Inqilab Logo

সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শুধু রুটিন দায়িত্ব পালনে সীমাবদ্ধ থাকলে চলবে না

সরকারি চাকরিজীবীদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী

| প্রকাশের সময় : ২৪ জুলাই, ২০১৭, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : সরকারি চাকরীজীবীদের শুধু রুটিন ওয়ার্ক হিসেবে দায়িত্ব পালন না করে উদ্ভাবনী শক্তিকে কাজে লাগিয়ে জনকল্যাণে নিবেদিত হবার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, শুধু রুটিন দায়িত্ব পালনে সীমাবদ্ধ থাকলে চলবে না। উদ্ভাবনী শক্তি দিয়ে আরো কি কাজ করলে মানুষের কল্যাণ হয় সে চিন্তা করে সেভাবেই পদক্ষেপ নিতে হবে। তাহলেই দেশ এগিয়ে যাবে।
গতকাল রবিবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে জাতীয় পাবলিক সার্ভিস দিবস উদযাপন ও জনপ্রশাসন পদক-২০১৭ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকারি চাকরি যে, একটা রুটিন চাকরি, এলাম, বেতন নিলাম, চলে গেলাম সেটা নয়। নিজের ভেতরে উদ্ভাবনী শক্তি কি আছে সেটাও কাজে লাগাতে হবে। নিজেই নিজেকে আবিস্কার করতে হবে। তিনি বলেন, যেখানে যে দায়িত্ব প্রাপ্ত তাকে সেখানে ভাবতে হবে এটা আমার নিজের দায়িত্ব, কারণ এই দেশটা আমার। দেশের মানুষগুলো আমার। কাজেই দেশের মানুষের কল্যাণে আমাদের কাজ করতে হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, আমি আরোকটি বিষয় বলি- যেমন আপনারা একটি ভালো উদ্যোগ নিয়েছেন। আমাদের খুলনার জেলা প্রশাসক একটা উদ্যোগ নিয়েছিলেন। সেখানে সকল সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারিরা এবং আমাদের পুলিশ প্রশাসন এক দিনের বেতন দিয়ে একটি ফান্ড তৈরী করেছেন ভিক্ষুক মুক্ত করার জন্য। এই ভিক্ষুকদের হিসাব নিয়ে তাদের কর্ম সংস্থানের ব্যবস্থা করেছেন। এই বিষয়টি আমার খুবই ভালো লেগেছে । আমি বলবো-একটা উদ্ভাবনী কাজ তারা করেছেন। আমি জানতে চাইলাম এটা তারা করলেন কেন? উত্তর পেয়েছি আপনারা আমাদের এত বেতন বাড়িয়ে দিয়েছেন, সেক্ষেত্রে আমাদেরও জনগণের প্রতি দায়বদ্ধতা রয়েছে। যা থেকে ভাবলাম একটু সেবা করি। তিনি বলেন, কাজেই আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি যারাই এ ধরনের ফান্ড তৈরী করবেন সেখানে আমিও প্রধানমন্ত্রীর তহবিল থেকে কিছু অনুদান দেবো । যাতে করে তারা এই কর্মসূচি সফলভাবে করতে পারেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কাজেই এই ভাবেই আমাদের চিন্তা করতে হবে, কোথায় কি সমস্যা আছে। বা প্রতিটি ক্ষেত্রেই কোন কাজটা করলে আমার দেশের মানুষের কাজে লাগবে। সেই ভাবেই কাজ করতে পারলে দেশটা এগিয়ে যাবে।
সরকারের সাফল্যে সরকারি কর্মকতা-কর্মচারিদের অভিনন্দন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা পরিকল্পনা দিয়েছি, আপনারা মাঠ পর্যায়ে যারা এটি বাস্তবায়ন করেছেন। তাদের সকলকে আমি আন্তরিক অভিনন্দন জানাই আর এটা অব্যাহত থাকুক সেটাই আমরা চাই।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ২০১২ সাল থেকে গভর্নেন্স ইনোভেশন ইউনিট নামে একটি আলাদা শাখা খোলা হয়েছে। এই ইউনিটের প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে নতুন নতুন উপায় উদ্ভাবন করে সরকারি সেবা প্রদান পদ্ধতি সহজ করা। পাশাপাশি সরকারি কাজের জবাবদিহিতা এবং স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সকল মন্ত্রণালয়ে ডিজিটাল নথি নম্বর ও ই-ফাইলিং চালু করা হয়েছে। জনগণের অধিকার রক্ষার্থে সকল দপ্তরে দ্বিতীয় প্রজন্মের সিটিজেন চার্টার প্রবর্তন করা হয়েছে। এর আওতায় মাঠ পর্যায়ের অফিসসমূহে হেল্প ডেস্ক স্থাপন করা হয়েছে। প্রত্যেক মন্ত্রণালয় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সঙ্গে বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি স্বাক্ষর করছে। সে চুক্তিতে কোন কোন বিষয়ে আগামী বছর ওই মন্ত্রণালয় কাজ করবে তার বিবরণ থাকে এবং কার্যক্রমগুলো বছর শেষে মূল্যয়ন হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ২৩-বছরের নিরন্তর আন্দোলন-সংগ্রাম আর ৯-মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি। জাতির পিতা স্বাধীনতার ডাক না দিলে আজও হয়ত আমাদের পরাধীনতার গøানি বহন করতে হত। স্বাধীনতার পর থেকেই বাংলাদেশকে নানামুখী সঙ্কট মোকাবিলা করতে হয়েছে। দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র, অপশাসন ও দুঃশাসন, দীর্ঘ সময় ধরে গণতন্ত্রহীনতা, দারিদ্র্য, নিরক্ষরতা, সন্ত্রাস, প্রাকৃতিক দুর্যোগ ইত্যাদি বাংলাদেশের অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করেছে। এ সকল প্রতিকূলতা মোকাবিলা করে বাংলাদেশ আজ নিম্ন-মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে নিয়মিতভাবে মেধা, যোগ্যতা, দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার মূল্যায়ন করে সরকারি কর্মচারিদের পদোন্নতি প্রদান করছি। এ ছাড়া সরকারি কর্মচারীদের বেতন-ভাতা ২০১৫ সালের পে-স্কেলে ১২২ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। আমরা সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রায় বাস্তবায়নে ব্যাপক সাফল্য অর্জন করেছি। আমাদের সামনে এখন ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনের চ্যালেঞ্জ।
জনপ্রশাসন মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী ইসমত আরা সাদেক বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। মন্ত্রী পরিষদ সচিব মোহম্মদ শফিউল আলম এবং জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোজাম্মেল হক খান ও অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। দুটি ক্যাটাগরিতে ১৪ জনকে পদক প্রদান করেন প্রধানমন্ত্রী।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: প্রধানমন্ত্রী


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ