Inqilab Logo

শনিবার, ২৯ জুন ২০২৪, ১৫ আষাঢ় ১৪৩১, ২২ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

নির্বাচনকে সামনে রেখে রায়পুরে আ’লীগের বিভেদ হচ্ছে চাঙ্গা সম্মেলন ও দলীয় কার্যালয় নেই ১৫ বছর

| প্রকাশের সময় : ১৯ আগস্ট, ২০১৭, ১২:৪৪ এএম

হারুনুর রশিদ, রায়পুর (ল²ীপুর) থেকে : দীর্ঘ প্রায় ১৪ বছর ধরে রায়পুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন ও দলীয় কার্যালয় না থাকলেও দলীয় কোন্দল ও বিভেদ ছাড়াই ছিলো এতদিন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে বিভেদ চাঙ্গা হচ্ছে উঠছে এখন রায়পুর উপজেলা আওয়ামী লীগে। হঠাৎ বিএনপি পরিবারের মারাফি কুয়েতিয়া কোম্পানীর স্বত্বধিকারী শহিদুল ইসলাম পাপুল ইস্যুতে প্রকাশ্যে মাথাচাড়া দিচ্ছে দলটির স্থানীয় নেতাকর্মীসহ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের মধ্যে। এ নিয়ে গত ছয় মাস ধরে সভাপতি ও সম্পাদকের ব্যক্তিগত কার্যালয় পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি দেওয়া হচ্ছে। দলের বিভিন্ন পক্ষের মধ্যে হামলা-পাল্টা হামলার হুমকিও দেওয়া হচ্ছে কখনো কখনো। গত বুধবার উপজেলায় আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় এসব নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশে করেছেন বেশি ভাগ নেতাকর্মীরাও। তবে এর মধ্যেও নির্বাচনীয় প্রচারেও নেমে পড়েছেন অনেকেই। এ ছাড়া এ আসনে জাতীয় পার্টির বদলে আওয়ামী লীগ থেকেই প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়ার দাবিতে সোচ্চার হচ্ছে দলীয় নেতাকর্মীরা।
সম্প্রতি একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে মারাফি কুয়েতিয়া কোম্পানির স্বত্বাধিকারী শহিদুল ইসলাম পাপুলের যোগদান নিয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগ সম্পাদকের পক্ষ থেকে ৩ শতাধিক মোটরসাইকে নিয়ে মহড়াসহ ব্যাপক আয়োজন করলেও ভন্ডুল করে দেয় আওয়ামী লীগের সক্রিয় অংশ। এছাড়াও এর আগেও পাপুলকে পৌর সভার একটি অনুষ্ঠান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের ইফতার পার্টিসহ আরও দু’টি অনুষ্ঠানে অংশ গ্রহণ থেকে দূরে রাখেন আওয়ামীলীগের ওই অংশ। তাই পাপুল এখন ঢাকা আসা-যাওয়া ও বিদেশে থেকেই বিভিন্ন নেতাকর্মীদের আর্থিক লোভে ফেলে দলীয় বিভেদ চাঙ্গা করছেন বলে অভিযোগ করেন আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ অংগসংগঠনের বেশির ভাগ নেতাকর্মীরা।
তবে রায়পুর আসনে বর্তমান জাতীয় পার্টির এমপি মোহাম্মদ নোমানের বদলে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে কাজ শুরু করেছেন সাবেক এমপি ও আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক হারুনুর রশিদ, জেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক অধ্যক্ষ ডাঃ এহসানুল কবীরর জগলুল, কেন্দ্রীয় যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ম্যাকসন্স গ্রæপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আলী খোকন, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়ন ও কেন্দ্রীয় যুবলীগের সদস্য সামছুল ইসলাম পাটোয়ারীসহ কয়েকজন। তবে পাপুরের কিছু সমর্থকরা ফেসবুকে তাকে কুয়েক আওয়ামী লীগের আহŸায়ক দাবি করে এমপি প্রার্থী হিসেবে প্রচারণা করছে। এ নিয়ে দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে দ্বিধাবিভক্তি।
দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে মতবিরোধ সম্পর্কে জানতে চাইলে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদ এবং সাবেক রায়পুর আসনের এমপি হারুনুর রশিদ বলেন, রায়পুরে দীর্য় প্রায় ১৫ বছর ধরে সম্মেলন ও দলীয় অফিস না থাকায় নির্বাচনের আগে দলের নেতাকর্মীদের মাঝে এ নিয়ে বিভক্তি দেখা দেয়। খুব দ্রæত রায়পুরে সম্মেলন করে নতুন কমিটি করলে দলে আর বিভেদ থাকে না। তবে পাপুল আওয়ামী লীগ করলে সেটা আগে প্রমান দিয়ে প্রচার-প্রচারনা করলে এ সমস্যা হয়না। তাই উপজেলা ও পৌর আওয়ামীলীগের কোথাও কোথাও সমস্যা আছে, সেগুলো নিরসনের জন্য জেলার নেতাকর্মীদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্পাদক ইসমাইল খোকন বলেন, সম্মেলন না হলেও দলে কোন কোন্দল নেই। দল এখন চাঙ্গা করতে ইউনিয়নে ও ওয়ার্ডে ব্যাপক সভা করা হচ্ছে। নির্বাচন আসলে আওয়ামী লীগে প্রার্থীর অভাব থাকে না। তাই দলের মনোনয়ন পেতেই এ ধরনের বিভক্তি হয়ে থাকে প্রার্থীদের মাঝে। রায়পুর আসনে মহাজোট থেকে যাঁকে প্রার্থী হিসেবে দেওয়া হবে আওয়ামী লীগ তাঁর হয়েই কাজ করবে। এখানে ব্যক্তিগতভাবে আমার কিছু বলার নেই। তবে জেলার কোথাও কোথাও সমস্যা আছে, সেগুলো নিরসনের জন্য জেলার নেতাকর্মীদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
উপজেরা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যক্ষ মামুনুর রশিদ বলেন, হঠাৎ করে বিএনপি পরিবারের সন্তান ও বর্তমান বিএনপির সক্রিয় নেতাকর্মীদের সাথে যোগাযোগ করে পাপুল আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে কৌশলে কিছু দলীয় কর্মীদের আর্থিক সুবিধা দিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আগাম প্রচার-প্রচারণায় করে বিভিন্ন উল্টো পাল্টা জনশ্রæতি দিয়ে আসায় দুঃসময়ের পরীক্ষিত নেতাকের মাঝে চরম ক্ষোব দেখা দিয়েছে। যা আগামী নির্বাচনে আওয়ামলীগের কাল হয়ে দাঁড়াবে। তাই দলের কোন্দল মিঠাতে পাপুলের অপরাজনৈতিক বন্ধ উপজেলা আওয়ামী লীগ প্রস্তুত রয়েছে। পাপুল আওয়ামী লীগের কোন পদ-পদবীতে নেই। তাই পাপুল দলের সাধারণ সম্পাদকের উপর ভর করে হুড়া দিয়ে বাহিনী করে দলে বিভেদ বাড়াচ্ছে। খুব দ্রæত এসব বিভেদ দূর করা হবে। দলের বর্ধিত সভায়ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদককে এস কথা বলা হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ