পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
কলাপাড়া (পটুয়াখালী) উপজেলা সংবাদদাতা : দেশের অন্যতম মৎস্য বাজারজাত কেন্দ্র পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার কুয়াকাটা, আলীপুর ও মহিপুর। ইলিশের ভরা মৌসুমে বিদ্যুৎ বিপর্যয়ে ফলে বরফ উৎপাদনে ব্যাহত হচ্ছে। বরফকল মালিকরা জেলেদের চাহিদা মোতাবেক বরফ সরবারহ করতে পারছে না। ফড়িয়া আড়তদাররা চালান করতে পারেনি ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে। এদিকে সাগরে জেলেদের জালে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়লেও তা বরফ সঙ্কটের কারণে সংরক্ষণ করতে পারছেনা আড়ৎদাররা। যার ফলে অনেকটাই পানির দামে ইলিশের বিক্রি করছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।
গত ২-৩ দিন ধরে গভীর সমুদ্র থেকে ধরে আনা ইলিশ সংরক্ষণের ব্যবস্থা না থাকায় এলাকার প্রতিটি মানুষ এক হালি ইলিশ দুইশ থেকে আড়াইশ টাকায় কিনতে পেরেছে এমনটা জানিয়েছেন অসংখ্য ক্রেতা। বর্তমানে সাগরে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়লেও শুধুমাত্র বরফ সংকটে ফিরে আসা জেলেরা পুনরায় ইলিশ আহরণ করতে পারছে না। কেবলমাত্র ভয়াবহ বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে বরফ উৎপাদন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে বরফকল মালিক, আড়তদার সমিতি, জেলে সংগঠন ও মৎস্য ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে এসব তথ্যের সত্যতা পাওয়া গেছে।
মাছধরা ট্রলারের জেলে রুহুল মাঝি বলেন, গভীর সমুদ্রে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ছে। কোন রকম জাল নিয়ে সাগরে যাওয়ামাত্র ট্রলার বোঝাই করে ইলিশ নিয়ে ঘাটে ফেরা যায়। কেবল বরফ নিতে না পারায় নতুন করে সাগরে যাওয়া যাচ্ছে না। ঘাটে অসংখ্য মাছধরা ট্রলার বসে অলস সময় কাটাচ্ছে। একই অভিযোগ উপজেলা জেলে ফিংশিং মাঝি সমিতির সভাপতি নুরু মাঝিসহ রহিম মাঝি, জয়নাল মাঝিও ফারুক মাঝিদের।
ঢাকার কাওরান বাজার থেকে ইলিশ কিনতে মৎস্য ব্যবসায়িদের অভিযোগ, মৎস্য বন্দরে নিরিবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ দেয়া উচিত। প্রতি বছর এখানে ইলিশ কিনতে আসি। মহিপুর আলীপুর থেকে ইলিশ ক্রয় করে দেশের বিভিন্ন বাজারে ট্রাকযোগে নিয়ে বিক্রয় করি, এবার বরফ না থাকায় ইলিশের ভরা মৌসুমেও মূলধন বসে বসে খাচ্ছি। শুধুমাত্র বিদ্যুৎ অভাবে বরফ সঙ্কটে ব্যবসা গুটিয়ে ফিরে যেতে হবে বলে তিনি জানান।
মহিপুর হাওলাদার ফিসের মালিক আঃ জলিল হাওলাদার বলেন, প্রতিদিন অন্তত ৫০টি ট্রাক আসে বরফ নিয়ে। মহিপুর আলীপুরের সামান্য কিছু উৎপাদিত বরফ নিয়ে যাওয়া মাছধরা ট্রলারগুলো থেকে যে ইলিশ পাওয়া যায় সেগুলো সংরক্ষণের জন্য এসব বরফ ব্যবহার করা হয়। ওইসব মোকামে প্রতিক্যান বরফ ১৫০ থেকে ২শ’ টাকায় ক্রয় করলেও ট্রাকযোগে এখানে পৌঁছাতে প্রায় ৫শ’ টাকা খরচ হয়ে যায়। বিদ্যুৎ ব্যবস্থা অত্যন্ত খারাপ থাকায় ইলিশের ব্যবসা এবার থামকে গেছে বলেও মন্তব্য জলিল হাওলাদারের।
মহিপুরের ইলিশের আড়ৎ গাজী ফিস’র মালিক মজনু গাজী জানান, অন্তত দুই হাজার মাছধরা ট্রলার বরফের অভাবে সাগরে মাছ শিকারে যেতে পারেনি। বর্তমানে ৫ শ’ থেকে ৭ শ’ গ্রামের ব্যাপক ইলিশ ধরা পড়ছে সাগরে। আলীপুরের বরফকল আমেনা আইচ প্লান্টের মালিক মো.আনোয়ার হোসেন খান বলেন, কুয়াকাটা, মহিপুর ও আলীপুর মিলিয়ে অন্তত ৩৫টি বলফকল রয়েছে। বিদ্যুতের লোডশেডিং নয়, ২৪ ঘন্টার দু’ঘণ্টাও ঠিকভাবে বিদ্যুৎ পাওয়া যায়না। ঘনঘন বিদ্যুৎ আসা যাওয়ায় প্রতিটি বরফকলের লাখ লাখ টাকার যন্ত্রাংশ নষ্ট হয়ে গেছে। সেই সাথে বিদ্যুৎ বিলের বোঝা তো রয়েছেই। সব মিলিয়ে বিদ্যুতের অভাবে বরফ উৎপাদন একেবারে বন্ধ রয়েছে বলা যায়। মহিপুর মৎস্য আড়ৎদার সমিতির সাধারণ সম্পাদক বাবু নিমাই চন্দ্র দাস বলেন, প্রতি বছর ইলিশ মৌসুম এলেই বিদ্যুৎ নিয়ে নানা টালবাহানা করা হয়।
বিদ্যুতের ভয়াবহ বিপর্যয়ের কারণ সম্পর্কে পটুয়াখালী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) মনোহর কুমার বিশ্বাস বলেন, ঘনঘন বিদ্যুৎ যাওয়ার বিষিয়টি ছিল জাতীয় গ্রিডের সমস্যা। এছাড়া দু’একদিন আগেও আমরা চাহিদার ২৫ শতাংশ বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারিছি বলে তিনি সাংবাদিকদের জানান।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।