পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে আধুনিক এবং শক্তিশালী সশস্ত্র বাহিনী গড়ে তোলায় তার সরকারের দৃঢ় অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেন, আমরা বর্তমান বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে চাই এবং আমরা চাই না কোন কিছুতেই পিছিয়ে থাকি। এ বিষয়টি মাথায় রেখেই আমরা সশস্ত্র বাহিনীকে আরো আধুনিক এবং শক্তিশালী করে গড়ে তুলছি।
গতকাল বুধবার ঢাকা সেনানিবাসের পিজিআর (প্রেসিডেন্ট গার্ড রেজিমেন্ট) সদর দপ্তরে পিজিআরের ৪২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে প্রধানমন্ত্রী একথা বলেন। তিনি সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের মত দু’টি সামাজিক দানবকে দমিয়ে আনায় সরকারের সাফল্য তুলে ধরে এ ধারা অব্যাহত রাখারও সংকল্প ব্যক্ত করেন।
ঢাকা সেনানিবাসের পিজিআর সদর দফতরে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। দুপুর ১টার দিকে অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছলে প্রধানমন্ত্রীকে সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আবু বেলাল মোহাম্মদ শফিউল হক এবং পিজিআরের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর হারুন স্বাগত জানান। এসময় প্রধানমন্ত্রীকে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়। প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানস্থল ঘুরে ঘুরে সবার সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন এবং পিজিআর সদস্যদের সঙ্গে ফটোসেশনে অংশ নেন। পিজিআর কমান্ডার বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর হারুন অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন।
শেখ হাসিনা বলেন, আজকে আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পরিচালিত জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে যাচ্ছে। সেখানে অন্যান্য সশস্ত্র বাহিনীর সঙ্গে তাঁদের কাজ করতে হয়। সেক্ষেত্রে আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা যেন কোন ক্ষেত্রে পিছিয়ে না থাকে, সেদিক থেকে তাদের জন্য আমরা সার্বিকভাবে চেষ্টা করে যাচ্ছি। কিভাবে তাঁদের আরো উন্নত, সম্মৃদ্ধ করা যেতে পারে, সেদিকে লক্ষ্য রেখে আমরা সশস্ত্র বাহিনীকে ঢেলে সাজাচ্ছি।
তিনি বলেন, বড় বড় দেশ, উন্নত দেশ। তাদের সবই আছে। কারণ তাদের সম্পদ আছে। আমাদের হয়তো সম্পদের সীমাবদ্ধতা আছে। তারপরেও আমরা একটা স্বাধীন দেশ। স্বাধীন, সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে যা যা থাকা দরকার, যদি একেবারে অল্প পরিমাণেও থাকে সেটা থাকতে হবে। তিনি বলেন, উন্নত দেশের মত অত বেশি আমরা পারবো না, কিন্তু তারপরেও আমাদেরও যা আছে এইটুকু যেন আমরা বলতে পারি গর্ব করে এবং বিশ্ব সভায় যেন মাথা উঁচু করে আমরা চলতে পারি। সেদিকে লক্ষ্য রেখেই আমরা আমাদের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আর সেই সম্পর্কে জ্ঞানটাও সব থেকে দরকার, প্রশিক্ষণ দরকার। সেই প্রশিক্ষণ ও জ্ঞান যেন সকলের থাকে। আমরা সেটাই চাই।
সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সরকারের জিরো টলারেন্স নীতির পুনরুল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকে সারা বিশ্বব্যাপী, একটা সমস্যা আছে। এটা শুধু বাংলাদেশে না। সেটা হল জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসী কর্মকান্ড। তিনি বলেন, সেখানেও আমি বলবো, এই কাজটা আমরা সফলভাবে করতে পেরেছি যে সমগ্র বাংলাদেশের মানুষ একেবারে তৃণমুল থেকে শুরু করে সর্বস্তরের মানুষ এবং সব শ্রেণী-পেশা এবং আমাদের সকল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা, সশস্ত্র বাহিনী থেকে শুরু করে সকলে মিলেই কিন্তু এই জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে অত্যন্ত সফলতা অর্জন করেছি। যা বিশ্বব্যাপী একটা দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। এই ধারাটা আমাদের অব্যাহত রাখতে হবে যে কোনমতেই বাংলার মাটিতে কোনরকম জঙ্গিবাদের স্থান যেন না হয়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরও বলেন, আমাদের ছেলেমেয়েরা লেখাপড়া শিখবে, উন্নত জীবন পাবে, মানুষের মতো মানুষ হবে; এটাই আমরা চাই। তিনি বলেন, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের মতো মাদকও আমাদের সমাজে একটি ভয়াবহ সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর বিরুদ্ধে কঠোর আবস্থান নিতে হবে। মাদক নিয়ন্ত্রণের জন্য আমরা পদক্ষেপ নিচ্ছি। আশা করি নেয়া পদক্ষেপে আমরা সফলতা অর্জন করব। সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমনে যেমন সবাই এগিয়ে এসেছে মাদকের বিরুদ্ধেও সকল শ্রেণী-পেশার মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে।
প্রেসিডেন্ট গার্ড রেজিমেন্ট সদস্যদের নিজের পরিবারের সদস্য হিসেবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার প্রধান হিসেবে এ রেজিমেন্টের সঙ্গে আমার নিবিড় সর্ম্পক রয়েছে।
প্রেসিডেন্ট গার্ড রেজিমেন্টের কল্যাণ কামনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পিজিআর তার চিরাচরিত সুনাম অক্ষুন্ন রেখে ভবিষ্যতে অধিক সফলতা অর্জনে সক্ষম হোক। আত্মবিশ্বাসী পদভারে তারা আরও সামনে এগিয়ে যাক।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন সময় দায়িত্বপালনকালে নিহত পিজিআর সদস্যদের পরিবারের হাতে অনুদান ও উপহার তুলে দেন।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তাবিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল নিজামউদ্দিন আহমেদ, বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল আবু এসরার, প্রধানমন্ত্রীর সামরিক সচিব মেজর জেনারেল মিয়া মো. জয়নুল আবেদীন, প্রেস সচিব ইহসানুল করিম প্রমুখ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।