পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সরকারের শীর্ষ ব্যক্তিদের নির্দেশেই বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুলসহ নেতৃবৃন্দের ওপর ন্যক্কারজনক হামলা চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
সোমবার দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে রুহুল কবির রিজভী এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকার গণবিচ্ছিন্ন হওয়ার কারণে এক অজানা ভয় থেকে আওয়ামী লীগের মনস্তাত্ত্বিক আবহাওয়া বদলে গেছে। পতনের আশঙ্কায় তারা উদ্ভ্রান্ত গুণ্ডামিতে নেমে পড়েছে। গুণ্ডামির এই নবসংস্করণ জনসমর্থন ছাড়া দুঃশাসন টিকিয়ে রাখারই ইঙ্গিতবহ। গণতন্ত্রের সর্বশেষ অস্তিত্বকে ছিন্নভিন্ন করে দেয়ার জন্যই এটি একটি সহিংস আগ্রাসী পদক্ষেপ। এরা বিরোধী দলের মানবকল্যাণধর্মী সমাজসেবামূলক কর্মসূচিকেও বানচাল করতে হিংস্র আক্রমণ চালায়। এখন সবকিছু হারিয়ে আওয়ামী লীগ শেষ ভরসা হিসেবে গুণ্ডা রাজত্ব কায়েম করতে সর্বশক্তি নিয়োগ করেছে।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, রাজনৈতিক ভদ্রতার নিয়ম-কানুন মানা আওয়ামী লীগের ঐতিহ্যে নেই। তারা সন্ত্রাস আর গুণ্ডামিকেই নিজেদের জীবনে-আচরণে-কর্মক্ষেত্রে সুপ্রতিষ্ঠিত করেছে। আওয়ামী লীগ-রাষ্ট্র সমালোচনা ও বিরোধী দলের গণতন্ত্রস্বীকৃত তৎপরতাকে স্তব্ধ করে দেয়া বাধ্যতামূলক কর্মসূচি বলে মনে করে।
সম্প্রতি পাহাড় ধ্বসে সংশ্লিষ্ট এলাকার মানববিপর্যয়ে বিপন্ন এলাকা সরেজমিনে দেখা ও অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য বিএনপির পক্ষ থেকে উচ্চ পর্যায়ের নেতৃবৃন্দের একটি প্রতিনিধি দল রাঙ্গামাটি যাওয়ার পথে রাঙ্গুনিয়ায় আওয়ামী লীগ সশস্ত্র ক্যাডাররা নেতৃবৃন্দের ওপর আকস্মিক আক্রমণ চালায়। গাড়ীবহরের ওপর সন্ত্রাসীরা বৃষ্টির মতো ইটপাটকেল নিক্ষিপ্ত করতে থাকে, ধারালো অস্ত্র নিয়ে গাড়ীগুলোর ওপর হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর করে। এতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ তার সফরসঙ্গী বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) রুহুল আলম চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক (চট্টগ্রাম বিভাগ) মাহবুবের রহমান শামীম, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. মীর ফাওয়াজ হোসেন শুভ, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বকরসহ প্রায় ১৫ জন আহত হন।
এই ঘটনায় আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর পুনরুজ্জীবিত ও বহুব্যাপী সন্ত্রাসের আরেকটি বিপজ্জনক মাত্রা দৃশ্যমান হলো।
তিনি আরো বলেন, আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি-আওয়ামী লীগ সরকারের শীর্ষ ব্যক্তিদের নির্দেশেই বিএনপি মহাসচিবসহ নেতৃবৃন্দের ওপর এই ন্যক্কারজনক হামলা চালানো হয়েছে। পতনের আশঙ্কায় গণতন্ত্র ও উন্নয়নের তকমাধারী আওয়ামী লীগ নিরপরাধ, নিরীহ ও নিরস্ত্র মানুষের ওপর চড়াও হচ্ছে এবং লুট আর দখলবাজী অব্যাহত রাখতে সাধারণ মানুষকে পিটিয়ে মারছে। জনগণের সাথে আওয়ামী লীগের সম্পর্ক যেন সতীনের সংসারের মতো। আওয়ামী লীগ জনগণের ঘোর বিরোধী। দেশের জনগণের প্রতিই যেন আওয়ামী লীগের প্রতিহিংসা। তাই জনগণ কী ভাবলো-সেটিকে তারা পাত্তা দেয় না এবং সেজন্যই অবিরাম দুষ্কর্ম চালাতে এদের কোনো চক্ষুলজ্জা হয় না। জনগণের সাথে এদের বিবাদ ঐতিহাসিক। গণতন্ত্রকে এরা বাক্সবন্দি করে একদলীয় বাকশাল গঠন বারবার জাতি প্রত্যক্ষ করেছে।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনার দুঃশাসনের প্রকোপ এখন বিপজ্জনক রূপ ধারণ করেছে। প্রকৃত গণতন্ত্র পুনরুজ্জীবনের জন্য বিএনপিসহ বিরোধী দলসমূহ, বিশিষ্ট নাগরিক সমাজ, নাগরিক স্বাধীনতায় বিশ্বাসী ব্যক্তিবর্গ, মুক্তচিন্তার লেখক, বিবেকবান সাংবাদিক সবাই শেখ হাসিনার চরম রাজনৈতিক আক্রমণের শিকার। এমনিতেই নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের অব্যাহত ঊর্ধ্বগতিতে মানুষের জীবন এখন অত্যন্ত শীর্ণ, শূন্য, শ্রীহীন। সেজন্য জনগণের ভিত্তিতলে ভয় ও শঙ্কার ডিনামাইট স্থাপনের মাধ্যমে এক নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করে সরকার টিকে থাকতে চায়।
বিএনপির সিনিয়র এই নেতা বলেন, নির্বাচন আসার আগেই গুণ্ডামি ও সন্ত্রাসকে যেভাবে প্রজনন করা হচ্ছে তাতে আগামী জাতীয় নির্বাচন শেখ হাসিনার অধীনে হলে অবাধ-সুষ্ঠু-শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানে কী শোচনীয় বিপর্যয় ঘটবে তা সহজেই অনুমেয়। সেই নির্বাচন হবে একতরফা, সন্ত্রাসকবলিত। ভোটের দিন ও এর পূর্বাপর অবস্থা চরম অরাজকতায় ঢেকে থাকবে। তাই আমরা দ্বিধাহীন কণ্ঠে বলতে চাই-শেখ হাসিনার অধীনে কোনো নির্বাচনই সুষ্ঠু হবে না। বিএনপি শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচনে যাবে না। যারা প্রাকৃতিক মহাদুর্যোগে নিপতিত উপদ্রুত অসহায় মানুষকে ফেলে নির্বিঘ্নে বিদেশ সফর করতে পারে তারা সবকিছুই করতে পারে।
তিনি বলেন, গতকালের ন্যক্কারজনক ও কাপুরুষোচিত হামলার প্রতিবাদে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সভাপতি হাবিব উন নবী খান সোহেলের নেতৃত্বে একটি মিছিল বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে শুরু হয়ে কিছুদূর অগ্রসর হলে পুলিশ চারদিক থেকে মিছিলটির ওপর হামলা চালায় এবং বেপরোয়া লাঠিচার্জ করে। মিছিল থেকে পল্টন থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম সম্পাদক বাবলু, মুন্না, মতিঝিল থানা স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা রবিনসহ ৫/৬ জন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায় পুলিশ। একই ঘটনার প্রতিবাদে গতকাল নাটোরে অনুষ্ঠিত মিছিলে পুলিশ হামলা চালিয়ে নাটোর সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা আবুল হোসেন, জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি রবিউল ইসলাম টিটনকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়। পুলিশ নাটোর বিএনপির সকল নেতাকর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে তল্লাশির নামে তাণ্ডব চালাচ্ছে। আমি বিএনপির পক্ষ থেকে পুলিশ কর্তৃক এই ন্যক্কারজনক হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে গ্রেফতার হওয়া নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও নিঃশর্ত মুক্তির জোর দাবি জানাচ্ছি।
এছাড়া মৌলভীবাজারে শ্রীমঙ্গল উপজেলায় বিএনপির ইফতার মাহফিল, নেত্রকোণায় ইফতার মাহফিলে আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়ে ইফতার মাহফিল পণ্ড করে দেয়ায় তীব্র নিন্দা ও ধিক্কার জানান রিজভী।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।