Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ফেসবুকে সর্বনাশ মেধাবী এক যুবকের !

| প্রকাশের সময় : ১৪ জুলাই, ২০১৭, ১২:০০ এএম

চট্টগ্রাম ব্যুরো
ফেসবুকে পরিচয়। এরপর অসম প্রেম-প্রণয়। একপর্যায়ে ইউটিবিউবে অশ্লীল ছবি ছেড়ে দিয়ে টাকা আদায়। অবশেষে পুলিশের হাতে গ্রেফতার। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের অপব্যবহারে এভাবে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে এক সম্ভাবনাময় মেধাবী যুবকের ভবিষ্যত। তার নাম ইমরান সরকার (১৮)। চট্টগ্রামের একটি কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন তিনি। ভর্তি হন একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে। থাকেন বগুড়া শহরে। ছয় আগে ফেসবুকে বয়সে প্রায় দ্বিগুণ বয়সী এক নারীর সাথে পরিচয় হয় তার। প্রথমে ফেসবুকে চ্যাট। এরপর ফোনালাপ। তারপর কাছাকাছি আসা। ব্যক্তিগত ছবি সংগ্রহ করে ইউটিউবে ছেড়ে দেয় ইমরান। আদায় করা হয় মোটা অঙ্কের টাকা।
চট্টগ্রামে তথ্যপ্রযুক্তি ও পর্ণগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনের এক মামলায় ইমরান সরকারকে গ্রেফতারের পর এসব তথ্য জানিয়েছেন নগর গোয়েন্দা পুলিশের কর্মকর্তারা। গ্রেফতার ইমরান গাইবান্ধার গোরিন্দগঞ্জ উপজেলার নাগের ভিটার বাসিন্দা তাজউদ্দিন সরকারের ছেলে। বগুড়া সদর থেকে বুধবার গ্রেফতারের পর রাতে তাকে চট্টগ্রামে নিয়ে আসে পুলিশ।
চট্টগ্রামের বাসিন্দা এক নারীকে ‘ব্ল্যাকমেইল’ করে টাকা দাবির অভিযোগে নগরীর চান্দগাঁও থানায় ‘তথ্যপ্রযুক্তি ও পর্ণগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে’ গত ১ জুলাই দায়ের করা মামলায় তাকে গ্রেফতার করা হয় বলে জানান মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও নগর গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক ইলিয়াছ খান। তিনি জানান, ইমরান নিজের পরিচয় গোপন করে ‘কাব্য শাহরিয়ার’ নামে একটি ফেইসবুক আইডি থেকে অভিযোগকারী নারীর সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলেন। গত মার্চে তিনি ওই নারীর কাছ থেকে দুই লাখ টাকা ধার নেন। পরে আরও টাকা চাইলে ওই নারী না দেওয়ায় ব্যক্তিগত ফোনালাপ ও বিভিন্ন ভিডিও ইউটিউবে প্রকাশ করে দেন। জানা যায়, ইমরান পঞ্চম শ্রেণিতে বৃত্তির সঙ্গে জেএসসিতেও জিপিএ-৫ পেয়ে বৃত্তি পান। ২০১৪ সালে গাইবান্ধার গুগা আব্দুল জলিল হাই স্কুল থেকে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে পাশ করে চট্টগ্রাম চলে আসেন। গত বছর নগরীর বেপজা কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করে বগুড়া চলে যান। বগুড়া যাওয়ার পর ফেসবুকে আসক্ত হয়ে পড়ে এ সম্ভাবনাময় তরুণ। এরপর একের পর এক ফেসবুকে অপরাধ করতে থাকে সে। পড়ালেখা বাদ দিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে রোজগার শুরু করে ইমরান সরকার। পড়াশুনায় ভালো হওয়ার পরও পরিবারের নজরদারি না থাকা এবং ইন্টারনেটের অপব্যবহারের কারণে ইমরান অপরাধমূলক কাজে জড়িয়ে পড়ে বলে ভাষ্য পুলিশ কর্মকর্তাদের।
চার ভাই দুই বোনের মধ্যে তৃতীয় ইমরান চট্টগ্রামে এসে বন্ধুদের মাধ্যমে ফেইসবুক ব্যবহার শুরু করেন। ‘ইমরান সরকার’ নামে তার একটি আইডি থাকলেও ‘কাব্য শাহরিয়ার’ নামে ওই ভুয়া আইডি চালায় বলে জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন তিনি। এভাবে অনেকের সাথে প্রতারণা করার কথাও স্বীকার করে ইমরান।
পুলিশ কর্মকর্তা ইলিয়াছ বলেন, ইমরান ওই নারীর কাছ থেকে আরও দুই লাখ টাকা দাবি করলে তিনি তা দিতে অস্বীকৃতি জানান। এসময় তাদের মধ্যে বিনিময় করা ভিডিও ইউটিউবে প্রকাশ করে ওই নারীকে তার লিঙ্ক পাঠান তিনি। এছাড়া বিভিন্ন সময়ে ওই নারীকে সামাজিকভাবে হেয় করার জন্য ইউটিউবে আরও ছবি প্রকাশের হুমকি দেয়। এতে ভয় পেয়ে ওই নারী এক লাখ ৪০ হাজার, ২০ হাজার ও ১০ হাজার করে তিন দফায় এক লাখ ৭০ হাজার টাকা দেয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ