পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ইনকিলাব ডেস্ক : ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে মুসলমানদের মধ্যে এবছর বেশী করে স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করার প্রবণতা দেখা গেছে। একথা বলেছেন দেশটির মুসলিম স¤প্রদায়ের কয়েকজন নেতা।
পশ্চিমবঙ্গ সংখ্যালঘু যুব ফেডারেশন গতবছর রাজ্যের ১০০টি জায়গায় স্বাধীনতা দিবস পালন করেছিল, কিন্তু এবছর বন্যার কারণে উত্তরবঙ্গের বহু জায়গাতেই তারা অনুষ্ঠান করতে পারেননি। তবুও এবার প্রায় ১৫০ জায়গায় স্বাধীনতা দিবস উদযাপনের অনুষ্ঠান করেছে ওই সংগঠনটি।
মুসলমানদের মধ্যে স্বাধীনতা দিবস পালনের এই বর্ধিত উদ্যোগ চোখে পড়েছে পশ্চিমবঙ্গের মুসলিম সমাজের মধ্যে শিক্ষার প্রসার ঘটাতে কাজ করে এমন একটি সংগঠন আল-আমিন মিশনের সচিব নুরুল ইসলামেরও।
অনেকেই বলছেন, যেভাবে কিছু হিন্দুত্ববাদী সংগঠন মুসলমানদের দেশাত্মবোধ নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করছেন, সেই প্রেক্ষিতেই মুসলিমরা এটা প্রমাণ করতে সচেষ্ট যে তারা নিজেদের দেশকে কারও থেকে কম ভালবাসেন না।
গতকাল ভারতে পালিত হয়েছে দেশটির স্বাধীনতা দিবস। দিল্লির লালকেল্লায় জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। একই সঙ্গে গোটা দেশেই রাজ্য সরকার, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংগঠন যেমন স্বাধীনতা দিবস পালন করেছেন, তেমনই বহু নাগরিকও নিজেদের বাড়িতে পতাকা উত্তোলন করে পালন করেছেন স্বাধীনতার জয়ন্তী।
একইভাবে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মুসলমান এলাকাগুলোতেও স্বাধীনতা দিবস উদযাপনের পরিমাণ এবার বেশি করে চোখে পড়েছে।
‘আসলে মুসলমানরাও যে স্বাধীনতা দিবস পালন করে অন্য সবার মতোই, এটা এতদিন কারও নজরেই পড়ত না। এ বছর সকলে নজর রাখতে গিয়ে দেখছেন মুসলিমরা বেশী সংখ্যায় স্বাধীনতা দিবস পালনে উদ্যোগী হয়েছে,’ বলছিলেন নূরুল ইসলাম।
কোথাও পতাকা উত্তোলন, কোথাও দেশাত্মবোধক কনভেনশন - এরকম নানা উদ্যোগ নিয়েছে বিভিন্ন মুসলিম সংগঠন বা মহল্লাগুলি।
কেন এবছর বেশী করে স্বাধীনতা দিবস পালনের এই উদ্যোগ নিচ্ছে মুসলিম সংগঠনগুলি? জানতে চাইলে উদার আকাশ পত্রিকার সম্পাদক ফারুক আহমেদ বলছিলেন, ‘আমরা সেই ১৯৪৭ সাল থেকেই স্বাধীনতা দিবস পালন করছি। এবারে আমরা আরও বেশি করে উদযাপন করে প্রমাণ করতে চাইছি যে, আমরাও ভারতীয়, সউদী আরব বা পাকিস্তান থেকে উড়ে আসিনি।
‘আমাদের সন্দেহের চোখে দেখো না। আরেকজনের থেকেও মুসলমানরা যে বেশি করে ভারতকে, ভারতবর্ষকে ভালবাসে, সেটা প্রমাণ করার একটা তাগিদ আমার স্পষ্টতই নজরে পড়ছে’- বলেন তিনি।
হিন্দু পুনরুত্থানবাদী সংগঠন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের দক্ষিণবঙ্গের প্রান্ত প্রচারক জিষ্ণু বসু বলছিলেন, অন্যান্য ধর্মের মানুষের মতোই যে মুসলমানরাও স্বাধীনতা দিবস পালন করবেন - এটাই তো স্বাভাবিক।
‘মুসলমান সমাজও একইরকম ভাবে দেশভক্ত। আমি বড় হয়েছি একটা মুসলিম প্রধান এলাকায়। ছোট থেকেই সবাই একসঙ্গেই স্বাধীনতা দিবস পালন করেছি। বিষয়টা হল সাধারণ মুসলমান আর কিছু উগ্র খারিজি মাদরাসার মতো সংগঠন - এ দুটো এক নয়। মুসলমান সমাজকে সাধারণ ভারতীয় করে রাখতে চায় না কায়েমী স্বার্থের কিছু রাজনৈতিক দল। তাহলেই তো তাদের বøক ভোট পাওয়া যাবে না। সেজন্যই মুসলমান সমাজের প্রতিনিধি হিসাবে কিছু উগ্র মতাদর্শের মুসলমানকে নেতৃত্বে নিয়ে আসে ওই রাজনৈতিক দলগুলোই,’ বলছিলেন জিষ্ণু বসু।
কিন্তু সংখ্যালঘু যুব ফেডারেশনের প্রধান মুহম্মদ কামরুজ্জামান বলছেন, স¤প্রতি অনেকেই মুসলমানদের দেশপ্রেম নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। সেজন্যই এবছর স্বাধীনতা দিবস পালনের বাড়তি উদ্যোগ নিয়েছেন তারা।
জনাব কামরুজ্জামানের কথায়, ‘স¤প্রতি মুসলমানদের দেশপ্রেম নিয়ে প্রশ্ন তোলা হচ্ছে। এ নিয়ে মুসলমানদের তরুণ প্রজন্মের মধ্যে যাতে এরকম কোনও দ্বিধা না জন্মায় যে তাদের বাধ্য করা হচ্ছে নিজেদের মনে দেশাত্মবোধ জাগিয়ে তোলার জন্য, সেজন্যই আমরা নতুন প্রজন্মের কাছে একটা বার্তা দিতে চেয়েছি। বোঝাতে চেয়েছি আমাদের পূর্বপুরুষদেরও কুরবানি রয়েছে দেশ স্বাধীন করার পেছনে। এই স্বাধীনতা রক্ষা করার দায়িত্ব শুধু সংঘ পরিবারের নয়, মুসলমান সহ প্রত্যেক ভারতবাসীর - এই বার্তা দিতেই আমাদের স্বাধীনতা দিবস পালনের উদ্যোগ’।
বিভিন্ন মহল্লায় যখন গতকাল স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করছিল মুসলিম সংগঠনগুলি, তখনই উত্তরপ্রদেশের কিছু মুসলিম ধর্মীয় নেতা প্রশ্ন তুলেছেন যে কেন কেন্দ্রীয় সরকার নির্দেশিকা জারি করে স্বাধীনতা দিবস পালনে তাদের বাধ্য করবে। সূত্র : বিবিসি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।