পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
এসোসিয়েটেড প্রেস : কাতার যে রাজনৈতিক সংকটে নিপতিত হয়েছে তার পিছনে রয়েছে দেশটি সন্ত্রাসবাদকে সমর্থন করে বলে প্রতিবেশীদের অভিযোগ। কাতার এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে, কিন্তু ইরানের সাথে তার সম্পর্ক এবং বিভিন্ন ইসলামী গ্রæপের সাথে তার মাখামাখি গভীর তদন্তের কারণ হয়েছে, তাকে আঞ্চলিক বিচ্ছিন্নতার শিকার করেছে এবং আগুন জ¦ালানোর মত পর্যাপ্ত ধোঁয়া সৃষ্টি করেছে।
কাতারের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা হিসেবে সউদী আরব, মিসর. সংযুক্ত আরব আমিরাত ও বাহরাইন তার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করেছে।
শুক্রবার এ চারটি আরব দেশ কাতারের সাথে সংশ্লিষ্ট ৫৯ জন ব্যক্তি ও বেশ কয়েকটি দাতব্য সংস্থাকে সন্ত্রাসী তালিকাভুক্ত করার মাধ্যমে দেশটির উপর চাপ বৃদ্ধি করেছে।
কাতার বলেছে, তাকে বিচ্ছিন্ন করার পদক্ষেপ রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত। কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, আমরা সন্ত্রাসী গ্রæপগুলোকে সমর্থন করি না, তাদের সাথে আমাদের কোনো সম্পর্ক নেই ও আমরা তাদের সমর্থন করব না।
এটা একটা ধারণাপ্রসূত ব্যাপার হতে পরে। এ অঞ্চলে সরকারগুলো রাজনৈতিক বিরোধী ও মানবাধিকার কর্মীদের দমন করতে নিয়মিতভাবে সন্ত্রাসবাদকে ব্যবহার করে।
কিছু গ্রæপকে কাতার সমর্থন করেছে। যেমন মুসলিম ব্রাদারহুড। অনেকেই এ গ্রæপকে বৈধ রাজনৈতিক শক্তি বলে থাকেন। সিরিয়ার কিছু কট্টরপন্থী সুন্নী গ্রæপসহ অন্যরা সউদী আরব যে সব গ্রæপকে সমর্থন করে তাদের চেয়ে মতাদর্শগত ভাবে আলাদা নয়।
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শুক্রবার কাতারের সাথে বিরোধে নিজে আরবদেশগুলোর পক্ষ নিয়েছেন । হোয়াইট হাউস থেকে ট্রাম্প বলেন, কাতার ঐতিহাসিকভাবে অতি উচ্চ পর্যায়ের সন্ত্রাসবাদের অর্থযোগানদাতা। এখানে কাতার যেসব গ্রæপকে সমর্থন করছে ও যাদের সাথে তার সম্পর্ক রয়েছে সেগুলোকে দেখা যেতে পারে।
আল কায়দা ও ইসলামিক স্টেট (আইএস) গ্রæপ
কাতারের আরব প্রতিবেশীরা সিরিয়া থেকে সিনাই উপদ্বীপ পর্যন্ত বিস্তৃত অঞ্চলে আল কায়দা ও আইএস গ্রæপের মতাদর্শ সমর্থন করার জন্য কাতারকে অভিযুক্ত করেছে।
সিরিয়ার বিশেষজ্ঞ ও গ্রæপগুলো বলে, কাতারের অর্থ সাহায্য পরোক্ষ ভবে জঙ্গি গ্রæপগুলোকে সহায়তা করেছে। সিরিয়ায় ২০১১ সালের গণভ্যুত্থানকালে এক ধরনের অভিযোগ সউদী আরব ও উপসাগরীয় দেশগুলোর বিরুদ্ধে উত্থাপিত হয়েছিল। তবে বিশেষজ্ঞরা বলেন, এসব সরকার তাদের সরকারী অবস্থান ও আর্থিক আইন সংশোধন করেছে।
কেউ কেউ উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যে সউদী আরব ও কাতারের মধ্যে বিরোধ সিরিয়ার বিরোধীদের অর্থ সহায়তাদানকে ব্যাহত করতে পারে। সেখানে কোন কোন গ্রæপ উগ্রপন্থীদের সহযোগিতা করছে তা স্পষ্ট নয়।
সিরিয়া বিশেষজ্ঞ হাসান হাসান বলেন, কাতার কখনোই আল কায়দা বা আইএসকে সরাসরি সমর্থন করেনি। তিনি বলেন, কাতার আহরার আল শামকে সমর্থন করেছে যার প্রতিষ্ঠাতারা আল কায়দার সাথে সম্পর্কিত ছিলেন।
সউদী আরব রিয়াদে অনুষ্ঠিত সিরিয়ার সরকার বিরোধীদের সম্মেলনে এক সময় আহরার আল শামসের সদস্যদের আমন্ত্রণ জানিয়েছিল।
মুসলিম ব্রাদারহুড
এ ইসলামী সুন্নী গ্রæপ এ অঞ্চলে মেরুকরণে সর্বাধিক প্রভাব বিস্তারকারী। সউদী আরব, ইউএই ও মিসর একে তাদের শাসনের প্রতি সরাসরি হুমকি বলে মনে করে এবং অস্থিতিশীলতা সৃষ্টিকারী শক্তি হিসেবে দেখে। জর্দান ও তিউনিসিয়ায় মুসলিম ব্রাদারহুডের শাখা রয়েছে।
২০১১ সালে প্রতিবাদ বিক্ষোভের মুখে মিসরের দীর্ঘদিনের স্বৈরশাসক হোসনি মোবারকের পতনের পর অনুষ্ঠিত নির্বাচনে মুসলিম ব্রাদারহুড জয়ী হয়ে ক্ষমতায় আসে। কাতার ব্রাদারহুড সরকারকে শত শত কোটি ডলার সাহায্য প্রদান করে। ব্রাদারহুডের সিরিয়া ও লিবিয়া শাখার এক প্রধান সমর্থক ছিল কাতার।
কাতারের যুক্তি যে ব্রাদারহুড যখন ক্ষমতায় ছিল তখন তারা সামগ্রিকভাবে মিসরকে সমর্থন করেছে, কোনো গ্রæপকে নয়।
মিসরের সামরিক বাহিনী ২০১৩ সালে ব্রাদারহুডকে ক্ষমতাচ্যুত করে এবং ব্যাপক বিক্ষোভের মধ্যে ব্রাদারহুডের সমর্থকদের বিরুদ্ধে মারাত্মক দমন চালায়। সউদী আরব, ইউএই ও মিসর গ্রপটিকে বেআইনি ঘোষণা করে ও সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে আখ্যায়িত করে তাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করার অভিযোগ আনে। উপসাগরে ব্রাদারহুডের সহযোগীরা গ্রেফতার হয়।
উপসাগরীয় শাসকরা তাদের দেশের ইসলামপন্থী বিরোধী নেতাদের নিরাপদ আশ্রয় ও এমনকি নাগরিকত্ব প্রদানের জন্য কাতারকে অভিযুক্ত করে।
হামাস
মিসরের ব্রাদারহুডের শাখা হচ্ছে ফিলিস্তিনের হামাস যাদেরকে ইসরাইল ও পশ্চিমা মিত্ররা সন্ত্রাসী সংগঠন বলে বিবেচনা করে। গাজা ভূখন্ড শাসনকারী হামাস ইসরাইলের সাথে তিনবার যুদ্ধ করেছে। আরব বিশে^ কেউ কেউ হামাসকে ইসরাইলি দখলের বিরুদ্ধে প্রতিরোধকারী শক্তি হিসেবে মনে করে।
সউদী আরব বলেছে, কাতারকে অবশ্যই হামাসের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করতে হবে।
গাজা ইসরাইল ও মিসরের অবরোধের মধ্যে রয়েছে। কাতার গাজা ভূখন্ডে রাস্তা, গৃহায়ন এবং একটি বড় হাসপাতাল তৈরিতে কোটি কোটি ডলার বিনিয়োগ করেছে এবং বিধ¦স্ত এলাকায় কর্মসংস্থানের লাইফলাইন প্রদান করেছে।
কাতার বলেছে, গাজায় সে যেসব কাজ করেছে তা সম্পূর্ণরূপে মানবিক এবং আন্তর্জাতিক ভাবে সমর্থিত শান্তি আলোচনার প্রেক্ষাপটেই হামাসের সাথে তাদের সম্পর্ক।
জিম্মিমুক্তির অর্থপ্রদান
সম্পতি কাতারের শাসক পরিবারের অপহৃত সদস্যদের মুক্তির জন্য আলোচনার মাধ্যমে সম্পন্ন চুক্তি উপসাগরীয় নেতৃবৃন্দ, বিশেষ করে সউদী আরবের উদ্বেগের কারণ।
বলা হয়েছে যে কাতার ২০১৫ সালের ১৬ ডিসেম্বর দক্ষিণ ইরাকে মরুভূমির একটি ক্যাম্প থেকে বাজপাখি শিকার করতে যাওয়া ২৬ অপহৃত ব্যক্তির মুক্তির জন্য কাতার ইরান সমর্থিত একটি শিয়া মিলিশিয়া গ্রæপকে কোটি কোটি ডলার দিয়েছে।
মিসর নিরাপত্তা পরিষদকে জিম্মি মুক্তির জন্য ইরাকে সক্রিয় একটি সন্ত্রাসী গ্রæপকে কাতার কর্তৃক ১শ’কোটি ডলার পর্যন্ত প্রদানের খবর তদন্ত করে দেখার নির্দেশ দিয়েছে।
কাতার বলেছে, তারা জিম্মি মুক্তিতে সহায়তা করার জন্য ইরাক সরকারকে আর্থিক সহায়তা দিয়েছে এবং তারা সেখানে কোনো সশস্ত্র গ্রæপের সাথে চুক্তি করেনি।
জিম্মি মুক্তি আলোচনার সাথে সংশ্লিষ্ট কয়েকজন বলেছেন, কাতার একটি শহরের অধিবাসীদের সরিয়ে নিতে আল কায়দার সাথে সংশ্লিষ্ট একটি গ্রæপসহ সিরিয়ার ইসলামী গ্রæপগুলোকে ভালো অংকের অর্থ দিয়েছে। তারা এপিকে বলেন যে জিম্মি মুক্তির জন্য আলোচনা ছিল এ অঞ্চলের সবচেয়ে জটিল ও স্পর্শকাতর আলোচনা।
ইরান
সউদী আরব ও বাহরাইন উভয় দেশে শিয়া জঙ্গি গ্রæপগুলোকে সমর্থনের জন্য কাতারকে অভিযুক্ত করেছে।
সউদী আরবের পূর্বাঞ্চলে একটি শিয়া প্রধান শহরে সম্প্রতি জঙ্গি ও সউদী নিরাপত্তা বাহিনী মধ্যে সহিংসতা বৃদ্ধি পেয়েছে। বাহরাইনে সুন্নী নেতৃত্বাধীন রাজতন্ত্র ২০১১ সালে সংখ্যাগুরু শিয়াদের এক গণঅভ্যুত্থান দমন করে এবং শান্তিপ্রিয় ভিন্নমতাবলম্বীদের উপর দমন অব্যাহত রয়েছে। তখন থেকে বাহরাইনি নিরাপত্তা বাহিনী শিয়া জঙ্গিদের হামলার লক্ষ্যব¯ুÍ ।
সউদী আরব কাতারকে ইয়েমেনে ইরানের মিত্র হুছি বিদ্রোহীদের সমর্থন প্রদানের জন্যও অভিযুক্ত করেছে। তবে কাতার ইয়েমেনে হুছিদের উপর হামলার জন্য গঠিত সউদী নেতৃত্বাধীন জোটের সদস্য।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, এ অভিযোগের সপক্ষে কোনো সাক্ষ্যপ্রমাণ নেই। তারা বলেন, এ অভিযোগের উৎপত্তি ২০১২ সালে ইয়েমেনে ক্ষমতা হস্তান্তরের আলোচনা নিয়ে। এটা কিভাবে হবে তা নিয়ে কাতার ও সউদী আরবের মধ্যে মতানৈক্য দেখা দেয়। কাতারের বিরুদ্ধে সউদী উদ্যোগে নেয়া একটি পদক্ষেপের বিরুদ্ধে নাশকতার অভিযোগ আনা হয়।
ওয়াশিংটনে কাতারের রাষ্ট্রদূত মেশাল বিন হামাদ আল সানি বলেন, তার দেশের সাথে ইরানের সম্পর্ক রয়েছে এবং দু’দেশ সাগরে বিশাল প্রাকৃতিক গ্যাসক্ষেত্রের অংশীদার। কাতারের অবস্থান অন্য উপসাগরীয় আরব দেশগুলোর অনুরূপ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।