Inqilab Logo

রোববার ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭ আশ্বিন ১৪৩১, ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

উদ্বেগ উৎকণ্ঠার অবসান

আবগারি শুল্ক, ভ্যাট কমানোর আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

| প্রকাশের সময় : ২৯ জুন, ২০১৭, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : দৃষ্টি সবার ছিল সংসদের দিকে। আবগারি শুল্ক, ভ্যাট আইন নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কি বার্তা দেন তা শোনার জন্য অপেক্ষায় ছিলেন সর্বস্তরের মানুষ। অর্থমন্ত্রীর প্রতি গতকাল সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এক আহবানে দেশের সাধারণ মানুষ-ব্যবসায়ীসহ সবার উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা কেটে গেল। মানুষ এখন স্বস্তির নিঃস্বাস ফেলছে।
জাতীয় সংসদে অর্থমন্ত্রীর ২০১৭-১৮ অর্থ বছরের দেয়া প্রস্তাবিত বাজেট ঘোষণার পর থেকে আবগারি শুল্ক, ভ্যাট আইন, খাদ্য আমদানি শুল্ক নিয়ে সর্বত্রই উদ্বেগ-উৎকন্ঠার পাশাপাশি ব্যাপক বিতর্ক শুরু হয়। ব্যাংকে সঞ্চিত টাকার ওপর আবগারী কর এবং ভ্যাট আইন নিয়ে চলে তীব্র বিতর্ক। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর পাশাপাশি টিভির টকশোগুলোতে এ নিয়ে তুমুল বিতর্ক হয়। কঠোর সমালোচনার মুখে পড়েন অর্থমন্ত্রী। দেশের অর্থনীতিবিদরা প্রস্তাবিত আবগারী শুল্ককে ডাকাতি হিসেবে অবিহিত করেন। সর্বত্রই প্রতিবাদ শুরু হয় প্রস্তাবিত আবগারি শুল্ক, ভ্যাট আইন নিয়ে। সাধারণ মানুষ, ব্যবসায়ী, বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো এ ধরনের শুল্কের বিরোধিতা করেন। মিডিয়ায়ও প্রচুর লেখালেখি হয়। নজীরবিহীনভাবে মন্ত্রী এবং ক্ষমতাসীন দলের এমপিরা প্রস্তাবিত বাজেটে আবগারী শুল্কের তীব্র সমালোচনা করেন। এমনকি একাধিক সংসদ সদস্য প্রস্তাবিত বাজেটের ভ্যাট ও আবগরী শুল্ককে ‘ফৌজদারী অপরাধ’ হিসেবে অবিহিত করেন এবং অর্থমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবী করেন। এমনকি তাঁর (অর্থমন্ত্রী) বয়স হয়েছে এ জন্য পদে থাকা উচিত নয় বলেও পরামর্শ দেন। নিরাপদ মনে করে যারা ব্যাংকে টাকা রাখতে অভ্যস্ত এবং পেনশনভোগী যারা ব্যাংকে জমানো টাকার সামান্য সুদের ওপর নির্ভর করে সংসার পরিচালনা করেন তারা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। অনেকেই ব্যাংক থেকে টাকা উঠিয়ে নেন। কেউ কেউ বাজেট পাশের দিন পর্যন্ত উদ্বেগ উৎকন্ঠায় অপেক্ষা করেন। ব্যাপক সমালোচনার মুখে আবগারী শুল্ক ও ভ্যাট আইনের কার্যকারিতা আরও দুই বছরের জন্য স্থগিত করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল বুধবার জাতীয় সংসদে বাজেট আলোচনায় অংশ নিয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতকে বেশ কয়েকটি পরামর্শ দেন। প্রস্তাবিত বাজেটের মূল বিতর্ক আবগারি শুল্ক, ভ্যাট আইন, খাদ্য আমদানি শুল্ক নিয়ে নতুন করে চিন্তাভাবনার আহবান জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাঁর পরামর্শ হলো-আবগারি শুল্ক এক লাখ ১ টাকা থেকে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত ১৫০ টাকা করার এবং এক কোটি টাকা পর্যন্ত মোট তিনটি স্তরে আবগারি শুল্ক আদায় করার।
প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য অনুযায়ী ২০ হাজার টাকা থেকে এক লাখ টাকা পর্যন্ত কোনো আবগারি শুল্ক দিতে হবে না। আগে এক লাখ এক টাকা থেকে পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত আবগারি শুল্ক আদায় করা হতো ৫শ টাকা। বাজেটে প্রস্তাব করা হয় ৮শ টাকা। ব্যাংকারদের হিসেব মতে এতে আবগারী শুল্কসহ অন্যান্য খাতে গ্রাহকের ব্যাংক একাউন্ড থেকে টাকা কর্তন করলে এক লাখ টাকা ৯৮ হাজার টাকা মুলধন হয়ে যাবে। সে জন্য প্রধানমন্ত্রী প্রস্তাবিত ৮শ টাকা থেকে কমিয়ে ১৫০ টাকা করার জন্য পরামর্শ দিয়েছেন। পাঁচ লাখ টাকা থেকে এক কোটি টাকা পর্যন্ত আরও দুটি স্তরে ভাগ করে আবগারি শুল্ক আদায় করার পরামর্শ দেন প্রধানমন্ত্রী। প্রস্তাবিত বাজেট ঘোষণায় এক লাখ ১ টাকা থেকে এক কোটি পর্যন্ত একটি স্তরে ৮শ টাকা আবগারি শুল্ক আদায়ের প্রস্তাব রাখা হয়েছিল। বাজেট আলোচনায় অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আগে ২০ হাজার টাকা থেকেই আবগারি শুল্ক দিতে হতো। এখন এক লাখ টাকা পর্যন্ত আবগারি শুল্কমুক্ত করার প্রস্তাব দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী।
 ব্যাপক সমালোচনার মুখেও আগামী ১ জুলাই থেকে নতুন ভ্যাট আইন কার্যকরের পক্ষে অনড় ছিলেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। সব পণ্য বিক্রির উপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট ধরেই ২০১৭-১৮ অর্থবছরের জন্য ৪ লাখ ২৬৬ কোটি টাকার বাজেট পহেলা জুন তিনি সংসদে উপস্থাপন করেন। অর্থমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংসদে বলেন, ব্যবসায়ীরা ভ্যাটের ব্যাপারে সাড়া দিচ্ছেন না। সেভাবে ভ্যাট রয়েছে আগামী দুই বছরের জন্য সেভাবেই করে দেবেন। বর্তমান পদ্ধতিতেই ভ্যাট আদায় বজায় রাখবেন। শেখ হাসিনা ভ্যাট আইন প্রণয়নের ইতিহাস তুলে ধরে বলেন, মূসক আইনটি ১৯৯১ সালে করা, ২০০৮ সালে সংশোধনের জন্য খসড়া তৈরি হয়। সবার সঙ্গে মতবিনিময় করেই আইনটি আমরা করে দিই ২০১২ সালে। এখন সবাই ভুলেই গেছে যে আইনটি আমরা পাস করে দিয়েছিলাম। এই ভ্যাট আইনটি কার্যকর করে ২০১৬ সালের পহেলা জুলাই থেকে ১৫ শতাংশ ভ্যাট নেওয়ার পরিকল্পনা ছিল সরকারের। কিন্তু তখন ব্যবসায়ীদের দাবির মুখে তা এক বছর পিছিয়ে দিয়েছিল সরকার; এখন আরও দুই বছর পেছাল। এখন ব্যবসায়ীরা প্যাকেজ ভিত্তিতে ভ্যাট দিয়ে আসছেন। যে সুবিধা আরও অন্তত দুই বছর পাচ্ছেন তারা।
 শেখ হাসিনা বলেন, বাজেট বাস্তবায়নে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে সরকারের ঋণ লক্ষ্যমাত্রা ছাড়াবে না। সরকারের ঋণের যে সীমা, তার মধ্যেই থাকবে। বাড়তি ঋণ সরকার নেবে না, ফলে আর্থিক খাত ক্ষতিগ্রস্ত হবে না, এটা আমি কথা দিতে পারি। এ নিয়ে দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই।
২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাজেট বাস্তবায়নে প্রায় সোয়া লাখ কোটি টাকার ঘাটতি মেটাতে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ৬০ হাজার ৩শ ৫২ কোটি টাকা ধারের লক্ষ্য ঠিক করেছে সরকার। এর মধ্যে ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়ার লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে ২৮ হাজার ২শ ৩ কোটি টাকা। জাতীয় সংসদ ভবনে ২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। বিদায়ী ২০১৬-১৭ অর্থবছরের বাজেটে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ৬১ হাজার ৫শ ৪৮ কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার লক্ষ্য ধরেছিল সরকার। সঞ্চয়পত্র থেকে ঋণ অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ায় সংশোধিত বাজেটে তা বাড়িয়ে ৬৯ হাজার ৯শ ৩ কোটি টাকা করা হয়। পরে ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়ার লক্ষ্য মূল বাজেটের ৩৮ হাজার ৯৩৮ কোটি টাকা থেকে কমিয়ে ২৩ হাজার ৯০৩ কোটি টাকায় নামিয়ে আনা হয় সংশোধিত বাজেটে।
সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। এদেশের মানুষ সাম্প্রদায়িকতা ও জঙ্গিবাদকে ঘৃণা করে। দেশের অগ্রগতি ও নিরাপত্তার জন্য সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ বড় ধরণের অন্তরায়। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর জঙ্গি দমনে জিরো টলারেন্স নীতির ভিত্তিতে কার্যকর পদক্ষেপ ও পরিকল্পনা গ্রহণ করায় জঙ্গি দমনে বিশ্বে বাংলাদেশ এখন রোল মডেল হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। সরকার দলীয় সংসদ সদস্য গোলাম দস্তগীর গাজী এমপির প্রশ্নের লিখিত উত্তরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বেশ কিছু সফল অভিযানে শীর্ষ জঙ্গি নেতাসহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সদস্য গ্রেফতার ও নিহত হয়। এসময় বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গোলা-বারুদ উদ্ধার করা হয়। হোলি আর্টিজানে হামলার পর এ যাবত পরিচালিত অপারেশনগুলো থেকেই জঙ্গিগোষ্ঠী আঘাত হানার পূর্বে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী তাদের পরিকল্পনা নৎস্যাত করে দিয়েছে এবং জঙ্গি আস্তাসমূহ গুড়িয়ে দিয়েছে।
একই প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা জানান, জঙ্গি দমনে বাংলাদেশ প্রো-এ্যাকটিভ পুলিশিংয়ের একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। অভিযানসমূহ পরিচালনার ফলে বর্তমানে জঙ্গি তৎপরতা বহুলাংশে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়েছে। জঙ্গি দমনে এ সাফল্য আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছে। জঙ্গিবাদ সংক্রান্ত সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সারাদেশের আলেম-ওলামা এবং মসজিদের ইমামদের মাধ্যমে জনসচেনতামূলক কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়া জঙ্গি সংগঠনগুলোর অনলাইনভিত্তিক প্রচারণার দিকে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো নজর রাখছে। এ জাতীয় প্রচারণার মাধ্যমে যাতে জনগণের মধ্যে জঙ্গিবাদী মতাদর্শের র‌্যাডিক্যালাইজেশন না ঘটে সেজন্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং গোয়েন্দা সংস্থাগুলো কাজ করছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জননিরাপত্তার জন্য হুমকি বলে বিবেচিত হওয়ায় ও জঙ্গিবাদের সঙ্গে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়ায় এ পর্যন্ত ৭টি সংগঠনকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। জঙ্গিবাদ এবং জঙ্গিবাদের অর্থায়নে জড়িতদের কার্যকরভাবে দমনের লক্ষ্যে সরকার সন্ত্রাস বিরোধী আইন/২০০৯ (সংশোধনী/১৩) এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন/২০১২ প্রণয়ন করেছে। সরকারের আন্তরিকতা এবং বর্ণিত পদক্ষেপসমূহ গ্রহণের ফলে বর্তমানে বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ যথেষ্ট নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এবং সমাজ জীবনের সর্বক্ষেত্রে শান্তি শৃঙ্খলা ও স্থিতিশীলতা বিরাজ করছে। জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপ দমনে এ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।
সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য বেগম আখতার জাহানের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার প্রয়োজন অনুযায়ী বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। দেশের মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য আমরা সচেষ্ট আছি। আওয়ামী লীগ সরকার ২০০৯ সালে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণের পর দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করার লক্ষ্যে যথাযথ গুরুত্ব প্রদান করেছে। স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য রুস্তম আলী ফরাজী এমপির প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, গত বছরের ১৪-১৫ অক্টোবরে চীনের প্রেসিডেন্ট মিঃ শি জিনপিং-এর বাংলাদেশ সফর ছিল অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। এ সফর চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কোন্নয়নের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত যা আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে গভীর ও ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। গত চার দশক ধরে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও যোগাযোগ অবকাঠামো বিনির্মাণে চীনের ভ‚মিকা অত্যন্ত ইতিবাচক।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ৫০-এর দশকে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের চীন সফরের মাধ্যমে দু’দেশের সম্পর্ক যে ঐতিহাসিক ভিত রচনা হয়েছিল বর্তমান সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর তা নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে। ২০১০ ও ২০১৪ সালে আমার নেতৃত্বে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের চীন সফরের মাধ্যমে সেই সম্পর্ক একটি মৌলিক, সমন্বিত এবং দূরদর্শী রূপ গ্রহণ করেছে। এরই ধারাবাহিকতায় প্রেসিডেন্টের আমন্ত্রণে চীনের প্রেসিডেন্ট দু’দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে বাংলাদেশে আসেন। চীনের প্রেসিডেন্ট আর্থ-সামাজিক খাতে বাংলাদেশের অর্জনের ভ‚য়সী প্রশংসা করেন। এ সফর দু’দেশের মধ্যে পারস্পরিক আস্থা ও বন্ধুত্ব সম্প্রসারণের ক্ষেত্র তৈরি করেছে এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে পারস্পরিক সহযোগিতার নতুন পথ খুলে দিয়েছে। এ সফর বাংলাদেশ-চীন বন্ধুত্বের স্মারক এবং দু’দেশের অর্থনৈতিক সম্পর্কে এক ঐতিহাসিক নবযাত্রার সূচনা করেছে।
 সরকার দলীয় সংসদ সদস্য মামুনুর রশীদ কিরণ এমপির প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, স্বল্পোন্নত দেশ থেকে মধ্য আয়ের দেশে উত্তরণ ও স্থিতিশীল হতে হলে জাতিসংঘ তিনটি সূচক বিবেচনা করে থাকে। এ সূচকসমূহ হলো- (১) মাথাপিছু জাতীয় আয়, (২) মানবসম্পদ উন্নয়ন এবং (৩) অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতা থেকে উত্তোরণ। বাংলাদেশ ইতোমধ্যে মাথাপিছু জাতীয় আয় এবং অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতা- এ দুটি সূচকে প্রারম্ভ রেখা অতিক্রম করেছে। অন্য সূচকটিতে বাংলাদেশ প্রাম্ভ রেখার বেশ কাছাকাছি অবস্থানে রয়েছে। এ সূচকসমূহের নির্ধারিত মান বজায় রাখার জন্য সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখাসহ আর্থ-সামাজিক নীতি-কৌশল বাস্তবায়ন অব্যাহত রাখা প্রয়োজন।
তিনি আরো বলেন, বর্তমানে ৭ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা ২০১৬-২০২০ এর মাধ্যমে সরকার অভীষ্ট লক্ষ্য অর্জনে কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে। এই পরিকল্পনার মেয়াদে গড়ে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ৪ শতাংশ হারে বৃদ্ধি করে ২০১৯-২০ অর্থ-বছরে প্রবৃদ্ধি ৮ শতাংশ, দারিদ্র্যের হার ১৮ দশমিক ৬ শতাংশ, অতি দারিদ্র্যের হার ৮ দশমিক ৯ শতাংশে হ্রাসের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ৭ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জসমূহ এবং তা মোকাবেলা করার জন্য প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা বিবৃত হয়েছে।



 

Show all comments
  • ফিরোজ খান ২৯ জুন, ২০১৭, ২:৪০ এএম says : 0
    সরকারকে ধন্যবাদ
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: প্রধানমন্ত্রী


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ