Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অবৈধভাবে টেলিযোগাযোগ সেবা দিচ্ছে সাবমেরিন কোম্পানি

| প্রকাশের সময় : ১৪ জুলাই, ২০১৭, ১২:০০ এএম

ফারুক হোসাইন
লাইসেন্স ছাড়াই অবৈধভাবে টেলিযোগাযোগ সেবা প্রদান করছে বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানি লিমিটেড (বিএসসিসিএল)। যেকোন ধরণের টেলিযোগাযোগ সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ সংস্থা (বিটিআরসি) থেকে লাইসেন্স গ্রহণের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। লাইসেন্স ছাড়া কোন প্রকার টেলিযোগাযোগ সেবা কার্যক্রম পরিচালনার সুযোগ নেই।
কিন্তু এরপরও প্রায় ৯ বছর আগে নেয়া একটি পারমিট দিয়েই এই কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে রাষ্ট্রায়ত্ত¡ সাবমেরিন ক্যাবল প্রতিষ্ঠানটি। কমিশন হতে সাবমেরিন ক্যাবল সিস্টেমস এন্ড সার্ভিসেস লাইসেন্স গ্রহণের জন্য গত প্রায় দেড় বছর ধরে কয়েকদফা চিঠি দেয়া হলেও চিঠির জবাব দেয়ার প্রয়োজনই মনে করেনি বিএসসিসিএল। সিস্টেমস এন্ড সার্ভিসেস লাইসেন্স গ্রহণের জন্য আবারও প্রতিষ্ঠানটিকে চিঠি দিয়েছে বিটিআরসি।
কমিশনের লিগ্যাল এন্ড লাইসেন্সিং বিভাগের সিনিয়র সহকারী পরিচালক মোঃ রাইসুল ইসলাম স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে লাইসেন্স গ্রহণ ছাড়া কোন প্রকার টেলিযোগাযোগ সেবাপ্রদান কার্যক্রম পরিচালনার সুযোগ নেই স্মরণ করিয়ে দেয়া হয়েছে। এতে বলা হয় লাইসেন্সবিহীন টেলিযোগাযোগ সেব প্রদান কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে অবৈধ ও আইনত দÐনীয় অপরাধ। টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ সংস্থা সূত্রে জানা যায়, কমিশন হতে সাবমেরিন ক্যাবল সিস্টেমস এন্ড সার্ভিসেস লাইসেন্স গ্রহণের জন্য গত ২২ জুন সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানিকে চিঠি দেয় বিটিআরসি। এর আগে কয়েক দফা একই ইস্যুতে চিঠি দেয়া হলেও লাইসেন্স গ্রহণ তো দূরের কথা সেসব চিঠির কোন জবাবই দেয়নি বিএসসিসিএল। সাবমেরিন ক্যাবল সিস্টেমস এন্ড সার্ভিসেস এর জন্য কোন লাইসেন্সিং গাইডলাইন না থাকায় ২০০৮ সালের ২২ সেপ্টেম্বর ওই সেবা প্রদানের জন্য বিএসসিসিএলের অনুকূলে একটি পারমিট ইস্যু করে বিটিআরসি। ওই পারমিটে উল্লেখ করা হয় পরবর্তীতে এই পারমিট কমিশনের লাইসেন্সের মাধ্যমেই স্থলাভিষিক্ত হবে। ২০১১ সালের ৩১ এপ্রিল সাবমেরিন ক্যাবল সিস্টেমস এন্ড সার্ভিসেস লাইসেন্স সংক্রান্ত একটি গাইডলাইন ইস্যু করে নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। ওই গাইডলাইনের ৪.২২ ক্লজ অনুযায়ি বিদ্যমান সাবমেরিন ক্যাবল সেবা প্রদানকারী অপারেটরের জন্য প্রযোজ্য ফিস ও চার্জ পরিশোধ করে একটি নতুন সাবমেরিন ক্যাবল লাইসেন্স ইস্যু করার বিধান রাখা হয়। এই ক্লজ অনুযায়ি বিএসসিসিএল এর অনুকূলেও লাইসেন্স গ্রহণের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। গাইডলাইনের শর্ত অনুযায়ি লাইসেন্স গ্রহণের জন্য ২০১৬ সালের ১৬ এপ্রিল সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানিকে চিঠি দেয় বিটিআরসি। সে সময় সেই চিঠির কোন জবাবই দেয়নি রাষ্ট্রায়ত্ত¡ প্রতিষ্ঠানটি। পরবর্তীতে একই বছরের ২১ ডিসেম্বর আবারও একই ইস্যুতে চিঠি দেয় কমিশন। এবারও একইভাবে বিএসসিসিএল থেকে কোন জবাব আসেনি। ফলে আবারও গত ২২ জুন চিঠি দিয়েছে বিটিআরসি।
চিঠতে বলা হয়, লাইসেন্স গ্রহণের জন্য একাধিকবার কমিশন হতে অনুরোধ করা হলেও বিএসসিসিএল লাইসেন্স প্রাপ্তির উদ্দেশ্যে আবেদনপত্র দাখিল কিংবা কমিশনের পত্রের কোন জবাব প্রদান করেনি। যা অনাকাক্সিক্ষত। এ বিষয়ে পুনরায় স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলা হয়, কমিশন হতে লাইসেন্স গ্রহণ ব্যতিরেকে কোন প্রকার টেলিযোগাযোগ সেবাপ্রদান কার্যক্রম পরিচালনা করার সুযোগ নেই। লাইসেন্সবিহীন টেলিযোগাযোগ সেবা প্রদান কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে অবৈধ ও আইনত দÐনীয় অপরাধ।
তাই আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের পূর্বে আবারও সাবমেরিন ক্যাবল লাইসেন্সিং গাইডলাইনের ক্লজ ৬.৪ অনুযায়ি লাইসেন্সিং একুইজিশন ফি ১০ কোটি টাকা, এই ফি এর উপর ১৫ শতাংশ মূল্য সংযোজন করসহ মোট ১১ কোটি ৫০ লাখ টাকা জমা দিতে বলা হয়েছে। এছাড়া প্রতিষ্ঠানটির মেমোরেন্ডাম অব এসোসিয়েশন, আর্টিক্যাল অব এসোসিয়েশন, সার্টিফিকেট অব ইনকর্পোরেশন ইত্যাদিসহ আবেদনপত্র কমিশনের দাখিলের জন্য অনুরোধ করা হয়। এছাড়া কমিশন হতে লাইসেন্স গ্রহণ করে গাইডলাইন ও লাইসেন্সের বিধান অনুযায়ি সেবা প্রদানের জন্যও বিএসসিসিএলকে বলা হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএসসিসিএলর এমডি মোঃ মনোয়ার হোসেন বলেন, লাইসেন্স ফি সাড়ে ১১ কোটি টাকা তাদের কাছে বেশি মনে হওয়ায় তারা এতোদিন এটি গ্রহণ করেনি। তবে আগামী ২-৩ মাসের মধ্যে এবিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে। তবে পারমিট দিয়ে তারা সেবা প্রদান করছেন বলে তিনি জানান। লাইসেন্সিং গাইডলাইন অনুযায়ি গাইডলাইন তৈরি হওয়ার পর থেকেই পারমিটের কোন বৈধতা নেই মনে করিয়ে দিলে তিনি আর কিছু বলতে চাননি। বিটিআরসি’র চেয়ারম্যান দেশের বাইরে থাকায় এ বিষয়ে কথা বলা সম্ভব হয়নি। এছাড়া কমিশনের অন্যান্য কর্মকর্তারা এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ