখ্যা অনুপাতে চাকরিতে বহাল করতে হবে। অকল্পনীয়হারে সংখ্যালঘুদের নিয়োগ বন্ধ করতে হবে, মুসলমানদের স্বার্থ রক্ষায় অবিলম্বে অর্পিত সম্পত্তি আইনের খ তফসিল বহাল করতে হবে।
নেতৃবৃন্দ বলেন, এদেশ বিশ্বের ২য় বৃহত্তম মুসলিম দেশ, এদেশের ৯৫ ভাগ জনগোষ্ঠি মুসলমান। এদেশে সংখ্যাগরিস্ট মুসলমানদের ধর্ম হিসেবে রাষ্ট্রধর্ম হবে ‘ইসলাম’ তা বলার অপেক্ষা রাখে না। ৫৮টিরও অধিক দেশে সংখ্যাগরিস্টদের ধর্মকে রাষ্ট্রধর্ম করা হয়েছে। বাংলাদেশে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানে অপরিবর্তনীয় অনুচ্ছেদ। ২৮ বছর আগের রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাতিলের স্থগিত রিট পুনরায় সচল বাতিল করতে হবে।
মানববন্ধনে বক্তারা আরো বলেন, গত বৃহস্পতিবার ঢাবি’র ভিসি আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেছেন ‘ধর্ম শিক্ষা থেকে দূরে সরে আসায় শিশুও নারী নির্যাতন, হত্যা বেড়েছে। এজন্য নীতি নৈতিকতা এবং ধর্মীয় অনুশাসনের অভাব। আমরা মনে করি আরেফিন সিদ্দিক সাহেব সঠিক কথা বলেছেন। কারণ দেশের শিক্ষাব্যবস্থাসহ কোন ক্ষেত্রেই ইসলামী শিক্ষা নেই। ইসলামী মূল্যবোধ তুলে দেয়া হয়েছে। তাছাড়া ‘সর্বশক্তিমান মহান আল্লাহপাক উনার প্রতি আস্থা ও বিশ্বাস’ এটাও সংবিধান থেকে উঠিয়ে দেয়া হয়েছে। এতে মুসলমানরা ইসলামী আক্বীদা বিশ্বাস থেকে দূরে সরে গেছে। খোদাভীতি ভুলতে বসেছে। শিশু থেকে বৃদ্ধ পর্যন্ত সবার মধ্যে ইসলামী মূল্যবোধের অভাব প্রকট আকার ধারণ করেছে।
বক্তারা বলেন, চাকরির ক্ষেত্রে ৯৫ ভাগ জনগোষ্ঠী মুসলমানদের নিয়োগ আনুপাতিকহারে করতে হবে। কারণ হিন্দুরা আনুপাতিকহারের চেয়ে অকল্পনীয় বেশিহারে সুবিধা পাচ্ছে। হিন্দুদেরকে মুসলমানদের চেয়ে বেশি নিয়োগ দিয়ে বৈষম্য করা যাবে না। প্রশাসনকে হিন্দুকরণ চলবে না। গত ২৩ ফেব্রুয়ারি সুপ্রিম কোর্টে নিয়োগকৃত ৫৮ জন মুদ্রাক্ষরিক তথা অফিস সহকারীর মধ্যে প্রধান বিচারপতির নিজ জেলা মৌলভীবাজারে ১১ জনের মধ্যে ১০ জনে হিন্দু নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এছাড়া ২০১৩ সালের অক্টোবরে পুলিশের এসআই পদে নিয়োগে ১৫২০ জনের মধ্যে হিন্দু নিয়োগ দেয়া হয়েছে ৩৩৪ জন যা মোটের ২১.৯৭ শতাংশ। ২০১১ সালে জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা এনএসআইতে নিয়োগের ৯৩ জনের মধ্যে হিন্দু নিয়োগ করা হয়েছে ২৩ জন। যা মোটের ২৪.৭৩ শতাংশ। সম্প্রতি ৬ষ্ঠ ব্যাচে সহকারী জজ পদে নিয়োগ দেয়া ১২৪ জনকে। এর মধ্যে ২২ জনই হিন্দু। শতকরা হিসেবে ১৭ শতাংশ। এসব বিতর্কিত সিদ্ধান্তে মুসলমান দেশে মুসলমানদের প্রতি ব্যাপক বৈষম্যের দাবিই দৃঢ় হচ্ছে। যাতে হেফাযতসহ বিরোধীরা সুযোগ পাচ্ছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ