Inqilab Logo

রোববার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বিনম্র শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় বঙ্গবন্ধুকে স্মরণ

প্রতিকৃতিতে প্রেসিডেন্ট-প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা

| প্রকাশের সময় : ১৬ আগস্ট, ২০১৭, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : শোকার্ত মানুষের বিনম্র শ্রদ্ধা ও হৃদয় নিংড়ানো ভালোবাসার পাশাপাশি ফুলেল শুভেচ্ছায় সিক্ত হলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪২তম শাহাদাত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর ধানমন্ডিতে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরের সামনে বাংলাদেশের স্থপতি, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালী শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে বিভন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে জাতির পিতাকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন।
রাজধানী ছাড়াও সারাদেশে এবং দেশের বাইরে বাংলাদেশের কুটনৈতিক মিশনগুলো বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেদনসহ নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে শোক দিবস পালন করে।
শোক দিবস উপলক্ষে দিনব্যাপী পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত, বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ প্রচার, বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ, কালো ব্যাজ ধারণ, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগীতা, মিলাদ মাহফিল, রক্তদান কর্মসূচি, আলোচনা সভা, আলোকচিত্র প্রদর্শনী ও দুস্থদের মাঝে খাবার বিতরন করা হয়।
শোক দিবস উপলক্ষে গতকাল মঙ্গলবার ভোরে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ দলের ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন ইউনিট কার্যালয়ে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত এবং কালো পতাকা উত্তোলন করা হয়। শোক দিবসে সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বেসরকারি ভবন ও বিদেশে বাংলাদেশ মিশনসমূহে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের কালো রাতে একদল বিপথগামী সেনা কর্মকর্তা মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধ্বংস করার ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করে। সেদিন বিদেশে থাকায় বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা প্রাণে বেঁচে যান। শোক দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ বেতার এবং বাংলাদেশ টেলিভিশনে শোক দিবসের বিভিন্ন অনুষ্ঠানমালা সরাসরি স¤প্রচারসহ বিশেষ অনুষ্ঠানমালা প্রচার এবং সংবাদপত্রসমূহ বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করে।
সকালে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু ভবনের সামনে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও ছাত্র-ছাত্রীরাসহ সবস্তরের মানুষ জাতির জনকের প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণের মাধ্যমে তার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে।
প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সকাল সাড়ে ৬টায় বঙ্গবন্ধু ভবনের সামনে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে তার স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পরে জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমীন চৌধুরী এবং প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহা বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।
পরে আওয়ামী লীগ সভাপতি হিসাবে শেখ হাসিনা দলের নেতাদের সঙ্গে নিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, ডেপুটি স্পীকার ফজলে রাব্বি মিয়া, মন্ত্রিপরিষদ সদস্যদের মধ্যে আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, মতিয়া চৌধুরী, সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ওবায়দুল কাদের, শামসুর রহমান শরীফ, মেহের আফরোজ চুমকি, মীর্জা আজম, তারানা হালিম প্রমুখ। এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব:) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, মন্ত্রী পরিষদ সচিব মুহম্মদ শফিউল আলম, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. কামাল আব্দুল নাসের চৌধুরী, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব সুরাইয়া বেগম, প্রধানমন্ত্রীর সামরিক সচিব মেজর জেনারেল মিয়া মোহাম্মদ জয়নুল আবেদীন, প্রেস সচিব ইহসানুল করিম প্রমুখ।
আওয়ামী লীগ নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন শেখ ফজলুল করিম সেলিম, সাহারা খাতুন, মুহ. ফারুক খান, আবুল হাসনাত আব্দুল্লাহ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, আফম বাহাউদ্দিন নাছিম, বিএম মোজাম্মেল হক, এনামুল হক শামীম, মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, আফজাল হোসেন, হাবিবুর রহমান সিরাজ, ড. আব্দুস সোবহান গোলাপ, শেখ হেলাল উদ্দিন, এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন, ইকবাল হোসেন অপু, অনোয়ার হোসেন প্রমুখ।
শ্রদ্ধা নিবেদনের পর প্রধানমন্ত্রী স্মৃতিজড়িত ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবনে গিয়ে পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের কালোরাতে ওই ভবনের যে সিঁড়িতে বঙ্গবন্ধুর লাশ পড়ে ছিল, সেখানে গোলাপের পাপড়ি ছিটিয়ে দেন। পরে তিনি ওই ভবনের একটি কক্ষে বসে কিছু সময় পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত করেন। এ সময়ে তার ছোট বোন শেখ রেহানা উপস্থিত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর ত্যাগ করার পরপরই স্থানটি সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়। এর আগে, ভোর থেকে বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষ জড়ো হতে শুরু করেন ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে। যারা এসেছেন তাদের বেশিরভাগের পরনে ছিল কালো পোশাক। এছাড়া ৩২ নম্বরের আশপাশের এলাকাও কালো পতাকা, ফেস্টুন ও ব্যানারে ছেয়ে গেছে। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনসহ সর্বস্তরের মানুষ বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে জাতির পিতার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
সকাল সাতটা থেকে বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ বঙ্গবন্ধুকে শ্রদ্ধা জানানো শুরু করেন। শোকাবহ ভাবগাম্ভীর্যের মাঝেও জোরালো কণ্ঠে উচ্চারিত হয় ‘বঙ্গবন্ধুর পলাতক খুনিদের দেশে ফিরিয়ে এনে ফাঁসির রায় কার্যকর করা হোক।
এছাড়া বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সামাজিক সংগঠনের পক্ষ থেকেও শ্রদ্ধ নিবেদন করা হয়। আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের মধ্যে যুবলীগ, বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ, ছাত্রলীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, যুবমহিলা লীগ, সেচ্ছাসেবক লীগ, কৃষকলীগ, শ্রমিক লীগ ও তাঁতী লীগের নেতাকর্মীরা শ্রদ্ধা জানান।
এরপর ধানমন্ডির ৩২ নম্বর সড়ক থেকে প্রধানমন্ত্রী বনানী কবরস্থানে যান। যেখানে ১৫ আগস্ট নৃশংসভাবে নিহত তার মা, ভাই, পরিবারের অন্য সদস্য ও আত্মীয়দের দাফন করা হয়। তিনি কবরস্থানে সকাল সাড়ে ৭টায় তার পরিবারের সদস্যদের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে তাদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এখানে ১৫ আগস্ট নৃশংসভাবে নিহতদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করে ফাতেহা পাঠ ও বিশেষ মোনাজাত করা হয়। আওয়ামী লীগ ও এর বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীসহ সমাজের সর্বস্তরের মানুষ বনানী কবরস্থানে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও ফাতেহা পাঠ করেন।
সকালে ধানমন্ডিতে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরের সামনে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও বনানী কবরস্থানে নিহতদের কবরে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর প্রধানমন্ত্রী বিমান বাহিনীর হেলিকপ্টারে করে টুঙ্গিপাড়া যান। সেখানে বঙ্গবন্ধুর সমাধীসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এসময় বিউগলে করুণ সুর বেজে ওঠে। অনুষ্ঠানে সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দল গার্ড অব অনার প্রদান করেন। পরে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বঙ্গবন্ধুর মাজারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। সেখানে মিলাদ ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। প্রধানমন্ত্রী এ মিলাদ মাহফিলে অংশ নেন।
এ সময় মন্ত্রীসভার সদস্য, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা, সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বঙ্গভবনে মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়। প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদ এতে অংশ নেন।
এদিকে সকাল সাড়ে ১১ টায় রাজধানীর ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে ১৫ আগস্ট নিহতদের আত্মার শান্তি কামনা করে প্রার্থনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে রাজধানীর কারওয়ান বাজার পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরে আলোচনা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র মিলনায়তনে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আয়োজিত আলোচনা সভায় ভিসি অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক সভাপতিত্ব করেন।
বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে দুস্থ ও গরীব মানুষের মধ্যে খাবার বিতরণ করা হয়। আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনেসহ রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে দরিদ্রদের মধ্যে খাবার বিতরণের ব্যবস্থা করে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনগুলোর থানা ও ওয়ার্ড ইউনিটগুলো।
এদিকে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে সারা দেশের সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে দরিদ্র রোগীদের ২ ঘন্টা বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা দেয়া হয়।
এছাড়াও আওয়ামী যুবলীগ, শ্রমিক লীগ, ছাত্রলীগ, বঙ্গবন্ধুর ৪২তম শাহাদাত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা ও দরিদ্রদের মাঝে খাবার বিতরণ করে।
সকালে তথ্যসচিব মরতুজা আহমদের নেতৃত্বে তথ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জাতীয় শোক দিবসে ঢাকায় ধানমন্ডিতে জাতির পিতার স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
বিভিন্ন সংগঠনের শ্রদ্ধা
যুবলীগ : জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছে আওয়ামী যুবলীগ। গতকাল জাতীয় শোক দিবসে ধানমন্ডিতে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে যুবলীগ চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক মো. হারুনুর রশীদের নেতৃত্বে সকাল ৭ টায় ও ১৫ আগষ্টের শহীদ স্মরনে বনানী কবরস্থানে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন, ফাতেহা পাঠ ও দোয়া-মোনাজাত করা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন যুবলীগ নেতা শহীদ সেরনিয়াবাত, মুজিবুর রহমান চৌধুরী, মো. ফারুক হোসেন, আব্দুস সাত্তার মাসুদ, ড. আহম্মেদ আল কবির, ইঞ্জি: নিখিল গুহ, মো. আতাউর রহমান, সিরাজুল ইসলাম মোল্লা এমপি, শাহজাহান ভুইয়া মাখন, অধ্যাপক এবিএম আমজাদ হোসেন, আবুল বাশার, আনোয়ারুল ইসলাম, মহিউদ্দিন আহম্মেদ মহি, মঞ্জুর আলম শাহীন, সুব্রত পাল, মুহা. বদিউল আলম, ফজলুল হক আতিক, আসাদুল হক আসাদ, কাজী আনিসুর রহমান, মিজানুল ইসলাম, ইকবাল মাহমুদ বাবলু, মহানগর উত্তর সভাপতি মাইনুল হোসেন খাঁন নিখিল, দক্ষিণ সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাটসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
এছাড়াও যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির একটি টিম টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানায়। যুবলীগ নেতা মো. মাহবুবুর রহমান হিরন, শেখ আতিয়ার রহমান দিপু, বাবুল আক্তার বাবলা, রবিউল আলম, শেখ ফজলে ফাহিম, ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নাঈম এসময় উপস্থিত ছিলেন। এদিকে, যুবলীগ চেয়ারম্যান ও সাধারণ সম্পাদক গুলশান ও গুলিস্তানে দুস্থদের মাঝে খাবার বিতরণ করেন।
প্রেসক্লাবে শিশু চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা : জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে শিশু চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার আয়োজন করে জাতীয় প্রেসক্লাব। সাধারণ সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমিন এ প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করেন। এসময় প্রেসক্লাবের সাংবাদিক নেতারা উপস্থিত ছিলেন। চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় জাতীয় প্রেসক্লাব সদস্যদের প্রায় অর্ধ-শতাধিক শিশু সন্তান অংশ নেয়। এর আগে জাতির জনকের শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে প্রেসক্লাবে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করেন সাংবাদিকরা।
রাজধানীর নাম মুজিবনগর করার দাবি : রাজধানী ঢাকার নাম পরিবর্তন করে মুজিবনগর করার দাবিতে মানববন্ধন করেছে কয়েকটি রাজনৈতিক সংগঠন। জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জাতীয় গণতান্ত্রিক লীগ, ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ) ভাসানী, বাংলাদেশ জনতা পার্টি ও জয়বাংলা মঞ্চ মানববন্ধন করে এ দাবি জানায়। বক্তারা বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামানুসারে রাজধানী ঢাকার নাম পরিবর্তন করে মুজিবনগর করতে হবে। তিনি বাংলাদেশে বৈষম্যহীন সমাজ ব্যবস্থা কায়েম করতে চেয়েছিলেন।
দোয়া ও খাবার বিতরণ: এদিকে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে রাজধানীসহ বিভিন্ন স্থানে দোয়া ও মিলাদ মাহফিল এবং খাবার বিতরণ করা হয়েছে। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে মসজিদে মসজিদে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়। বিজিবি সদর দফতরসহ রিজিয়ন, সেক্টর প্রতিষ্ঠানসমূহে কোরআন খতম এবং দোয়া মাহফিল করা হয়েছে। ঢাকা-৫ আসনের এমপি হাবিবুর রহমান মোল­া তার নির্বাচনী এলাকায় শতাধিক স্থানে কাঙালি ভোজের আয়োজন করেন। ডেমরা থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মসিউর রহমান মোল­া সজল, আওয়ামী লীগ নেতা দীন মোহাম্মদ দিলু, এনামুল ইসলাম এনামসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগ এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা এতে উপস্থিত ছিলেন।
মানারাতে শোকদিবস পালন: বিনম্র শ্রদ্ধা ও ভাব গাম্ভীর্যের মধ্যদিয়ে মানারাত ঢাকা ইন্টার ন্যাশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ গতকাল পালন করে জাতীয় শোকদিবস। শোকদিবসে কলেজ শিক্ষার্থীদের জন্য আয়োজন করে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগীতা। অনুষ্ঠিত হয় জাতির জনকের কর্মময় জীবনের উপর আলোচনা, করা হয় প্রামাণ্যচিত্রের প্রদর্শনী ও দোয়া মাহফিল। অধ্যক্ষ ব্রি. জে.(অব.) মো. মেহেদী হাসান চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগীতার উদ্বোধন করেন।
এছাড়াও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বীর মুক্তিযোদ্ধা ঐক্য পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটি সভাপতি এসএম গোলাম মোস্তফা, সাধারণ সম্পাদক ওয়াহিদুজ্জামান ও সি. যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাসুদুল হাসান মাসুদের নেতৃত্বে শোক মিছিল নিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানায়।
মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধা পরিবার কল্যাণ সমিতি সি. সহসভাপতি মো. শাহজাহান মিয়া, সাধারণ সম্পাদক মোর্শেদুল আলম, দপ্তর সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন, সহ রায়হান উদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে ধানমন্ডিতে জাতির জনকের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানায়।
বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ড এন্ড টেস্টিং ইন্সটিটিউশনের (বিএসটিআই) উদ্যোগে জাতীয় শোকদিবস উপলক্ষে বঙ্গবন্ধুর শাহাদাবার্ষিকী পালন করা হয়। কোরআন খতম, আত্মার মাগফেরাত কামনায় দোয়া ও আলোচনা সভা করা হয় বিএসটিআইর তেজগাঁওয়ের প্রধান কার্যালয়ে। এতে স্বেচ্ছায় রক্তদান কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন প্রতিষ্ঠানের মহাপরিচালক মো. সাইফুল হাসিব।
জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে গতকাল দুপুরে কদমতলী থানার দনিয়া বর্ণমালা স্কুল রোডে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক লীগ দনিয়া ইউনিয়ন শাখার উদ্যোগে কাঙ্গালী ভোজের আয়োজন করা হয়। ঢাকা-৫ আসনের এমপি আলহাজ্ব হাবিবুর রহমান মোল্লা দুপুরে এ কর্মসূচীর উদ্বোধন করেন। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক লীগ দনিয়া ইউনিয়নের সভাপতি মোঃ আনোয়ার হোসেন পাঠান ও কদমতলী থানা শাখার সভাপতি মোঃ খালেদ মাহমুদ দিপু এসময় উপস্থিত ছিলেন।
দক্ষিণ দনিয়া এলাকায় স্থানীয আওয়ামী লীগের উদ্যোগে এক শোক সভায় যাত্রাবাড়ী থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক ওয়ার্ড কমিশনার কাজী মনিরুল ইসলাম মনু বক্তব্য রাখেন। তিনি বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিচারণ করে বলেন, তাঁর আদর্শ ও নীতিকে অনুসরণ করার প্রতি গুরুত্বারোপ করেন।
খেলাফত আন্দোলন: বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন প্রধান, আমীরে শরীয়ত হযরত মাওলানা শাহ আতাউল্লাহ ইবনে হাফেজ্জী হুজুর বলেছেন, বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান দেশের জন্য যে ত্যাগ শিকার করে গেছেন, তা জাতির কাছে চির স্মরণীয় হয়ে থাকবে। দেশ স্বাধীনের পর তিনি ইসলামের পক্ষে অনেক ভূমিকা রেখে গেছেন। ইসলামিক ফাউন্ডেশন ও কাকরাউল মসজিদ প্রতিষ্ঠা এবং টঙ্গি ইজতেমায় জায়গা প্রদানসহ বিভিন্ন ইসলামী কাজের মাধ্যমে তিনি এ দেশকে ইসলামী ঐতিহ্যের রূপে সাজাতে চেয়ে ছিলেন। কিন্তু আজ ব্রাম্মন্যবাদের দালালরা দেশের বিভিন্ন স্থানে ইসলামী ঐতিহ্য বিরোধী মূর্তি নির্মান করে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে।
গতকাল বাদ জোহর কামরাঙ্গীরচর জামিয়া নুরিয়া ইসলামিয়ায় জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে এক আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন।
দারুননাজাত সিদ্দীকিয়া কামিল মাদরাসা
হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪২ তম শাহাদাৎ বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস পালন উপলক্ষে ঐতিহ্যবাহী দারুননাজাত সিদ্দীকিয়া কামিল মাদরাসায় এক আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। আলোচনায় বক্তারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বিশাল বিস্তৃত কর্মজীবনের বিভিন্ন দিক নিয়ে সারগর্ভ আলোচনা করেন। প্রধান অতিথির বক্তব্যে উক্ত মাদরাসার অধ্যক্ষ আ.খ.ম.আবুবকর সিদ্দীক বঙ্গবন্ধুর কর্মময় জীবন ও তাঁর আত্মত্যাগের কথা তুলে ধরে বলেন, ছাত্র-শিক্ষকের প্রধান কাজই হল শিক্ষাগ্রহণ করা। তাই আমাদেরকে বঙ্গবন্ধুর জীবন থেকে শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে। পরিশেষে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও ১৫ আগস্টে নিহত সকল শহীদানের রূহের মাগফিরাত কামনা করে দোয়া ও মুনাজাত করা হয়।
চট্টগ্রাম ব্যুরো জানায়,
যথাযোগ্য মর্যাদায় ও ভাবগম্ভীর পরিবেশে বন্দরনগরীসহ বৃহত্তর চট্টগ্রামে গতকাল (মঙ্গলবার) জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪২তম শাহাদাত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠন, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন, জেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন সরকারী-বেসরকারী, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন নানা কর্মসূচি পালন করে।
এ উপলক্ষে সিটি কর্পোরেশন তিনদিনব্যাপী কর্মসূচির প্রথমদিনে গতকাল মানবপ্রাচীর, খতমে কোরআন, মিলাদ মাহফিল ও বিশেষ মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়। মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন সকাল সাড়ে ৮ টায় নগরভবনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে দিনব্যাপী কর্মসূচির সূচনা করেন। পরে কে বি আবদুচ ছত্তার মিলনায়তনে এতিম সমাবেশ, খতমে কোরআন, মিলাদ মাহফিল, তবারুক বিতরণ ও বিশেষ মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়। সকাল ১০টা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত সিটি কর্পোরেশন, জেলা প্রশাসন ও চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের সমন্বয়ে নগরীর সরকারি, বেসরকারি ও সিটি কর্পোরেশন পরিচালিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সমূহের শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও সর্বস্তরের জনগণের অংশগ্রহণে মানবপ্রাচীর কর্মসূচি পালিত হয়। ‘শোকের শক্তিতে রুখবো দুর্নীতি, মাদক ও জঙ্গিবাদ’ এ শ্লোগান ধারণ করে আধঘন্টার মানবপ্রাচীরে হাজার হাজার শিক্ষার্থী ও শিক্ষক অংশগ্রহণ করে। এছাড়া নগরীর টাইগার পাস মোড়ে সিটি মেয়র, কাউন্সিলর, কর্মকর্তা-কর্মচারী, জেলা প্রশাসন ও চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ প্রশাসনের উর্ধ্বতন নেতবৃন্দ মানবপ্রাচীরে অংশগ্রহণ করেন। মানবপ্রাচীর চলাকালে মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন, পুলিশ কমিশনার ইকবাল বাহার, কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সামসুদ্দোহা, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা) মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান বক্তব্য রাখেন। মানবপ্রাচীরে অংশ নিয়ে মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এক মানবতাবাদী বিশ্ব রাজনীতিবিদ ছিলেন। তিনি তরুণ প্রজন্মকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে সমাজ ও দেশ থেকে দুর্নীতি, মাদক ও জঙ্গিবাদ চিরতরে অবসানে অবদান রাখার আহ্বান জানান।
এদিকে চট্টগ্রাম-১১ আসনের স্বাধীনতা নারী শক্তির উদ্যোগে বন্দর রিপাবলিক ক্লাবে শোকদিবসের আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এম এ লতিফ এমপি বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতায় বঙ্গবন্ধুর অবদানকে অস্বীকার করা মানে দেশের স্বাধীনতাকে অস্বীকার করা। তিনি দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে জনগণের সেবার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর প্রকৃত সোনার বাংলাদেশ গড়ার জন্য বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পতাকাতলে দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান ।
চট্টগ্রাম ওয়াসার উদ্যোগে খতমে কোরআন, মিলাদ মাহফিল, চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা এবং আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। মিলাদ ও দোয়া মাহফিলে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারবর্গের আত্মার মাগফেরাত এবং দেশ ও জাতির সমৃদ্ধি কামনা করা হয়। এতে ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী একেএম ফজলুল্লাহসহ ঊর্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (চুয়েট) শোক দিবসে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার উদ্বোধন করেন চুয়েটের ভিসি অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম। অনুষ্ঠানমালায় ছিল ‘মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশের স্বাধীনতা’ শীর্ষক কর্ণারের উদ্বোধন, আলোচনা সভা, বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত।
আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রাম (আইআইইউসি)’র উদ্যোগে জাতীয় শোক দিবসের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন ভিসি প্রফেসর কেএম গোলাম মহিউদ্দিন। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু কেবল স্বাধীনতা এনে দেননি দেশের স্বাধীনতা রক্ষাও করেছিলেন। আইআইইউসি’র ভারপ্রাপ্ত প্রো-ভিসি প্রফেসর ড. দেলাওয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন রেজিস্ট্রার কর্নেল (অবঃ) মুহাম্মদ কাসেম, কলা ও মানবিক অনুষদের ডীন প্রফেসর মুহাম্মদ হুমায়ুন কবীর প্রমুখ।
চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের উদ্যোগে আলোচনা সভা প্রেস ক্লাব সভাপতি কলিম সরওয়ারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। এতে বক্তব্য রাখেন সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি রিয়াজ হায়দার চৌধুরী, প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি আলী আব্বাস, প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শুকলাল দাশ প্রমুখ। পরে মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
চট্টগ্রাম জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া কামিল মাদরাসায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভা, দোয়া মাহফিল অধ্যক্ষ আল্লামা হাফেয মুহাম্মদ সোলাইমান আনছারীর সভাপতিত্বে জামেয়া ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত হয়। জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া মহিলা মাদরাসার উদ্যোগে অনুরূপ কর্মসূচি পালিত হয়।
বন্দর তৈয়্যবিয়া ফাযিল মাদরাসায় জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা মাদরাসার অধ্যক্ষ মুহাম্মদ বদিউল আলম রিজভির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। বায়তুশ শরফ আদর্শ কামিল মাদরাসার উদ্যোগে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন মাদরাসার অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. সাইয়েদ মুহাম্মদ আবু নোমান।
ইউএসটিসির উদ্যোগে শোক দিবসে কোরআন খতম মিলাদ ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। ভিসি প্রফেসর ডাঃ প্রভাত চন্দ্র বড়–য়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন প্রো-ভিসি প্রফেসর ড. নুরুল আবছার, বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল হাসপাতালের মহাপরিচালক ডা. বদিউল আলম প্রমুখ। চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ভার্সিটির উদ্যোগে খতমে কোরআন, বিশেষ মোনাজাত ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন ভিসি প্রফেসর ড. গৌতম বুদ্ধ দাশ।
রাজশাহী ব্যুরো জানায়, শোক আর বিনম্র শ্রদ্ধায় রাজশাহীতে পালিত হলো জাতীয় শোক দিবস। দিবসটি উপলক্ষে দিনভর সরকারি-বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠানগুলো জাতীয় শোক দিবসের নানা কর্মসূচীর আয়োজন করে। জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে জেলা শিল্পকলা অ্যাকাডেমির সামনে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন রাজশাহী-২ (সদর) আসনের এমপি ও বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশাসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা। পরে জেলা প্রশাসনের আয়োজনে নগরীতে শোক র‌্যালী বের করা হয়। র‌্যালী শেষে শিল্পকলা একাডেমিতে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। সকালে রাজশাহী নগরের কুমারপাড়ায় স্বাধীনতা চত্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীসহ বিভিন্ন সামাজিক ও পেশাজীবী সংগঠনের নেতৃবন্দ। পরে নগর আওয়ামী লীগের কার্যালয় থেকে শোক র‌্যালী বের করা হয়। জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ১৫ আগস্টের প্রথম প্রহরে মঙ্গলবার রাত ১২টা ১ মিনিটে রাজশাহী মহানগরীর ল²ীপুর মোড়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ অর্পণের মধ্যে দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছে জেলা আওয়ামী লীগ। জেলা জজশিপ ও আইনজীবী সমিতির যৌথ উদ্যোগে আদালত চত্তরে আলোচনা সভা দোয়া মাহফিল হয়। আয়োজন ছিল শিল্পকলা একাডেমী চত্তর ও আদালত চত্তরে স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসুচি। রেডক্রিসেন্ট রক্তকেন্দ্রের কর্মীরা এতে অংশ নেয়।
এছাড়াও শোক দিবসের অন্যান্য কর্মসূচির মধ্যে ছিল শিশু দিবসের ওপর কবিতা পাঠ ও চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা, হামদ ও নাত প্রতিযোগিতা, মিলাদ মাহফিল ও মোনাজাত এবং রক্তদান কর্মসূচী। বিভিন্ন স্থানে প্রদর্শন করা হয়। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে নির্মিত প্রামান্যচিত্র। ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে মাইকে প্রচার করা হয় বঙ্গবন্ধুর ৭ই মাচের ভাষণ ও দুঃস্থদের মাঝে খাবার বিতরণ। সিটি কর্পোরেশনও বিভিন্ন কর্মসুচি পালন করে।
বরিশাল ব্যুরো জানায়, বরিশালসহ সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলে সরকারী ও বেসকারী পর্যায়ে যথাযথ মর্জাদার সাথে জাতীয় শোক দিবস পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষে বরিশাল সহ দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা প্রশাসন বিভিন্ন কর্মসূচী গ্রহণ করে। বরিশাল জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ সহ বিভিন্ন সহযোগী এবং অংগ সংগঠনসমুহ মিলাদ, কোরআনখানী, দেয়া-মোনাজাত ছাড়াও বঙ্গবন্ধু প্রতিকৃতিতে পুস্পমাল্য অর্পনের মধ্যে দিয়ে জাতীয় শোক দিবসের কর্মসূচী পালন করে। নানা কর্মসূচীর মাধ্যমে মূক্তিযোদ্ধা সংসদ সহ অন্যান্য বিভিন্ন সংগঠন শোক দিবস পালন করেছে। শিশু একাডেমী বরিশাল, এ উপলক্ষে শিশু চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগীতার আয়োজন করে। জেলা প্রশাসনের তরফ থেকে বরিশালের বঙ্গবন্ধু উদ্যানে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পন করা হয়। এ উপলক্ষে জেলা প্রশাসনের তরফ থেকে গতকাল সকাল ১১টায় বরিশাল টাউন হলে আলোচনা সভারও আয়োজন করা হয়। এ ছাড়াও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু সহ ১৫আগষ্টের শহীদানদের রুহের মাগফিরাত কামনা করে মিলাদ ও দোয়া মাহফিল এবং কবিতা পাঠ, রচনা ও চিত্রাংকন প্রতিযোগীতা ছাড়াও হমদ-নাত সহ বঙ্গবন্ধুর জীবনী ভিত্তিক বক্তৃতা প্রতিযোগীতারও আয়োজন করা হয়। জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে শহিদ আবদুর রব সেরনিয়াবাত বরিশাল প্রেস ক্লাব দুদিনব্যাপী কর্মসূচী পালন করছে। শোক দিবসের সকালে প্রেস ক্লাব ভবনে জাতীয় পতাকা ও কালো পতাকা উত্তোলন করা হয়। এছাড়াও কালো ব্যাজ ধারন সহ বঙ্গবন্ধু ও শহিদ আবদুর রব সেরনিয়াবাতের প্রতিকৃতিতে পুস্পার্ঘ অর্পন করা হয়। আজ (বুধবার) দুপুরে প্রেস ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য শহিদ আবদুর রব সেরনিয়াবাত সহ ১৫আগষ্টের শহিদানদের স্মরনে প্রেস ক্লাবে আলোচনা সভা এবং দোয়া মোনাজাতেরও আয়োজন করা হয়েছে।
সিলেট অফিস জানায়, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জ্ঞাপনের মাধ্যমে সিলেটে পালিত হয়েছে জাতীয় শোক দিবস। দিবসটি উপলক্ষে বাংলাদেশ আওয়মীলীগ ও বিভিন্ন সংগঠন বিস্তারিত কর্মসূচী পালন করে। দিবসটি উপলক্ষে মঙ্গলবার সকালে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিকে ফুল দিয়ে বিভিন্ন পেশার মানুষ শ্রদ্ধা জানান। তাছাড়াও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিকসহ বিভিন্ন সংগঠনের উদ্যোগে আয়োজন করা হয় নানা কর্মসূচি। এসবের মধ্যে ছিলো আলোচনা সভা, কাঙ্গালি ভোজ, দোয়া মাহফিল, শোকর‌্যালি, চিত্রাঙ্কন ও রচনা প্রতিযোগিতা ইত্যাদি
বৃষ্টি উপেক্ষা করে সকালে সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ, জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, সিলেট জেলা প্রেসক্লাব, উইমেন্স চেম্বার ও ফটো জার্নালিষ্ট এসোসিয়েশনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা। দুপুরে নগরীর ধোপাদিঘীরপাড়স্থ হাফিজ কমপ্লেক্সে সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে আয়োজন করা হয় কাঙ্গালী ভোজ। প্রায় একই সময়ে রিকাবীবাজারস্থ কবি নজরুল অডিটোরিয়ামে সিলেট জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে আলোচনা সভায় বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্ম নিয়ে আলোচনা করেন বক্তারা। এদিকে, দিবসের প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধুর শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুস্পস্তবক অর্পণ করা হয় শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবি) ক্যাম্পাসে। পরে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। সকালে ক্যাম্পাসে উত্তোলন করা হয় কালো পতাকা। পরে কালো ব্যাজ ধারণ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে দোয়া ও মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অংশগ্রহণ করেন। শোক দিবস উপলক্ষে নগরীর রিকাবীবাজারস্থ কবি নজরুল অডিটোরিয়ামে শিশুদের রচনা ও চিত্রাংকন প্রতিযোগিতার আয়োজন করে সিলেট জেলা শিশু একাডেমী। এছাড়া অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল।
দিনাজপুর অফিস জানায়, যথাযোগ্য মর্যাদায় মঙ্গলবার দিনাজপুরে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদাত বার্ষিকী জাতীয় শোক দিবস পালিত হয়েছে। বন্যার্তদের মাঝে খাদ্য বিতরণ করা হয়েছে। ১৫ আগষ্ট জাতীয় শোক দিবস যথাযোগ্য মর্যাদায় দিনাজপুরের ১৩টি উপজেলার ১০২টি ইউনিয়ন ও ৯টি পৌরসভার ৮৪টি ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের উদ্যোগে বঙ্গবন্ধুর শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয় ও দলীয় পতাকা অর্ধনমিত, কালো ব্যাচ ধারণ, পবিত্র কোরআন খানি, দোয়া মাহফিল এবং বন্যার্তদের মাঝে খাদ্য বিতরণ করা হয়। পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী তাঁর নির্বাচনী এলাকা খানসামা ও চিরিরবন্দর উপজেলায় বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধাঞ্জলী নিবেদন করে দিবসের কর্মসূচীতে অংশ নেন। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান ফুলবাড়ী ও পার্বতীপুরে এবং জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম স্ব-স্ব নির্বাচনী এলাকায় জাতীয় শোক দিবসের কর্মসূচীতে যোগ দেন। সকাল ৯টায় দিনাজপুর জিলা স্কুল থেকে একটি শোক র‌্যালী বের হয়ে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধাঞ্জলী নিবেদনে অংশ নেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান, জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম, জেলা প্রশাসক মীর খায়রুল আলম, পুলিশ সুপার মোঃ হামিদুল আলমসহ আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ।
স্টাফ রিপোর্টার, নরসিংদী থেকে জানান, নরসিংদীতে যথাযোগ্য মর্যাদায় জাতীয় শোক দিবস পালিত হয়েছে। নরসিংদী জেলা প্রশাসন, জেলা আওয়ামী লীগ, পৌরসভা আওয়ামী লীগ, আওয়ামী যুবলীগ, জেলা স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ, জেলা পূজা উদযাপন কমিটি, সুইড বুদ্ধি প্রতিবন্ধী স্কুল, ঐক্য ন্যাপসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন পৃথকভাবে কর্মসূচী পালন করেছে। সকালে জেলা প্রশাসক ড. সুভাষ চন্দ্র বিশ্বাস ও পুলিশ আমেনা বেগমের নেতৃত্বে জেলা প্রশাসনের একটি র‌্যালী বের করা হয়ে। স্বাচিপ জেলা কমিটির সভাপতি ডা. মোজাম্মেল হক কমল, সাধারণ সম্পাদক ডা. সাজেদুল হক অপু, নরসিংদী জেলা হাসপাতালের আরএমও ডা. মিজানুর রহমান প্রমুখ। জেলা আওয়ামী যুবলীগ আয়োজিত সভায় যুবলীগের সভাপতি বিজয় কৃষ্ণ গোস্বামীর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী লে: কর্ণেল (অব:) মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম হীরু বীর প্রতিক। বক্তব্য রাখেন, মাহমুদুল হাসান শামীম নেওয়াজ প্রমুখ।
চাঁদপুর জেলা সংবাদদাতা জানান, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক ডাঃ দীপু মনি এমপি বলেছেন, স্বাধীনতা সংগ্রামে যারা দেশের বিরোধীতা করেছিলো, তারা বার বার দেশকে পিছিয়ে দিতে চেষ্টা করেছে। সেই স্বাধ



 

Show all comments
  • সিফাত ১৬ আগস্ট, ২০১৭, ৪:০৪ এএম says : 1
    তাঁর রুহের মাগফিরাত কামনা করছি
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: প্রধানমন্ত্রী


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ