স্টাফ রিপোর্টার : সুনির্দিষ্ট নীতিমালার অভাব ও আইনের যথাযথ প্রয়োগের ঘাটতির পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষের একাংশের দায়িত্বে অবহেলা ও যোগসাজশের আড়ালে স্বর্ণ ব্যবসা খাতে দীর্ঘদিনের বিকশিত দুর্নীতি, জালিয়াতি ও চোরাকারবারি-নির্ভরতার দায় সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী ও সরকারকেই নিতে হবে বলে মন্তব্য করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। একইসঙ্গে বাজেট বক্তৃতায় ঘোষিত স্বর্ণ খাতের জন্য নতুন নীতিমালা প্রণয়ণের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতের ওপর প্রাধান্য দিয়ে অনতিবিলম্বে সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের সম্পৃক্ত করে যুগোপযোগী নীতি কাঠামো প্রস্তুত ও বাস্তবায়নে কার্যকর প্রদক্ষেপ গ্রহণ করতে সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছে টিআইবি‘র। গতকাল শুক্রবার এক বিবৃতিতে টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, দীর্ঘকাল উপেক্ষিত রাখা হলেও শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত  অধিদপ্তর কর্তৃক পরিচালিত চলমান অভিযান সকল প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে যেমন সমভাবে সম্পূর্ণ আইনী প্রক্রিয়ায় কোনো প্রকার ভয় বা করুনার বশবর্তী না হয়ে প্রযোজ্য হতে হবে, তেমনি সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী সংগঠন ও অন্য কোন মহল কর্তৃক এক্ষেত্রে কোন প্রকার বিধিবহির্ভূত বাধা প্রদান সৃষ্টি করা অযৌক্তিক, অনৈতিক ও বেআইনী।
এধরনের তৎপরতায় লিপ্ত হওয়া প্রকারান্তরে দুর্নীতির সহায়কের ভূমিকা পালনের নামান্তর। আমরা আশা করবো উক্ত অধিদপ্তর তাদের অভিযানে সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের যেমন পূর্ণাঙ্গ সহযোগিতা পাবে তেমনি জুয়েলার্স সমিতিও আইনের প্রয়োগে কোন প্রকার প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা থেকে বিরত থাকবে। অন্যদিকে এ যাবতীয় অন্যান্য ব্যবসা খাতেও একই ধরনের আইন বহির্ভূতভাবে ব্যবসা পরিচালিত হচ্ছে  কি না তাও খতিয়ে দেখতে হবে।
পরিপূর্ণ, যুগোপযোগী ও বিশেষ করে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতে পর্যাপ্ত বিধানসহ একটি কার্যকর স্বর্ণ আমদানী ও ব্যবসা নীতিমালা প্রণীত ও প্রয়োগ হলে জুয়েলারি ব্যবসাকে আরো বিকাশমান ও টেকসই উন্নয়নে সহায়ক শিল্পে উন্নতিকরণ সম্ভব মন্তব্য করে টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক বলেন, সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে স্বচ্ছ বিধান ও আইনের অভাবে এক  শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী অনৈতিক পন্থায় র্দুর্নীতি, চোরাকারবারি ও অর্থপাচার নির্ভর  স্বর্ণ ব্যবসা পরিচালনা করে আসছেন অথচ বছরের পর বছর কর্তৃপক্ষের এ ব্যাপারে উল্লেখযোগ্য  কোনো পদক্ষেপ পরিলক্ষিত না হওয়া যেমন রহস্যজনক তেমনি জাতীয় অর্থনীতির জন্য ভয়াবহ ক্ষতিকারক।  সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের যেসব কর্মকর্তা এধরনের অবহেলা ও যোগসাজশের সাথে জড়িত, যথাযথ আইনী প্রক্রিয়ায় তাদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। জুয়েলারি ব্যবসায় সুশাসন নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের আন্তরিক সহযোগিতা ও সদিচ্ছার কোনো বিকল্প নেই উল্লেখ করে সরকার ও  জুয়েলার্স সমিতি কর্তৃক একদিকে আইনের যথাযথ প্রয়োগ সহায়ক ভূমিকা পালন ও অন্যদিকে  পারস্পরিক আলোচনার মাধ্যমে স্বর্ণ আমদানী ও ব্যবসা নীতিমালা প্রণয়নে দ্রæত পদক্ষেপ গ্রহণের আহŸান জানায় টিআইবি।