Inqilab Logo

শনিবার ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

বাংলাদেশ প্রতিবেশির সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখায় বিশ্বাসী : প্রধানমন্ত্রী

| প্রকাশের সময় : ৩১ জুলাই, ২০১৭, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ প্রতিবেশি দেশগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্কে বিশ্বাস করে। তিনি বলেন, এটা স্বাভাবিক যে প্রতিবেশিদের সঙ্গে সমস্যা থাকতেই পারে। কিন্তু বন্ধুত্ব এবং সহযোগিতাও চলমান থাকবে এবং যে কোন সমস্যাই আলাপ-আলোচনার মাধ্যমেই সমাধান করা হবে।
গতকাল রবিবার বাংলাদেশে দায়িত্বরত পাকিস্তানের হাইকমিশনার রফিউজ্জামান সিদ্দিকী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তার কার্যালয়ে সৌজন্য সাক্ষাত করতে গেলে তিনি এসব কথা বলেন।
বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রীর প্রেসসচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ভারতের সঙ্গে সীমান্ত এবং সমুদ্র সীমা সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধান করেছে। তিনি বলেন, ভারতের সংসদ সীমান্ত চুক্তি সংক্রান্ত বিলটি সর্ব সম্মসতভাবে অনুমোদন করেছে। ভারতের সঙ্গে সমস্যাটির শান্তিপূর্ণ সমাধান সমগ্র বিশ্বের কাছে একটি উদাহারণ সৃষ্টি করেছে।
শেখ হাসিনা আরো উল্লেখ করেন, একইভাবে মিয়ানমারের সঙ্গে সমুদ্র সীমা সমস্যার সামাধান করা হয়েছে। আমরা শান্তি চুক্তি স্বাক্ষর করে ভারত থেকে ৬২ হাজার শরনার্থী ফিরিয়ে আনার মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রামের বিদ্রোহের অবসান ঘটিয়েছি। দারিদ্রকে এই অঞ্চলের প্রধান শত্রæ উল্লেখ করে তিনি এই অঞ্চলের দেশগুলো থেকে দারিদ্রের মূল উৎপটনে একযোগে কাজ করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
প্রধানমন্ত্রী এ সময় সরকারের বিগত সাড়ে ৮ বছরে দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে উন্নয়নেরও একটি খন্ডচিত্র তুলে ধরেন। তিনি বলেন, আমরা ক্ষমতায় আসার পরই কতগুলো নির্দিষ্ট লক্ষ্য নির্ধারণ করে এগিয়ে যাই। যার মধ্যে রয়েছে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, শিক্ষা এবং জনগণের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা। যে কারণে জনগণ এখন এগুলোর সুফল পাচ্ছে।
শেখ হাসিনা বলেন, এসবের পাশাপাশি আওয়ামী লীগের কার্যকর নীতিমালা বিশেষ করে অর্থনৈতিক নীতিমালার দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়ন নিশ্চিত করেছে। তিনি বলেন, ২০০১ সালে তার সরকার বিএনপি-জামায়াতের কাছে শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের পর তারা রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার অংশ হিসেবে জনকল্যাণ সম্পর্কিত বিভিন্ন কর্মসূচি যেমন সারাদেশে কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবা এবং একটি বাড়ি একটি খামারের মত উন্নয়ন প্রকল্পগুলো বন্ধ করে দেয়।
শেখ হাসিনা এ সময় ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে বঙ্গবন্ধু এভেনিউতে আওয়ামী লীগের সমাবেশে পরিচালিত গ্রেনেড হামলা এবং জঙ্গিদের সাহায্যে ৬৩টি জেলার ৫শ স্থানে পরিচালিত বোমা হামলার প্রসঙ্গও উল্লেখ করেন।
প্রধানমন্ত্রী সন্ত্রাসবাদের হুমকির প্রসংগে বলেন, আসলে এতে করে অস্ত্র ব্যবসায়ীরাই লাভবান হচ্ছে।
বাংলাদেশের সা¤প্রতিক উন্নয়ন কর্মকান্ডের ভূয়শী প্রশংসা করে এ সময় পাকিস্তানের হাইকমিশনার বলেন, বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের ধারায় পুরোপুরি পরিবর্তিত একটি দেশ।
সিদ্দিকী বলেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী যেভাবে সন্ত্রাস এবং জঙ্গিবাদ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সমর্থ হয়েছেন তাতে পাকিস্তানের জনগণও আনন্দিত।
গত বছর গুলশানের হলি অর্টিজান রেস্তোরায় সন্ত্রাসী হামলার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে পাকিস্তানের হাইকমিশনার বলেন, ওই হামলার পর আর এ ধরনের কোন ঘটনা বাংলাদেশে ঘটেনি। যেহেতু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সন্ত্রাস এবং জঙ্গিবাদকে কঠোর হস্তে দমনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন।
সিদ্দিকী বলেন, বাংলাদেশ এবং পাকিস্তানের মধ্যে অনেক সাধারণ বিষয় রয়েছে এবং দু’দেশের সম্পর্ক উন্নয়নেই তিনি কাজ করে যেতে চান।
প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. কামাল আব্দুল নাসের চৌধুরী, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সিনিয়র সচিব সুরাইয়া বেগম এবং প্রধানমন্ত্রীর সামরিক সচিব মেজর জেনারেল মিয়া মোহাম্মদ জয়নুল আবেদীন এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
ঝরণা রানীর পরিবারের পাশে প্রধানমন্ত্রী
কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় ঈদের দিনে জঙ্গি হামলায় নিহত ঝরণা রানী ভৌমিকের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বেসরকারি এনআরবি গেøাবাল ব্যাংকের সহকারী অফিসার পদে ঝরণা রানীর ছেলে বাসুদেবকে চাকরি দিলেন তিনি।
গতকাল রবিবার প্রধানমন্ত্রী এই নিয়োগপত্র বাসুদেবের হাতে তুলে দেন। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে জনপ্রশাসন মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ও ব্যাংকটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
গত বছর ঈদুল ফিতরের দিন জঙ্গিদের বুলেট ঝরণা রানীর প্রাণ কেড়ে নেয়। শোবার ঘরের ভেতরেই মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রাণ হারান ঝরণা রানী ভৌমিক। তার স্বামী গৌরাঙ্গ ভৌমিক শহরের একটি বিড়ি ফ্যাক্টরির একজন অল্প বেতনের কর্মী। এসময় শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠের পশ্চিম দিকে প্রায় ১৫০ গজ দূরে আজিমউদ্দিন স্কুলের পাশে সবুজবাগ গলির মুখে জঙ্গি হামলায় দু’জন পুলিশ সদস্যও নিহত হন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: প্রধানমন্ত্রী


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ