ইভিএম-এ ভোট কেন?
আগামী জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম-এ ১৫০ আসনে ভোট গ্রহণের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার। কাকতালীয় কিনা জানি না, ১৫০ সংখ্যাটা আমাদের এর আগে চিনিয়েছিলেন রকিবুল
সানজিদা ইয়াসমিন তুলি : সেনাবাহিনীর প্রধান দায়িত্ব সার্বভৌমত্ব ও রাষ্ট্রের অখন্ডতা রক্ষা করা। এ ছাড়াও সেনাবাহিনী আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা প্রদান করে থাকে। যে কোন ধরনের বিপর্যয় ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা ও জাতি গঠনে সেনাবাহিনী উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা থেকে শুরু করে দেশে ও বিদেশে শান্তি রক্ষায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সুনাম বিশ^ব্যাপী। বর্তমানে বাংলাদেশে সবচেয়ে আলোচিত বিষয় নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েন। নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সংলাপে প্রায় সবাই নির্বাচনকে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য করার জন্য সেনাবাহিনী মোতায়নের পক্ষে মত দিয়েছেন। দেশের বেশিরভাগ মানুষও চায় নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হোক যাতে ভোটাররা নির্ভয়ে ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে পারে। তাদের বক্তব্য, নির্বাচনে সেনাবাহিনী ব্যবহার করা হলে মানুষ নির্বাচন নিয়ে আগ্রহী হবে, নির্ভয়ে ভোট কেন্দ্রে যাবে ও ভোট দেবে। যদিও সেই ভোটে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে কিনা তা নির্ভর করবে নিরপেক্ষ সরকার ও ভোটের পরিবেশের উপর। বর্তমানে দেশের যে অবস্থা তাতে মানুষ কিছুটা আশ^স্ত হবে যদি সেনাবাহিনী পুরোপুরিভাবে ব্যবহার করা হয়। যারা নির্বাচনে সেনাবাহিনী ব্যবহারের বিপক্ষে মত দিচ্ছেন তারা বলছেন, নির্বাচন করা সেনাবাহিনীর কাজ নয়। কিন্তু প্রশ্ন হলো, সেনাবাহিনী দিয়ে যদি রাস্তাঘাট তৈরি করা, দুগ্ধ খামার পরিচালনা করা, সুমদ্র সৈকত তৈরি করা, সেতু তৈরি করা, দেশের সব বড় বড় সরকারি হাসপাতাল পরিচালনা করা এবং নির্ভুল ভোটার তালিকা করা যায় তাহলে নির্বাচনে শান্তি ও শৃঙ্খলা রক্ষায় সেনাবাহিনী ব্যবহার করা যাবে না কেন? লক্ষ করি, যারা নির্বাচনে সেনাবাহিনী ব্যবহার নিয়ে বিপক্ষে মতামত দেন তারাই আবার নির্ভুল ভোটার তালিকা তৈরির জন্য সেনাবাহিনীর প্রশংসা করেন। যারা ভোটার তালিকা তৈরি করে প্রশংসা পাবে, তারা ভোটের দিন কাজ করে কেন প্রশংসা পাবে না? তার পরেও তারা বলেন, নির্বাচনকালীন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংজ্ঞায় সেনাবাহিনী নেই। তাহলে বলতে হয়, নির্বাচনে র্যাব-বিজিবি ব্যবহার করা হয়। সেনাবাহিনীর একটা অংশ তো র্যাব-বিজিবিতেও কাজ করে। তাই র্যাব-বিজিবির মাধ্যমে যদি সেনাবাহিনী ব্যবহার করা যায়, তাহলে সরাসরি সেনাবাহিনী ব্যবহারে অসুবিধা কোথায়?
আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, সেনাবাহিনী বিতর্কিত হবে, তাহলে তারা কি ধরেই নিয়েছেন, নির্বাচনের দিন ভোট কারচুপি ও ভোট ডাকাতি হবে, তখন সেনাবাহিনী বাধা দিলেও বিতর্কিত হবে, বাধা না দিলেও বিতর্কিত হবে? বিগত জাতীয় সংসদ নির্বাচনগুলোতে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে এবং সেগুলোতে সেনাবাহিনীর ব্যবহার করায় তেমন বিতর্ক হয়েছে বলে আমাদের জানা নেই। আওয়ামী লীগের নেতারা আবার এও বলছেন নির্বাচনে সেনাবাহিনী স্টাইকিং ফোর্স হিসাবে ক্যান্টনম্যান্টের ভিতরে অবস্থান করবে। সেনাবাহিনীতো ক্যান্টনম্যান্টের ভিতরেই থাকে, এটা তো নতুন কিছু না। কিন্তু নির্বাচনে কারচুপি হলে, ভোট ডাকাতি হলে ও মারামারি হলে সেনাবাহিনী ক্যান্টনম্যান্টের ভেতরে অবস্থান করে খুব বেশি ভূমিকা পালন করতে পারবে কি?
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।