পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
প্রস্তাবিত বাজেটে বিব্রত মন্ত্রী এমপি’রা
হাসান সোহেল : চিরাচরিত চিত্রের ব্যতিক্রম বটে। বাজেট মানে ক্ষমতাসীন দলের মন্ত্রী এমপিদের স্তুতি; বিরোধী দলের এমপি ও নেতানেত্রীদের বিরোধিতা। দুই শিবিরের রাজনৈতিক দলগুলো বাজেট ঘোষণা পর বাজেট না পড়েই মিছিলের জন্য ‘পক্ষে’ ‘বিপক্ষে’ ব্যানার তৈরি করে রাখে। এবার শুধু বিরোধী পক্ষ্যই নয় ক্ষমতাসীন দলের মন্ত্রী-এমপি এবং নেতানেত্রীরাও প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে তুলোধূনো করছেন অর্থমন্ত্রীকে। বাজেট আলোচনায় ক্ষমতাসীন দলের মন্ত্রী-এমপিরা বাজেটের সুবিধা এবং ইতিবাচক দিকগুলো তুলে ধরে জনগণের বাহবা নিতেন। অর্থমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানাতেন কারণে অকারণেই। কিন্তু সংসদে এবার ঘটেছে নজিরবিহীন ঘটনা। একজন এমপিও বাজেটকে সু-বাজেট বলেননি। বরং প্রস্তাবিত বাজেটে ভ্যাট, আবগারি কর নিয়ে চরম অসন্তোষ প্রকাশ করে বক্তৃতা দিচ্ছেন। মূলত জাতীয় সংসদে গৃহপালিত বিরোধী দল সরকারের ‘তল্পীবাহকের দায়িত্ব পালন’ করলেও ক্ষমতাসীন দলের মন্ত্রী এমপিদের তোপের মুখে পড়েন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।
বাজেটে অনেক ইতিবাচক দিক থকলেও ভ্যাট ও আবগারি শুল্ক নিয়ে সবার মধ্যে অসন্তোষের কারণে তা চাপা পড়ে গেছে। অর্থমন্ত্রী ২০১৭-১৮ অর্থবছরের যে বাজেট পেশ করেছেন তাতে খুশি নয় কেউই। অর্থমন্ত্রীর প্রতি সকলেই ক্ষোভ ও হতাশা ব্যক্ত করেছেন। সাধারণ নাগরিক থেকে শুরু করে সব শ্রেণি-পেশার মানুষ, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, ব্যবসায়ীদের সর্বোচ্চ সংগঠন এফবিসিসিআই, পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ), বিভিন্ন চেম্বার, রিয়েল এস্টেট এন্ড হাউজিং এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (রিহ্যাব)- প্রত্যেকেই বাজেট সম্পর্কে হতাশা প্রকাশ করেছে। ছাড় পাননি রাজনীতিবিদ থেকে শুরু করে অর্থনীতিবিদদের কাছ থেকেও। এমনকি বাজেট উপস্থাপনের পর থেকে এই ইস্যুতে সংসদ সরগরম হয়ে আছে। নিজ দলীয় এবং বিরোধী দলের নেতারাও অর্থমন্ত্রীর প্রতি বিশদাগার করেছেন। অর্থমন্ত্রীর কঠোর সমালোচনা করে তারা বলেছেন, আগে ব্যাংকে গচ্ছিত অর্থ থেকে প্রাপ্ত সুদ থেকে আবগারি কর কাটা হতো, এবারের বাজেটে জনগণের সেই গচ্ছিত আসল টাকাতেই হাত দেয়া হয়েছে। এতে সরকারের শুধু ইমেজই ক্ষুণœ হয়নি, ভোট ব্যাংকেও আঘাত হানবে। যার প্রভাব পড়তে পারে আগামী নির্বাচনে। ইতোমধ্যে ব্যাংক হিসেবে আবগারি শুল্ক বাড়ানোর অর্থমন্ত্রীর এ ধরণের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দল। এছাড়া সারচার্জসহ জনমনে বিরূপ প্রতিক্রিয়া ফেলে এমন অংশটুকু প্রত্যাহার করতে অর্থমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন দলের নেতৃবৃন্দ।
অর্থমন্ত্রী এমন এক সময় বাজেট ঘোষণা করলেন, যখন গ্যাসের দাম বেড়ে সর্বোচ্চ ৯৫০ টাকা হয়ে গেছে। বাজেটেও ঘোষণা দিয়েছেন ইউনিটপ্রতি গ্যাসের দাম আরো বাড়বে। বিদ্যুতের দামও বাড়বে। মোটা চালের দাম কেজিপ্রতি ৫০ টাকা অতিক্রম করেছে। দেশের খাদ্য নিরাপত্তা সংকটজনক অবস্থায়। চালের মজুদ সর্বকালের সর্বনিম্ন অবস্থায় রয়েছে। এমন এক পরিস্থিতিতেই সাধারণ মানুষের উপর করের বোঝা চাপানো হয়েছে। যদিও ইতোমধ্যে ব্যবসায়ীদের সাথে ব্যাংক আমানতে আবগারি শুল্ক না বাড়ানোর ইঙ্গিত দিয়েছেন অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এমএ মান্নান। তিনি বলেছেন, ব্যাংকের আবগারি শুল্ক বাড়ানোর বিষয়ে যে হারে সমালোচনা হচ্ছে তাতে সরকার প্রস্তাবিত আবগারি শুল্ক থেকে পেছনে ফিরবে।
এদিকে সাবেক প্রেসিডেন্ট ও বিকল্প ধারা বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট প্রফেসর এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী ওয়াদা ভাঙার জন্য অর্থমন্ত্রীকে অভিযুক্ত করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। বদররুদ্দোজা চৌধুরী বলেন, ‘অর্থমন্ত্রী এবারের জাতীয় বাজেটে ভ্যাট কমানো এবং ন্যূনতম আয়কর সীমা বাড়ানোর ওয়াদা করেছিলেন। কিন্তু অর্থমন্ত্রী কি করে তার এই দুইটি ওয়াদা ভঙ্গ করলেন, এ জন্য তাকে ভাবতে হবে। অজ্ঞাতসারে অর্থমন্ত্রী আওয়ামী লীগ এবং এই সরকারের বড় ক্ষতি করে ফেললেন কি না তাও প্রধানমন্ত্রীকে ভাবতে হবে এবং হস্তক্ষেপ করতে হবে।’ জাতীয় বাজেট নিয়ে গণমাধ্যমে দেওয়া এক বিবৃতিতে তিনি এ কথা বলেন। সাবেক এই প্রেসিডেন্ট বলেন, এই বাজেট জনগণের মধ্যে বহুল প্রচার হলে একদিকে জনগণ এবং অন্যদিকে সরকারের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এতো সমালোচনার পরও নিজের অবস্থানে অনঢ় অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। গতকাল এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেছেন, ব্যাংক আমানতের ওপর আরোপিত আবগারি শুল্ক প্রত্যাহারের পরিকল্পনা তাঁর নেই। একই সঙ্গে ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনারও কোন সুযোগ নেই।
এছাড়া সরকারের বাইরের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলসহ অর্থনীতিবিদদের সার্বিক যে প্রতিক্রিয়া তাতে বাজেটের নেতিবাচক দিকই সবচেয়ে বেশি ফুটে উঠেছে। সংসদের বাইরের বড় রাজনৈতিক দল বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া এবারের বাজেটকে বলেছেন, ‘লুটপাটের বাজেট। নিজেদের পকেট ভারি করতেই এ বাজেট’। বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেছেন, এ বাজেট গরিব মারার ‘সর্বশ্রেষ্ঠ’ বাজেট। ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই বলেছে, ১৫ শতাংশ ভ্যাট হারের কারণে মূল্যস্ফীতি বাড়বে। বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, বাজেটে জীবনযাত্রার ব্যয় এবং মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধি পাবে। অর্থনীতিবিদ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর আবু আহমেদ বলেছেন বাজেটে বিনিয়োগবান্ধব তেমন কিছু নেই। সব মিলিয়ে এবারের বাজেটের নেতিবাচক দিকটিই বেশি সামনে এসেছে। অর্থাৎ বাজেট নিয়ে সরকারি মহল ছাড়া অন্যদের কেউ-ই খুব বেশি খুশি ও আশাবাদী হতে পারছে না।
জানা গেছে, আগে ব্যাংকে আমানত রাখলে ১২ থেকে ১৪ শতাংশ হারে সুদ আয় পেতো গ্রাহক। সেই সুদ আয় থেকে আবগারি শুল্ক কেটে নেওয়া হতো। এখন আমানতে সুদ হার নেমে এসেছে ৫ শতাংশেরও নিচে। এমন অবস্থায় অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত ব্যাংক খাতের আমানতের ওপর শুল্ক হার বৃদ্ধির প্রস্তাব করেছেন। যে কারণে দেশজুড়ে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছেন। শুধু যে সমালোচনা হচ্ছে এমনটিই নয়, আমানতের সুদের হার কমে যাওয়ায় সীমিত আয়ের মানুষ শঙ্কার মধ্যে পড়েছেন। আমানতকারীদের একটি অংশ আতঙ্কে ব্যাংক থেকে টাকা তুলে নেওয়ার কথা ভাবছেন।
অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন, নতুন আইনে ১৫ শতাংশ ভ্যাট বহাল থাকলে একদিকে জিনিসপত্রের দাম বাড়বে, অন্যদিকে ব্যাংক হিসাবের লেনদেনের ওপর আবগারি শুল্ক প্রায় দ্বিগুণ করায় ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা এক ধরনের আতঙ্কে রয়েছেন। এর ফলে মানুষ ব্যাংকে টাকা রাখতে নিরুৎসাহিত হবেন।
অর্থশাস্ত্রের পরিভাষায়, আবগারি শুল্ক হচ্ছে ‘পাপ কর’। তাই পুরো বাজেট নিয়ে মানুষের মধ্যে তেমন কোন মতামত না থাকলেও ব্যাংকে গচ্ছিত টাকায় ‘পাপ কর’ নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছে সাধারণ মানুষ। তাদের মতে, এতে ব্যাংকিং সেবা সংকুচিত হবে। সরকারের আবগারি শুল্ক আরোপের প্রস্তাবে প্রায় এক কোটি আমানতকারী আতঙ্কে রয়েছেন। প্রস্তাবিত বাজেটে আগামী অর্থবছর থেকে দেশের যে কোনো ব্যাংকে টাকা জমা রাখার ক্ষেত্রে সরকারকে দেওয়া করের পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে। আগে যে কোনো অ্যাকাউন্টে এক লাখ টাকা জমা করলে বা তুললে সরকারকে আবগারি শুল্ক হিসেবে বছরে ৫০০ টাকা দেওয়া লাগত। সেই টাকার পরিমাণ বেড়ে এখন হচ্ছে ৮০০ টাকা।
ব্যাংক কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ব্যাংকে এক লাখ থেকে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত আবগারি শুল্ক (এক্সাইজ ডিউটি) যদি আটশ টাকা কেটে রাখা হয়, তাহলে আমানতকারী কোনও লাভই পাবেন না। আর সরকারি ব্যাংকে কেউ এক লাখ টাকা তিন মাস মেয়াদে এফডিআর করলে, মেয়াদ শেষে লাভের বদলে নিজের আসল টাকা থেকেই কম পাবেন গ্রাহক। তাই ব্যাংকের প্রতি গ্রাহকের আগ্রহ কমে যাবে।
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবির) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেছেন, ব্যাংক আমানতে অতিরিক্ত আবগারি শুল্ক আরোপে অর্থনীতির উপর ‘কালো টাকার প্রভাব’ বাড়ার পাশাপাশি ‘ঋণ খেলাপিদের’ সুরক্ষার ব্যবস্থা করা হবে।
ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স, বাংলাদেশের (এবিবি) সাবেক চেয়ারম্যান ও মেঘনা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নুরুল আমিন বলেন, আবগারি শুল্ক বাড়ানোর প্রস্তাবে আমানতকারীরা নিরুৎসাহিত হবেন। তিনি বলেন, ব্যাংক সুদের হার এখন অনেক কম। এর ওপর এমনিতেই মূল্যস্ফীতি, উৎসে কর, মেইনট্যানেন্স চার্জ মিলিয়ে যা কেটে রাখা হয়, আমানতকারীর লাভ বলতে আর কিছুই থাকবে না।
ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন বলেছেন, ১৫ শতাংশ ভ্যাট হারের কারণে মূল্যস্ফীতি বাড়বে। একই সঙ্গে ব্যাংক আমানতের উপর আবগারি শুল্ক বাড়ানোয় আমানতকারী আমানত রাখতে নিরুৎসাহিত হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ বলেন, এই ইস্যুতে সারা দেশে সমালোচনা হবে এটাই স্বাভাবিক। কারণ, আগে আমানতে সুদের হার ছিল বেশি। তখন সুদের অংশ থেকে কিছু টাকা কাটা গেলেও বা বছর শেষে গ্রাহককে লাভের সামান্য কিছু কম দিলেও কেউ উচ্চবাচ্য করতো না। কিন্তু এখন সুদের হার কম, এই অবস্থায় টাকা কাটা হলে আসল টাকাই কমে যাবে। তিনি বলেন, কর পরিশোধ করার পর আবার সেই টাকার ওপর আবগারি শুল্কের নামে জোর করে টাকা কেটে নেওয়া সংবিধান পরিপন্থী। এটা অবশ্যই বেআইনি বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, এমনিতেই আমানতকারীরা সুদের হার কম পাচ্ছেন। এর সঙ্গে ১০ থেকে ১৫ শতাংশ উৎসে কর কেটে রাখাও হচ্ছে। তার ওপর আবার শুল্ক আরোপ করা হলে আমানতকারীরা শঙ্কায় থাকবেন, এটাই স্বাভাবিক। শুধু ব্যাংকে টাকা রাখবে-কেবল সেই কারণেই সরকার টাকা কেটে নেবে, এটা মেনে নেওয়া কঠিন।
এদিকে ব্যাংকের আমানতের ওপর আবগারী শুল্ক আরোপের বিরুদ্ধে সরকার ও বিরোধী দলের সংসদ সদস্যরা কঠোর সমালোচনা করেই চলেছেন। গতকালও সংসদে জাতীয় পার্টির সংরক্ষিত আসনের এমপি খোরশেদ আরা হক অর্থমন্ত্রীর সমালোচনা করে বলেছেন, “অর্থমন্ত্রী কথা বোঝেও না, বুঝতেও চান না। উনি না বুইঝাই বাজেট করছেন। গরীবের সঞ্চয় থেকে যদি আবগারি কাটেন, তবে ক্যামনে চলবে? এটা আমরা মানি না। বাজেট শুভঙ্করের ফাঁকি। মহিলারা সঞ্চয় করে। তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা কেটে নেবে। কেউ শান্তিতে নেই।”
এর আগে জাতীয় পার্টির এমপি ফখরুল ইমাম বলেন, ব্যাংক গ্রাহকদের আমানতের ওপর আবগারি ট্যাক্স আরোপে জনগণ আতঙ্কিত। তবে কী মানুষ ব্যাংকে টাকা না রেখে বালিশের নিচে, মাটির নিচে রাখবে? আর ১২ বছরে এক লাখ কোটি টাকার গরমিল হয়েছে। ৩০ জুনের মধ্যে অর্থমন্ত্রী কীভাবে ম্যানেজ করবেন জানি না।
সরকারি দলের এমপি সোহরাব উদ্দিন ব্যাংকের আমানতের ওপর আবগারী শুল্ক আরোপের বিষয়ে বলেন, এর সঙ্গে প্রান্তিক মানুষ জড়িত। আমি মনে করি না প্রধানমন্ত্রী এতে সমর্থন দেবেন। জাতীয় পার্টির এমপি কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, জনগণের ট্যাক্সের টাকা যেন তেনভাবে খরচ করা হচ্ছে। অর্থমন্ত্রী দেশের সব মানুষকে পুতুল মনে করেন। যেন জনগণ বাকরুদ্ধ হয়ে গেছে। এক লাখ কোটি টাকা বিদেশে ইতোমধ্যে পাচার হয়ে গেছে। তিনি বলেন, ব্যাংকে আবগারি শুল্ক আরোপের নামে বর্তমান সরকারের ভোট বিপুল পরিমাণ নষ্ট হয়ে গেছে। ক্ষমতার কালো চশমা পড়ে তারা তা দেখতে পাচ্ছে না। ব্যাংকগুলো অবাধ লুটপাটের জায়গায় পরিণত হয়েছে। লুটেরাদের বিচার না করে ব্যাংকগুলোকে বাঁচাতে জনগণের ওপর ট্যাক্স-ভ্যাট বসানো হচ্ছে। সব কালো টাকা বিদেশে পাচার হয়ে যাচ্ছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
জাতীয় পার্টির আরেক এমপি নুরুল ইসলাম ওমর ব্যাংক আমানতের ওপর আরোপিত আবগারি শুল্ক আরোপের কঠোর সমালোচনা করে বলেন, ব্যাংকে টাকা রাখা নিয়ে দেশের জনগণের মধ্যে তীব্র আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। যেভাবে বিষয়টি প্রচার হয়েছে তাতে আবগারী শুল্ক প্রত্যাহার করে নিলেও সরকারের যে ইমেজ ক্ষুণœ হয়েছে তা পূরণ হবে না। তিনি বলেন, “অর্থমন্ত্রী বলেছেন পৃথিবীর সব দেশে নাকি ব্যাংকে চুরির ঘটনা ঘটে। কিন্তু বাংলাদেশের মতো কোথাও এভাবে সাগর চুরির ঘটনা ঘটে না।”
অবশ্য ব্যাংক আমানতে করধার্য প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী বলেছেন, এটি নতুন কোন কর নয়। বহু বছর ধরেই মানুষ এই কর দিয়ে যাচ্ছে। এবারের বাজেটে আমি শুধু করের হার একটু বাড়িয়েছি। তিনি বলেছেন, সম্পদশালীদের কাছ থেকে কর আদায়ের জন্য ব্যাংক হিসাবে আবগারি শুল্ক বাড়ানো হয়েছে। এমনকি ব্যাংকে যাদের লাখ টাকা রয়েছে তাদেরকে তিনি সম্পদশালী বলেও উল্লেখ করেছেন। এদিকে গতকালও এক অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী বলেছেন, ব্যাংক আমানতের ওপর আরোপিত আবগারি শুল্ক প্রত্যাহারের পরিকল্পনা তাঁর নেই। তবে এ ব্যাপারে সংসদে আলোচনা হবে। সংসদই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে। আবুল মাল আবদুল মুহিত জানান, এক লাখের নিচে ব্যাংকে টাকা রাখলে কোনো শুল্ক দিতে হবে না। আগে বিশ হাজার টাকা রাখলেই শুল্ক দিতে হতো। ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার জন্য ব্যবসায়ীরা দাবি জানালেও এর কোনো সুযোগ নেই। অর্থমন্ত্রী বলেন, ভ্যাট আইনটি ২০১২ সাল থেকে ঝুলে আছে। তাদের দাবিতে বারবার পেছানো হচ্ছে। আর পেছানোর কোনো সুযোগ নেই।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।