ইভিএম-এ ভোট কেন?
আগামী জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম-এ ১৫০ আসনে ভোট গ্রহণের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার। কাকতালীয় কিনা জানি না, ১৫০ সংখ্যাটা আমাদের এর আগে চিনিয়েছিলেন রকিবুল
মোহাম্মদ আবু নোমান : ধর্ষণ দূর করতে হলে ধর্ষক যাতে রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক সহযোগিতা যাতে না পায় তার ব্যবস্থা করা। বিত্তবানদের অনেকের ছেলে ধর্ষণ করার সুযোগটি পাচ্ছে বিত্তবান হওয়ার কারণে। তারা একটি বলয় তৈরি করে নিয়েছে। অনেক ক্ষেত্রেই সামাজিক ও রাজনৈতিক নেতারা ধর্ষকের পক্ষে দাঁড়ায় এবং ধর্ষিতার ন্যায়বিচার পাইয়ে না দিয়ে মিলমিশ করানোর চেষ্টা করেন। ধর্ষণের মামলা আপোষযোগ্য নয়, এরপরও আপোষ হতে বাধ্য হয় ভুক্তভোগিরা। সমাজের উঁচু তলার এই মানুষদের চিন্তভাবনার পরিবর্তন দরকার।
সামাজিক মূল্যবোধের অবক্ষয়, মাদকসক্তির, অসাধু বিত্তবানদের ক্ষমতায়ন, ইন্টারনেটে পর্নোগ্রাফির ব্যাপক প্রসার এবং বিকৃত মানসিকতা ইত্যাদি কারণে ধর্ষণের সংখ্যা দিনকে দিন বাড়ছে। অভিভাবকদের এসব বিষয়ে সচেতন হতে হবে। কারণ, অধিকাংশ ঘটনাই তাদের অসচেতনতার কারণে ঘটে। এজন্য অভিভাবকদের খেয়াল রাখতে হবে সন্তান যাতে কোনো বিপদের সম্মুখীন না হয়। কারণ ধর্ষণকারী সুযোগ ও পরিবেশ খোঁজে। ধর্ষণকারীকে সেই সুযোগটি দেয়া যাবে না।
দেশে রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়ন বাড়ছে। কালো টাকার দৌরাত্ম্য শক্তিশালী হচ্ছে। দুর্বৃত্তায়নে রাজনীতি দিনে দিনে যত পেশীনির্ভর, কালো টাকানির্ভর হচ্ছে ততই নানা অপরাধের ঘটনা বাড়ছে। মাদকের মতো ধর্ষণকেও না বলতে হবে। ধর্ষণ এবং ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনাগুলোতে বিশেষভাবে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার স্বচ্ছ, দায়বদ্ধ ও ইতিবাচক ভ‚মিকা একান্ত প্রয়োজন। প্রশাসন দ্রুত পদক্ষেপ নিতে গিয়ে প্রায়ই তথাকথিত ওপর মহলের চাপের কথা বলে। এ ওপর মহলের অর্থ হতে পারে রাজনৈতিক প্রভাবশালী ব্যক্তি, হতে পারে দলীয় স্বার্থ, হতে পারে রাজনৈতিক খেলার প্রক্রিয়া, বিত্তবান কিংবা সমাজের উচ্চ শ্রেণীর চাপ। ওপর মহলের চাপের সমস্যা যতদিন দূর না হবে, ততদিন মেয়েরা নিরাপদ জীবন পাবে না।
ধর্ষণ মামলায় আইনের ব্যবস্থা খুবই দুর্বল। এছাড়া সামাজিক, রাজনৈতিক ক্ষমতাশীল ব্যক্তিদের ছত্রছায়ায় থাকায় ধর্ষণকারীরা ভয় পাচ্ছে না। তারা এরকম ঘৃণা অপরাধ করেও ভাবে তাদের কিছু হবে না। বগুড়ায় ও ঢাকার বনানী হোটেলে ধর্ষণের শিকারের ঘটনায় দেখা গেছে, পুলিশ কত সময় পর মামলা নিয়েছে। রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নের কারণে ধর্ষণকারীরা ভাবে নারীদের সঙ্গে যা কিছু তাই করা যেতে পারে।
সন্তান বাবা-মায়ের কাছ থেকে নৈতিকতার শিক্ষা নেয়। আধুনিক যুগের অভিভাবক তার ১৪/১৫ বছরের ছেলে অথবা মেয়ের হাতে দামি মোবাইল সেট তুলে দেয়। মোবাইলের মাধ্যমে ইন্টারনেটে তারা অনেক পর্নোগ্রাফি দেখছে সে খবর অভিভাবক রাখেন না। যত উন্নত প্রযুক্তি আসছে সমাজে নৈতিকতা তত কমছে। তরুণদের মধ্যে নৈতিকতার শিক্ষা পরিবার থেকে দিতে হবে। তাদের ছেলেবেলা থেকে ভালো ভালো বই পড়াতে হবে। সুস্থ স্বাভাবিক জীবনের দিকে এগিয়ে দিতে হবে। এভাবে সমাজ থেকে ধর্ষণের মতো অপরাধ দূর হতে পারে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।