Inqilab Logo

রোববার, ০৯ জুন ২০২৪, ২৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০২ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

আজ সেই ১৭ আগস্ট. সিরিজ বোমা হামলা দীর্ঘ এক যুগেও শেষ হয়নি বিচার

| প্রকাশের সময় : ১৭ আগস্ট, ২০১৭, ১২:০০ এএম


বিশেষ সংবাদদাতা : আজ সেই ১৭ আগস্ট। ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট দেশের ৬৩ জেলায় একযোগে সিরিজ বোমা হামলার চালায় জেএমবি। দেশের ৬৩ জেলায় একযোগে সিরিজ বোমা হামলার ঘটনায় দায়েরকৃত মামলা দীর্ঘ এক যুগেও বিচার কার্য শেষ হয়নি। এ ঘটনায় ১৬১ টি মামলা দায়ের করা হয়। এর মধ্যে ১০২ টি মামলার রায় ঘোষণা হয়েছে। ৫৯ টি মামলা বিচারাধীন রয়েছে।  জেএমবি’র কার্যক্রম যে একেবারে শেষ হয়ে গেছে তা নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা। তবে এখন এই জামায়াতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ ( জেএমবি) এই সংগঠনটির পরিবর্তে নব্য জেএমবি নাম ধারণ করে বিচ্ছিন্নভাবে জঙ্গি হামলার চেস্টা করছে। পুলিশ ও র‌্যাবের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, এই মূহুর্তে জঙ্গিরা বিচ্ছিন্নভাবে হামলা চালানোর মতো ক্ষমতা থাকলেও তা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর নিয়ন্ত্রনে রয়েছে। ডিএমপি কমিশনার দাবি করেন, বাংলাদেশে বড় কোনো জঙ্গি হামলা বা নিরাপত্তা নিয়ে ঝুঁকি নেই। ২০০৫ সালের এই দিনে সারাদেশের ৬৩টি জেলার (মুন্সীগঞ্জ বাদে) ৫ শ’র বেশি স্থানে সিরিজ বোমা হামলার মাধ্যমে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জামা’য়াতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ-জেএমবি জঙ্গিরা প্রকাশ্যে তাদের অবস্থান জানান দেয়। নিজেদের শক্তির জানান দেয়া ওই হামলায় দু’জন নিহত ও শতাধিক ব্যক্তি আহত হন। এরপর বিভিন্ন সময়ে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করা হয়েছে। তারপরও নামে-বেনামে বারবার মাথা চাড়া দিয়ে ওঠার চেষ্টা করছে বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের সদস্যরা। বর্তমানে নতুন নামে, ভিন্ন পরিচয়ে আবারো সাংগঠনিক কার্যক্রম শুরু করেছে তারা। সূত্র জানায়, ২০০৫ সালে জেএমবির ওই ঘটনায় দেশের ৬৩ জেলায় ১৬১টি মামলা হয়। আসামী করা হয় ৬৬০ জনকে। এর মধ্যে ৪৫৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়। বিচার কার্যক্রম শেষ হয়েছে ১০২ টি মামলার। তার মধ্যে ১৫ জনের মৃত্যুদন্ড, ২৪৭ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা ও ১১৮ জনকে খালাস দেয়া হয়। এসব মামলায় পুলিশের হিসাবে ৫০ জন আসামী পলাতক রয়েছে। জামিনে রয়েছে ৩৫ জন। সূত্র আরো জানায়, রাজধানী ৩৩টি স্পটে বোমা হামলার ঘটনায় বিভিন্ন থানায় ১৮টি মামলা হয়। ঢাকা মহানগর এলাকায় বোমা হামলার ঘটনায় দায়ের করা মামলার বিচার প্রক্রিয়া শেষ হয়ে গেছে। ঢাকার বাইরের ৫৯ টি মামলা বিচারাধীন রয়েছে। অনেক মামলায় সাক্ষীদের না পাওয়ার কারণে মামলা শেষ করতে সময় বেশী লেগে যাচ্ছে। আবার সাক্ষীরা ঠিকমতো না আসায় জঙ্গিদের শাস্তিও সঠিকভাবে হচ্ছে না। বেশির ভাগ সাক্ষীর ঠিকানাও পরির্বতন করা হয়েছে বলে পুলিশ দাবি করে আসছে। তারপরও জঙ্গিদের যাতে কঠোর সাজা হয় সে ব্যাপারে রাষ্ট্রপক্ষ কার্যক্রম অব্যহত রেখেছে। ২০০৫ সালের সিরিজ বোমা হামলার পর জেএমবির শীর্ষ নেতা শায়খ আবদুর রহমান, সিদ্দিকুল ইসলাম ওরফে বাংলা ভাই, আতাউর রহমান সানি, খালেদ সাইফুল¬¬াহ, আবদুল আউয়াল, হাফেজ মাহমুদসহ প্রায় সাড়ে সাতশ’ জঙ্গি সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়। ঝালকাঠিতে দুই বিচারক হত্যা মামলায় জেএমবি প্রধান শায়খ আবদুর রহমান ও সিদ্দিকুল ইসলাম বাংলা ভাইসহ সাতজনের ফাঁসির আদেশ দেয় আদালত। ২০০৭ সালের ২৯ মার্চ শায়খ আবদুর রহমান, সিদ্দিকুল ইসলাম, খালেদ সাইফুল¬¬াহ, আতাউর রহমান সানি, আবদুল আউয়াল, ইফতেখার হাসান আল মামুনের মৃত্যুদন্ড কার্যকর করা হয়। গত বছরের ১৭ অক্টোবর এই মামলার ফাঁসির দন্ডপ্রাপ্ত আসামী আসাদুল ইসলাম আরিফের ফাঁসি কার্যকর হয়। সিলেটে শাহজালালের মাজারে ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর ওপর গ্রেনেড হামলার ঘটনায় হরকাতুল জিহাদের আমীর মুফতি আব্দুল হান্নান, শরীফ শাহেদুল আলম বিপুল ও দেলোয়ার হোসেন রিপনের ফাঁসি কার্যকর হয় এ বছরের ১৩ এপ্রিল।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ