পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ধর্মনিরপেক্ষতা মানে ধর্মকে অস্বীকার করা নয়। শূকরের মাংস, মদ ও গাঁজা খেয়ে ধর্মনিরপেক্ষতার কথা যারা বলেন, তারা পারভারটেড।’ ‘আমি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। হেফাজত কিংবা অন্য যেকোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আদর্শে ভিন্নতা ও মতবিরোধ থাকলেও সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রেখে দেশের সামগ্রিক উন্নয়নের স্বার্থে প্রধানমন্ত্রী (দেশের অভিভাবক) হিসেবে যা ভালো মনে করেছি তাই করেছি।
গত রোববার রাজধানীতে জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে) আয়োজিত ইফতার অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগদান শেষে প্রেসক্লাবের ভিআইপি মিলনায়তনে দুই সংগঠনের নেতা ও সিনিয়র সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে প্রধানমন্ত্রী আলোচিত দুটি ইস্যুতে হেফাজত বিষয়ে নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করেন।
তিনি বলেন, কওমি মাদরাসায় লাখ লাখ শিক্ষার্থী পড়াশুনা করছে। এতদিন তাদের শিক্ষাকে স্বীকৃতি দেয়া হয়নি। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে এত বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থীর কথা চিন্তা না করে আমি থাকতে পারি না। তাই তাদের কাছে ডেকে কথা বলেছি, ছয়টি শিক্ষাবোর্ড গঠন করে দিয়েছি। দেশকে শতভাগ শিক্ষিত করতে হলে তাদের বাদ দেয়া সম্ভব না।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন,যারা হেফাজতের সঙ্গে সরকার হাত মিলিয়েছে, চেতনা গেল গেল বলে গলা ফাটাচ্ছেন; ৫ মে রাতে যখন হেফাজত শাপলা চত্বর দখল করেছিল তখন তারা কোথায় ছিলেন? তারা কী চেতনাবোধ থেকে সেদিন রাস্তায় নেমে এসেছিলেন। সেদিন আমি নিজস্ব চিন্তা-ভাবনা থেকে যা যা করণীয় তা করে হেফাজতমুক্ত করেছিলাম। সবার মধ্যে আতঙ্ক ছিল কী হবে কী হবে? পরদিন অনেক মন্ত্রিসভার সদস্য ভয়ে সচিবালয়মুখীও হননি।
তিনি বলেন, ওই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণ ও বর্তমানে দেশের মানুষের উন্নয়ন বিশেষ করে গ্রামের মানুষের ভাগ্যন্নোয়নের স্বার্থে তিনি হেফাজত ইসলামের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে ভুল ভাঙিয়ে ওদের শিক্ষার সুযোগ সুবিধা করে দেয়া হযেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকারের প্রতি ভুল ধারণা নিয়ে ওরা উগ্র পন্থা বেছে নিলে সেটা কি দেশের জন্য ভালো হতো? তারা এখন জঙ্গি দমনে সরকারের পাশে থাকার প্রতিশ্রæতি দিয়েছেন। তারা জঙ্গিদের বিরুদ্ধে বক্তৃতা-বিবৃতি দিচ্ছেন। এ উদ্যোগকে যারা সহজভাবে নিতে পারেন না তারা কী চান।
সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে ভাস্কর্য অপসারণ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জাতীয় ঈদগাহ সংলগ্ন সুপ্রিম কোর্টের যে স্থানটিতে গ্রিক গড অব থেমিসের আদলের ভাস্কর্যটি স্থাপন করা হয়েছিল সেই ভাস্কর্যের গায়ে শাড়ি পড়ানো হলো কেন? ভাস্কর্য স্থাপনের আগে বাইরে থেকে সুপ্রিম কোর্টের প্রবেশপথে দেশের মানচিত্র দেখা যেতো। ওইটি স্থাপনের পর সেটি ঢেকে যায়। তাছাড়া জাতীয় ঈদগাহের সামনে নামাজের সময় এটি দেখা গেলে দৃষ্টিকটু লাগতো। তাই ওটি সরানো হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী সুলতানা কামাল ও শাহরিয়ার কবীরের প্রতি ইঙ্গিত করে বলেন, ভাস্কর্য সরানোর ফলে অনেকে ধর্মনিরপেক্ষতার দোহাই দিয়ে ধর্ম গেল গেল বলে চিৎকার করছেন। আন্দোলন করছেন। কেউ কেউ ভাস্কর্য সরালে মসজিদও সরাতে হবে এমন কথাও বলছেন।
তিনি ইমরান এইচ সরকারের সমালোচনা করে বলেন, যাদের তিনি জিরো থেকে হিরো বানিয়েছিলেন তারা এখন আন্দোলন করছেন। তারা কী ভুলে গেছেন শাহবাগে তাদের যখন হেফাজতিরা তাড়া করেছিল তখন তাদের ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বাঁচিয়েছিল।
প্রধানমন্ত্রী জানান, তিনি অনেক অপমান সহ্য করেছেন। এখন যারা এর বিরোধীতা করছেন আর যারা পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন তিনি দু’পক্ষের কারও পক্ষে থাকবেন না। তারা আগে মারামারি ও মল্লযুদ্ধ করে শক্তির পরীক্ষা করুক। তিনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকেও এ ব্যাপারে দু’পক্ষ মুখোমুখি হলে কিছু করতে মানা করেছেন। দু’পক্ষের শক্তির পরীক্ষায় যারা আহত হবেন তাদের চিকিৎসা দেবেন।
বাস্তবতা বিবেচনা না করে অনেক মন্ত্রী তার বিরুদ্ধে বক্তব্য-বিবৃতি দিয়েছেন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী এ সময় তার পাশে বসে থাকা তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু ছাড়াও রাশেদ খান মেনন ও আসাদুজ্জামান নূরের নাম উল্লেখ করে বলেন, আমার বিরুদ্ধে কথা বলার আগে তারা পদত্যাগ করতে পারতেন। প্রধানমন্ত্রীর এধরনের সাহসী ও সময়োপযোগী বক্ত্যব দেশের আলেম ওলামা ও র্ধমপ্রান মুসলিম সমাজের মধ্যে ব্যাপক ইতিবাচক সাড়া জাগিয়েছে। গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন অফিস আদালত, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, দোকান পাঠ,বিপনী বিতান, বাসে, ট্রেনে, মসজিদ মাদ্রাসাসহ সর্বত্রই প্রধানমন্ত্রীর এবক্তব্য আলোচনার ঝড় তোলেছে। মাহে রমজান মাসে প্রধানমন্ত্রর এবক্তব্য ব্যাপক প্রশংসা ও গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে। শুধূ একজন দক্ষ বুদ্ধমিতি অভিজ্ঞতা সম্পুর্ণ রাজনীতিবিদ বা সফল সরকার প্রধান হিসাবেই নয় একজন ধর্মপ্রাণ ঈমানদার মুসলিম হিসাবেও তিনি এখন সর্বস্তরে প্রশংসিত হয়েছেন।
একটি বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজী বিভাগের সহকারী প্রফেসর এ এফ এম শামীম বলেন, প্রধানমন্ত্রীর এ বক্ত্যব এদেশের ধর্মপ্রাণ ১৬ কোটি মানুষের হৃদয়ের কথা। দেশে শান্তি ও জঙ্গিবাদ দমনে তিনি যেমন সফল হয়েছেন, কঠোর হস্তে জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে রুখে দাড়িঁয়েছেন, তেমনি সুপ্রিম কোর্ট প্রঙ্গণ থেকে ভাস্কর্য বা মুর্তি অপসারন করে এবং নাস্তিকদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে এদেরে মানুষের মন জয় করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।