বিশেষ সংবাদদাতা, চট্টগ্রাম ব্যুরো : বৃষ্টিপাত ক্রমেই বাড়তে পারে। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় আবহাওয়ার ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে জানা গেছে, আজ (শনিবার) ঢাকা, ময়মনসিংহ, রংপুর, রাজশাহী, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের অনেক জায়গায় এবং চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ী দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টিপাত হতে পারে। এ সময় দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে। মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের উপর মোটামুটি সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারি অবস্থায় বিরাজ করছে। এ অবস্থায় আগামী ৪৮ ঘণ্টায় আবহাওয়ার সামান্য পরিবর্তন হতে পারে। এর পরবর্তী ৫ দিনে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে।
এদিকে সিলেটের সুরমা নদী বেশ কিছুদিন যাবত বিপদসীমার নিচে দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। কিন্তু ভারতের উজান থেকে গত ক’দিনে ঢল নেমে আসে। এ কারণে গতকাল সর্বশেষ প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী সুরমা নদী কানাইঘাট পয়েন্টে ফের বিপদসীমার এক সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র সূত্র জানায়, গত ৩০ ঘণ্টায় সুরমা নদীর উক্ত পয়েন্টে ১৬ সেমি পানি বৃদ্ধি পায়। তাছাড়া যশোরের ঝিকরগাছায় কপোতাক্ষ নদ বিপদসীমার ২৯ সেমি উপরে এবং নেত্রকোনায় কংস নদী এক সেমি উপরে প্রবাহিত হচ্ছিল।
নদ-নদীর পরিস্থিতি সম্পর্কে বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্র সূত্রে জানা যায়, গঙ্গা-পদ্মা নদ-নদীর পানির সমতল হ্রাস পাচ্ছে। অপরদিকে উত্তর জনপদের ব্রহ্মপুত্র এবং সিলেটের সুরমা-কুশিয়ারা নদ-নদীর পানির সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে। যমুনা নদের পানির সমতল স্থিতিশীল রয়েছে। ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদ-নদীর পানির সমতল আগামঅ ২৪ ঘণ্টায় বৃদ্ধি পেতে পারে। গঙ্গা-পদ্মা নদ-নদীর পানির সমতল হ্রাস আগামী ২৪ ঘণ্টায় অব্যাহত থাকতে পারে। সিলেটের সুরমা-কুশিয়ারা নদ-নদীর পানির সমতল বৃদ্ধি আগামী ২৪ ঘণ্টায়ও অব্যাহত থাকতে পারে। ৯০টি পানির সমতল পর্যবেক্ষণ স্টেশনের মধ্যে সর্বশেষ ৩টিতে বিপদসীমার উপরে প্রবাহিত, ৪৪টিতে বৃদ্ধি, ৪০টিতে হ্রাস পায়।
উত্তর-পূর্ব ভারতে অতিবৃষ্টি
গতকাল ভারতীয় আবহাওয়া বিভাগের পূর্বাভাস সূত্রে জানা গেছে, হিমালয় পাদদেশীয় অঞ্চল, গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গসহ উত্তর-পূর্ব ভারতের বিশেষত আসাম, অরুণাচল, মেঘালয়, ত্রিপুরা, মিজোরাম, নাগাল্যান্ড, মনিপুরে আগামী ৮ আগস্ট পর্যন্ত ভারী থেকে অধিক ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে। গতকালও সেসব অঞ্চলে মাঝারি থেকে ভারী কোথাও ভারী থেকে অতিভারী বর্ষণ হয়েছে বলে জানা গেছে। এসব অঞ্চলে বর্ষারোহী দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুমালা ফের সক্রিয় হয়ে উঠেছে। বাংলাদেশের প্রধান নদ-নদীর মূল অববাহিকা উত্তর-পূর্ব ভারতে। এরফলে উজানভাবে অতিবর্ষণ হলেই দেশের নদ-নদী ফুঁসে উঠে। গতকাল সুরমা নদী বিপদসীমা অতিক্রম করে। কুশিয়ারা ও অন্যান্য নদীতেও পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে।