Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দেশের ভাবমর্যাদা বিরোধী কোনো কিছু না করতে প্রবাসীদের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান

স্টকহোমে লালগালিচা সংবর্ধনা

| প্রকাশের সময় : ১৬ জুন, ২০১৭, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : যুক্তরাজ্যের বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশীদের দেশের ভাবমর্যাদা ক্ষুন্ন হয় এমন কিছু না করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, এক সময় বাংলাদেশ ভিক্ষুকের দেশ, প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও অন্যান্য খারাপ নামে পরিচিত ছিল। আমরা এসব পরিস্থিতি মোকাবেলা করে উন্নয়নে রোল মডেলে পরিণত করেছি। কাজেই আপনারা এমন কিছু করবেন না যাতে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়।
সুইডেন যাওয়ার পথে লন্ডনে যাত্রাবিরতির পর বাংলাদেশ কমিউনিটির নেতৃবৃন্দ লন্ডনে স্ট্রোক পার্কে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাত করতে গেলে তিনি লন্ডনে তাদের উদ্দেশ্যে এসব কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের উন্নয়ন অনেক বিদেশী নেতৃবৃন্দের কাছে যাদুর মতো। কিন্তু এটা আমাদের জন্য যাদু নয়, দেশের জনগণের সেবার আন্তরিকতা। তিনি বলেন, জাতির জনকের কন্যা হিসেবে এমনকি আওয়ামী লীগের একজন কর্মী হিসেবে সোনার বাংলা গড়ে তোলার পদক্ষেপ নেয়া তার সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশ বিদেশের প্রতিটি আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীর দায়িত্ব দেশের উন্নয়ন,  দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল এবং বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নকে বাস্তব রূপ দেয়ার জন্য আত্মনিবেদিত হয়ে কাজ করা।
সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে সরকারের ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার বাংলাদেশকে দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে শান্তিপূর্ণ দেশ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
শেখ হাসিনা বলেন, ২০০৬ সালে দারিদ্র্য সীমার হার ছিল ৫০ শতাংশ। এখন তা কমিয়ে ২২ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। গতবছর বাংলাদেশে অর্থনীতি প্রবৃদ্ধি ছিল ৭.২ শতাংশ। যা ছিল বাংলাদেশের জন্য ছিল খুবই অসাধারণ সাফল্য। তিনি বলেন, ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের  দেশে এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে পরিণত হবে।
প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশে ভারী বর্ষণের ফলে সৃষ্ট ধারাবাহিক ভূমি ধসে জীবন ও সম্পদহানি এবং লন্ডনে ভয়াবহ আগুনে গভীর মর্মাহত ও দুঃখ প্রকাশ করেন। তিনি যুক্তরাজ্যে অনুষ্ঠিত চ্যাম্পিয়ন কাপ ক্রিকেট ট্রফিতে সেমিফাইলে উন্নীত হওয়ায় বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সকল সদস্য ও অন্যান্যদের ধন্যবাদ জানান।
প্রধানমন্ত্রী যুক্তরাজ্যে পার্লামেন্ট নির্বাচনে বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত তিন কন্যাকে নির্বাচনে জয়ী হতে সর্বাত্মক সহযোগিতা দেয়ায় যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশ কমিউনিটিকে ধন্যবাদ জানান।
এর আগে নবনির্বাচিত লেবার পার্টি কমন্স সভার সদস্য টিউলিপ রেজওয়ানা সিদ্দিক ও রুশনারা আলী প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তার হোটেলে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। শেখ হাসিনা তাদের সঙ্গে পারস্পরিক স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।
স্টকহোমে প্রধানমন্ত্রীকে লাল গালিচা সংবর্ধনা
সুইডিশ প্রধানমন্ত্রী স্টিফেন লোফভেনের আমন্ত্রণে তিনদিনের দ্বিপক্ষীয় সফরে গতরাতে স্টকহোমে  পৌঁছালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে লালগালিচা সংবর্ধনা দেয়া হয়। স্ক্যান্ডিনেভিয়ান এয়ার লাইন্সের একটি বিমান প্রধানমন্ত্রী ও সফরসঙ্গীদের নিয়ে স্থানীয় সময় রাত ৯টা ৪০ মিনিটে সুইডিশ রাজধানীর আরলান্ডা বিমান বন্দরে অবতরণ করে।
সুইডিশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের চিফ অব প্রটোকল অ্যাম্বাসেডর কøাস মোলিন, স্টকহোমে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত গোলাম সারোয়ার এবং ঢাকায় নিযুক্ত সুইডিশ রাষ্ট্রদূত যোহান ফ্রিসেল বিমান বন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে অভ্যর্থনা জানান। পরে সুইডিশ সশস্ত্র বাহিনী প্রধানমন্ত্রীকে গার্ড অব অনার প্রদান করে।
বাংলাদেশের কোন সরকার অথবা রাষ্ট্র প্রধানের এটিই প্রথম দ্বিপক্ষীয় সুইডেন সফর। সুইডেন সফরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছোট মেয়ে শেখ রেহানা প্রধানমন্ত্রীর সফর সঙ্গী হিসেবে রয়েছেন। ঢাকা থেকে স্টকহোম যাওয়ার পথে শেখ হাসিনা লন্ডনে প্রায় ২৪ ঘণ্টা যাত্রাবিরতি করেন।
স্টকহোমের আরলান্ডা বিমান বন্দর থেকে প্রধানমন্ত্রীকে মোটর শোভাযাত্রা সহকারে গ্রান্ড হোটেলে নিয়ে যাওয়া হয়। সুইডেন সফরকালে তিনি সেখানেই অবস্থান করবেন।
শেখ হাসিনা হোটেলে পৌঁছালে সেখানে অল-ইউরোপিয়ন আওয়ামী লীগ নেতারা তাকে স্বাগত জানান।
শেখ হাসিনা ৪৭ সদস্যের ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদলসহ উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। সুইডিশ প্রধানমন্ত্রী স্টিফেন লোফভেনের সঙ্গে গতকাল শেখ হাসিনার বৈঠক অনুষ্ঠিত হবার কথা রয়েছে। আলোচনার আগে দুই নেতার মধ্যে একান্ত বৈঠক হবে।
সফরকালে শেখ হাসিনা সুইডিশ পার্লামেন্ট পরিদর্শন করবেন এবং সেখানে ভারপ্রাপ্ত স্পিকার  তোরিয়াস বিলসস্ট্রোমের সঙ্গে বৈঠক করবেন। তিনি রয়্যাল ক্যাসলে সুইডেনের রাজা ষোড়শ কার্লের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন এবং সুইডিশ প্রধানমন্ত্রীর দেয়া ভোজসভায় অংশ নেবেন।
প্রধানমন্ত্রী গতকাল সন্ধ্যায় প্রবাসী বাংলাদেশীদের দেয়া এক সংবর্ধনায় এবং আজ শুক্রবার বাংলাদেশ সুইডেন বিজনেস অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট ফোরামের বৈঠকে যোগ দেবেন।
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এইচঅ্যান্ডএম’র সিইও কার্ল যোহান পার্সন এবং ইনভেস্টরের প্রেসিডেন্ট জ্যাকব ওয়ালেমবার্গ, ইনভেস্টরের ভাইস প্রেসিডেন্ট মারকাস ওয়ালেমবার্গ এবং এবিবি সুইডেনের জন  সোডারস্টর্মের সঙ্গে বৈঠক হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
তিন দিনের সুইডেন সফর শেষে প্রধানমন্ত্রী আগামীকাল ১৭ জুন লন্ডন হয়ে দেশে ফিরবেন।



 

Show all comments
  • সালমান ১৬ জুন, ২০১৭, ১১:০৫ এএম says : 1
    প্রবাসীরাই বিশ্বে দেশের ভাবমর্যাদা উজ্জ্বল করে।
    Total Reply(0) Reply
  • Nur- Muhammad ১৬ জুন, ২০১৭, ৩:২১ পিএম says : 0
    মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উপদেশ যেমন প্রবাসী ভাই বোনদের সাফল্যতা আসবে তেমনি দেশের ও ভাবমূর্তি উজ্জল থেকে উজ্জল হবে। প্রবাসীদের কষ্টার্জিত অর্থে দেশ আগাচ্ছে। দেশের সুনাম বৃদ্ধি পাচ্ছে। জনগণ আর প্রবাসীদের পরিশ্রমের ফলে দেশ উন্নতীর পথে আগাচ্ছে। এখন প্রয়োজন সৎ ও গণতান্ত্রীক সরকার। সরকার গণতান্ত্রীক না হলে দলবাজী করবে। আর দলবাজীরা দূর্নীতি করবে। লুটপাট করে অর্থনীতিকে পুঙ্গ করে দিবে। ১৯৯৬ সালের বঙ্গকণ্যা শেখ হাসিনার সরকার জনগণের সহিদ সংন্পৃততা ছিল। তাই ঐ সময় জনবিপক্ষে কোন কাজ হয় নাই। লুটপাট ঘটে নাই। আবার ২০১৪ সালের সরকারের সহিদ জনগণের বিচ্ছনতা ঘটায়, সরকারের অনেক লোক দূর্নীতি ও লুটপাটে মর্ত হয়ে উঠছে। ফলে বেসিক ব্যাংক সহ সরকারী সব ব্যাংকে লুটপাট হয়েছে। কেন্দীয় ব্যাংকের বিরাট রিজার্ভ চুরি হয়েছে। এই সব খোয়ানু অর্থ জনগণের ঘাম ঝরা কষ্টার্জিত আর্থ। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুর কণ্যা। তার ভিত্তি ও শক্তি অনেক বেশী। তাই জনগণ আশা করে, বঙ্গকণ্যা দূর্নীতিকে কটুুরভাবে দমন করে সামনে আগালে অবশ্যই দেশ উন্নতির সর্বচ্চ শিখরে পৌঁছবে। ধন্যবাদ। সবায়কে ধন্যবাদ।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: প্রধানমন্ত্রী


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ