Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

গৃহকর্ত্রীসহ ৩ জন গ্রেফতার ময়নাতদন্তে আঘাতের চিহ্ন

বনশ্রীতে গৃহকর্মীর মৃত্যু ঘটনায় দু’টি মামলা

| প্রকাশের সময় : ৬ আগস্ট, ২০১৭, ১২:০০ এএম

বিশেষ সংবাদদাতা : রাজধানীর বনশ্রী এলাকায় গৃহকর্মী লাইলী মৃত্যুর ঘটনায় পৃথক দু’টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ গৃহকর্তা মাইনুদ্দীন ও বাড়ির তত্ত¡াবধায়ক তোফাজ্জল হোসেন টিপুর পর গৃহকর্ত্রী শাহনাজকেও গ্রেফতার করেছে। ঘটনার দিন শুক্রবারই মাইনুদ্দিন ও টিপুকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। গতকাল শনিবার দুপুরে আটক হন গৃহকর্ত্রী। ময়নাতদন্তে গৃহকর্মী লাইলীর মাথা ও গলায় আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে বলে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক জানিয়েছেন। গ্রেফতারকৃতদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে জানিয়েছে খিলগাঁও থানা পুলিশ। ওই বাড়ির গৃহকর্তা মাইনুদ্দিন ও বাসার কেয়ারটেকার কামালের তিন দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। গতকাল ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে তাদের সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করা হলে বিচারক এ কে এম মঈন উদ্দিন সিদ্দিকী এ আদেশ দেন। এছাড়াও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গৃহকর্ত্রী শাহনাজ বেগমকে জেল হাজতে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। খিলগাঁও থানার এসআই মনসুর আহমেদ বলেন, গত শুক্রবার রাতে এ ঘটনায় পৃথক দু’টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। একটি মামলা করেছেন নিহত লাইলী আক্তারের ভাসুর শহীদুল ইসলাম। তিনি এই মামলায় তিনজনকে আসামি করেছেন। মামলাটির তদন্ত করছেন খিলগাঁও থানার এসআই মনজুর রহমান। অপর মামলাটি করেছেন খিলগাঁও থানার এসআই মনজুর হোসেন। তিনি নিজেই মামলাটির তদন্ত করছেন। এই মামলায় অজ্ঞাত তিন থেকে চারজনকে আসামি করা হয়েছে। এই মামলায় স্থানীয়দের বাড়িতে হামলা, ভাঙচুরের ঘটনায় কর্তব্য কাজে বাধা দেয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে। গত শুক্রবার সকালে বনশ্রীর চার নম্বর সড়কে জি-বøকের একটি বাসায় গৃহকর্মী লাইলী আক্তারের মৃত্যুকে কেন্দ্র্র করে এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। লাইলীকে হত্যার অভিযোগ এনে তার পরিবার ও এলাকার বিক্ষুব্ধ লোকজন ওই বাড়িতে হামলা চালায় এবং সড়কে গাড়ি ভাঙচুর করে। দফায় দফায় পুলিশের সঙ্গে স্থানীয় লোকজনের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া চলে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ কয়েক দফা ফাঁকা গুলি ছোড়ে। রাত ১০টার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ। গৃহকর্তা মাইনুদ্দিনের দাবি, লাইলী বাসায় কাজ করতে আসার পর বাড়ির একটি ঘরে ঢুকে দরজা ভেতর থেকে বন্ধ করে দেয়। পরে দরজার ছিটকিনি ভেঙে ঘরের ভেতরে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় তাকে পাওয়া যায়। মৃত গৃহকর্মী লাইলীর ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। গতকাল শনিবার বেলা সাড়ে ৩টার দিকে ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করেন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডাক্তার সোহেল মাহমুদ। তিনি জানান, লাইলীর ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করেছি। মাথায় ও গলায় আঘাতের চিহ্ন পেয়েছি। তার গলা থেকে টিস্যু সংগ্রহ করা হয়েছে। মৃত্যুর আগে ধর্ষিত হয়েছে কি না, সে জন্য হাইভেজনাল সফট, ভিসেরা এবং ডিএনএ প্রোফাইলিংয়ের জন্য নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষাকাগারে পাঠানো হবে। সম্পূর্ণ রিপোর্ট হাতে পেলে আত্মহত্যা নাকি হত্যা তা নিশ্চিত করে বলতে পারব। এর আগে মৃত লাইলীর সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করেন খিলগাঁও থানার এসআই মনজুর রহমান। তিনি সুরতহাল প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন, মৃত লাইলীর গলায় ডান দিকে অর্ধ চন্দ্রাকৃতি দাগ আছে। এ ছাড়া শরীরের কোথাও দাগ দেখা যায়নি। আরো উল্লেখ করেন মৃত লাইলীর মৃত্যু আগে ধর্ষিত হয়েছে কি না চিকিৎসকের তা জানার কথা। নিহতের দেবর জামাল হোসেন জানান, ময়নাতদন্তের পর লাশ দেশের বাড়ি কুড়িগ্রামে নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানেই তাকে দাফন করা হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ