পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : চলচ্চিত্র শিল্পী ও কলাকুশলীদের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সবক্ষেত্রে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, চলচ্চিত্র পিছিয়ে থাকবে কেন। চলচ্চিত্রকে এগিয়ে নিতে যে যে ক্ষেত্রে সহযোগিতা দরকার তা করা হবে। চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টদের উদ্দেশ করে তিনি বলেন, উন্নতমানের সিনেমা তৈরি করেন। যে সিনেমায় সমাজ, ঐতিহ্য, কৃষ্টি ধারণ করে।
গতকাল সোমবার বিকালে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রদান ২০১৫ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এ পুরস্কার বিতরণিতে সভাপতিত্ব করেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন তথ্য সচিব মর্তুজা আহমদ। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন তথ্য মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এ কে এম রহমতুল্লা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা এর মধ্যে শিল্পীদের সহযোগিতা করার জন্য একটা ট্রাস্ট ফান্ড গঠন করেছি। আমি মনে করি এটা আরও বড় করে করা উচিৎ। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় ও তথ্য মন্ত্রণালয়ে শিল্পীদের জন্য ট্রাস্ট গঠন করা আছে সব মিলিয়ে চিন্তা ভাবনা করে একটি বড় ট্রাস্ট ফান্ড করতে হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, অনেক সময় দেখেছি জীবনসায়ান্থে এসে একজন শিল্পী এমন একটি পর্যায়ে চলে যায় চিকিৎসার অভাবে পড়ে, নানা সমস্যার সম্মুখীন হয়। তখন আর তাদের কিছু করার থাকে না। আজকাল অনেক ছেলে মেয়েই তাদের বাবা মাকে দেখে না। শিল্পীর খবর আর কে নেবে! তাই এভাবে যেন কোনো শিল্পীকে কষ্টের মুখে পড়তে না হয় তারই একটা ব্যবস্থা আমি করে যেতে চাই।
চলচ্চিত্র কর্মীদের কাজের প্রতি আশাবাদ ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই সময়ে অনেক প্রতিবন্ধকতার মধ্যে তরুণ মেধাবী নির্মাতারা অনেক ভালো চলচ্চিত্র নির্মাণ করছে। তারা সুযোগ পেলে আরও ভালো কিছু করবে। চলচ্চিত্রে দেশের শিল্প সংস্কৃতি ইতিহাসের প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দেয়ার জন্য চলচ্চিত্র কর্মীদের প্রতি আহŸান জানান প্রধানমন্ত্রী।
চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রির প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি নিজে সিনেমা হলের মালিকদের সঙ্গে বসেছি। তাদের কি প্রয়োজন জানার চেষ্টা করেছি। এর মধ্যে আমরা বেশকিছু পদক্ষেপ নিয়েছি। হলগুলো ডিজিটাল করার প্রক্রিয়া চলছে। আমরা চলচ্চিত্রে অনুদানের অর্থ বাড়িয়েছি। আমরা চলচ্চিত্রকে শিল্প হিসেবে ঘোষণা করেছি। চলচ্চিত্র কর্মীদের সুবিধা বৃদ্ধি করেছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, চলচ্চিত্র একটি শক্তিশালী গণমাধ্যম। এই শিল্পের মাধ্যমে সমাজের চিত্র ফুটে উঠে, সাধারণ মানুষের কাছে যাওয়া যায় সেভাবে ছবি নির্মাণ করুন।
চলচ্চিত্র ও সাংস্কৃতিক অঙ্গণে বিশেষ অবদান রাখার জন্য ৩১জন গুণী শিল্পী ও কলাকুশলীকে পুরস্কার প্রদান করেন প্রধানমন্ত্রী। নির্বাচিতদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তথ্য মন্ত্রণালয় গত ১৯ মে ২০১৫ সালের চলচ্চিত্র শিল্পে ২৫টি ক্যাটাগরিতে অবদানের জন্য ৩১ জনের নাম ঘোষণা করে।
পুরস্কারপ্রাপ্তরা হলেন, চিত্রনায়িকা শাবানা ও সঙ্গীতজ্ঞ ফেরদৌসী রহমান। ‘বাপজানের বায়োস্কাপ’ ও ‘অনিল বাগচীর একদিন’ যুগ্মভাবে শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র, ‘একাত্তরের গণহত্যা ও বধ্যভূমি’ শ্রেষ্ঠ প্রামাণ্য চলচ্চিত্র, মো. রিয়াজুল মওলা রিজু এবং মোরশেদুল ইসলাম যুগ্মভাবে শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র পরিচালক, প্রধান চরিত্রে শাকিব খান ও মাহফুজ আহমেদ যুগ্মভাবে শ্রেষ্ঠ অভিনেতা ও জয়া আহসান শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর পুরস্কার পেয়েছেন।
এছাড়া পার্শ্বচরিত্রে শ্রেষ্ঠ অভিনেতা গাজী রাকায়েত ও শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী তমা মির্জা, খল চরিত্রে শ্রেষ্ঠ ইরেশ যাকের, শ্রেষ্ঠ শিশুশিল্পী যারা যারিব পুরস্কার পেয়েছেন।
শিশুশিল্পী শাখায় বিশেষ পুরস্কার পেয়েছেন প্রমিয়া রহমান, শ্রেষ্ঠ সঙ্গীত পরিচালক সানী জুবায়ের, শ্রেষ্ঠ গায়ক যুগ্মভাবে সুবীর নন্দী ও এসআই টুটুল, শ্রেষ্ঠ গায়িকা প্রিয়াংকা গোপ, শ্রেষ্ঠ গীতিকার আমিরুল ইসলাম, শ্রেষ্ঠ সুরকার এসআই টুটুল, শ্রেষ্ঠ কাহিনীকার মাসুম রেজা, শ্রেষ্ঠ চিত্রনাট্যকার যুগ্মভাবে মাসুম রেজা ও মো. রিয়াজুল মওলা রিজু, শ্রেষ্ঠ সংলাপ রচয়িতা হুমায়ুন আহমেদ, শ্রেষ্ঠ সম্পাদক মেহেদী রনি, শ্রেষ্ঠ শিল্পনির্দেশক সামুরাই মারুফ, শ্রেষ্ঠ চিত্রগ্রাহক মাহফুজুর রহমান খান, শ্রেষ্ঠ শব্দগ্রাহক রতন কুমার পাল, শ্রেষ্ঠ পোশাক ও সাজসজ্জা মুসকান সুমাইয়া, শ্রেষ্ঠ মেক-আপম্যান হিসেবে শফিক।
আমি যাদের জন্য শাবানা, আজকের এ পুরস্কার তাদের
জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে আজীবন সম্মাননা প্রাপ্তির প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে কাঁদলেন চিত্রনায়িকা শাবানা। নিজের অভিনয় জীবনে পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে নিজের বক্তব্য দিতে এসে দীর্ঘদিন আড়ালে থাকা এ নায়িকা বললেন, আমি যাদের জন্য শাবানা, আজকের এ পুরস্কার তাদের।
কান্নাভেজা ভাষণে তিনি বলেন, এই তো সেদিন আমি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে প্রথমবারের মতো দেখা করতে গিয়েছিলাম। মমতাময়ী প্রধানমন্ত্রী দু’হাতে আমাকে জড়িয়ে ধরেন। আমি জানি, তিনি যে সম্মান আমাকে সেদিন দিয়েছেন, তা সমস্ত শিল্পীর, শিল্পের। তিনি অসুস্থ পরিচালকের পাশে দাঁড়িয়েছেন।
দেশীয় চলচ্চিত্রের সংকট প্রসঙ্গেও বক্তব্য রাখেন তিনি। বলেন, আমাদের চলচ্চিত্র আজ সংকটে। কিন্তু যেকোনও সংকটের মাঝে লুকিয়ে থাকে সমাধান। যখন আামাদের পাশে সবার প্রিয় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আছেন তখন কোনও সংকটই থাকতে পারে না। প্রবাসে থাকলেও আমি জ্ঞাত হয়েছি। তিনি বাংলাদেশ সিনেমা ও টেলিভিশন ইনস্টিটিউট করেছেন। বিপুল অর্থের মাধ্যমে বিএফডিসি আধুনিকায়ন করেছেন। জানতে পারি, তিনি ফোরকে রেজুলেশনের প্রজেক্টরের ব্যবস্থা করছেন। যেখানে বিশ্বের অনেক দেশে এখনও টু-কে রেজুলেশন ব্যবহার করা হয়। আমি তাকে সাধুবাদ জানাই।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।