পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিদ্যুৎ ক্ষমতার ৬১ শতাংশই অর্জিত আ. লীগের আট বছরে
স্টাফ রিপোর্টার : প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা আশা প্রকাশ করে বলেছেন, ২০৪১ সালে স্বাধীনতার ৭০তম জয়ন্তীতে বাংলাদেশের অর্থনীতির আকার ২ দশমিক ৫ ট্রিলিয়ন ডলার এবং মাথাপিছু আয় প্রায় ১২ হাজার ডলারে উন্নীত হবে।১৯৭২ সালের মে থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সরকারের মেয়াদে দেশে মোট ১৩ হাজার ৫৯৬ মেগাওয়াট ক্ষমতার বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপিত হয়েছে। দেশে শিল্প বিকাশ ও বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়াতে স্পেশাল ইকোনমিক জোনসহ ১৪টি বেসরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চলের লাইসেন্স প্রদান করা হয়েছে। এর মধ্যে চারটিকে চূড়ান্ত ও ১০টি প্রি-কোয়ালিফিকেশন লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে।
গতকাল বুধবার সংসদে প্রধানমন্ত্রী নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে সরকারি দলের সদস্য দিদারুল আলমের এক প্রশ্নের জবাবে একথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০৪১ সালের বাংলাদেশের অর্থনীতি এশিয়ার আঞ্চলিক অর্থনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হবে। বাংলাদেশের অনুসৃত উন্মুক্ত অর্থনীতি উপ-আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়ন এবং ব্যবসা, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ স¤প্রসারণে উইন-উইন অবস্থান তৈরি করে সাফল্যের নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে। শেখ হাসিনা বলেন, সে লক্ষ্যে শিল্প বিকাশ ও বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়াতে বর্তমান সরকার বিদ্যমান বিনিয়োগ পরিবেশ আরও উন্নত করার লক্ষ্যে অবকাঠামো উন্নয়ন, শিল্পে বিভিন্ন পরিসেবা, ভূমির নিশ্চয়তা, প্রতিযোগিতামূলক প্রণোদনা এবং ওয়ান স্টপ সার্ভিস-প্রদানসহ বিনিয়োগ বান্ধব আইন ও নীতিমালা প্রণয়ন করেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ পর্যন্ত ৪টি বেসরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চলের চূড়ান্ত লাইসেন্স প্রদান করা হয়েছে। এ গুলো হচ্ছে, মেঘনা ইকোনমিক জোন, সোনারগাঁও, নারায়ণগঞ্জ, আবদুল মোনেম অর্থনৈতিক অঞ্চল, গজারিয়া, মুন্সিগঞ্জ, আমান ইকোনমিক জোন, সোনারগাঁও, নারায়ণগঞ্জ এবং বেসরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চল, কোনাবাড়ী, গাজীপুর। এছাড়া ১০টি বেসরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চলের প্রি কোয়ালিফিকেশন লাইসেন্স প্রদান করা হয়েছে। শেখ হাসিনা বলেন, বেসরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চলে এ পর্যন্ত মোট বিনিয়োগের পরিমাণ ৯০৪.১১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। বেসরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চলে মোট কর্মসংস্থানের পরিমাণ ৭ হাজার ৭৮১ জন।
বিদ্যুৎ উৎপাদন ১৩ হাজার মেগাওয়াট
সরকারি দলের মামুনুর রশীদ কিরণ এমপির এক লিখিত প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালের মে থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সরকারের মেয়াদে দেশে মোট ১৩ হাজার ৫৯৬ মেগাওয়াট ক্ষমতার বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপিত হয়েছে। কিন্তু পুরানো বিদ্যুৎকেন্দ্র বিভিন্ন সময়ে অবসরে যাওয়ার কারণে বর্তমানে জাতীয় গ্রিডে ১৩ হাজার ১৭৯ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ যুক্ত হয়েছে। বর্তমানে বিদ্যুৎকেন্দ্রের স্থাপিত ক্ষমতা ক্যাপটিভসহ ১৫ হাজার ৩৫১ মেগয়াওয়াটে উন্নীত হয়েছে। সংসদে দেয়া প্রধানমন্ত্রীর তথ্য অনুযায়ী, ১৯৭২-১৯৮১ সালে ২৮৬ মেগাওয়াট, ১৯৮২-১৯৯০ সালে ১ হাজার ৫৮৮ মেগাওয়াট, ১৯৯১ সালের মার্চ-১৯৯৬ সালের মার্চ পর্যন্ত ৫৮৮ মেগাওয়াট, ১৯৯৬ সালের জুন হতে ২০০১ সালের জুলাই পর্যন্ত ১ হাজার ২০৮ মেগাওয়াট, ২০০১ সালের অক্টোবর হতে ২০০৬ সালের অক্টোবর পর্যন্ত ১ হাজার ২৪০ মেগাওয়াট, ২০০৬ সালের অক্টোবর হতে ২০০৮ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ৩৪৬ মেগাওয়াট এবং ২০০৯ সালের জানুয়ারি হতে ২০০৭ সালের মে পর্যন্ত ৮ হাজার ৩৪০ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হয়েছে।
বৈদেশিক কর্মসংস্থান খাত থ্রাস্ট সেক্টর
তরিকত ফেডারেশনের সংসদ সদস্য এম এ আউয়ালের প্রশ্নের জবাবে সংসদ নেতা শেখ হাসিনা জানান, বৈদেশিক কর্মসংস্থান খাতকে সরকার থ্রাস্ট সেক্টর হিসেবে ঘোষণা করছে। এ খাতের গুরুত্ব অপরিসীম বিবেচনায় সরকার বর্তমান শ্রমবাজার ধরে রাখার পাশাপাশি নতুন নতুন শ্রমবাজার সৃষ্টির ওপর জোর দিয়েছে। নতুন শ্রমবাজার সৃষ্টির লক্ষ্যে ব্যাপক উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশ দূতাবাসসমূহও শ্রমবাজার স¤প্রসারণে কাজ করছে। তিনি জানান, বিশ্বের ১৬২টি দেশে এক কোটিরও বেশি বাংলাদেশি কর্মী কর্মরত। বিদেশে যেসব প্রবাসী অবৈধ অবস্থায় রয়েছে তাদেরকে সংশ্লিষ্ট দেশে অবস্থিত বাংলাদেশ মিশনের মাধ্যমে বৈধকরণ, আইনি সহায়তা প্রদান এবং দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। মানবপাচার প্রতিরোধ, অবৈধ কর্মীদের বৈধতা প্রদানের ব্যবস্থাগ্রহণ, মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম হ্্রাসসহ নিরাপদ অভিবাসন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বহুমুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।
আন্তদেশীয় মহাসড়ক নেটওয়ার্ক
সরকারদলীয় সদস্য গোলাম দস্তগীর গাজীর এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন,বর্তমান সরকার মহাসড়ক নেটওয়ার্ক উন্নয়নে নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ করে যাচ্ছে। প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে মহাসড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়নের লক্ষ্যে সরকার কর্তৃক বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। তিনি জানান, ২০১৫ সালের ১৫ জুন ভুটানের রাজধানী থিম্পুতে বিবিআইএন স্বাক্ষরিত হওয়ার ফলে চার দেশের মধ্যে ব্যক্তিগত গাড়ি, যাত্রীবাহী যানবাহন এবং পণ্য পরিবহণের জন্য পণ্যবাহী যান চলাচল করতে পারবে। ইতিমধ্যে ভারত, বাংলাদেশ ও নেপাল চুক্তিটি অনুসমর্থন করেছে। আশা করা যায়, ভুটানও সহসা চুক্তিটি অনুসমর্থন করবে। চার দেশের অনুসমর্থনের পর চুক্তিটি বাস্তবায়ন হবে।
প্রতিবছর দুই লাখ ক্যান্সারে আক্রান্ত
সরকারদলীয় সংসদ সদস্য শামসুল হক চৌধুরীর প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী জানান, দেশে প্রতিবছর দুই লাখেরও বেশি মানুষ ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছে। দেশের মোট জনসংখ্যার প্রতি ১০ লাখ মানুষের জন্য একজন ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক রয়েছেন। আর এ চিকিৎসাও ব্যয়বহুল। বিশেষ করে দরিদ্র, নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য চিকিৎসা ব্যয় কষ্টসাধ্য- কথাটি সত্য। তিনি বলেন, ক্যান্সারের ওষুধের বিদেশ নির্ভরতা কমাতে এবং উচ্চমূল্যের ওষুধ সাধারণ মানুষের নাগালের মধ্যে আনতে দেশীয় কম্পানিগুলোকে ক্যান্সারের ওষুধ প্রস্তুতের ব্যাপারে উৎসাহিত করা হয়েছে। এ ছাড়া ক্যান্সারের চিকিৎসা বিকেন্দ্রীকরণে দেশের পুরাতন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালগুলোতে নতুন রেডিওথেরাপি মেশিন সংযোজনের কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।