Inqilab Logo

শুক্রবার, ০৭ জুন ২০২৪, ২৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২৯ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

কলারোয়ায় শুল্ক ফাঁকি দিয়ে শতশত ভারতীয় গরু নিয়ে যাওয়া হচ্ছে

| প্রকাশের সময় : ১৯ আগস্ট, ২০১৭, ১২:৪৬ এএম

কলারোয়া (সাতক্ষীর) উপজেলা সংবাদদাতা : কুরবানীর ঈদ সামনে রেখে কলারোয়া সীমান্তে শুল্ক ফাকি দিয়ে ভারতীয় গরু প্রবেশ বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে সরকার লাখ লাখ টাকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। সীমান্তের একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, কলারোয়া উপজেলার সংগে ভারতের ২৪ পরগণা জেলার প্রায় ২০ কিলোমিটার সীমান্ত পথ রয়েছে। রাতে ভারতীয় গ্রাম কালাঞ্চি, গোবরা, গোবিন্দপুর, গণরাজপুর, আশ-শিকড়ী, পদ্মবিল, দরকান্দা, হাকিমপুর, তারালী, নিত্যানন্দকাটি, আমুদিয়া গ্রাম অতিক্রম করে শতশত গরু বাংলাদেশে প্রবেশ করছে।
রাতে ভারত থেকে গরু আনার নামে গডফাদারদের চিহ্নিত কিছু মজুর ভারতে প্রবেশ করে। আবার ভারতীয় গরু ধরে নেওয়ার নামে গডফাদারদের কিছু মজুর রাতে সীমান্তে অবস্থান নেয়। ভারতীয় গরু আনার নামে সীমান্তে অবস্থানরত বা ভারতে প্রবেশকারী মজুরদের সংবাদের উপর ভিত্তি করে সীমান্তে মাদকসহ মূল্যবান দ্রব্য সামগ্রী পাচারের কাজ করে গডফাদাররা। মজুররা সীমান্তে অবস্থান করায় তাদের মাধ্যমে সিংহভাগ ঘুষ লেনদেন হচ্ছে বলে সূত্র জানায়।
সূত্র আরো জানায়, সীমান্তে তারকাঁটার বেড়া থাকলেও ডুপ্লিকেট চাবি দিয়ে গেট খুলে এসব আনা নেওয়া হচ্ছে। আবার কোথাও তারকাঁটার বেড়া কেটে এসব আনা হচ্ছে। ভারত সরকার বাংলাদেশে গরু প্রবেশের উপর কঠোর বিধি নিষেধ আরোপ করায় খুবই সতর্কতার সঙ্গে বাংলাদেশে গরু পাঠানোর কাজ চলছে। ভারতীয়দের সহায়তায় চোরাকারবারীরা সে দেশের অভ্যন্তর থেকে গরু নিয়ে সীমান্তে পৌঁছায়। সময় সুযোগ মত একেক দিন একেক সীমান্ত পথে সেই গরু বাংলাদেশে আনা হচ্ছে। ভারতীয় অংশে গরু বিশেষে ১০ হাজার টাকা থেকে ৩০ হাজার টাকা নেওয়া হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়। আর সীমান্ত অতিক্রমের পরে বাংলাদেশ খরচ নেওয়া হয় মাত্র ৩ হাজার টাকা। এছাড়া রাতের আঁধারে পাচার হয়ে আসা সিংহভাগ গরু শুল্ক ফাঁকি দিয়ে দেশের অভ্যন্তরে নেওয়া হলেও কাষ্টমস করিডরের নামে খাটাল মালিকরা ছোট বড় নির্বিশেষে গরুপ্রতি সাড়ে ৩ হাজার টাকা আদায় করছে। ভারতীয় গরু পাচারে বেপরোয়া টাকা আদায়ে সীমান্তের ওপারে বাংলাদেশী মুদ্রায় ১৬০ টাকা কেজির গরুর গোশত এদেশে এসে ৪৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে আগত ভারতীয় গরুগুলো সাতমাইল গো-হাট সংলগ্ন এলাকায় নিয়ে রাখা হয়। আর হাটের দিন দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত ব্যবসায়ীরা এসব গরু কিনে নিয়ে যায়। আর মঙ্গলবার ও শুক্রবার শেষরাত থেকে বেলা ১২টা অবধি এসব গরু যশোরের শার্শা উপজেলা সাতমাইল গো-হাটে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। চান্দুড়িয়া, সুলতানপুর, বড়ালী, হিজলদী থেকে ন’কাটির বিলে ভিতর বা রামভদ্রপুর হয়ে সাতমাইল গো-হাটে নিয়ে যাওয়া যাচ্ছে। আবার ভাদিয়ালী, রাজপুর, কেড়াগাছি, কুশখালী, তলুইগাছা সীমান্ত গরু নিয়ে শতশত নছিমন সোনাবাড়িয়া কাষ্টমস করিডোরের সামনে সড়ক দিয়ে সাতমাইল গো-হাটে ছুটছে। আবার সাতক্ষীরা সদরের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে আগত গরু নছিমন যোগে কলারোয়া থানার সামনের সড়কে সাতমাইল গোহাটে নিয়ে যেতে দেখা যায়। কিছু ভারতীয় গরু ভিন্ন পথে কেশবপুর, পাটকেলঘাটা হয়ে দেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করছে। এভাবে চোরাই পথে আগত সিংহভাগ গরুর কোন ভ্যাট দেওয়া হচ্ছে না বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়।
ওদিকে ভারতীয় গরু আগমনে স্থানীয় গরু খামারীরা তাদের গরুর ন্যায্যমূল্য পাচ্ছে না এবং গরু পালনকারীরা চরম আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। এতে পরবর্তীতে বাংলাদেশে গরু পালন হ্রাস পাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
অন্যদিকে ভারতীয় গরুর শুল্ক আদায় সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহের জন্য কলারোয়ার সোনাবাড়িয়া কৃষি ব্যাংকের ওপর তলায় কাষ্টমস করিডোরে যেয়ে অফিস তালাবদ্ধ পাওয়া যায়। করিডরের নীচতলায় অবস্থিত বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে কর্মচারীরা কাষ্টমস কর্তাদের অবস্থান সম্পর্কে কিছু জানাতে পারেননি।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ