Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রিজার্ভ চুরির ঘটনা সবার জন্য সতর্কবার্তা

‘বিআইবিএমে সাইবার নিরাপত্তা’ কর্মশালায় গভর্নর

| প্রকাশের সময় : ২৪ জুলাই, ২০১৭, ১২:০০ এএম

অর্থনৈতিক রিপোর্টার : ব্যাংকিং খাতে সাইবার নিরাপত্তার বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে বলে মনে করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবীর। তাঁর মতে, সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সমন্বিত উদ্যোগের কোনো বিকল্প নেই। ফজলে কবীর বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনা ছিল সবার জন্য সতর্কবার্তা। বিশ্বে সাইবার চুরি এখন নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। সেইসঙ্গে হ্যাকাররা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আরো বেশি উন্নত কৌশলের মাধ্যমে এসব সাইবার চুরির ঘটনা ঘটাচ্ছে। তাই দেশের ব্যাংকিং ব্যবস্থায় সাইবার নিরাপত্তাকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে এখনই কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার সময় বলে মনে করেন গভর্নর।
গতকাল রাজধানীর বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্ট (বিআইবিএম) অডিটরিয়ামে সাইবার নিরাপত্তাবিষয়ক এক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর। বিআইবিএম এবং ট্রান্স আইটি সলিউশন এর যৌথ উদ্যোগে ‘ব্যাংকের তথ্য নিরাপত্তা ঝুঁকি প্রস্তুতি’ শীর্ষক এই কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। বিআইবিএম এর মহাপরিচালক ড. তৌফিক আহমদ চৌধূরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় অন্যান্যের মধ্যে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং এবিবি চেয়ারম্যান আনিস এ খান, ডাচ-বাংলা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল কাশেম মো. শিরিন এবং ট্রান্স আইটি সলিউশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আমিরুল ইসলাম চৌধুরী (মিজান) বক্তব্য রাখেন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিআইবিএমের পরিচালক (প্রশিক্ষণ) ড. শাহ মো. আহসান হাবীব।
মুল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন তথ্য নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ রুবাইয়াত আকবর। এতে বলা হয়, হ্যাকাররা প্রতি ৩৯ সেকেন্ডে বিশ্বের কোথাও না কোথাও আক্রমণ করে যাচ্ছে। এক হিসেবে শুধু র‌্যান্সামওয়ার এর কারণেই ২০১৬ সালে ক্ষতি হয়েছে ১ বিলিয়ন ডলার। ২০১২ সাল নাগাদ সাইবার অপরাধজনিত ক্ষতির মাত্রা বেড়ে দাঁড়াতে পারে ৬ ট্রিলিয়ন ডলার। হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নেবার পরিকল্পনা নিয়ে হ্যাকাররা প্রথমেই টার্গেট করে ব্যাংকের সাধারণ কর্মীদের আর তাদেরকে ভুলের ফাঁদে ফেলে গ্রাহক তথ্য চুরি এবং পেমেন্ট সিস্টেমে অনধিকার প্রবেশ করার জন্য নিরন্তর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
এতে আরও বলা হয়, ২০১৭ সালে সাইবার ঝুঁকি মোকাবেলা করতে ব্যাংকের সর্বস্তরের অধিকতর সচেতন করার কোন বিকল্প নেই। হ্যাকারদের আক্রমণের অন্যতম লক্ষ্য হচ্ছে আর্থিক ও ব্যাংকিং খাত-বাংলাদেশও তার বাইরে নয়। সে ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলোতে কর্মরত সবাইকে সাইবার আক্রমণের ধরণ সম্পর্কে ধারনালাভ ও এর প্রতিরোধের জন্য প্রস্তুত থাকা গুরুত্ব্পূর্ণ ।
মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং এবিবি চেয়ারম্যান আনিস এ খান বলেন, ব্যাংকের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সাইবার নিরাপত্তা সম্পর্কে ভালো ধারণা থাকতে হবে। ব্যাংকারদের সচেতনতা বাড়ানো এবং প্রশিক্ষণের ওপর জোর দিতে হবে।
ডাচ-বাংলা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল কাশেম মো. শিরিন বলেন, মাঝারি মাপের প্রাকৃতিক বিপর্ষয় হলে অনেক ব্যাংকের গ্রাহক সেবা বন্ধ হয়ে যাবে। আর বড় ধরণের বিপর্যয় হলে কোন ব্যাংকেরই সেবা দেয়া সম্ভব নয়। কারণ ডাটা সেন্টারের যে ধরণের নিরাপত্তা দরকার তা ব্যাংকগুলোর নেই।
ট্রান্স আইটি সলিউশনের সিইও আমিরুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশের ব্যাংকগুলোতে তথ্য নিরাপত্তা সচেতনতা বৃদ্ধিতে প্রশিক্ষণ কর্মসূচী শুধুমাত্র ঢাকা বা বড় শহরে সীমাবদ্ধ না রেখে প্রতিটি জেলা পর্যায়ে ব্যাংক কর্মীদের জন্য আয়োজন করতে হবে।
ট্রান্স আইটি সা¤প্রতিক কালের চাঞ্চল্যকর কয়েকটি সাইবার ঝুঁকি র‌্যান্সামওয়ার আর ফিশিং আক্রমণ কিভাবে পরিচালিত হয় তার বাস্তব নমুনা প্রদর্শন করে। অনিরাপদ ওয়াইফাই ব্যাবহার করে ল্যাপটপ হ্যাক করার মাধ্যমে হ্যাকাররা কিভাবে আমাদের দুর্বলতার সুযোগ নেয় তা উপস্থিত অংশগ্রহণকারীদের সামনে তুলে ধরেন।
কর্মশালায় বক্তারা বলেন, প্রচলিত ধারার চেয়ে ভিন্নধর্মী ট্রেনিংয়ে সাইবার বিপদ চোখের সামনে তুলে ধরে তা থেকে পরিত্রাণ পাবার উপায় দেখান হলে সেটা অনেক বেশি কার্যকর হবে। পরিপূর্ণ সচেতন কর্মীরাই আর্থিক খাতের সাইবার ঝুঁকি মোকাবেলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রিজার্ভ

৫ জানুয়ারি, ২০২৩
২৬ নভেম্বর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ