Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪, ০২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৭ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

ঘাটতি দিয়ে শুরু চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের রাজস্ব আদায়

| প্রকাশের সময় : ২২ আগস্ট, ২০১৭, ১২:০০ এএম

এবারের টার্গেট ৪৮ হাজার ৮৬৫ কোটি টাকা
রফিকুল ইসলাম সেলিম : শুরুতে হোঁচট খেল চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস। রাজস্ব আদায়ে লক্ষ্যমাত্রার আকার অনেক বড়। অথচ নেতিবাচক ধারায় শুরু হলো রাজস্ব আদায়। চলতি অর্থবছরের প্রথম দেড় মাসে (১৭ আগস্ট পর্যন্ত) রাজস্ব ঘাটতি ৪৫২ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। ওইদিন পর্যন্ত রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫ হাজার ৩১৭ কোটি টাকা। আদায় হয়েছে ৪ হাজার ৮৬৫ কোটি টাকা।
তবে গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় রাজস্ব আদায় ৮৯২ কোটি টাকা বেশি হয়েছে। অর্থাৎ লক্ষ্যমাত্রা থেকে পিছিয়ে থাকলেও দেড় মাসে রাজস্ব আদায়ে প্রবৃদ্ধি ২২ শতাংশ ছাড়িয়েছে। চলতি ২০১৭-১৮ অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪৮ হাজার ৮৬৫ কোটি টাকা। কাস্টম হাউসের কর্মকর্তারা বলছেন, অর্থবছরের শুরুতে আমদানি-রফতানিতে কিছুটা ধীরগতি থাকায় রাজস্ব আদায় কম হয়েছে। সামনের দিনগুলোতে আমদানি-রফতানি আরও গতিশীল হলে রাজস্ব আদায়েও ইতিবাচক ধারা ফিরে আসবে।
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মেনে ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম বন্দরের সাথে তাল মিলিয়ে কাস্টম হাউসও সার্বক্ষণিক খোলা রাখা হচ্ছে। চব্বিশ ঘণ্টা কার্যক্রম সচল রাখতে লোকবলও বাড়ানো হয়েছে। এছাড়া রাজস্ব ফাঁকি রোধেও বেশকিছু ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এসব কারণে এবার রাজস্ব আদায়ও বাড়বে বলে মনে করেন তারা। দেশের প্রধান সমুদ্র বন্দর ভিত্তিক সিংহভাগ রাজস্ব আদায়কারি প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস। চট্টগ্রাম বন্দরের মাধমে দেশের নৌ-বাণিজ্যের প্রায় ৯৮ শতাংশ কন্টেইনার এবং ৯২ শতাংশ পণ্য হ্যান্ডলিং হয়। তাই চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের রাজস্ব আদায়ে রের্কড প্রবৃদ্ধি দেশের সার্বিক আমদানি-রফতানি বাণিজ্যের ইতিবাচক ধারার ইঙ্গিত বহন করে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। গত দুই অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে ব্যর্থ হয় চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস। তবে রাজস্ব আদায়ে প্রবৃদ্ধি বেড়েছে। গত অর্থবছরে বছর রাজস্ব আদায়ে প্রবৃদ্ধি ছিল ১৭.২৮ শতাংশ। এবার প্রথম দেড় মাসে তা ২২.৪৭ শতাংশে এসে দাঁড়িয়েছে। চট্টগ্রাম বন্দর নিয়ে আমদানি-রফতানি বাড়ছে। আর সেই সাথে বাড়ছে রাজস্ব আদায়।
গেল অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৩৯ হাজার ৬২২ কোটি টাকা। অর্থবছর শেষে আদায় হয়েছে ৩৬ হাজার ৭০৯ কোটি টাকা। রাজস্ব আদায়ে ঘাটতি ছিল ২ হাজার ৯১৩ কোটি টাকা। এবার রাজস্ব আদায়ে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪৮ হাজার ৮৬৫ কোটি টাকা। অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৩ হাজার ২০৩ কোটি টাকা। টার্গেট ছিল ৩ হাজার ৪৫৮ কোটি টাকা। প্রথম মাসে রাজস্ব আদায় কম হয়েছে ২৫৫ কোটি টাকা। তবে আগের বছরের জুলাই মাসের তুলনায় এবার ৮৮০ কোটি টাকা বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে। প্রথম মাসে রাজস্ব আদায়ে প্রবৃদ্ধি দাঁড়ায় ৩৭.৮৭ শতাংশ।
চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের কর্মকর্তারা জানান, আমদানি-রফতানি বাড়ছে, সেই সাথে বাড়ছে রাজস্ব আদায়ও। আর এই কারণে প্রতিবছর চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের রাজস্ব আদায় বাড়ছে। বিগত ২০১৫-১৬ অর্থবছরে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৩১ হাজার ২৯৯ কোটি টাকা। তার পরের অর্থবছরে (২০১৬-১৭) রাজস্ব আদায় হয়েছে ৩৬ হাজার ৭০৯ কোটি টাকা। এক বছরে রাজস্ব আদায় বৃদ্ধি পেয়েছে ৫ হাজার ৪১০ কোটি টাকা। সেই ধারাবাহিকতায় এবার রাজস্ব আদায়ে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪৮ হাজার ৮৬৫ কোটি টাকা। এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব বলে মনে করেন কাস্টম হাউসের কর্মকর্তারা।
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মেনে চলতি অর্থবছরের প্রায় শুরু থেকে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস সার্বক্ষণিক চালু রাখা হচ্ছে। এখন রাতেও শুল্কায়ন হচ্ছে। এই লক্ষ্যে কাস্টম হাউসের লোকবল সংকট দূর করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে শতাধিক কর্মকর্তা কাস্টম হাউসে যোগ দিয়েছেন। খুব সহসা লোকবলের ঘাটতি আরও পূরণ করা হবে। একশ্রেণির অসাধু আমদানিকারক মিথ্যা ঘোষণায় প্রায় শুল্ক ফাঁকি দিচ্ছে। এতে সরকার কোটি কোটি টাকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। শুল্ক ফাঁকি রোধে বেশ কিছু উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ