পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : প্রশাসনে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন বাড়ানো হয়েছে। সুশাসন নিশ্চিত করা এবং সেবা প্রদানকারী সংস্থাগুলো থেকে সেবা পেতে জনগণকে যাতে ভোগান্তি দূর হয় সেসব ধরনের দুর্নীতি বন্ধের জন্য সচিবদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী আন্তঃক্যাডার বৈষম্য দূর করে সকলের ন্যায়-সঙ্গত পদোন্নতি এবং পদায়ন নিশ্চিত করারও আহ্বান জানান।
বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব (সংস্কার ও সমন্বয়) এমএন জিয়াউল আলম সাংবাদিকদের এসব নির্দেশনার কথা জানান। তিনি বলেন, ঘুষ ও দুর্নীতি সহ্য করা হবে না উল্লেখ করে সচিবদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী ১৩টি নির্দেশনা দিয়েছেন।
দীর্ঘ ৩৮ মাস পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সচিবদের বৈঠক (সচিব সভা) গতকাল রোববার সচিবালয়ের মন্ত্রিপরিষদ সভা কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়। সচিব সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব নির্দেশনা দিয়েছেন বলে জানা গেছে। বর্তমান মেয়াদে দায়িত্ব পালনকালে এটি ছিল সরকারের সর্বোচ্চ আমলাদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর দ্বিতীয় বৈঠক। বেলা ১১টায় শুরু হয়ে দুপুর সোয়া ২টায় পর্যন্ত বৈঠক চলে। সচিব কমিটির সভায় ৭১ জন সচিব অংশ নেন। এদের মধ্যে ১৬ জন সচিব মিটিংয়ে তাদের মতামত প্রদান করেন।
প্রধানমন্ত্রী দক্ষ এবং যোগ্যদের গুরুত্বপূর্ণ কাজের দায়িত্ব প্রদানের আহ্বান জানিয়ে বলেন, ভালো কাজের পুরস্কার আর মন্দ কাজের জন্য তিরস্কার ব্যবস্থা কার্যকর করতে হবে। সুশাসন নিশ্চিত করার ব্যবস্থা নিন। সেবা প্রদানকারী সংস্থাগুলো থেকে সেবা পেতে জনগণকে যাতে ভোগান্তির শিকার না হতে হয় তার উদ্যোগ নিন। সচিবদের সরকারের অন্যতম চালিকাশক্তি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, একটি রাজনৈতিক সরকার একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ক্ষমতায় আসে। কিন্তু, সচিবদের আরো অনেক দীর্ঘ সময় ধরে সেবা দেয়ার সুযোগ থাকে। কাজেই এটা সচিবদের উপরই নির্ভর করে দেশ কিভাবে চলবে। শেখ হাসিনা সচিবদের কাজে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে বলেন, তার দলের রাজনৈতিক দর্শন এবং পরিকল্পনা বাস্তবায়নে তিনি একটি ভালো দলের সঙ্গে কাজের সুযোগ পেয়েছেন। প্রশাসনে বৈষম্য দূর করে সকলের ন্যায়-সঙ্গত পদোন্নতি এবং পদায়ন নিশ্চিত করতে হবে। অপেক্ষাকৃত তরুণ কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণে অগ্রাধিকার দিন। জঙ্গিবাদ দমন ও মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণে মাঠ পর্যায়ে কার্যকর ব্যবস্থা নিন।
কর্মচারীদের দুর্নীতির বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দুর্নীতির বিষয়ে সরকারের দৃঢ় অবস্থান সুস্পষ্ট। দুর্নীতি দমন কমিশনকে আরো শক্তিশালী ও কার্যকর করার জন্য দুর্নীতি দমন কমিশন আইন সংশোধন করা হয়েছে। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন ১২৩ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে। কর্মজীবী নারীদের মাতৃত্বকালীন ছুটি ছয় মাস করা হয়েছে। সরকারি কর্মচারীদের অবসর গ্রহণের বয়সসীমা ৫৯ করা হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধা কর্মচারীদের অবসর গ্রহণের বয়সসীমা ৬০ করা হয়েছে। এই সুযোগ-সুবিধার পর কর্মচারীদের দুর্নীতি বন্ধ করতে হবে। উন্নয়ন কর্মসূচি এমনভাবে গ্রহণ করতে হবে যাতে সর্বোচ্চসংখ্যক মানুষ উপকৃত হয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, গ্রাম উন্নয়নের উপর জোর দিতে হবে, কর্মসংস্থান তৈরি করতে হবে। যাতে গ্রামের মানুষ কাজের খোঁজে শহরে না আসে। শহরের উপর জনসংখ্যার চাপ যাতে না বাড়ে সে ব্যবস্থা করতে হবে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব (সংস্কার ও সমন্বয়) এমএন জিয়াউল আলম জানান, ঘুষ ও দুর্নীতি সহ্য করা হবে না উল্লেখ করে সচিবদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী ১৩টি নির্দেশনা দিয়েছেন। সচিবদের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর দিক নির্দেশনাগুলো হলো- ঘুষ ও দুর্নীতি কমাতে হবে, বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়নের হার বাড়াতে হবে, আমদানি-রফতানির কাজ সহজ করতে দেশের সব নৌ ও স্থল বন্দর ২৪ ঘণ্টা খোলা রাখতে হবে, জেলায় জেলায় ত্রাণ তৎপরতা বাড়াতে হবে। সেক্ষেত্রে প্রতি জেলায় চাহিদা অনুযায়ী ত্রাণসামগ্রী সংগ্রহে রাখতে হবে। স্থানীয়ভাবে প্রকল্প নিতে হবে, যত্রতত্র শিল্প-কারখানা না করে সরকার কর্তৃক শিল্পাঞ্চলে করতে হবে, এসডিজি অর্জনে দায়িত্ব পালন করতে হবে, কর্মকর্তাদের দক্ষতা বাড়াতে মানসম্মত প্রশিক্ষণ দিতে হবে, অগ্রাধিকারমূলক প্রকল্প বাস্তবায়নে মনোযোগী হতে হবে। জঙ্গিবাদ ও মাদকবিরোধী তৎপরতা বাড়াতে হবে, নতুন বাজেট বাস্তবায়নে প্রথম তিন মাসের মধ্যে সব পেপার তৈরি করতে হবে, নতুন ভবন তৈরির ক্ষেত্রে বৃষ্টির পানি ধরার ব্যবস্থা রাখতে হবে, নতুন রাস্তা নির্মাণে রাস্তার পাশে জলাধার রাখতে হবে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব (সংস্কার ও সমন্বয়) এমএন জিয়াউল আলম বলেন, ফৌজদারি আদালতের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। মামলার জট কমাতে দ্রুত মামলা নিষ্পত্তির তাগিদ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, পে-স্কেলে বাংলাদেশের সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন যেহারে বেড়েছে, তা বিশ্বে বিরল। তাই জনগণ যেন সেবা পায় সেদিকে দৃষ্টি রাখতে হবে। বেতন যেহেতু বেড়েছে তাই ঘুষ-দুর্নীতি সহ্য করা হবে না।
বৈঠকের শুরুতে আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন এবং স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক প্রশাসন গড়ে তুলতে সরকারের সংস্কার কর্মসূচির উল্লেখ করে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. শফিউল আলম স্বাগত বক্তৃতা প্রদান করেন। এ সময় অন্যানের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. কামাল আব্দুল নাসের চৌধুরী এবং প্রেস সচিব ইহসানুল করিম উপস্থিত ছিলেন। উল্লেখ্য, সর্বশেষ ২০১৪ সালের ৭ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে সচিব সভা অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।