Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বাংলাদেশে অনুমতি নিয়ে কাজ করছেন না ভারতীয় শিল্পীরা

| প্রকাশের সময় : ৫ আগস্ট, ২০১৭, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : বাংলাদেশের নাটক সিনেমায় ভারতীয় অভিনেতা অভিনেত্রীসহ শিল্পী কলাকুশলীরা কিভাবে কাজ করেন? তারা কি ওয়ার্ক পারমিট নিয়ে যথাযথ প্রক্রিয়া মেনে বাংলাদেশে কাজ করতে আসেন?
বাংলাদেশের পরিচালক শিল্পীদের অভিযোগ নাটক সিনেমায় ভারতীয় অভিনেতা অভিনেত্রীসহ শিল্পী কলাকুশলীরা যারা কাজ করেন তাদের অনেকেই যথাযথ প্রক্রিয়া না মেনেই কাজ করছেন। কিছু প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান তাদের অনেককে অনেক সময় বাংলাদেশী হিসেবে দেখিয়ে থাকে বলেও অভিযোগ উঠেছে বাংলাদেশী অভিনেতা ও পরিচালকদের তরফ থেকে।
নিজের অভিনীত একটি সিনেমার মুক্তি পাওয়া উপলক্ষে এখন ঢাকায় রয়েছেন কোলকাতার জনপ্রিয় অভিনেতা ও পরিচালক পরমর্বত চট্টোপাধ্যায়। এর মধ্যেই গণমাধ্যমে খবর এসেছে সত্যজিৎ রায়ের ফেলুদা সিরিজ হবে ঢাকাতেও এবং ৩৫ পর্বের সিরিজটি পরিবেশন করবে বাংলাদেশের একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেল। আর তাতে ফেলুদা চরিত্রে অভিনয় করবে পরমর্বত চট্টোপাধ্যায়। কিন্তু নিয়ম না মেনে বাংলাদেশী নাটকে অভিনয়ের অভিযোগ করে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী বা জিডি করেছেন বাংলাদেশের জাতীয় পুরস্কার পাওয়া পরিচালক ও অভিনেতা গাজী রাকায়েত। তার জিডিতে উল্লেখ করা হয়েছে পরমর্বত চট্টোপাধ্যায় ও ক্যান্ডি প্রডাকশন হাউজের নাম।
রাকায়েত বলেন, এখানে যা হচ্ছে যে বিদেশী শিল্পী কলাকুশলীরা আসছেন টুরিস্ট ভিসায়। এখানে পরমর্বত এর বিরুদ্ধে জিডি নয়। এখানে বাংলাদেশের যে বিশৃঙ্খলা ইন্ডাস্ট্রিতে চলেছে তার বিরুদ্ধে এবং একটা কেইস হিসেবে ক্যান্ডি প্রডাকশন যারা সিরিজটা করছে তাদের কথা উল্লেখ করে জিডি করেছি। যাতে ভবিষ্যতে এমন অবৈধ শুটিং যেন বন্ধ করা হয়। যেহেতু পরমর্বত ওই প্রডাকশনের সাথে জড়িত সেজন্য তার নাম আসছে। আমরা চাই এখানে যারাই কাজ করতে আসবে সেটা তারা দু’দেশের নিয়ম মেনে করবে।
কিন্তু ক্যান্ডি প্রডাকশনের প্রধান শাহরিয়ার শাকিল বলছেন থানায় জিডির ঘটনা তাদের বিস্মিত করেছে কারণ পরমর্বত এখনো ফেলুদা সিরিজের কাজ শুরু করেননি বরং তিনি ঢাকায় এসেছে তার সিনেমার মুক্তি উপলক্ষে। তিনি বলেন, আমরা কিছু প্রমোর শট, লোকেশন ছবি তোলা ও রিহার্সেলের মতো প্রি-প্রডাকশনের কাজ করছি। আমরা যখন শুটিংয়ের কাগজ হাতে পাবো তখনই মূল শুটিং শুরু করবো।
কিন্তু পরমর্বত কি কাজের অনুমতি নিয়ে বাংলাদেশে এসেছেন ? এমন প্রশ্নের সরাসরি উত্তর না দিয়ে তিনি বলেন পরমর্বত এসেছেন তার সিনেমার প্রচারের কাজে। আমরা ফেলুদা তৈরি করবো। যেটার অনুমোদনের জন্য আবেদন করেছি। ৩৫টা গল্প তৈরি করবো। উনি ওয়ার্ক পারমিট, ভিসা নিয়ে যথাযথভাবে আসলেই শুটিং শুরু হবে।
শুধু নাটকই নয়, প্রায়শই বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে ঢাকায় বিশেষ করে ভারতীয় শিল্পীদের নিয়ে নানা ধরনের অনুষ্ঠান করতে দেখা যায়। বলিউডের অভিনেতা শাহরুখ খানসহ নামী দামী অভিনেতা শিল্পীরাও ঢাকায় এসেছেন কনসার্ট সহ নানা অনুষ্ঠানে।
বাংলাদেশের প্রবীণ অভিনেতা ও পরিচালক মামুনুর রশীদ বলছেন এখন শুধু একটি বা দুটি অনুষ্ঠান নয় বরং বাংলাদেশী সিনেমা নাটকে তাদের অংশগ্রহণের প্রবণতা অনেক বেড়েছে কিন্তু এদের বেশিরভাগই নিয়ম মেনে কাজ করছেন না। তার মতে এতে করে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন বাংলাদেশী শিল্পীরা।
তিনি বলেন, এখন নাটকের ক্ষেত্রেও যৌথ প্রযোজনা শুরু হয়েছে যথাযথ অনুমোদন ছাড়া। যেভাবে আগাচ্ছে তাতে আমাদের ইন্ডাস্ট্রি শূন্য হয়ে যাবে। এখানে কেউ কাজ করতে চাইলে যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে ওয়ার্ক পারমিট নিতে হবে। পরিচালক ও অভিনেতা হলে সংশ্লিষ্ট সংগঠনের সদস্য হতে হবে।
মামুনুর রশীদ ও গাজী রাকায়েত দুজনেই অভিযোগ করেন কিছু প্রতিষ্ঠান বিদেশী শিল্পীদের জন্য কোন ধরনের অনুমতিই নেয় না। তারা মনে করেন বিদেশী শিল্পীদের পর্যটন ভিসায় বাংলাদেশে এসে যথাযথ অনুমোদন না নিয়ে নাটক সিনেমায় অংশগ্রহণ ঠেকাতে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আরও সক্রিয় হওয়া উচিত। সূত্র-বিবিসি বাংলা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ