পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বর্তমান সরকারের মেয়াদের ধারাবাহিকতা দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রাকে নিশ্চিত করেছে। এর ফলশ্রæতিতে মানুষ প্রত্যক্ষভাবে উপকৃত হচ্ছে এবং বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে মর্যাদার আসন অর্জন করেছে। তিনি বলেন, জনগণ সর্বক্ষেত্রে এখন উন্নয়নের ছোঁয়া পাচ্ছে এবং বিশ্ব বাংলাদেশকে এখন করুণা নয়, মর্যাদার চোখে দেখছে। সরকারের ধারাবাহিকতার জন্যই আমরা মর্যাদা ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছি।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে গণভবনে আওয়ামীলীগের অঙ্গ সংগঠন স্বেচ্ছাসেবক লীগের ২৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে পুনর্মিলনীতে নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে দেয়া বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি-জামায়াত জোট ২০১৪ সালের জানুয়ারির নির্বাচন ভন্ডুল করার ষড়যন্ত্র করেছিল। কিন্তু জনগণ নির্বাচন ও গণতন্ত্রের স্বপক্ষে থাকায় তারা ব্যর্থ হয়েছে। তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শোষিত ও বঞ্চিত মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তনের মাধ্যমে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে দেশ স্বাধীন করেছিলেন।
স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে দেশ যখন অর্থনৈতিক উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছিল সে সময় স্বাধীনতা বিরোধীশক্তি ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যার পর সামরিক জান্তা ক্ষমতা কুক্ষিগত করলে দেশে হত্যা, ক্যু ও ষড়যন্ত্রের রাজনীতি শুরু হয়। বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে স্বাধীনতার ১০ বছরেই বাংলাদেশ উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশে পরিণত হতো। দীর্ঘ সংগ্রামের পর ১৯৯৬ সালে জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে জাতি আবারো সঠিক পথের দিশা খুঁজে পায় এবং অন্ধকার থেকে আলোর পথে যাত্রা শুরু হয়। ২১ বছর পর ক্ষমতায় এসে তার দল গণতন্ত্র ও দেশের হারানো গৌরব পুনরুদ্ধার করেছে। শেখ হাসিনা আদর্শ এবং ত্যাগের মানসিকতায় স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মীদের রাজনীতি করার আহŸান জানান। তিনি বলেন, আমি স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মীদের একটা কথাই বলবো, আপনারা যারা জনগণকে কিছু দেয়ার ও ত্যাগের মনোভাব নিয়ে রাজনীতি করবেন তারাই রাজনীতিতে এগিয়ে যাবেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, কি পেলাম, কি পেলাম না সেটা বড়ো কথা নয়। তুমি জনগণের জন্য কি করতে পারলে সেটাই একজন রাজনীতিবিদের আদর্শ হওয়া উচিত। আমি আশাকরি সেই মানসিকতা নিয়েই নিজেদেরকে গড়ে তুলবে।
স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বক্তব্য দেয়ার সময় নিজের ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের জন্ম ও নামকরণের স্মৃতিচারণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ছেলের নাম তার নানী বেগম ফজিলাতুন্নেসা মুজিব রেখেছিলেন ‘সজীব’। তবে বঙ্গবন্ধু আগেই নাম ঠিক করে রাখেন ‘জয়’। আর এই দুই নামের সঙ্গে তার বাবার নামের অংশ ‘ওয়াজেদ’ জুড়ে হয় সজীব ওয়াজেদ জয়।
শেখ হাসিনা বলেন, ওকে পেয়ে আমরা বন্দীখানার মধ্যে সজীবতা পেয়েছিলাম। তাই মা (বেগম মুজিব) নাম রেখেছিলেন সজীব। আর নানা (বঙ্গবন্ধু) রেখেছিলেন ‘জয়’। জয়ের জন্মের কথা বলতে গিয়ে আবেগ আপ্লুত মা শেখ হাসিনা বলেন, আমার মাকে যেতে দেয়া হয়নি। ছেলে জয় ছাড়াও কন্যা সায়মা হোসেনের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা আরও বলেন, আমাদের সন্তানরা মানুষের মতো মানুষ হয়েছে। আমি তিন তিনবারের প্রধানমন্ত্রী, আমার সন্তানেরা কখনো আমাকে ব্যবসা-বাণিজ্য, অর্থ-সম্পদ নিয়ে বিরক্ত করেনি।
সংগঠনের ২৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে অনুষ্ঠানে স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভপাতি মোল্লা মোহম্মদ আবু কায়সারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে দলের সাধারণ সম্পাদক পংকজ দেবনাথ এমপি বক্তৃতা করেন। আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পবিষদের সদস্য এবং স্বেচ্ছাসেবক লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মকবুল হোসেন এবং আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আফম বাহাউদিন নাসিম এ সময় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন। এরআগে সংগঠনের কেন্দ্রীয় ও ঢাকা মহানগরী শাখার নেতাকর্মীরা প্রধানমন্ত্রীকে ফুলের তোড়া দিয়ে শুভেচ্ছা জানান।
দেশের জনসংখ্যা বোঝা নয়
দেশের সার্বিক উন্নয়নের লক্ষে জ্ঞানভিত্তিক ও বৃত্তিমূলক শিক্ষাকে সন্নিবেশিত করে দেশের গোটা শিক্ষা ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানোর আহŸান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, আমি বিশ্বাস করি-দেশের জনসংখ্যা বোঝা নয়। ১৬ কোটি মানুষ আমাদের এক অমূল্য সম্পদ। দক্ষ মানবসম্পদের চেয়ে কোন সম্পদই বড় নয়। আমরা জনশক্তিকে জনসম্পদে পরিণত করার জন্য বিজ্ঞান এবং কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষার স¤প্রসারণ ও মানোন্নয়নে ব্যাপক কর্মসূচি বান্তবায়ন করছি।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ‘ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স অন স্কিলস ফর দ্য ফিউচার ওয়ার্ল্ড অফ ওয়ার্ক এন্ড টিবিইটি ফর গেøাবাল কম্পিটিটিভনেস’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। আইডিইবি ও আন্তঃদেশীয় রাষ্ট্রীয় সংস্থা কলম্বো প্ল্যান স্টাফ কলেজ (সিপিএসসি) ম্যানিলা, শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং ন্যাশনাল স্কিল ডেভেলপমেন্ট কাউন্সিলের সহযোগিতায় এই সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
দেশে কারিগরি শিক্ষা প্রসারে সরকারি উদ্যোগের তথ্য তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকারি প্রতিটি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে দ্বিতীয় শিফট চালু রয়েছে। অবশিষ্ট ২৩টি জেলায় আমরা বিশ্বমানের পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট স্থাপন করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি। বিভাগীয় শহরে আরও ৪টি মহিলা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করা হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, এই সম্মেলনের মূল উদ্দেশ্যগুলোর অন্যতম হলো-কর্মজগতের চাহিদা অনুযায়ী মানসম্পন্ন জাতীয় শ্রেণিবদ্ধ কর্মী সরবরাহ নিশ্চিতকরণ এবং উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশের মধ্যে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা বিষয়ে পারস্পরিক অভিজ্ঞতা ও গবেষণায় জ্ঞান আদান প্রদানে ‘টিভিইটি’ নেটওয়ার্ক স্থাপন। তিনি বলেন, আপনাদের দক্ষতা, কর্মনিষ্ঠা ও সততার উপর নির্ভর করছে সরকারের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন। কাজের সঠিক মান নিয়ন্ত্রণে আপনারা কোনভাবেই আপোস করবেন না।
শেখ হাসিনা একটি অসা¤প্রদায়িক, ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত ও সুখী-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষে সকলে মিলে একযোগে এগিয়ে যাবারও দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
শিক্ষা মন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এবং সিপিএসসি মহাপরিচালক এবং স্টিয়ারিং কমিটির কো- চেয়ারম্যান ড. রামহরি লামিছানে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন। ইনষ্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ (আইডিইবি)’র প্রেসিডেন্ট ও সম্মেলনের আয়োজক কমিটির চেয়ারম্যান এমএ হামিদ এতে সভাপতিত্ব করেন। আইডিইবি এবং সম্মেলন আয়োজক কমিটির সাধারণ সম্পাদক শামসুর রহমান অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তৃতা করেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।