পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
মিজানুর রহমান তোতা : একে অপরের সঙ্গে কথা বলার মধ্যে প্রাধান্য পাচ্ছে আগামী জাতীয় নির্কাচন। কোন আসনে এবার কে কে প্রার্থী হতে পারে, কার অবস্থা কি হবে, মৌসুমী পাখিদের আনাগোনা কেমন-এসব নিয়ে সবখানে সমানতালে চলছে আলোচনা সমালোচনা। গুরুত্বপুর্ণ স্থানে রংরেংএর ব্যানার টাঙিয়ে জানানো হচ্ছে সম্ভাব্য প্রার্থীদের ঈদ শুভেচ্ছা। এই চিত্র দক্ষিণ-পশ্চিমের। এই অঞ্চলে প্রধান দু’টি রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নির্বাচনী মাঠ জরিপ করছে। করছে চেক ক্রস চেক। একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা ছাড়াও দল নির্ধারিত অসংখ্য টিম জরিপ কাজ চালাচ্ছে পুরাদমে। তাদের তৎপরতা নির্বাচনী আলোচনাকে জোরদার করছে। মাঠ রাজনীতি এখন পুরোমাত্রায় নির্বাচনমুখী। রমজান মাসে ইফতার মাহফিল, বিভিন্নপন্থায় যোগাযোগ, দলীয় নেতা, কর্মী ও সমর্থকদের ঘন ঘন খোঁজ খবর রাখার চিত্র জানান দিচ্ছে নির্বাচন বেশী দেরী নেই। বলা যায়, রাজনৈতিক সকল কর্মকান্ডের উদ্দেশ্যই এখন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন।
জনসাধারণের কথা, ‘ওরে ভাই ভোট আসলি সবাই তৎপর হয়, ভোট গেলে সাধারণ লোকজনের খবরও রাখে না আমাদের ভোটে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা। আমরা এমপি বানায়, ভোটের আগে আমাদের কত আদর কদর, ভোট পার হলেই তাদের নিজেদের নিয়েই ব্যস্ত থাকেন। আমাদের মূল্যায়ন হয় না। অনেকেই রাতারাতি চোখ পাল্টি দিয়ে দেয়’। ভোট রাজনীতিতে কি এসবের পরিবর্তন হবে না-এমন প্রশ্ন ও নানা কথাবার্তা চলছে নির্বাচনের প্রসঙ্গ উঠলেই। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের কথা, রাজনীতিতে ঘটেনি কোন মৌলিক ও গুণগত পরিবর্তন। অনেকটাই গতানুগতিক। তাছাড়া রাজনীতির গতিপ্রকৃতিও খুব বেশী সুখকর নয়। চারিদিকে জোরেশোরে উচ্চারিত হচ্ছে সত্যিকারার্থে জনকল্যাণের রাজনীতি অনেকটাই অনুপস্থিত। রাজনীতি অর্থ হয়ে গেছে এখন প্রভাব খাটিয়ে যেনতেনভাবে নেতাদের সম্পদ বৃদ্ধি করা। আর সংসদ সদস্য হলে তো কথাই নেই। ব্যতিক্রম ছাড়া বেশীরভাগই ক্ষমতার পুরোটাই ব্যবহৃত হয় ব্যক্তিস্বার্থে। তখন দল কিংবা জনস্বার্খ গৌণ হয়ে যায়। অতীতেও একই ধারা ছিল, কিন্তু বর্তমানে সেই থারার গতি বৃদ্ধি পেয়েছে মাত্রাতিরিক্ত। জনগণের সমস্যা সমাধানে ও জনকল্যাণে এবং স্থানীয় ইস্যুভিত্তিক রাজনীতি নেই বললেই চলে।
দক্ষিণ-পশ্চিমের ১০ জেলায় মোট ৩৬ আসনে আসনভিত্তিক নির্বাচনী জরিপ চালাচ্ছে সরকারের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা। তাদের ফিল্ড অফিসাররা ৩স্তরে তালিকা তৈরী করছে। রাজনৈতিক দলগুলোর সম্ভাব্য প্রার্থীদের কার কি অবস্থান তার চিত্র তুলে ধরা হচ্ছে। বর্তমান এমপিদের কর্মকান্ডে কে নিন্দিত কে নন্দিত, কে মাঠে নামেন না, কার জনগণের সাথে কার সম্পর্ক আছে, কার নেই, ক্ষমতায় থাকার সুবাদে কে কে ফুলেফেপে মোটা হয়েছেন, কার সম্পদ আনুমানিক কত, কাকে মনোনয়ন দিলে প্রতিপক্ষের সঙ্গে ভোটযুদ্ধে পারবে কি পারবে না, কার আত্মীয় স্বজন বা চালাচামুন্ডা রাতারাতি শত শত কোটি টাকার মালিক হয়ে ঢাকায় গাড়ি বাড়ির মালিক হয়েছেন-এসব খুঁজে বের করে আমলনামা তৈরী করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট একাধিক সুত্র জানায়, যশোর, খুলনা, ঝিনাইদহ, কুষ্টিয়া, মাগুরা, নড়াইল, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গার ৩৬টি সংসদীয় আসনে ক্ষমতাসীন দলের অন্তত১২জন এমপি একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন পাবেন না জনবিচ্ছিন্ন ও দুর্নীতিসহ নানা কারণে। এর মধ্যে খুলনায় ২টি, যশোরে ৩টি, ঝিনাইদহ ২টি মোট ৭টি আসনে প্রার্থী পরিবর্তনের কথা জোরালোভাবে বিভিন্ন মহলে আলোচনা হচ্ছে। এসবস্থানে নতুন মুখ আসছে বলে সুত্র জানায়। গোয়েন্দা সংস্থা ছাড়াও আওয়ামী লীগের কেন্দ্র থেকে একাধিক টীম আগামী নির্বাচনের প্রার্থীদের নিয়ে কাজ করছে। যারা দলের জন্য নিবেদিত, ক্লিন ইমেজ, ভোটযুদ্ধে অনায়াসে বিজিত হবেন এমন নতুন মুখ খুঁজছে। যারা নানা কারণে বিতর্কিত হয়েছেন, নির্দ্দিষ্ট গন্ডির বাইরে বের হতে পারেনি, ঘরের ভেতর ঘর তৈরী করেছেন. দলের নেতা কর্মী ও সমর্থকের বদলে ব্যক্তি সুবিধার জন্য তর্মচারীর মতো কিছু চালাচামন্ডা পুষে রাজনীতির কর্মকান্ড করে নামকাওয়াস্তে ও শুধু ফটোসেশনের মধ্যে সীমাবদ্ধ রেখে সমালোচিত হয়েছেন তাদের যাতে মনোনয়ন না দেওয়া হয় এমন তথ্য ও মন্তব্য কেন্দ্রে জানানো হচ্ছে। এর বিপরীতে সার্বিক পরিস্থিতি আঁচ করতে পেরে অনেক এমপি সময় থাকতে শুধরে নেওয়ার চেষ্টা করছেন। তাদের দলীয় টিকিট কনফার্ম করতে কেন্দ্রে করছেন লবিং।
বিএনপিও নির্বাচনের প্রস্ততি নিচ্ছে। এই অঞ্চলের সম্ভাব্য প্রার্থীদের অধিকাংশই হামলা মামলা প্রশাসনিক হয়রানি জেল জুলুম হুলিয়ার শিকার হয়ে জেরবার অবস্থায়। তার মধ্যেও ঘুরে দাঁড়ানোর প্রানান্ত চেষ্টা চালাচ্ছেন তারা। রমজানে ইফতার মাহফিল, বিভিন্নপন্থায় নেতা কর্মী ও সমর্থকদের সঙ্গে যোগাযোগসহ যেসব কর্মকান্ড বিএনপি করছে তা নির্বাচনকে ঘিরেই। দলীয় একাধিক সুত্র জানিয়েছে, বিএনপিতে অনেক মুখ আসছে। নেতা ও কর্মীরা এখন বহুলাংশে চাঙ্গা। তারা গা ঝাড়া দিয়ে উঠেছে। দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। আর পেছনের পথ নেই। এবার শক্ত হাতে কেন্দ্র নির্বাচনী মাঠে নামছে। তারা চুলচেরা বিশ্লেষণ করেই প্রার্থী নির্বাচনের দিকে মনোনিবেশ করছে। জাতীয় পার্টি, জামায়াত, জাসদ, জেএসডি,ওয়ার্কার্স পার্টিসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলও কোথাও একক, কোথাও জোটের নির্বাচনী চিন্তা ভাবনায় রয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।