পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
উজানে ভারতে টানা অতিবৃষ্টি, ও পাহাড়ি ঢলের কারণে বাংলাদেশের দিকে ক্রমাগত ধেয়ে আসছে বানের পানি। বন্যার চাপ কমাতে ভারত একে একে সবক’টি বাঁধ খুলে দিয়েছে। এ কারণে বাংলাদেশের অনেকগুলো নদ-নদীর পানি বাড়ছে। দেখা দিয়েছে বিভিন্ন অঞ্চলে বন্যার আশঙ্কা। আজ বুধবার শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত বৃহত্তর সিলেটের সুরমা, কুশিয়ারা, খোয়াই, ধলাই, মনুসহ সকল নদী-খালের পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। ইতোমধ্যে হবিগঞ্জে খোয়াই নদীর পানি ২৮০ সেন্টিমিটার উঁচু দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় শহর রক্ষা বাঁধ তিনটি স্থানে ভাঙনের মুখে রয়েছে। স্থানীয় জনগণ দুর্যোগের চরম আতঙ্কে দিনাতিপাত করছে। মৌলভীবাজারেও একইভাবে বন্যার আতঙ্ক বিরাজ করছে।
উত্তর-পূর্ব ভারতের বিশেষত বাংলাদেশের লাগোয়া ত্রিপুরা, আসাম, মিজোরাম, মেঘালয় রাজ্যে গত এক সপ্তাহের প্রবল বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের কারণে সেখানকার বিশাল অঞ্চল এখন বন্যা কবলিত। ভাটির দেশ হওয়ায় তদুপরি বাঁধগুলো খুলে দেয়ার কারণে হু হু করে বানের পানি বৃহত্তর সিলেটকে বন্যার ঝুঁকিতে ঠেলে দিয়েছে। ভারতীয় আবহাওয়া বিভাগ ও গণমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, উত্তর-পূর্ব ভারতের অরুণাচল, আসাম, মেঘালয়, নাগাল্যান্ড, মনিপুর, মিজোরাম, ত্রিপুরা, গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ, ঝাড়খণ্ড, উড়িষ্যা, সিকিম এবং আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে অধিক সক্রিয় মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে আগামী ২৭ জুন পর্যন্ত ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণের সম্ভাবনা রয়েছে। যার ধকল এসে পড়তে পারে ভাটিতে বাংলাদেশের নদ-নদীগুলোতে। তবে ভারত উপরোক্ত অঞ্চলগুলোতে বন্যা, পাহাড়ি ঢল ও ধসের জন্য সর্বাত্মক প্রস্তুতি ও সতর্কতা বজায় রেখেছে অনেক আগেই।
এদিকে দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের পার্বত্য অববাহিকার নদ-নদীর পানিও বাড়ছে। ফেনীর কাছে মুহুরী নদীর পানি বিপদসীমার কাছাকাছি রয়েছে। কর্ণফুলী নদীতে পানি বাড়ছে বিপজ্জনকভাবে। খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার বিভিন্ন নদী-খালেও বেড়েছে পানি, ঢল ও বান।
আর এ অবস্থায় দেশের অভ্যন্তরে ভারী বর্ষণ হলে পরিস্থিতির আরো গুরুতর অবনতি ঘটতে পারে। আবহাওয়া বিভাগ বলছে, মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে আজও মাঝারি থেকে ভারী থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগে হতে পারে অতিবর্ষণ। এতে পাহাড় ধসের সতর্কতা জারি আছে।
শুধু সিলেট, চট্টগ্রামই নয় ভারতের উজানের নেমে আসা ঢলে দেশের প্রধান নদ-নদীর পানি বৃদ্ধির প্রবণতা পর্যবেক্ষণ করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ডেও বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র গত দুই দিনে। প্রধান নদী ব্রহ্মপুত্র, যমুনা ও গঙ্গা-পদ্মার পানি বিপদসীমা অতিক্রম না করলেও বাড়ছে। এই বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে উত্তরাঞ্চলও বন্যা কবলিত হওয়ার বড় ঝুঁকিতে রয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, নদ-নদীর পানি বৃদ্ধির পাশাপাশি দেশের অভ্যন্তরে ও ভারতের উজানে অতিবৃষ্টি, পাহাড়ি ঢল অব্যাহত থাকলে দেশের কোনো কোনো অঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে।
এদিকে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র দেশের ৯০টি স্থানে নদ-নদীর পানির হ্রাস-বৃদ্ধি পর্যবেক্ষণ করেছে। এরমধ্যে মঙ্গলবার পর্যন্ত ৬০টি স্থানে পানি বেড়ে গেছে। ১৮ স্থানে কমেছে এবং ২টিতে অপরিবর্তিত ছিল। আর ৫টি নদীর ৭টি পয়েন্টে পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এরমধ্যে হবিগঞ্জ ও বাল্লায় খোয়াই নদীর পানি যথাক্রমে বিপদসীমার ২৮০ ও ২১৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে বয়ে যায়। এসব এলাকায় বাঁধ এখনও নদীর পানির চাপে মারাত্মক ঝুঁকিতে রয়েছে। স্থানীয় জনগণ নিজেদের চেষ্টায় বাঁধ রক্ষা করে গ্রাম-বসতি, জনপদ রক্ষা করার জন্য সবরকম প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে বন্যাতঙ্ক দিন দিন বাড়ছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।