Inqilab Logo

শনিবার ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

রাজবাড়ীতে জোড়াতালি দিয়ে চলছে বিআইডবিøউটিসি’র ওয়েস্কেল

সৃষ্ট যানজটে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী

| প্রকাশের সময় : ১৫ জুলাই, ২০১৭, ১২:০০ এএম

নজরুল ইসলাম, রাজবাড়ী থেকে : ফেরি পারাপারের পন্যবাহী ট্রাক পরিমাপের জন্য রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ শহরের কোর্টচত্ত¡র এলাকার স্থাপিত বিআইডবিøউটিসি’র ওয়েস্কেলটি জরাজীর্ণ হয়ে পড়ায় জোড়াতালি দিয়ে চলছে। স্বাভাবিক ভাবে ট্রাকের ওজন পরিমাপ করতে না পারায় ওই এলাকায় মহাসড়কে নিয়মিত যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। এতে করে পাশে থাকা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যাতায়াতে বিঘœসহ যানবাহনের উচ্চ শব্দে রোগী ও এলাকাবাসীর চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। সরেজমিনে দেখা যায়, ভাঙ্গা-চোরা ওয়েস্কেল ও দুই পাশের এপ্রোস সড়কে ঝুঁকির মধ্যে চলছে ট্রাকের ওজন নির্ণয় কার্যক্রম। স্কেলের গার্ডার ভেঙ্গে যাওয়ায় মাল ভর্তি ট্রাকগুলো ওজন ¯িøপ নিয়ে সরাসরি স্কেলের উপর দিয়ে যেতে পারছে না। স্কেলের উপর যানবাহন উঠে ওজন পরিমাপের পর যানবাহনটি পুনারায় পিছন ফিরে প্রধান সড়কে নামছে। ওজন মেপে স্কেলের উপর দিয়ে সরাসরি সামনে নেমে যাওয়ার মতো অবস্থায় নেই স্কেলটি। এভাবে পেছন ফিরে চলাচল করতে গিয়ে প্রায়ই যানবাহন বিকল হয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটছে। এ বিড়ম্বনার কারণে ওই এলাকায় প্রতিদিন দীর্ঘ যানজট লেগে থাকছে। স্কেলের দুই পাশে কালো কালো ধারালো ঝামা ইট ফেলে গর্ত ভরাট করা হয়েছে। এ্যাপ্রোচ সড়কে পিচ ঠালাই না থাকায় সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্ত। এখান দিয়ে ওঠা-নামা করতে গিয়ে মালবাহী যানবাহনগুলো উল্টে গিয়ে অথবা চাকা ফেটে যাওয়ার আশঙ্কায় থাকেন চালকরা।
এই স্কেল থেকে সরকারের প্রতিদিন প্রায় লক্ষাধিক টাকা আয় হয় বলে বিআইডবিøউটিসি জানায়। দৌলতদিয়া ঘাট দিয়ে যানবাহনগুলো ফেরিতে ওঠার আগে এই স্কেলে পরিমাপ করে ¯িøপ নিতে হয়। সে অনুযায়ী নির্দিষ্ট টাকায় কিনতে হয় ফেরির টিকিট। প্রতিটি ট্রাকে নির্দিষ্ট পরিমান মালের অতিরিক্ত মাল বহন করলে প্রতি টনে ১২০ টাকা হারে অতিরিক্ত মাসুল দিতে হয়। স্কেলটি হতে সরকার যথেষ্ট রাজস্ব আয় করলেও স্কেলটি সংরক্ষণে সেরূপ নজরদারী নেই। উল্টো বছরে ২-১ বার সংস্কারের নামে লাখ লাখ টাকা খরচ করা হয়।
জানা যায়, প্রায় ৪ বছর আগে ঢাকার ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স বেলাল এন্ড ব্রাদার্স কোম্পানী স্কেলটি স্থাপন করে। স্থাপনের সময় স্কেলটির দুই পাশে কাচা মাটির উপর নাম মাত্র কার্পেটিং করে এ্যাপ্রোচ সড়ক তৈরী করা হয়। এছাড়া স্কেলটির নির্মাণে কারিগরী ত্রæটি থাকায় মাত্র ৩মাস পর থেকেই স্কেলের মেরামতের কাজ করতে হয়। তারপর থেকেই চলছে সংস্কারের নামে সরকারী টাকা জলে ফেলার কর্মকান্ড। বার বার সংস্কার না করে উন্নত প্রযুক্তি সম্পন্ন নতুন স্কেল নির্মাণের কথা বলেন সংশ্লিষ্ট কয়েকজন।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আজিজুর রহমান খান বলেন, হাসপাতালের কাছে এ ধরণের একটি ওয়ে স্কেল স্থাপন করা সঠিক ছিল না। স্কেলটির কারণে এ এলাকায় নিয়মিত যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। জরুরী রোগী আনা-নেয়ার ক্ষেত্রে এ্যাম্বুলেন্সসহ অন্যান্য গাড়ি হাসপাতালে প্রবেশের যায়গাটুকু থাকে না। তাছাড়া সারারাত অসংখ্য গাড়ীর হাইড্রলিক হর্ণের শব্দে রোগীদের প্রচন্ড সমস্যা হচ্ছে। সরু সড়ক হওয়ায় প্রায়ই এখানে ছোট-খাটো গাড়ী উল্টে যাওয়ার ঘটনাও ঘটছে। স্কেলটি অন্য কোন ভাল জায়গায় সরিয়ে নিতে বিভিন্ন সময় উপজেলা পরিষদের সমন্বয় সভায় তিনি দাবী তুলেছেন বলে জানান।
বিআইডবিøউটিসি’র দৌলতদিয়া ঘাট ব্যবস্থাপক শফিকুল ইসলাম জানান, চলতি সপ্তাহে স্কেলটি নতুন করে সেটিং এর কাজ শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, স্কেলটি নতুন করে সেটিং করা হলে হয়ত আর এ ধরনের সমস্যা থাকবে না। গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি (তদন্ত) মো. জিয়ারুল ইসলাম এ প্রসঙ্গে বলেন, যখন দৌলতদিয়া ফেরিঘাটে কোন যানজট থাকে না তখনও শহরের মধ্যে ওয়েস্কেলের যানজট পরিস্থিতি নিয়ে থানা পুলিশকে ব্যস্ত থাকতে হয়। বিষয়টির একটি স্থায়ী সমাধান হওয়া দরকার।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ