পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : দেশকে একদলীয় দু:শাসনের চরম অন্ধাকরে নিপতিত করতে গণবিচ্ছিন্ন ভোটারবিহীন সরকার এখন সীমা ছাড়িয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। তিনি বলেন, সরকারের চরম সীমালঙ্ঘনের কারণেই দেশে রাজনৈতিক, সামাজিক কিংবা ধর্মীয় সংগঠনগুলোকে উন্মুক্ত কোন স্থানেই নয় বরং ঘরোয়া পরিবেশেও সভা কিংবা আলাপ-আলোচনা করতে বাধা দেয়া হচ্ছে। সরকারি মদদে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। গতকাল (শনিবার) বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন। বিবৃতিতে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আব্দুর রবের বাসায় রাজনৈতিক ও নাগরিক সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের বৈঠক চলাকালে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উপস্থিতির নিন্দা জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া বলেন, পুলিশী বাধা অথবা কোন কোন ক্ষেত্রে হামলা চালিয়ে সেসব সভা ও আলোচনা নস্যাৎ করতে যে ন্যাক্কারজনক অসদাচরণ করা হচ্ছে সেটির ধিক্কার জানানোর ভাষা নেই। আ স ম আব্দুর রব এর বাসভবনে অনুষ্ঠিত রাজনৈতিক দলসমূহের সিনিয়র নেতৃবৃন্দের সভায় পুলিশী হস্তক্ষেপে আবারো প্রমানিত হলো রাষ্ট্র এখন অমানবিক এবং চরম গণবিরোধী। দেশে গণতন্ত্র শূণ্যতার কারণেই আইনের শাসন নিরুদ্দেশ হয়ে গেছে। সরকারি মদদে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো এখন বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। ভোটারবিহীন সরকারের আনুগত্য করতে গিয়ে তারা হিতাহিত জ্ঞান শূণ্য হয়ে পড়েছে। বিরোধী দল ও বিরোধী মত দমন করতে পুলিশকে লাগামহীন লাইসেন্স দেয়ার কারণেই সামাজিক অপরাধগুলো প্রশ্রয় পাচ্ছে তীব্র মাত্রায়। অনাচার বৃদ্ধির কারণেই শান্তিপ্রিয় সাধারণ মানুষ এখন ভয়-ভীতি-শঙ্কার মধ্যে দিনাতিপাত করছে। তিনি বলেন, অশুভ উদ্দেশ্যেই আ স ম আব্দুর রব এর বাসায় পুলিশ প্রবেশ করেছে। এর মূল লক্ষ্য হচ্ছে-রাষ্ট্র ও সমাজের মধ্যে একটা ভয়াবহ আতঙ্ক সৃষ্টি করা যাতে কেউ সরকারের বিরুদ্ধে টু শব্দ করতে না পারে। আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তায় নিরঙ্কুশ ক্ষমতার অধিকারী থাকার জন্য বর্তমান সরকার যাদের প্রতিপক্ষ মনে করে তাদেরকে নির্মূল করতে নানা পন্থা অবলম্বন করেছে, তারই অংশ হিসেবে আ স ম রবের বাসায় বৈঠক না করতে পুলিশকে ব্যবহার করা হয়েছে। কিন্তু বর্তমান স্বৈরাচারী শাসনের বিরুদ্ধে জনগণ এখন আরো বেশী সংগঠিত ও ঐক্যবদ্ধ। সময় অতি সন্নিকটে যখন জনগণের সম্মিলিত গণরোষে এই নিপীড়ক সরকারের মূলোৎপাটন ঘটবে। আমি সরকারের প্রতি আহবান জানাই-গণবিরোধী জুলুমের পথ থেকে অবিলম্বে সরে আসুন, অন্যথায় যুগে যুগে সকল স্বৈরাচারের মতোই আপনাদের পরিণতি বরণ করতে হবে।”
অপর এক বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আ স ম আব্দুর রব এর বাসভবনে রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ ও নাগরিক সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে বৈঠকের সময় অযাচিতভাবে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি এবং দ্রæত সময়ের মধ্যে সভা শেষ করতে পুলিশী হস্তক্ষেপের ঘটনায় তীব্র নিন্দা, প্রতিবাদ ও ধিক্কার জানিয়েছেন। তিনি বলেন, দেশে এখন বিকৃত দু:শাসন চলছে। এই কারণেই রাষ্ট্র ও সমাজে বিরাজমান রয়েছে চরম অস্থিরতা ও নৈরাজ্যকর পরিবেশ। মানুষের বাক-ব্যক্তি ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা পুরোপুরি কেড়ে নিয়ে তুঘলকি রাজত্ব বলবৎ করা হয়েছে। একদলীয় শাসনে সভা-সমাবেশ করার অধিকার আওয়ামী লীগেরই-এই ভ্রষ্ট নীতির জন্য সরকারকে একদিন জনগণের নিকট জবাবদিহি করতেই হবে। সকল স্বৈরাচারের বৈশিষ্ট্যই হলো-ক্ষমতার স্বাদ ও মোহে তারা লোভী ও প্রতিহিংসা পরায়ণ হয়ে ওঠে, আর সেজন্য সাংবিধানিক এবং আইনের শাসনকে অগ্রাহ্য করে থাকে। আওয়ামী লীগ সেই ঐতিহ্যই বহন করছে। তবে জনগণ আর বসে থাকবেনা, ঐক্যবদ্ধ শক্তি দিয়ে দু:শাসন মোকাবেলায় জনগণ এখন প্রস্তুত। তিনি জাসদের ঘরোয়া সভায় পুলিশী হস্তক্ষেপের ঘটনায় নিন্দা জানান এবং অবিলম্বে সরকারকে এধরণের ন্যাক্কারজনক আচরণ থেকে সরে আসার আহবান জানান।
লন্ডন গেলেন বেগম খালেদা জিয়া
চিকিৎসার জন্য লন্ডন গেলেন বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া। গতকাল শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় এমিরেটস এয়ার লাইন্সের একটি ফ্লাইটে তিনি লন্ডনের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেন। তাকে বিদায় জানাতে হযরত শাহজালাল (র.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এলাকায় জড়ো হন বিএনপির বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী।
বিমান বন্দরে দলীয় প্রধানকে বিদায় জানিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ম্যাডাম চিকিৎসার জন্য লন্ডন যাচ্ছেন। সেখানে চিকিৎসার ওপর নির্ভর করছে তার দেশের ফেরার সময়। তবে দলীয় এক সূত্র জানায় দু’মাসের মতো সময় লন্ডনে থাকার পরিকল্পনা আছে খালেদা জিয়ার। বড় ছেলে তারেক রহমানের বাসায় দুই ছেলের বউ এবং নাতি-নাতনীদের সাথে লন্ডনে তার ঈদ উল আজহা উদযাপনের পরিকল্পনা রয়েছে। তবে সবকিছু নির্ভর করছে চিকিৎসকের পরার্মশের ওপর। দেশে ফিরেই তিনি সহায়ক সরকারের রূপরেখা দেবেন বলে দলের নীতিনির্ধারকরা জানিয়েছেন। চিকিৎসার জন্য এই সফর বলা হলেও নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকারের রূপরেখা ঘোষণা এবং অন্যান্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক বিষয় সেখানে চ’ড়ান্ত হবে। এজন্য বেগম খালেদা জিয়ার এই লন্ডন সফর রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক আলোচিত হচ্ছে।
বিএনপি চেয়ারপার্সনের সফরসঙ্গী না হলেও ইতোমধ্যেই লন্ডনে গেছেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা, সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন কবীর। তারা ১৭ ও ১৮ জুলাই লন্ডনের হাউজ অব লর্ডসে একটি আন্তর্জাতিক সেমিনারে অংশ নেবেন।
রাজধানীর গুলশানের বাসা ফিরোজা থেকে গতকাল সন্ধ্যা ৬টায় বিমানবন্দরের উদ্দেশ্যে বের হন বেগম খালেদা জিয়া। তার সফর সঙ্গি হিসেবে একই বিমানে লন্ডনে গেছেন তার একান্ত সচিব এ বি এম আবদুস সাত্তার ও গৃহপরিচারিকা ফাতেমা। বিমানবন্দরে খালেদা জিয়াকে বিদায় জানান দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, মীর মো. নাসির, আবদুল মান্নান, আমান উল্লাহ আমান। সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, ব্যারিস্টার মাহবুবউদ্দিন খোকন, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, হাবিবুন নবী খান সোহেল, খায়রুল কবির খোকন, হারুণ অর রশিদ, আবদুস সালাম, আবুল বাশার, অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া, সুলতানা আহমেদ, শাম্মী আকতার, হেলেন জেরিন খান, নিলুফার চৌধুরী মনি, প্রেস ইউং সদস্য শায়রুল কবির খান, শামসুদ্দিন দিদার প্রমুখ।
সর্বশেষ ২০১৫ সালে ১৬ সেপ্টেম্বর খালেদা জিয়া লন্ডন গিয়েছিলেন। সেবার তারেকসহ পরিবারের সবার সঙ্গে ঈদ করেই দেড় মাস পর ফিরেছিলেন তিনি। এবার কোরবানির ঈদ হবে সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে। ঈদ করে এলে দেড় মাসের বেশি সময় দেশের বাইরে থাকবেন বিএনপি চেয়ারপারসন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।