পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ইনকিলাব ডেস্ক : আয়েশা সিদ্দিকার জন্য রমজান নিয়ে এসেছে বিশেষ আকর্ষণ। এটা সেই মাস যা তার জীবনটাকে সম্পূর্ণ পাল্টে দিয়েছে। তিনি ইসলামে দীক্ষিত হন ৩ বছর আগে। রোযার প্রতি আকর্ষণ ও আগ্রহের কারণেই বন্ধুদের সাথে ২০১৩ সালে প্রথম রোযা পালন করেন। ‘রমজান আমার জন্য অসাধারণ অনুভূতির। কারণ এর মাধ্যমেই আমি ইসলামের প্রতি আকৃষ্ট হয়েছি। আমি ব্রিটেনে আমার বন্ধুদের সঙ্গে অবস্থান করছিলাম। রমজান মাস এলে আমি তাদের দেখেছি খুব সকালে ঘুম থেকে জেগে উঠতে এবং খাবার খেতে। তাদের আরো দেখেছি দিনভর না খেয়ে থাকতে এবং নামায আদায় করতে, আর সবশেষে সন্ধ্যায় সবায় সম্মিলিতভাবে ইফতার করতে। তাদের এই প্রথা আমার কাছে খুব ভাল লাগে এবং আমি তাদের সাথে রোযা রাখতে শুরু করি’।
আয়েশা জানায়, রমজান তার জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। ‘ইসলাম আমার হৃদয়ে জায়গা করে নেয় ৪ বছর আগে এই পবিত্র মাসে। আমি বন্ধুদের সাথে রোযা রাখতে শুরু করলেও ইসলামে দীক্ষিত হইনি। একজন মুসলিম হিসেবে এটা আমার তৃতীয় রমজান, আল-হামদু লিল্লাহ’।
ইসলামে দীক্ষিত হবার পর আমার পোশাক পরিধানের ধারণায় পরিবর্তন আসে। এমনকি অমুসলিম থাকাবস্থায়ও যখন রোজা পালন করতাম তখন থেকেই। রোজার সম্মানার্থে তখন থেকে আরো বেশি আচ্ছাদিত পোশাক পরতে শুরু করি।
‘ওহ! ঈদে আমি বন্ধুদের সাথে নামায আদায় করতে গেছি, এমনকি নামাযে কী পড়তে হয় তা না জেনেই’।
আয়েশা জানায়, প্রথম রমজানের পর তিনি ইসলামে দীক্ষিত হয়ে জীবন যাপনে অনেক সুশৃঙ্খল হয়ে যান। তিনি বলেন, ‘আমি খাবার শেয়ার করার মাহাত্ম্য শিখেছি, অন্যের মর্যাদা বুঝতে শিখেছি, এই পবিত্র মাসে সময়ানুবর্তিতা শিখেছি’।
প্রথম রমজান যাবার পর দু’মাস ইসলাম ধর্মের বিভিন্ন দিক সম্পর্কে ধারণা লাভ করে ইসলামে শামিল হয়ে যান আয়েশা। এরপর থেকেই সবকিছু বদলে যায়। ‘পবিত্র মাসে আমার অগ্রাধিকারগুলোয় পরিবর্তন আসে। আমার সব কাজেই কুরআন ও আল্লাহর সন্তুষ্টির বিষয়টি অগ্রাধিকার পেতে থাকে। আমি পবিত্র মাসে একবার কুরআন পাঠ করি। আল্লাহ মানুষকে ক্ষমার ক্ষেত্রে পরম করুণাময় ও দয়ালু। কাজেই তার অনুগ্রহ ও দয়া পাবার জন্য আমি এ মাসের সর্বোচ্চ সদ্ব্যবহার করে থাকি’।
আয়েশা বলেন, তার বিশ্বাস গভীর থেকে গভীর হচ্ছিল, কারণ, তিনি আল্লাহর কাছে প্রার্থনায় সাড়া পাচ্ছিলেন। ‘বিশ্বাস করুন, রমজান নিশ্চিতভাবেই এমন মাস যাতে প্রার্থনায় সাড়া পাওয়া যায়। ভারতে আমার পরিবারের কাছে আমার ইসলাম গ্রহণের খবর প্রকাশ হয়ে পড়লে খুবই দুশ্চিন্তায় পড়ে যাই এবং পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবার জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করি, তিনি আমার দোয়া কবুল করেন। অন্য এক সময় আমি একজন খাঁটি মুসলিম স্বামী মিলিয়ে দেবার জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করি, আল-হামদু লিল্লাহ, আমি তা পেয়ে গেছি’।
আয়েশা এবং তার স্বামী মোহাম্মদ ওমর রমজান মাস আসার আগেই বিয়ের পরিকল্পনা করেন। তারা চাচ্ছিলেন একত্রে অর্থবহ একটি রমজান কাটাতে। আয়েশা ভারতীয় এবং তার স্বামী যদিও পাকিস্তানী, কিন্তু তিনি জানান, ইসলামে জাতীয়তা কোন প্রতিবন্ধকতা নয়। ‘মুসলিম সব সময় মুসলিম - চাই সে বিশ্বের যে প্রান্তেরই হোক’।
এখন তারা একত্রে সাহারী গ্রহণ করেন, একসঙ্গে ইফতার করেন এবং খুবাইবা বাসস্ট্যান্ডের কাছে ফাতিমা মসজিদে একসঙ্গে তারাবীহ আদায় করতে যান। ‘আমি তারাবীহ শেষে অনেক দোয়া করি। আমি হাদীসে পড়েছি, ‘যে ঈমান ও সওয়াব লাভের আশায় রমজান মাসে তারাবীহ পড়ে তার পূর্বের সব গুনাহ ক্ষমা করে দেয়া হয়’। (সহীহ বুখারী ও মুসলিম)।
আমি নামায শেষে এতটা হাল্কা বোধ করি যেন আমার কাঁধ থেকে সমস্ত গুনাহ নেমে গেছে। এটি এমন এক ইবাদাত যা দিয়ে আমি আমার রবের সান্নিধ্য লাভ করতে পারি। সূত্র : খালিজ টাইমস।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।