পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ইনকিলাব ডেস্ক : এক বছর আগে এই মাসে ২০০৩ সালে ইরাকে অবৈধ ও অনৈতিক মার্কিন সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসনে ব্রিটেনের ভূমিকা বিষয়ে তদন্তের দীর্ঘপ্রতীক্ষিত চূড়ান্ত রিপোর্ট দাখিল করেছিলেন শীর্ষস্থানীয় সাবেক ব্রিটিশ আমলা স্যার জন চিলকোট। কিন্তু এক বছর পেরিয়ে গেলেও ইরাক যুদ্ধের অন্যতম হোতা সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ব্লেয়ারকে জেলে পাঠানো হয়নি। অথচ তা করা উচিত। খবর মিডল ইস্ট মনিটর।
এ যুদ্ধ গোটা দেশকে একেবারে ধ্বংস করে দিয়েছে। ১০ লাখেরও বেশী ইরাকি নিহত হয়েছে, আহত হয়েছে অসংখ্য। কত শিশু এতিম হয়েছে, কত নারী বিধবা হয়েছেন, কত লোক শিকার হয়েছেন আজীবন মানসিক যন্ত্রণার সে সংখ্যা কারো জানা নেই। সবচেয়ে বড় কথা যে এ যুদ্ধের শেষ নেই। এ যুদ্ধের কারণে সংঘটিত হয়েছে ও হচ্ছে ভয়াবহ নানা ঘটনা। তার একটি হচ্ছে ভয়ংকর সংগঠন ইসলামিক স্টেটের (আইএস) অভ্যুদয়।
ইরাকে মার্কিন আগ্রাসনের সাথে সাথে সংঘটিত হয়েছে এক বর্বর ও রক্তক্ষয়ী গৃহযুদ্ধ। তার একটি কারণ হচ্ছে মার্কিন দখলদার কর্তৃপক্ষ কর্তৃক গোষ্ঠিগত নীতি অনুসরণ। ল্যাটিন আমেরিকায় যুক্তরাষ্ট্র সা¤্রাজ্যবাদের যে নোংরা পন্থা অবলম্বন করেছিল , তারই অনুসরণে মার্কিন সেনাবাহিনীর স্পেশাল ফোর্সেসের সাবেক কর্নেল জেমস স্টিলি ইরাকে গোষ্ঠিগত ডেথ স্কোয়াড গঠন করেন। এই কমান্ডো ইউনিট ইসলামিক স্টেটের পূর্বসূরী ভয়ংকর গ্রুপ আল কায়েদা ইন ইরাক বা একিউআই’র উত্থানের এক বড় কারণ। ১৪ বছর আগে ২০০৩ সালে ইরাকে সেই যে যুদ্ধ শুরু হয়েছিল আজো তা অব্যাহত আছে। আর এ সব কিছুর জন্য দায়ী সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ার। কিছু বিশেষ বিবরণ ও বিশেষ দিক ছাড়া চিলকোটের রিপোর্টে আসলে এমন কিছু নেই যা আমরা জানি না।
আক্ষরিক ভাবে ইরাক যুদ্ধে না যাওয়ার জন্য লাখ লাখ মানুষ টনি ব্লেয়ারকে হুঁশিয়ার করেছিলেন। কারণ এটা হবে এক বিপর্যয়- মৃত্যুঝড় এবং ইরাকি জনগণের ধ্বংসের কারণ যা সামগ্রিকভাবে বিশে^র জন্য নেতিবাচক হবে। কিন্তু ব্লেয়ার সব সময়ই সাধারণ মানুষকে অবজ্ঞা করেছেন, আমাদের করেছেন তাচ্ছিল্য। তিনি পেশাদার রাজনীতিকদের অংশ ছিলেন যারা মনে করেন যে মানব সমাজ একটি আলোকিত ঐশ^রিক শ্রেণির টেকনোক্র্যাটদের দ্বারা শাসিত হওয়া উচিত যারা সবার চেয়ে শ্রেষ্ঠ বা সে রকম কিছু। তার সম্পূর্ণ রাজনৈতিক দর্শন হচ্ছে একেবারেই অপমানজনক। তিনি লেবার পার্টির উপর মরণ-থাবা বসিয়েছিলেন যা এক কলংক।
লেবার পার্টি বিশেষজ্ঞ রবিন রামসে-র মতে, ‘ব্লেয়ার লেবার পার্টিকে ঘৃণা করতেন এবং দলকে তার শত্রু হিসেবে মনে করলেও’, দলকে তিনি ক্ষমতায় আরোহণের সবচেয়ে পছন্দের পথ হিসেবেই দেখেছেন। ক্ষমতার জন্যই ক্ষমতাই ছিল বেøয়ারীয়দের মন্ত্র। ধন্যবাদ যে, তারা এখন চূড়ান্তভাবে লেবার পার্টি সদস্যদের দ্বারা প্রত্যাখ্যাত হয়েছেন, আশা করা যায়, তাদের সব জঞ্জাল শিগগিরই ধুয়ে সাফ হয়ে যাবে। লেবার দলে বেøয়ারের নয়া উত্তরসুরি গর্ডন ব্রাউন কর্তৃক তদন্তের প্রধান নিয়োজিত হয়ে চিলকোট তাৎক্ষণিক ভাবে বেøয়ারের নিন্দাকারী বা সমালোচনাকারী হননি। তবে তিনি চূড়ান্ত উপসংহারে পৌঁছনো তিনি পরিহার করেননি , ‘সে সময় সামরিক ব্যবস্থা গ্রহণ শেষ পন্থা ছিল না, .... সাদ্দাম হোসেনের তরফ থেকে কোনো আশু হুমকি ছিল না।’
এ মাসে চিলকোট তার নীরবতা ভঙ্গ করেছেন যা তিনি এক বছর আগে রিপোর্ট প্রকাশের সময় থেকে পালন করছিলেন। তিনি বিবিসিকে বলেন, বেøয়ার যুদ্ধের পক্ষে তার যৌক্তিকতা প্রদর্শনের সময় ‘জাতির সাথে স্পষ্ট’ ছিলেন না।
ইরাক যুদ্ধ
বেøয়ার কুখ্যাতিপূর্ণভাবে দেশে মিথ্যা কথা বলেন যে ইরাকি নেতা সাদ্দাম হোসেনের কাছে রাসায়নিক অস্ত্র আছে এবং তিনি তা ৪৫ মনিটের মধ্যে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে মোতায়েন করতে পারেন। এমন কি সে সময়েও এটা ছিল এক পরিষ্কার মিথ্যা, যা বহু মানুষকেই বোকা বানাতে পারেনি। এতদিন পর চিলকোট তদন্তের নেতার মত প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তিও স্বীকার করেছেন যে ব্লেয়ার মিথ্যা বলেছিলেন।
চিলকোট রিপোর্টে ২৮ জুলাই, ২০০২ থেকে একটি গুরুত্বপূর্ণ সহায়ক দলিল রয়েছে। এতে ব্লেয়ার তৎকালিন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডবিøউ. বুশকে লিখেছেন, ‘যাই ঘটুক না কেন, আমি আপনার সাথে আছি।’ জাতিসংঘের অভিনয় ও তারপর পার্লামেন্টারি বিতর্ক থাকা সত্তে¡ও প্রধানমন্ত্রী বাস্তবে যুদ্ধে যাওয়ার এক তরফা সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছিলেন। আর তা আটলান্টিকের ওপারে তা রাজনৈতিক প্রভুর নির্দেশে।
এটা খারাপ খবর যে ব্লেয়ার এখনো রাজনৈতিক অঙ্গনে রয়েছেন। তিনি এখনো সম্পূর্ণ অবাঞ্ছিত ভাবে সময়ে সময়ে তার মত প্রকাশ করেন এবং এমনকি একটি নতুন মধ্যপন্থী রাজনৈতিক শক্তি প্রচলনের বেলায় হৈ চৈ করেন্ তবে ভালো খবর হচ্ছে যা কিনা সফল হবে না বলে মনে হয়, তা হল সাম্প্রতিক জনমত জরিপে দেখা যায় যে ব্লেয়ার যদি লেবার দলের নেতৃত্বে আসেন তাহলে ভোটাররা গণহারে লেবার পার্টি থেকে সরে যাবে।
‘যাই হোক না কেন আমি আপনার সাথে থাকব’ এটা এখন বেøয়ারের রাজনৈতিক এপিটাফ এবং তা হেগের যুদ্ধাপরাধ আদালতে তার বিচারে প্রদর্শনী ‘এ’ হওয়া উচিত।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।