Inqilab Logo

রোববার, ০৯ জুন ২০২৪, ২৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০২ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে পাহাড়ধস বন্ধে প্রশাসনের তোড়জোড়

| প্রকাশের সময় : ৫ জুলাই, ২০১৭, ১২:০০ এএম

চট্টগ্রামবাসীর দুর্ভোগ অব্যাহত : ‘অধিকাংশ পাহাড়ের ধস মানুষের সৃষ্ট দুর্যোগ’ -সমন্বয় সভায় বিশেষজ্ঞগণ
বিশেষ সংবাদদাতা, চট্টগ্রাম ব্যুরো : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কঠোর ও সুস্পষ্ট নির্দেশনার পর পাহাড়-টিলার ধস বন্ধের উপায় নিয়ে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের মাঝে এবার শুরু হয়েছে তোড়জোড় তৎপতা। গতকাল (মঙ্গলবার) চট্টগ্রামে উচ্চ পর্যায়ের একটি সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিশেষজ্ঞগণ অভিমত ব্যক্ত করেছেন, ‘অধিকাংশ পাহাড়ের ধসের ঘটনা মানুষের সৃষ্ট দুর্যোগ। পাহাড়কে পাহাড়ের মতোই থাকতে দিতে হবে। পাহাড়ের সম্পদ ও সম্ভাবনাকে পরিকল্পনা সহকারে দেশ ও জাতির স্বার্থে কাজে লাগাতে হবে। কিন্তু তা করা হয়নি। পাহাড়ধস বন্ধে শক্তিশালী আইন প্রয়োজন। পাহাড়ে যাতে আর একটি কোদালও ব্যবস্থাপনা কমিটির অনুমতি ছাড়া না পড়ে সেদিকে সতর্ক থাকা জরুরী। দেশের বিভিন্ন পাহাড়ের ভূ-প্রাকৃতিক গঠন ও বৈশিষ্ট্য একরকম নয়। এজন্য অবিলম্বে একটি দীর্ঘমেয়াদি জরিপের মাধ্যমে সমস্যার গভীরে যেতে হবে। তড়িঘড়ি করলে সুফল আসবে না। ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল, পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের দুই অধ্যাপক ড. মোঃ শহীদুল ইসলাম এবং আবদুল হক তাদের গবেষণার আলোকে উপরোক্ত অভিমত জানান।
চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সত্যব্রত সাহার সভাপতিত্বে ভূমিধসের কারণ চিহ্নিতকরণ ও ভবিষ্যতে করণীয় নির্ধারণের বিষয়ে সুপারিশ প্রণয়নের লক্ষ্যে গঠিত ২৭ সদস্যবিশিষ্ট কমিটির এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় আলোচকগণ বলেছেন, পাহাড় নিষ্কণ্ঠক করতে হবে। এরজন্য রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ ও বিশেষজ্ঞদের সহায়তা প্রয়োজন। বেআইনিভাবে পাহাড় কাটা, বৃক্ষ নিধন বন্ধ, পাহাড়ি এলাকায় নিবিড় বনায়ন করতে হবে। সভায় চট্টগ্রাম, তিনটি পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়ি, কক্সবাজার জেলা প্রশাসন, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়, ইউএনডিপি প্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন। কমিটির কর্মকর্তারা গতকাল ও আজ (বুধবার) পার্বত্য এলাকাগুলো পরিদর্শনে যান।
এদিকে জোয়ারের সাথে থেমে থেমে বর্ষণে গতকালও চট্টগ্রামবাসীর দুর্ভোগ অব্যাহত থাকে। নগরীর অনেক স্থানে বাড়িঘরে, দোকানপাটে, গুদামে কাদা-পানি ও আবর্জনা সরাতে অগণিত মানুষ পড়েছে সীমাহীন দুর্ভোগে। ভাঙাচোরা খানাখন্দে ভরা সড়কে পানি জমে থাকায় যানবাহন চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। অনেক জায়গায় আটকে যাচ্ছে বিভিন্ন যানবাহন।
গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দেশের সর্বোচ্চ বর্ষণ রেকর্ড করা হয় সীতাকুন্ডে ১৩৫ মিলিমিটার। এ সময় ঢাকায় ২৪, চট্টগ্রামে ৭২ মিমি বৃষ্টি হয়। আবহাওয়া বিভাগ জানায়, মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের উপর সক্রিয়। উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারি থেকে জোরদার অবস্থায় রয়েছে। আজ বুধবারের পূর্বাভাসে জানা গেছে, রাজশাহী, রংপুর, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় অস্থায়ী দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টিপাত হতে পারে। সেই সাথে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে। সারাদেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। পরবর্তী ৪৮ ঘন্টায় বৃষ্টিপাতের প্রবণতা হ্রাস পেতে পারে। এর পরবর্তী ৫ দিনে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা ফের বৃদ্ধি পেতে পারে।
পাহাড়ধসের সতর্কতা বহাল
সক্রিয় মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে গতকাল সন্ধ্যা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় রংপুর, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে। এ কারণে সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের পাহাড়ি এলাকার কোথাও কোথাও ভ‚মিধসের আশঙ্কা রয়েছে বলে আবারও সতর্ক করে দিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: প্রধানমন্ত্রী


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ