পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
পঞ্চায়েত হাবিব : স্থানীয় সরকারের সিটি করপোরেশন, পৌরসভা, জেলা পরিষদ, উপজেলা পরিষদ ও ইউনিয়ন পরিষদের জনপ্রতিনিধিদের সম্মানী ভাতা বৃদ্ধি করেছে সরকার। আগামী মাস থেকে কার্যকর হচ্ছে।
স্থানীয় সরকার বিভাগের অধীনে জনপ্রতিনিধিদের মাসিক সম্মানী ভাতা বাড়ানোর প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এদের মধ্যে আছেন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, জেলা পরিষদ সদস্য, উপজেলা চেয়ারম্যান, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান এবং ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান। প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় থেকে ইনকিলাবকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। যে কোন সময় প্রজ্ঞাপনি জারি করবে অর্থ মন্ত্রণালয়। স্থানীয় সরকার বিভাগ জনপ্রতিনিধিদের সম্মানী ভাতার বিষয়ে প্রস্তাব করেছিল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল মঙ্গলবার এ প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছেন। পাঁচ স্তরের জনপ্রতিনিধিরা গত বছরের ১ জুলাই থেকেই সম্মানী ভাতা বৃদ্ধির সুবিধা পাবেন। ৬৭ হাজার জনপ্রতিনিধির মধ্যে সিটি করপোরেশনের মেয়র ও কাউন্সিলর, পৌরসভার মেয়র ও কাউন্সিলর, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্য, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান এবং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যদের সম্মানী বাড়ানো হয়েছে।
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন ইনকিলাবকে বলেন. মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কথা দিয়েছিলেন তা বাস্তবায়ন করলেন। আমরা চাই স্থানীয় সরকারের সিটি করপোরেশন, পৌরসভা, জেলা পরিষদ, উপজেলা পরিষদ ও ইউনিয়ন পরিষদের জনপ্রতিনিধিদের সম্মানী ভাতা বৃদ্ধি হলে দুর্নীতি আর হবে না।
জানা গেছে, নতুন সম্মানী ভাতা কাঠামোতে এখন থেকে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মাসিক সম্মানী পাবেন ৫৪ হাজার টাকা। জেলা পরিষদ সদস্যরা পাবেন ২৫ হাজার টাকা। এছাড়া উপজেলা চেয়ারম্যানের মাসিক সম্মানী ২০ হাজার ৫০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৪৯ হাজার টাকা, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যানের মাসিক সম্মানী ১৪ হাজার ৫০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২৭ হাজার এবং ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানে সম্মানী তিন হাজার ৫০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে আট হাজার টাকা করা হয়েছে। এর মধ্যে সিটি মেয়রদের ভাতা বর্তমানের ৪৪ হাজার ৫০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৮৫ হাজার টাকা করা হয়েছে। কাউন্সিলররা পাবেন বর্তমানের ১৭ হাজার ৫০০ টাকার স্থলে ৩৫ হাজার টাকা।
জানা গেছে, গত ৯ জানুয়ারি জনপ্রতিনিধিদের প্রস্তাবিত মাসিক সম্মানী ভাতা চূড়ান্ত করা হয়। কিন্তু স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের আপত্তিতে তা কার্যকর করা যায়নি। সব ধরনের ভাতা আবার পুনর্বিবেচনা করতে মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাব বিবেচনায় আনে অর্থ মন্ত্রণালয়। এরপর নতুনভাবে বিভিন্ন স্তরে ভাতার হার বাড়িয়ে যাছাই-বাছাই শেষে তা চূড়ান্ত করা হয়। প্রস্তাবে ‘ক’ শ্রেণীর পৌরসভা মেয়র এবং কাউন্সিলরের সম্মানী দ্বিগুণ হারে বাড়ানো হয়েছে। নতুন কাঠামো অনুযায়ী মেয়রের সম্মানী ৪০ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়। আগে এর পরিমাণ ছিল ২০ হাজার টাকা। একইভাবে কাউন্সিলরের সম্মানী চূড়ান্ত করা হয় ১০ হাজার টাকা। যা আগে ছিল ৫ হাজার টাকা। ‘খ’ শ্রেণীর পৌরসভা মেয়র এবং কাউন্সিলরের সম্মানী দ্বিগুণ হারে বেড়েছে। নতুন কাঠামোতে মেয়রের সম্মানী হচ্ছে ৩০ হাজার টাকা, আগে ছিল ১৫ হাজার টাকা। একইভাবে কাউন্সিলরের সম্মানীর হার নির্ধারণ করা হয়েছে ৮ হাজার টাকা, যা আগে ছিল ৪ হাজার টাকা। দ্বিগুণ হারে ‘গ’ শ্রেণীর মেয়র ও কাউন্সিলরের সম্মানী বাড়ানো হয়েছে। নতুন কাঠামোতে মেয়রের সম্মানী নির্ধারণ করা হয় ২৪ হাজার টাকা। এর আগে পেতেন ১২ হাজার টাকা। একইভাবে কাউন্সিলরের সম্মানী হচ্ছে ৬ হাজার টাকা, আগে ছিল ৩ হাজার টাকা। কিন্তু সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবে সম্মানীর হার আরও বাড়ি দিয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ ছাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের সম্মানী ভাতা নতুনভাবে নির্ধারণ করা হয়েছে ১০ হাজার টাকা। এরমধ্যে সরকারি অংশে পাবেন ৪ হাজার ৫০০ টাকা এবং ইউপি অংশে ৫ হাজার ৫০০ টাকা। আগে এই সম্মানীর হার ছিল ৩ হাজার ৫০০ টাকা। একইভাবে নতুন কাঠামোতে ইউপি সদস্যদের সম্মানী চূড়ান্ত করা হয়েছে ৮ হাজার টাকা। আগে এই সম্মানীর হার ছিল ২ হাজার টাকা।
২০১২ সালে জনপ্রতিনিধিদের সম্মানী এক দফা বেড়ে ছিল। এরপর আর বাড়ানো হয়নি। পরবর্তী সময়ে ভাতা বাড়ানোর প্রস্তাব আসে স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে। অর্থ মন্ত্রণালয় তা পর্যালোচনা করে গত ৯ জানুয়ারি জনপ্রতিনিধিদের সম্মানী নতুনভাবে নির্ধারণ করে। কিন্তু স্থানীয় সরকার বিভাগ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, সদস্য, পৌরসভার মেয়র ও কাউন্সিলরদের সম্মানী আরও বাড়ানোর সুপারিশ করে।
মাসিক সম্মানী ভাতা অনুমোদন দেয়ায় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন ফরিদপুর জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান লোকমান হোসেন মৃধা ইনকিলাবকে বলেন, জেলা পরিষদকে শক্তিশালী করার যে উদ্যোগ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর। যেভাবে সম্মানীত করলে এজন্য আমরা তার কাছে কৃতজ্ঞতাও প্রকাশ করছি। কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান হায়দার আলী মিঞা ইনকিলাবকে বলেন, আমাদের সম্মানী বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে এটি আমরা সন্তুষ্ট। তবে আমাদের প্রশাসনিক ক্ষমতার বিষয়টিও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে দেখার অনুরোধ করছি। এখন উপজেলায় কোনো উন্নয়ন কাজ করতে গেলে এমনকি আমাদের বেতন তুলতে গেলেও ইউএনওর স্বাক্ষর লাগে। এ বিষয়টি আমাদের জন্য অনেকটা অসম্মানের। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখলে আমরা কৃতজ্ঞ থাকবো।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।