Inqilab Logo

বুধবার, ০৩ জুলাই ২০২৪, ১৯ আষাঢ় ১৪৩১, ২৬ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন নিয়ে চলছে জোর আলোচনা

দক্ষিণ-পশ্চিমের রাজনীতির মাঠে এখন ইলেকশন ট্রেনের হুইসেল

| প্রকাশের সময় : ২২ জুলাই, ২০১৭, ১২:০০ এএম

মিজানুর রহমান তোতা : নির্বাচন কমিশন (ইসি) রোডম্যাপ ঘোষণার পর রাজনৈতিক দলগুলো ইলেকশন পলিসি নির্ধারণে ব্যস্ত হয়ে উঠেছে। দক্ষিণ-পশ্চিমে রাজনীতির গতিপ্রকৃতিতে এই আলামত স্পষ্ট। কেন্দ্র থেকে দফায় দফায় তৃণমুলের নানা ধরণের তথ্য সংগ্রহ ও নির্বাচনের মাঠ পরিস্থিতির খবর নেওয়া হচ্ছে অনেকটা প্রতিমূহূর্তে। কেন্দ্র আর তৃণমূল নেতা ও কর্মীরা এখন একেবারে কাছাকাছি চলে এসেছে। যোগাযোগ বেড়ে গেছে বহুমাত্রায়। প্রধান দু’টি রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এবং বিএনপির মহাসচিব মীর্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের যশোর-খুলনায় রাজনৈতিক কর্মসূচীতে অংশগ্রহণ, দিকনির্দেশনা নির্বাচনী আবহের গতি বাড়িয়ে দিয়েছে। ইসির রোডম্যাপ নিয়ে মঞ্চে ময়দানে রাজনৈতিক বক্তব্য দেওয়া হলেও ব্যক্তিগত আলাপচারিতা ও ভাব বিনিময়ে সময় খুবই কম তাই জোরালোভাবে নির্বাচনী প্রস্ততির ইঙ্গিত এবং রাজনীতির মাঠে নানামুখী তোড়জোড় জানান দিচ্ছে এখন চারিদিকে ইলেকশন ট্রেনের হুইসেল।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, আসছে একাদশ সংসদ নির্বাচনে প্রধান বিরোধীদল বিএনপিসহ সকল রাজনৈতিক দল নিশ্চিত নির্বাচনী মাঠে নামছে। এবারের নির্বাচনে বদলে যেতে পারে অনেক কিছুই। ভোট হবে চরম প্রতিদ্ব›িদ্বতাপুর্ণ। ইতোমধ্যে মাঠ, ঘাট, অফিস আদালত, চায়ের টেবিলে বিভিন্ন আড্ডায় বেশ জোরেসোরেই আলোচনা হচ্ছে জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে। বহুপ্রশ্নের অবসান ঘটেছে ইতোমধ্যে। রাজনীতির বাতাবরণে সবক’টি জানালা খুলে গেছে। সবদলের অংশগ্রহণে তৈরী হয়েছে খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের ক্ষেত্র । খুলনা মহানগরীর চারিদিকে খুব জোরালোভাবেই চলছে নির্বাচনী আলোচনা। খুলনা সিটির নির্বাচনী অংক গোটা দক্ষিণ-পশ্চিমের ১০ জেলার একাদশ জাতীয় সংসদের হিসাব-নিকাশে অনেকটাই প্রভাব ফেলবে এমন মন্তব্য করেছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। একাধিক সুত্র জানায়, প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দলের দুর্বল করতে জাতীয় ইস্যু ছাড়াও এলাকা এবং আসনভিত্তিক কোন মারণাস্ত্র কিভাবে ব্যবহার করা যাবে তার ছক আঁটছে।
এবারের নির্বাচনের কর্মকৌশল নির্ধারণের ক্ষেত্রে গতানুগতিক ধারার বাইরে আসার ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। রাজনৈতিক নেতারা মুখ খুলছেন না। এটুকু বলছেন নতুন ধারার ইলেকশন পলিসি নির্ধারণের চেষ্টা করা হচ্ছে। প্রধান দুই রাজনৈতিক দলই এ ব্যাপারে গুরুত্ব দিচ্ছে। নতুন প্রজন্মকে কাছে টানার কৌশল রপ্ত করছে উভয়দল। সেইসাথে নির্দল ভোটারদের কাছে টানার পথ খুঁজে বের করা হচ্ছে। বদ্ধমূল ধারণা আটঘাট বেঁধে এমনভাবে মাঠ প্রস্তত করা হবে যাতে নির্দল ভোটাররা কংক্রিট থাকে। যাতে এবার ভোটের আগেই ভোট হওয়ার ক্ষেত্রে কোন অসুবিধা না হয়। তাছাড়া নির্বাচন দোরগোড়ায় আসলে তালবেতাল পরিস্থিতির মধ্যে ভাসমান ভোটারদের সামাল দেওয়া যায় না। তাই আগে থেকেই তাদের সমর্থন পুরোপুরি নিশ্চিত করার যাবতীয় পরিবেশ তৈরী করা হবে। যাতে শেষ সময়ে বেগ পেতে না হয়। এই পলিসিতে কোন দলের কতটুকু ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটবে তা এখন বলার সময় আসেনি।
গোটা দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ৩৬টি সংসদীয় আসন এলাকায় কোন দলের কে প্রার্থী হচ্ছেন এটি আলোচনায় আসছে। কার কি অবস্থান হতে পারে তারও হিসাব চলছে। সাধারণ ভোটারদের ভাবনায় এসে গেছে নির্বাচন। সাম্প্রতিক রাজনীতিতে অতীত বর্তমান ও ভবিষ্যত নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ হচ্ছে। কেন্দ্রীয় জেলা ও উপজেলার এমনকি ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতা যারা মাঠে নামতেন না এখন কর্মী ও সমর্থকদের খোঁজ খবর নিচ্ছেন। ঘন ঘন সরাসরি ও মোবাইলে কিংবা প্রতিনিধি মাধ্যমে সালাম পৌছে দিচ্ছেন। গ্রাম মাঠের লোকজন একে অপরের সঙ্গে দেখা হলেই বলাবলি করছে ‘ওরে ভাই ভোট বোধহয় এসে গেছে, নেতাদের নড়াচড়া দেখা যাচ্ছে, আমাদের মনে হয় একটু আদর কদর বাড়ছে। রাজনীতির সাথে জড়িতরা যারা না চেনার ভাব দেখাতেন, তারা এখন একবার না শুনলে দু’বার ডেকে ভালোমন্দ জিজ্ঞেস করছেন। যেসব এমপির বছরে এলাকায় দেখা যেত না, এখন মাসে মাসে নানা কাজকামের অজুহাতে ঘুরঘুর করছেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ