Inqilab Logo

শুক্রবার ০১ নভেম্বর ২০২৪, ১৬ কার্তিক ১৪৩১, ২৮ রবিউস সানী ১৪৪৬ হিজরি

রমজান মাসে খাদ্যাভ্যাস

| প্রকাশের সময় : ২০ জুন, ২০১৭, ১২:০০ এএম

ডা. জয়নাল আবেদীন টিটো
ইফতারে যা খাওয়া উচিত : ইফতারে শরীরের জন্য সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন হয় পানি এবং তরল জাতীয় খাবারের। সারাদিন রোজা থাকার পর পাকস্থলীতে এমন কিছু খাবার দেয়া উচিৎ যা দ্রæত শরীরে শক্তি যোগায় ও বিভিন্ন ঘাটতি পূরণ করে। ইফতার হিসেবে সরল শর্করা উত্তম। কেননা এটি দ্রæত হজম হয় ও শক্তি যোগায়। দেহের শরীরবৃত্তীয় চাহিদা পূরণের জন্য কিছু ঊংংবহঃরধষ বষবসবহঃং গ্রহণ করা জরুরি। যেমন- মস্তিষ্কের খাদ্য হল গøুকোজ। গøুকোজের অভাবে মস্তিষ্কের কাজ ব্যাহত হয়। সৃষ্টিকর্তা মস্তিষ্ককে এভাবে তৈরি করেছেন যে, ইন্সুলিনের সাহায্য ছাড়াই গøুকোজ মস্তিষ্ক কোষে ঢুকে যায়। শরীরের আরেকটি গুরুত্বপূরণ অঙ্গ হল কিডনি, যা পানির অভাবে মারাত্মভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে। ১২ ঘণ্টায় ৩০০ মিলি’র কম প্র¯্রাব উৎপন্ন হলে শরফহবু ভধরষঁৎব এর সম্ভবনা থাকে। দেহের স্বাভাবিক কার্যকারিতার জন্য বিভিন্ন খনিজ উপাদান যেমন- সোডিয়াম, পটাশিয়াম, ক্যালশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম ইত্যাদি অত্যাবশ্যক। ইফতারে এমন সব খাবার খাওয়া উচিত যে খাবারে প্রয়োজনীয় পরিমাণ পানি, গøুকোজ ও খনিজ উপাদান থাকে। তাতে মস্তিষ্ক, কিডনি ও ত্বকের কার্যক্রম ঠিক থাকবে।
আল্লাহর রাসূল (সা.) বলেছেন, ‘যদি তোমাদের কেউ রোজা রাখে তাহলে সে যেন খেজুর দিয়ে ইফতার করে। যদি সে তা না পায় তাহলে পানি দিয়ে। নিশ্চয়ই পানি হল পরিশোধক (চঁৎরভরবৎ)’ (বুখারি ও বায়হাকি)। এদিক থেকে চিন্তা করলে পানি, শরবত ও ফলের রস ইফতার হিসেবে অতি উত্তম।
খেজুরে আছে গøুকোজ ও নানা ধরনের খনিজ উপাদান। এতে রয়েছে সরল শর্করা যা দ্রæত শোষণ হয় এবং মস্তিষ্ক ও দেহে শক্তি জোগায়। উচ্চ রক্তচাপ, রক্তশূন্যতা, কোষ্ঠকাঠিন্য ও বিভিন্ন হৃদরোগ প্রতিরোধে খেজুরের অবদান অপরিসীম। হাড়ের সুস্থতা বজায় রাখতে ও রক্তে কোলেস্টেরল কমানোর ক্ষেত্রে এর ভূমিকা রয়েছে। ফলমূলে আছে প্রচুর গøুকোজ, ভিটামিন ও খনিজ উপাদান। বিশেষতঃ তরমুজ, বাঙ্গী এ জাতীয় পানীয় ফল ইফতারের জন্য খুব ভালো। এছাড়াও ছোলা সিদ্ধ (পছন্দ অনুযায়ী এর সাথে যয়তুনের তেল, শসা, টমেটো ইত্যাদি মিশিয়ে নিতে পারেন), হালিম, পায়েশ, হালুয়া, দই-চিড়া, দুধ-সাগু, পুডিং, যে কোন রকমের মিষ্টি, রকমারী ফলের রস বা যেকোন তাজা ফল, মুরগীর স্যুপ বা স্যুপ নুডুলস, সবজির স্যুপ ইত্যাদি ইফতার হিসেবে শরীরের জন্য উপকারী।
ইফতারে যা খাওয়া উচিত নয় : ভাজা-পোড়া ও অতিরিক্ত তৈলাক্ত খাবার শরীরের জন্য সবসময়ই ক্ষতিকর। বিশেষ করে শরীরের তাৎক্ষণিক ঘাটতি পূরণ ও শক্তি যোগানের ক্ষেত্রে এদের ভূমিকা নেই বললেই চলে। এসব খাবারের উপরিভাগে তেলের আবরণ (ঙরষু পড়ধঃরহম) থাকার কারণে এরা পাকস্থলীতে পরিপাক হয় না। এ ধরনের খাবার পাকস্থলী অতিক্রম করতে অনেক সময় নেয়। তারপর অন্ত্রে গিয়ে শোষিত হয় এবং রক্তে মিশে। হজম প্রক্রিয়ার এই বিলম্বের কারণে এ ধরনের খাবার দেহে দ্রæত শক্তি যোগাতে পারে না। রোজার সময় দাঁতের যতেœর ব্যাপারে আমরা অনেকেই বেখেয়াল হয়ে যাই। রমজান মাসে সাহরির পর অবশ্যই টুথপেস্ট ও ব্রাশ দিয়ে দাঁত ও জিহ্বা পরিষ্কার করা উচিৎ। সম্ভব হলে একটু কুসুম গরম পানিতে লবণ মিশিয়ে কুলি করে নেয়া যেতে পারে। ইফতারের পর আরেকবার ব্রাশ করে নেয়া ভাল। এর মাঝে রোজা রাখা অবস্থায় মেসওয়াক অথবা শুধু ব্রাশ দিয়ে দাঁত পরিষ্কার করতে পারেন। তাতে মুখে দুর্গন্ধ কম হবে এবং দাঁত ও মাড়ির রোগ থেকে রেহাই পাওয়া যাবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন