পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
নাছিম উল আলম : সঞ্চয়পত্রের আমানতের ওপর মুনফা হৃাসে অর্থমন্ত্রীর ঘোষনায় মারাত্মক বিরূপ প্রভাব লক্ষ করা গেছে দক্ষিনাঞ্চলের মানুষের মধ্যে। যেকোন সময় মুনফা হ্রাসের ঘোষনা কার্যকরের আশংকায় গত কয়েকদিন ধরে বরিশাল সহ দক্ষিনাঞ্চলে সঞ্চয়পত্রের বিক্রীও বেড়ে গেছে। তবে বরিশালে কোন বেসরকারী ব্যাংকই সঞ্চয়পত্র বিক্রী করছে না। বেসরকারী শরিয়াভিত্তিক ব্যাংকগুলোও সুদ থেকে দুরে থাকতে কোনদিনই সঞ্চয়পত্র বিক্রী করছেনা। এ অবস্থায় স্থানীয় সঞ্চয় ব্যুরো ও বাংলাদেশ ব্যাংকে সঞ্চয়পত্র কেনার লোকের ভীড় বেড়ে গেছে। সরকারী-বেসরকারী ব্যংকগুলোতে সঞ্চয়পত্র বিক্রীর বাধ্যবাধকতা থাকার পরেও বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে সময়মত সঞ্চয়পত্রের ইনস্ট্রুমেন্ট সহ মুনফার অর্থ না দেয়ার কথা বলে তা বিক্রী এড়িয়ে যাচ্ছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। এসব ব্যাপারে বাংলাদেশ ব্যাংকের বরিশাল অফিসের সুষ্ঠু নজরদারী ও তদারকীতে যথেষ্ঠ অবহেলারও অভিযোগ রয়েছে।
ব্যাংক হিসেবে উৎস কর ও আবগারী করের পরে নিম্নবিত্ত ও নিম্ন-মধ্যবিত্তের নিরাপদ আমানতে এ সঞাচয়পত্রের ওপর সরকারের খরগহস্ত স¤প্রসারনে শাসক দলের অন্ধ সমর্থক থেকে নেতা-কর্মীরাও খুশি নন। অনেকের সাথে আলাপে বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে গেছে। সকলেই ‘অর্থমন্ত্রীর এযাবতকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাজেট’এর পরে ‘সঞ্চয়পত্রের মুনফা হ্রাস করে গরীব ও মধ্যবিত্তের মুখের গ্রাস কেড়ে নেয়া হচ্ছে’ বলেও মন্তব্য করেছেন। এদের অনেকেই এ পদক্ষেপকে ‘হাতে গোনা মুষ্টিমেয় কিছু ব্যাংক মালিকের স্বার্থে রমজান মাসে কোটি কোটি মানুষের রিজিকের ওপর হস্তক্ষেপ’ বলেও মন্ত্রব্য করেছেন। দক্ষিনাঞ্চলের কোনো কোনো চেম্বার নেতাও সঞ্চয়পত্রের মুনফার হার হ্রাসের পদক্ষেপকে ‘গরীব মারার পদক্ষেপ’বলেও মন্তব্য করছেন।
বর্তমান অর্থমন্ত্রী সাবেক মহাজোট সরকারের সময় একবার সঞ্চয়পত্রের মুনফা হ্রাসের ফলে সাধারন মানষ চরম দূর্ভোগে পরেছিল। ফলে সঝঞ্চয়পত্রের বিক্রী ঋনাত্মক পর্যায়ে নেমে যাবার মুখে তা যথেষ্ঠ বৃদ্ধিও করা হয়। কিন্তু সরকারিÑবেসরকারি ব্যাংকগুলো সঞ্চয়ী হিসাব সহ স্থায়ী আমানতের ওপর সুদের হার হ্রাস করায় ২০১৫সালে সরকার সঞ্চয়পত্রের সবগুলো স্কিমের ওপরই গড়ে শতকরা দুই থেকে আড়াইভাগ পর্যন্ত মুনাফা হ্রাস করে। এরপরেও ব্যাংকের সাথে মুনাফার হারে বড় ফাড়াক থাকায় সরকারের ভেতরে ও বাইরের চাপে পুনরায় সঞ্চয়পত্রের মুনফা হ্রাসের সিদ্ধান্ত নেয়া হচ্ছে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে ।
অথচ বেসরকারী ব্যাংকগুলো গ্রাহকদের আমানতের ওপর যে সুদ দিচ্ছে ঋনের ওপর তার দ্বিগুনেরও বেশী সুদ আদায় করছে বলে অভিযোগ রয়েছে। যা কোন অবস্থাতেই বাংলাদেশ ব্যাংকের বিধি বিধানের আওতায় পরেনা। বানিজ্যিক ব্যাংকগুলো সরকারী নীতিমালা লঙ্ঘন করে চললেও তা দেখার কেউ নেই। উপরন্তু এখন বানিজ্যিক ব্যাংকগুলোর স্বার্থেই গরিবের মুখের গ্রাস কেড়ে নিয়ে সঞ্চয়পত্রের মুনাফার হার হ্রাস করা হচ্ছে বলে ক্ষুদ্ধ দক্ষিনাঞ্চলের সাধারন মানুষ। গতকাল বরিশালের ব্যাংক পাড়ায় সাধারন গৃহীনী থেকে শুরু করে নিম্নবিত্ত ও নিম্ন-মধ্যবিত্তের সকলের সাথে আলাপ করেই অর্থমন্ত্রীর ঘোষনার ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেছে।
বিষয়টি নিয়ে বিরোধী দলের পক্ষ থেকেও বিরূপ মন্তব্য পাওয়া গেছে। ‘অর্থমন্ত্রী কোন দিন জনগনের জন্য রাজনীতি করেন নি, ছিলেন আমলা ও সামরিক সরকারের আজ্ঞাবহ’। ‘জনগনের জন্য, জনগনের দ্বারা রাজনীতি করলে এ ধরনের কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারতেন না বলেও মন্তব্য করেছেন বিএনপি’র কেন্দীয় যুগ্ম মহাসচিব মুজিবুর রহমান সারোয়ার। তিনি বলেন, সঞ্চয়পত্র থেকে জনগনের মুখ ফিরিয়ে সরকার আবার তাদের শেয়ার মাকের্টে নিতে চাচ্ছেন। এর ফলে শেয়ার মার্কেটে যে আবার অতীতের কালো থাবা পড়বে না, তার নিশ্চয়তা কে দেবে বলেও প্রশ্ন করেন তিনি। বরিশাল চেম্বারের সাবেক সভাপতি এবাদুল হক চান সঞ্চয়পত্রের মুনফার হার হ্রাস করার পদক্ষেপকে আমজনতার জন্য অত্যন্ত নির্মম পদক্ষেপ বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি সরকারকে জনগনের জন্য মঙ্গলজনক কিছু করার আহবান জানান।
সরকারী সঞ্চয় অধিদফ্তরের বিভিন্ন স্কিমে সঞ্চিত অর্থ জমা রেখে দেশের নিম্ন বিত্ত থেকে মধ্যবিত্ত পরিবারগুলো আর্থিকভাবে কিছুটা সুবিধা লাভ করলেও এখন তার মুনাফার হার হ্রাসের ফলে জনতার ওপর বড় ধরনের একটি ধাক্কা আসতে যাচ্ছে বলে মনে করেন অর্থনৈতিক পর্যবেক্ষকগন। তাদের মতে, সঞ্চয়পত্র থেকে সরকার শুধু ঋন নিয়ে বাজেটে সমতা আনছেন না, এ খাত থেকে বিপুল পরিমান উৎস কর থেকেও রাজস্ব আহরন করছেন। ফলে এসব বিষয়কে ইতিবাচক দৃষ্টি দিয়ে দেখারও আহবান জানিয়েছেন ঐসব অর্থনীতিবীদগন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।