Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

পাহাড়ে অশান্ত পরিবেশ সৃষ্টির নেপথ্যে বিভিন্ন সশস্ত্র গ্রুপ

| প্রকাশের সময় : ১৩ জুন, ২০১৭, ১২:০০ এএম

 বাঙালিদের মধ্যে ভীতি ছড়াতেই একের পর এক হত্যা : অগ্নিকাÐে ক্ষতিগ্রস্ত পাহাড়িদের বাড়ি ফিরতে দেয়া হচ্ছে না

সাখাওয়াত হোসেন লংগদু থেকে ফিরে : পার্বত্য অঞ্চলে বাঙালী ও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠির মধ্যে দুরত্ব তৈরির মাধ্যমে পাহাড়ে অশান্ত পরিবেশ সৃষ্টি নেপথ্যে রয়েছে সশস্ত্রগ্রæপগুলো। সাধারন বাঙালী-পাহাড়িরা পাহাড়ে শান্তির মধ্যে বসবাস করলেও সশস্ত্র গ্রæপগুলো সামান্য দ্বদ্ধের সুযোগ নিয়ে চরম নির্মম হত্যাকান্ড ও নির্যাতন চালায় বাঙালীদের উপর। আরো দশটি ঘটনার মতোই গত ২ জুন লংগদুর স্থানীয় যুবলীগ নেতা ও ভাড়ায় মোটরসাইকেল চালক নুরুল ইসলাম নয়নকে হাতের নক তুলে নির্মম নির্যাতনের মাধ্যমে হত্যা করা হয়। এ হত্যাহান্ডের পর বাঙালীরা ক্ষুদ্ধ হয়ে বেশ কিছু বাড়িতে আগুন দিলেও লংগদুতে আগুনের সুত্রপাত হয়েছিল অনেক আগেই। স্থানীয় বাঙালীরা যখন নিহত নয়নের লাশ নিয়ে জানাযায় যাচ্ছিলেন তখনেই কে বা কারা জেএসএস এর স্থানীয় অফিসে আগুন ধরিয়ে দেয়। নয়ন হত্যাকান্ডের সাথে জড়িতরা আগেই পাহাড়িদের সর্তক করে দেয়। যার ফলে বাঙালীরা ক্ষুদ্ধ হয়ে পাহাড়িদের কিছু বাড়িতে আগুন দেয়। তখন বাাড়িগুলোতে লোকজন ছিল না। হামলা হতে পারে এই আশঙ্কায় ঘটনার আগেই বাড়িতে তালা দিয়ে চলে যায় ওরা। আগুন লাগানোর ঘটনার সময় তাই কোনো প্রতিরোধও হয়নি। কোন হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। গত শনিবার লংগদুতে সরেজমিনে ঘুরে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের বেশ কয়েকজন সদস্য, বাঙালী, স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের সাথে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে। প্রশাসন ও স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা গেছে, পাহাড়ে সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের হাতে গত ছয় বছরে আট বাঙালি মোটরসাইকেল চালক নিহত হয়েছেন। গুম হয়েছেন আরো অন্তত বেশ কয়েকজন। মোটরসাইকেল ছিনতাই বা চুরির জন্য নয়, পাহাড়কে অশন্ত করে তুলতেই এসব পরিকল্পিত হত্যাকান্ড। নয়ন হত্যাকান্ডের ঘটনায় গ্রেফতারকৃত দু’জনও পাহাড়ি সশস্ত্র গ্রুপের সদস্য বলে জানিয়েছে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদে প্রাথমিকভাবে তারা জানিয়েছে, মোটরসাইকেল ছিনতাইয়ের জন্য নয়, পাহাড়ে বাঙালিদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়ানোর জন্যই সশস্ত্র গ্রুপগুলো পরিকল্পিত এই হত্যার ঘটনাগুলো ঘটায়। শুধু তাই নয়, হত্যাকান্ড ও অগ্নিসংযোগের ঘটনার পর পাহাড়িদের অনেক পরিবারকেও লংগদুর কালা পাহাড়ে নিয়ে জিম্মি করে রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। একই সাথে জেএসএস ও ইউপিডিএফ ক্ষতিগ্রস্থ পাহাড়িদের নিজের বাড়িতে ফিরতে দিচ্ছে না। এমনকি তাদের সরকারী ত্রান বা সাহায্যও নিতে দেয়া হচ্ছে না। ঘটনার পর পরই সেনা বাহিনীর স্থানীয় ক্যাম্প থেকে ক্ষতিগ্রস্থ পাহাড়ি পরিবারগুলোকে খাবার সরবরাহ করা হলেও পরে তারা পাহাড়ি সশস্ত্র গ্রæপগুলোর ভয়ে আর খাবা নিতে আসছেন না বলে স্থানীয় পাহাড়িরা অভিযোগ করেছেন। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এখানকার ইতিহাসটা নির্মম নিষ্ঠুরতায় ভরা। বার বার রক্তপাত আর বাড়ি ঘরে অগ্নি সংযোগের ঘটনা ঘটেছে। এক অগ্নিসংযোগের শিখা না নিভতেই ঘটে আরেকটি অগ্নি সংযোগের ঘটনা। সম্প্রতি এমন একটি অরাজকতায় লংগদুতে পাহাড়ীদের ২১২ টি ঘর ছাই গেছে। ঘরবাড়ির বিপুল ক্ষয়ক্ষতি হলেও প্রাণহানী ঘটেনি। নিহত নয়ন পাহাড়ী বাঙালী সবার কাছেই ছিলেন অসম্ভব জনপ্রিয়। এটাই কি তার হত্যার মূল কারণ ? তাকে কি বলির পাঠা বানানো হয়েছে, না পাহাড়কে অশান্ত করার জন্য এই হত্যাকান্ড? অশান্তির আগুনে সেখানে পাহাড়ী বাঙালীরা দিনরাত পুড়ছে। দুই গোষ্ঠীর মধ্যে চলছে চরম দ্বন্ধ। কেউ কারো মুখ দেখছে না। কথা পর্যন্ত বলছেন না। বার বার এমন নিষ্ঠুরতার কারণে পাহাড়ের আগুন নিভছে না। বরং দিন দিন এই আগুনের শিখা বড় হচ্ছে। আর এর সুযোগ নিচ্ছে পাহাড়ে অবস্থানরত সশস্ত্রগ্রæপগুলো। আগুনের ঘটনায় পুলিশ ২১ জন বাঙালীকে আটক করেছে। বাঙালী কোন পুরুষ এখন এলাকা ছাড়া পুলিশের গ্রেফতারের ভয়ে। বাস্তব পরিস্থিতি খুবই জটিল হয়ে পড়েছে। গত ২ জুন লংগদুতে পাহাড়ি বাড়িঘরে আগুন দেয়ার পর থেকে সেখানে চরম উত্তেজনাকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে। পরিস্থিতি শান্ত রাখতে সেনাবাহিনী, বর্ডার গার্ড ও পুলিশ এলাকায় টহল দিচ্ছে। পুলিশ তিন গ্রামে তিনটি চৌকি বসিয়েছে। রাস্তায় সেনাবাহিনীর ও বর্ডার গার্ডের কয়েকজন সদস্যের সাথে কথা বলে জানা গেল, ওই দিনের পর এলাকায় শান্তি রক্ষায় তারা দিন রাত টহল দিয়ে যাচ্ছেন। যাতে আর কোন অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে। অনুসন্ধ্যানে জানা গেছে, পাহাড়ীদের রাজনীতি সুদুর প্রসারী। আর বাঙালীরা সেখানে নানা গ্রæপে বিভক্ত। পাহাড়ীদের মধ্যে প্রকাশে তিনটি গ্রæপ কাজ করলেও নিজেদের ইস্যুতে সবাই এক। কিন্তু বাঙালীরা নিজেদের ইস্যুতে এক থাকতে পারে না। জেএসএস, ইউপিডিএফ আর রিফরমিস্ট জেএসএস তিন গ্রæপই এখানে জম্মু ল্যান্ড গড়ার কাজটি করে যাচ্ছে। লেকের পানি নিরবে নিভৃত্তে বয়ে চলেছে আর কালো পাহাড় গুলো ঠায় দাঁড়িয়ে আছে নানা ঘটনার স্বাক্ষী হয়ে। বার বার এখানে দাঙ্গার নির্মম নিষ্ঠুর ঘটনা গুলো কাপ্তাই লেকও যেমন দেখে আসছে পাহাড়ও। জেএসএস লংগদুতে বহু বার রক্তের নদী বানিয়ে কাপ্তাই লেকের সঙ্গে মিলিয়ে দিয়েছে। পাশাপাশি বাঙালীরাও কম যায়নি। ১৯৯৬ সালে উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুর রশীদকে জেএসএস হত্যা করার পর যে দাঙ্গা হয়েছিল সেই দাঙ্গায় কয়েক জন পাহাড়ীরা আক্রান্ত হয়েছিল। শনিবার আমরা যখন লংগদু উপজেলার তিন টিলা, মানিক জোর ও বাইটা পাড়া এলাকা ঘুরে অসংখ্য পাহাড়ী বাঙালী নারী পুরুষের সঙ্গে কথা বলে নানা রকম ঘটনার বর্ণনা শুনেছি। বাঙালীরা অভিযোগ করলেন পাহাড়ীরা আগের দিনই তাদের ঘরবাড়িতে তালা লাগিয়ে আত্মীয় স্বজন ও বনবিহারে আশ্রয় নেয়। তাহলে কি তারা জানতো পরের দিন তাদের ঘরবাড়িতে আগুন দেয়া হবে। নাকি তারাই পরিকল্পিতভাবে ঘটনাটি ঘটিয়ে নিজেদের ফায়দা লুটেছে। আর এ ঘটনায় দীর্ঘমেয়াদি লাভবান হবে পাহাড়ীরাই। তাই জেএসএস‘র বুদ্ধি ও বলপ্রয়োগের কারনে পাহাড়ীরা ঘরে ফিরছেন না। লংগদু থানার কাছেই বাজারে কথা হয় ৭০ বছর বয়সী উদয় শংকর চাকমার সঙ্গে। তিনি তাঁদের হেডম্যান কুলিন বিহারীর চাচাতো ভাই। বললেন, আগুন জ্বলে ওঠার সময় আমরা ঘরে ছিলাম না। বাড়ির দেয়াল ছাড়া আর কিছু নেই। তাঁর দাবি, বাঙালিরাই আগুন দিয়েছে। নয়ন ডাকাতির শিকার। ডাকাতরা তাঁকে হত্যা করেছে। এর জন্য কেন আমাদের ঘরবাড়িতে আগুন দেয়া হলো? ধর্মদর্শী চাকমা জানান, তিনি স্থানীয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। তাঁর দুটি বাড়ি পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। কারা আগুন লাগিয়েছে তা তিনি চোখে দেখেননি। ওরা আসার আগে আগেই আমরা বাসা ছেড়ে চলে যাই। আমরা খবর পেয়েছিলাম, ‘হুন্ডাওয়ালারা’ অ্যাটাক করতে পারে। ধর্মদর্শী চাকমা আরো বলেন, নয়ন আমার কাছের লোক। তার সঙ্গে গ্রিন হিল আন্দোলন নিয়ে আমরা পথনাটক করেছি। স্থানীয় বাসিন্দা মোঃ কালু মিয়া বলেন, বাঙালীরা পাহাড়িদের বাড়িতে আগুন দিয়েছে টিক। কিন্তু নয়নের লাশ নিয়ে যখন বাঙালীরা জানাযার জন্য মাঠে সমবেত হচ্ছিল তখন পাহাড়িদের ঘরে কারা আগুন দিয়েছে। প্রশাসন এ বিষয়টি তদন্ত না করে নির্বিচারে বাঙালীদের হয়রানী করছে। লংগদু থানার সামনে কথা হয় ৩২ বছরের যুবক ছোটন দাসের সাথে। তিনি বলেন, বাঙালীরা পাহাড়ে বড় অসহায়। কিছু হলেই প্রশাসন থেকে শুরু করে সবাই বাঙালীদের বিরুদ্ধে নেমে পড়ে। নয়ন হত্যার সাথে জড়িত ও নেপথ্যে থেকে যারা নয়নকে খুন করিয়েছে তাদের কিছু হবে না। তাছাড়া নয়ন হত্যার পর এক যুবকর লাশ পাওয়া গেছে যার চোখ তুলে, জিব্বা কেটে ও মুখ আগুন দিয়ে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে। অজ্ঞাত ওই যুবকের পরিচয় উদ্ধার ও নির্মমভাবে খুনের সাথে জড়িতদের গ্রেফতারে প্রশাসনের তেমন কোন উদ্যোগ নেই বলে তিনি অভিযোগ করেন। স্থানীয় প্রশাসনের ধারণা, নয়ন হত্যা ও অগ্নিকান্ডের ঘটনায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাঙালি ও পাহাড়িদের মধ্যকার বিশ্বাস ও স¤প্রীতির। স্থানীয় প্রশাসনের কারো কারো বক্তব্য, লংগদুতে তিনটি এলাকায় আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটেছে। আগে থেকেই বাড়িঘর ছেড়ে চলে যাওয়ার পেছনে ১৯৮৯ সালের এক ভীতিকর স্মৃতিও কাজ করতে পারে বলে অনেকের ধারণা। ওই সময় পাহাড়ি সন্ত্রাসীদের হাতে খুন হন লংগদু উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুর রশীদ সরকার। তখন পাহাড়িদের বাসায় আগুন দেয়া হয়। পুড়ে যায় প্রায় ৪০০ বাড়িঘর। প্রায় ২৫ জন প্রাণ হারায়। লংগদু উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান মো. তোফাজ্জল হোসেন বলেন, ওই সময় বাঙালি ও পাহাড়িদের মধ্যে সম্পর্কের চরম অবনতি ঘটে। হতে পারে সেটা স্মরণ করেই এবার আগে থেকেই বাড়িঘর ছেড়ে যায় ওরা। এ ছাড়া নয়ন ছিল এলাকায় জনপ্রিয়। তাকে হত্যায় পাহাড়ি সন্ত্রাসীদের হাত রয়েছে বলেই ধারণা করা হচ্ছিল। পরিস্থিতি জটিল করে তোলার জন্য ওই সন্ত্রাসীরা ওদের মধ্যে আগে থেকেই আতঙ্ক ছড়িয়ে ঘরবাড়ি ছেড়ে সরে থাকতে প্ররোচিত করে থাকতে পারে। লংগদু থানায় কথা হয় রাঙামাটির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাফিউল সরওয়ারের সঙ্গে। আগুন দেয়ার ঘটনায় বাঙালিদের গণহারে গ্রেফতারের অভিযোগ সম্পর্কে তিনি বলেন, এ ঘটনায় ২১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং এরা সবাই বাঙালি। ঘটনার সঙ্গে প্রচুর লোকজনের জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। সে ক্ষেত্রে গ্রেফতারের সংখ্যা বাড়তে পারে। যারা দোষী তাদের কাউকেই ছাড় দেয়া হবে না। তবে নিরীহ লোকজনকে যাতে হয়রানির শিকার হতে না হয় সে দিকে লক্ষ রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে শাফিউল সরওয়ার বলেন, আগুন লাগানো হতে পারে এমন আশঙ্কার কথা জানিয়ে কেউ থানায় লিখিত অভিযোগ করেছিল বলে আমার জানা নেই। তবে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি যাতে না ঘটে তার জন্য পুলিশের পক্ষ থেকে স্থানীয় পাহাড়ি ও বাঙালি নেতাদের ব্রিফ করা হয়েছিল। ঘটনার পর বাঙালি পরিবারগুলো পুরুষ শূন্য। এ অবস্থা সম্পর্কে তিনি বলেন, হয়তো গ্রেফতারের ভয়েই তারা বাড়ি ছেড়েছে।
নয়নের স্ত্রী জাহানারা বেগমের সঙ্গে তার বাড়িতেই কথা হলো। তিনি বলনে, আমার স্বামীকে যারা হত্যা করেছে তাদের দুই জনের কথা আমি পুলিশকে জানিয়েছি। তারা হলো দিপালো চাকমা ও ইমন চাকমা। দিপালো চাকমা জেএসএস’র চাাঁদা আদায়কারী। আর ইমন চাকমা জেএসএস নেতা। তারা এক জুন আমার স্বামীকে বাড়িতে এসে বলে ওমুক জায়গায় যাবো। তুমি মটর সাইকেল ভাড়া যাবে তো। তাতে সে রাজি হয়ে যায়। সেই যে সকালে সে বের হয়ে যায়। আর বাড়িতে ফেরেনি। আমরা ফেসবুকের মাধ্যমে তার হত্যার খবর পেয়েছি। আমার স্বামী যেভাবে তারা হত্যা করেছে তারাও যেন শান্তি পায়। পুলিশের কাছে এই দুই জনের কথা বললেও পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে এখনও কোন ব্যবস্থা নেয়নি। উল্ট্ োবাঙালী পাড়ায় পুলিশি অভিযান চালানো হচ্ছে। বাঙালী পাড়ায় পুলিশের ভয়ে কোন পুরুষ নেই। দুই মেয়ে ও এক ছেলে। বড় মেয়েকে বিয়ে দিয়েছে। ছেলে জাহিদ হাসান রাবেতা স্কুলে ৯ম শ্রেণীতে পড়ে। চার বছরের ছোট মেয়ে নীপা বাবার জন্য শুধু কান্না করে। অল্পদিন আগে দাদা মারা গেছেন। দাদার কবরের পাশেই বাবা নয়নের কবর। প্রতিদিন সে কবরের পাশে বসে বসে কাদে। জাহানারা বলেন, পরিবারে একমাত্র উপার্জন করতেন তার স্বামী। তাকে হারিয়ে এখন তারা দিশেহারা। তিনি অভিযোগ করেন, এই এলাকায় প্রদীপন খিসা জেএসএস’র বড় নেতা। তার হুকুমেই সব কিছু এখানে ঘটে। দিপালো ও ইমন তারা প্রদীপনের নির্দেশেই আমার স্বামীকে হত্যার পরিকল্পনা করে। সরকারী সহযোগীতা পেয়েছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আর্মির পক্ষ থেকে ২০ হাজার টাকা, স্বাস্থ্যমন্ত্রী দিয়েছে ২৫ হাজার টাকা। আত্মীয় স্বজনরাও কিছু কিছু সাহায্য করেছে। কিন্ত আমার এই সাহায্যের কোন প্রয়োজন নেই। যেখানে স্বামী নাই। সেই তো আমার সবচেয়ে বড় সাহয্যের জায়গা ছিল।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ