পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
মিক : মার্কিন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত জেনারেল জন এফ. কেলি ট্রাম্পের নতুন চিফ অব স্টাফ হয়েছেন। তার নিয়োগের মধ্য দিয়ে হোয়াইট হাউস আরো একবার ট্রাম্প প্রশাসনের সম্মুখসারিতে জেনারেলদের প্রতিষ্ঠার ইচ্ছা প্রদর্শন করল যাদের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প পালাক্রমে প্রশংসা ও নিন্দা করেন।
কেলি এর আগে ট্রাম্প প্রশাসনে হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগের প্রধান ছিলেন। তিনি বর্তমানে ট্রাম্প প্রশাসনে কর্মরত তিনজন জেনারেলের একজন্ অন্য দু’জন হচ্ছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেমস ম্যাটিস ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা এইচ.আর. ম্যাকমাস্টার। ট্রাম্প এর আগে সাবেক জেনারেল মাইকেল ফ্লিনকে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা নিয়োগ করেছিলেন। কিন্তু রাশিয়া কেলেংকারির ঘটনায় তিনি পদত্যাগ করেন। বর্তমান সিআইএ পরিচালক মাইক পম্পিও সেনাবাহিনীর একজন সাবেক ট্যাংক অফিসার।
প্রশ্ন উঠেছে, ট্রাম্পের সামরিক বাহিনী-ভারি প্রশাসন কি অসাধারণ কিছু?
ট্রাম্প বেশ কয়েকজন জেনারেলকে হোয়াইট হাউসে এনেছেন। তবে সাবেক জেনারেল জর্জ ওয়াশিংটনের সময় অভিষেকের সময় থেকেই নির্বাহী শাখায় সামরিক অফিসারদের একটি স্থান ছিল। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিষয়ক ইতিহাস লেখক মাইক পার্ডি বলেন, আপনি অতীতের দিকে ফিরে তাকান, দেখবেন মন্ত্রীসভার অনেকে এবং বহু লোকই সামরিক বাহিনীর লোক ছিলেন। তিনি বলেন, বলা হচ্ছে যে হোয়াইট হাউসে ও মন্ত্রীসভায় সম্প্রতি অবসরপ্রাপ্ত জেনারেলদের নিয়োগ করে ট্রাম্প ব্যতিক্রমী কাজ করেছেন। এখানে বিশেষ ভাবে উল্লেখযোগ্য যে ২০১৩ সালে অবসরপ্রাপ্ত জেনারেল ম্যাটিসের নিয়োগ ১৯৪৭ সালের জাতীয় নিরাপত্তা আইন ও তার বিধির লংঘন যাতে বলা হয়েছে যে সকল প্রতিরক্ষামন্ত্রীকেই অবশ্যই ন্যূনতম ৭ বছরের অবসরপ্রাপ্ত হতে হবে।
ম্যাটিসের নিয়োগকালে আইন এড়ানো বিষয়ে কংগ্রেস কর্তৃক একটি ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন ছিল যেমনটি এর আগে একবারই মাত্র করা হয়েছিল যখন প্রেসিডেন্ট হ্যারি এস. ট্্রুম্যান ১৯৫০ সালে জর্জ মার্শাালকে প্রতিরক্ষামন্ত্রী নিয়োগ করেন। প্রতিরক্ষা দফতরের ওয়েবসাইটে মার্শালের জীবনীতে উল্লেখ করা হয় যে, প্রতিরক্ষামন্ত্রীর পদটি সুস্পষ্টভাবে বেসামরিক লোকদের জন্য।
পার্ডি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে বেসামরিক লোক দ্বারা সামরিক বাহিনী নিয়ন্ত্রিত হওয়ারর দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। প্রেসিডেন্ট হচ্ছেন সামরিক বাহিনীর সর্বাধিনায়ক। তিনি বলেন, যখন আমরা সামরিক বাহিনীর নেতাদের প্রতিরক্ষা বিভাগের প্রধান হিসেবে পেতে শুরু করলাম তখন তা সামরিক বাহিনীর সামরিক ও বেসামরিক নিয়ন্ত্রণ রেখাকে কলংকিত করতে শুরু করল। আমি মনে করি, এটা ছিল বিপজ্জনক।
সাম্প্রতিক প্রেসিডেন্ট প্রশাসনেও সামরিক বাহিনীর লোকদের দেখা গেছে যদিও ট্রাম্পের হোয়াইট হাউসে যেমন হচ্ছে তখন তেমন পাকাপোক্ত ছিল না। প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা জেনারেল ডেভিড পেট্রাউসকে সিআইএর পরিচালক নিয়োগ করেছিলেন। এছাড়া তিনি অ্যাডমিরাল জেমস বেøয়ারকে জাতীয় গোায়েন্দা সংস্থা এবং সাবেক মেরিন জেনারেল জিম জোনসকে তার প্রথম জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা করেছিলেন। বিমান বাহিনীর সাবেক লে. জেনারেল ব্রেন্ট স্কোক্রফ্ট প্রেসিডেন্ট জেরাল্ড ফোর্ড ও জর্জ এইচ, ডবিøউ বুশের অধীনে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ছিলেন। সাবেক জেনারেল কলিন পাওয়েল জর্জ ডবিøউ. বুশের প্রশাসনে এক বিশেষ স্থান লাভ করেন। তিনি ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগানও পররাষ্ট্র মন্ত্রী হিসেবে সেনাবাহিনীর জেনারেল আলেকজান্ডার হেইগকে নিয়োগ করেছিলেন।
এবিসি নিউজ উল্লেখ করে যে, ট্রাম্পের আগের শেষ প্রেসিডেন্টের প্রশাসনে কমপক্ষে দু’জন সাবেক জেনারেল ছিলেন যেমন ছিল হ্যারি এস. ট্রুম্যানের সময়। তার আগে যে সব প্রেসিডেন্টের প্রশাসনের উচ্চপদে কমপক্ষে দু’জন সামরিক জেনারেল ছিলেন তারা হচ্ছেন প্রেসিডেন্ট রাদারফোর্ড বি. হেয়েস, উইলিয়াম ম্যাকিনলে এবং ইউলিসিস এস. গ্রান্টের ভাইস প্রেসিডেন্ট, যুদ্ধ ও নৌবাহিনী মন্ত্রী ছিলেন সাবেক জেনারেল। তাছাড়া হোয়াইট হাউসের অন্যান্য উচ্চপদেও সামরিক বাহিনীর লোকেরা অধিষ্ঠিত ছিলেন।
প্রেসিডেন্ট বিষয়ক ঐতিহাসিক রিচার্ড নর্টন স্মিথ এক ই-মেইলে বলেন, হোয়াইট হাউসে সামরিক বাহিনীর লোকদের দ্বারা পরিবেষ্টিত ছিলেন এমন কাউকে পেতে আপনাকে প্রেসিডেন্ট গ্রান্টের কাছে যেতে হবে। তিনি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে সামরিক ব্যক্তিদের নিয়োগ করেছিলেন।
স্মিথ আরো বলেন, এ সব মনোনয়ন গ্রান্টের সুনাম হানি করেছিল। গ্রান্টের ব্যক্তিগত সচিব অরভিল ব্যাবোক এবং অভ্যন্তরীণ রাজস্বের তত্ত¡াবধায়ক জন ম্যাকডোনাল্ড উভয়েই ছিলেন জেনারেল। তারা হুইস্কি রিং-এর সাথে জড়িয়ে পড়েন যা সরকারের রাজস্ব বঞ্চিত করার চক্রান্ত করেছিল।
পার্ডি উল্লেখ করেন যে সব প্রেসিডেন্ট সামরিক বাহিনীর লোকদের বিভিন্ন পদে নিয়োগ করেছিলেন তারা নিজেরা সামরিক নেতা ছিলেন। যেমন গ্রান্ট, হেয়েস, ম্যাকিনলে ও অ্যান্ড্রু জনসন। শেষোক্ত জন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল লুইস ক্যাসকে ১৮৩১ সালে যুদ্ধমন্ত্রী নিয়োগ করেন। এসব ঘটনা ট্রাম্পের ঘটনার বিপরীত যিনি সামরিক বাহিনীতে চাকুরি না করেই সামরিক নেতাদের নিয়োগ করেছেন। ট্রাম্পের গোড়ালিতে হাড় বৃদ্ধিকে ধন্যবাদ দিতে হয় যে কারণে তিনি ভিয়েতনাম যুদ্ধে যাওয়া থেকে রেহাই পান।
অনেক সামরিক প্রেসিডেন্ট যেখানে তাদের চারপাশে সতীর্থ সামরিক ব্যক্তিদের দ্বারা পরিবেষ্টিত থাকতেন অন্যরা সেখানে একচেটিয়াভাবে বেসামরিক ব্যক্তি নির্ভর ছিলেন। নর্টন স্মিথের মতে, প্রেসিডেন্ট ডোয়াইট ডি আইজেনহাওয়ার তার মন্ত্রীসভায় একান্তই বেসামরিক লোকদের নিয়োগ করেছিলেন সেখানে প্রেসিডেন্ট ওয়াশিংটন যুদ্ধমন্ত্রী হেনরি নক্স-এর ব্যতিক্রম ছাড়া পুরনো সৈনিকদের প্রতি কোনো আনুকূল্য প্রদর্শনের ব্যাপারে সতর্ক ছিলেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।