Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বাজারে আসছে প্রচুর ইলিশ কমছে না দাম

শ্রাবণের ভরা পূর্ণিমায় জেলেদের জালে ইলিশের ঝাঁক

| প্রকাশের সময় : ১২ আগস্ট, ২০১৭, ১২:০০ এএম

আমিনুল হক, মীরসরাই (চট্টগ্রাম) থেকে : যেন এমন ইলিশের অপেক্ষায় দিন গুনছিল জেলেরা। চলছে ভরা মৌসুম, তবু নদীতে ইলিশের দেখা মিলছিল না কদিন আগেও। অবশেষে চলতি সপ্তাহ জুড়ে শ্রাবণের ভরা পূর্ণিমাকে কেন্দ্র করে জেলেদের জালে ধরা দিল ইলিশের ঝাঁক। সারাদেশের পাশাপাশি মীরসরাইয়ের হাটবাজারে দেখা মিললো বড় বড় সাইজের ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ। কিন্তু এর পর ও দামে নেই সুবিধা। চড়া দামেই কিনতে হচ্ছে ক্রেতাদের। বিক্রেতারা ও বলছে কি করবো আমরা ও চড়া দামে ঘাট থেকে বাজারে আনতে হয়েছে। প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায় দেশের চাঁদপুর, ভোলা, বরিশাল ও পিরোজপুরের পাড়ের হাটের ইলিশ মাছের আড়তগুলোয় ব্যবসায়ীরা এখন ইলিশের ঝাঁক বিকিকিনি নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। কেউ বা মজুদ করছেন । কেউ রপ্তানির প্রক্রিয়ায় ব্যস্ত। মীরসরাইয়ের সাহেরখালী ইলিশঘাটের জেলে পরিমল জলদাস জানায় জ্যৈষ্ঠ ও আষাঢ় মাস ধরে এবার আমরা হতাশই ছিলাম। পুরো মৌসুমে জাল-নৌকা নিয়ে নদীতে গিয়েছি। কিন্তু জালে ইলিশ মাছ ধরা পড়ছিল না। সামান্য নামে মাত্র ছোট ও মাঝারি দুএক খাচা ইলিশ নিয়ে ফিরেছি। কিন্ত গত কয়েকদিন ধরে আমি সহ সবাই খুশি ঝাঁকে ঝাঁকে মাঝারি ও বড় ইলিশ পেয়ে। এদিকে আবার মিরসরাই বাজারের ক্রেতা সুদর্শন রায় জানালেন কিন্তু দাম তো কমলো না। বড় সাইজের একটা ইলিশ হাজার টাকার নিচে মিলছে না। এক কেজি হলেই হাজার টাকা। একটু ছোট হলে ৬০০ শত থেকে ৭০০ টাকা। আর ছোট হলে ৪শত টাকা। দরিদ্র মানুষ তো তবু ও ইলিশের স্বাধ নিতে পারছে না দুঃখ করে বললেন স্কুল শিক্ষক সাইফুদ্দিন শাহিন।
মীরসরাইয়ের মৎস সম্পদ কর্মকর্তা মাহমুদুর রহমান বলেন শ্রাবণের ভরা পূর্ণিমা থেকে আরো কয়েক দফা ভালো ইলিশ পাওয়া যাবে আশা করা যাচ্ছে। তিনি বলেন পূর্ব থেকে এখন বড় সাইজের ও আরো ব্যাপক ইলিশ এর সফলতার কারন হলো মা ইলিশ সুরক্ষা ও ডিম ছাড়ার পরিবেশ সৃষ্টি করায়। তিনি আরো বলেন আশা করা যাচ্ছে আরা অন্তঃত ২২ দিন বড় বড় সাইজের এতো ইলিশ জেলেরা ধরতে পারবে যে এরপর আবার বন্ধ করা হলে তখন বসে বসে খেতে পারবে। কিন্তু মূল্য নির্ধারনের ক্ষেত্রে তিনি সরকারি কোন নির্দেশনা না থাকায় কোন মন্থব্য করতে পারছেন না বলে জানান।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের দেওয়া তথ্য মতে, ২০১৪-১৫ অর্থবছর তা ৪ লাখ মেট্রিক টন ছাড়িয়ে যায়। ২০১৫-১৬ অর্থবছর দেশে ইলিশের উৎপাদন ছিল ৪ লাখ ২৭ হাজার মেট্রিক টন। বিশেষজ্ঞরা আরো বলছেন, এবার ইলিশের জোয়ারে আরো মাছ আসবে।’, ‘নদীতে ইলিশ আছে, এতে কোনও সন্দেহ নেই। প্রাপ্ত তথ্যে আরো জানা যায় ইলিশের ‘স্বর্গরাজ্য’ খ্যাত ভোলার তেঁতুলিয়া, পটুয়াখালীর পায়রা, চাঁদপুরের মেঘনা ও ডাকাতিয়া নদীর মোহনায় এখন ইলিশের হাকঁডাকে ব্যস্ত সবাই । কিন্তু সেখানে ও দাম কমেনি। বড় বড় ইলিশ সবই বিদেশে রপ্তানির জন্য নিয়ে নিচ্ছে পাইকাররা।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় সূত্র থেকে জানা যায় বিশ্বের মোট ইলিশের ৬০ ভাগই উৎপাদিত হয় বাংলাদেশে। আর দেশের নদ-নদীতে ধরা পড়া মাছের ১২ শতাংশই ইলিশ। বাংলাদেশের জিডিপিতে (মোট দেশজ উৎপাদন) এর অবদান এক শতাংশ। এক মৌসুমে মা ইলিশ রক্ষায় নদীর পরিবেশ, জাটকা সংরক্ষণ ও অভয়াশ্রম নিশ্চিত করতে পারলে বাংলাদেশে বছরে ইলিশের বাণিজ্য হতো কমপক্ষে ২৫ হাজার কোটি টাকা। আর এইবার সেই লক্ষমাত্রা ও অর্জনের সম্ভাবনা রয়েছে বলে ও জানা যায়। তবে তাই বলে কি দেশের দরিদ্র সাধারন ক্রেতারা পাবে না ইলিশের স্বাধ। এই বিষয়ে ও ভাবা দরকার বলে মনে করছে সাধারন পর্যবেক্ষক মহল।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ