Inqilab Logo

মঙ্গলবার ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৬ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দেশের সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে যা করার প্রয়োজন তাই করেছি -প্রধানমন্ত্রী

সুপ্রিম কোট প্রাঙ্গণ থেকে ভাস্কর্য অপসারণ প্রসঙ্গ

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৫ জুন, ২০১৭, ১০:৫৭ এএম | আপডেট : ২:২৯ পিএম, ৫ জুন, ২০১৭

স্টাফ রিপোর্টার : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ভাস্কর্য সরানোর ফলে অনেকে ধর্মনিরপেক্ষতার দোহাই দিয়ে ধর্ম গেল গেল বলে চিৎকার করছেন। আন্দোলন করছেন। কেউ কেউ ভাস্কর্য সরালে মসজিদও সরাতে হবে এমন কথাও বলছেন। যাদের জিরো থেকে হিরো বানানো হয়েছে তারা এখন আন্দোলন করছেন।

রোববার রাজধানীতে জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে) আয়োজিত ইফতার অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগদান শেষে প্রেসক্লাবের ভিআইপি মিলনায়তনে দুই সংগঠনের নেতা ও সিনিয়র সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় কালে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। তখন একজন সাংবাদিক নেতা বলেছিলেন এটা অব দ্য রেকর্ড, সঙ্গে সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন না কেউ লিখতে চাইলে লিখতে পারেন। হেফাজতে ইসলাম ও সুপ্রিম কোর্টের সামনে ভাস্কর্য ইস্যুতে সরকার তথা নিজের অবস্থান পরিষ্কার করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ধর্মনিরপেক্ষতা মানে ধর্মকে অস্বীকার করা নয়। শূকরের মাংস, মদ ও গাঁজা খেয়ে ধর্মনিরপেক্ষতার কথা যারা বলেন, তারা পারভারটেড।’

প্রধানমন্ত্রী জানান, তিনি অনেক অপমান সহ্য করেছেন। এখন যারা এর বিরোধিতা করছেন আর যারা পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন তিনি দু’পক্ষের কারও পক্ষে থাকবেন না। তারা আগে মারামারি ও মল্লযুদ্ধ করে শক্তির পরীক্ষা করুক। তিনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকেও এ ব্যাপারে দু’পক্ষ মুখোমুখি হলে কিছু করতে মানা করেছেন। দু’পক্ষের শক্তির পরীক্ষায় যারা আহত হবেন তাদের চিকিৎসা দেবেন।
বাস্তবতা বিবেচনা না করে অনেক মন্ত্রী তার বিরুদ্ধে বক্তব্য-বিবৃতি দিয়েছেন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী এ সময় তার পাশে বসে থাকা তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু ছাড়াও রাশেদ খান মেনন ও আসাদুজ্জামান নূরের নাম উল্লেখ করে বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে কথা বলার আগে তারা পদত্যাগ করতে পারতেন।’

তিনি আরো বলেন, তারা কী ভুলে গেছেন শাহবাগে তাদের যখন হেফাজতিরা তাড়া করেছিল তখন তাদের ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বাঁচিয়েছিল। আজ যারা আমার ডানে বামে আছেন তাদের কেউ কেউ ভাস্কর্য সরানোর প্রতিবাদে বিবৃতি দিচ্ছেন। আন্দোলন উসকে দিচ্ছেন। তারা আসলে কি চান। হেফাজত প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, আমি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। হেফাজত কিংবা অন্য যেকোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আদর্শে ভিন্নতা ও মতবিরোধ থাকলেও ­­­­­ (দেশের অভিভাবক) হিসেবে যা ভালো মনে করেছি তাই করেছি।

সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে ভাস্কর্য অপসারণ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতীয় ঈদগাহ সংলগ্ন সুপ্রিম কোর্টের যে স্থানটিতে গ্রিক গডেস থেমিসের আদলের ভাস্কর্যটি স্থাপন করা হয়েছিল সেই ভাস্কর্যের গায়ে শাড়ি পড়ানো হলো কেন? ভাস্কর্য স্থাপনের আগে বাইরে থেকে সুপ্রিম কোর্টের প্রবেশপথে দেশের মানচিত্র দেখা যেতো। ওইটি স্থাপনের পর সেটি ঢেকে যায়। তাছাড়া জাতীয় ঈদগাহের সামনে নামাজের সময় এটি দেখা গেলে দৃষ্টিকটু লাগতো। তাই ওটি সরানো হয়েছে।

তিনি বলেন, কওমি মাদরাসায় লাখ লাখ শিক্ষার্থী পড়াশুনা করছে। এতদিন তাদের শিক্ষাকে স্বীকৃতি দেয়া হয়নি। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে এত বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থীর কথা চিন্তা না করে আমি থাকতে পারি না। তাই তাদের কাছে ডেকে কথা বলেছি, ছয়টি শিক্ষাবোর্ড গঠন করে দিয়েছি। দেশকে শতভাগ শিক্ষিত করতে হলে তাদের বাদ দেয়া সম্ভব না।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, যারা হেফাজতের সঙ্গে সরকার হাত মিলিয়েছে, চেতনা গেল গেল বলে গলা ফাটাচ্ছেন; ৫ মে রাতে যখন হেফাজত শাপলা চত্বর দখল করেছিল তখন তারা কোথায় ছিলেন? তারা কী চেতনাবোধ থেকে সেদিন রাস্তায় নেমে এসেছিলেন। ভাবতে পারেন আর কয়েক ঘণ্টা হেফাজতের দখলে থাকলে দেশের কী অবস্থা হতো। সেদিন আমি নিজস্ব চিন্তা-ভাবনা থেকে যা যা করণীয় তা করে হেফাজতমুক্ত করেছিলাম। সবার মধ্যে আতঙ্ক ছিল কী হবে কী হবে? পরদিন অনেক মন্ত্রিসভার সদস্য ভয়ে সচিবালয়মুখীও হননি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, হেফাজত ইসলামের মুসল্লিদের ভুল বুঝিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের অপচেষ্টা চালিয়েছিল বিএনপি। ৫ মে মাদরাসার শিক্ষার্থীদের এনে জড়ো করে সরকার পতনের অপচেষ্টা চালিয়েছিল। ওদের বলা হয়েছিল ২শ’ গরু জবাই করে তাদের বিরিয়ানি খাওয়ানো হবে। ছোট ছোট কোমলমতি মাদরাসা শিক্ষার্থীদের সারাদিন একটি রুটি আর কলা খাইয়ে বসিয়ে রাখা হয়েছিল।

তিনি জানান, ওই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণ ও বর্তমানে দেশের মানুষের উন্নয়ন বিশেষ করে গ্রামের মানুষের ভাগ্যোন্নয়নের স্বার্থে তিনি হেফাজত ইসলামের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে ভুল ভাঙিয়ে ওদের শিক্ষার সুযোগ সুবিধা করে দিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকারের প্রতি ভুল ধারণা নিয়ে ওরা জঙ্গিদের সঙ্গে হাত মেলালে দেশের কী অবস্থা হবে তা কি কেউ ভেবে দেখেছেন। তারা এখন জঙ্গি দমনে সরকারের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তারা জঙ্গিদের বিরুদ্ধে বক্তৃতা-বিবৃতি দিচ্ছেন। এ উদ্যোগকে যারা সহজভাবে নিতে পারেন না তারা কী চান।

তিনি বলেন, ৭৫ পরবর্তী সময়ে দেশটা ৯০ ডিগ্রি অ্যাঙ্গেলে চলে গিয়েছিল। বর্তমান সরকারের প্রচেষ্টায় সেই অবস্থা থেকে দেশকে উন্নত করে অন্তত ৭০ ডিগ্রি অ্যাঙ্গেল ঠিক করা গেছে।

 



 

Show all comments
  • Sohail ahmad ৫ জুন, ২০১৭, ১২:৫২ পিএম says : 2
    হেফাজত গরু খাওয়ার লাগি শাপলা চততর যায় নাই
    Total Reply(1) Reply
    • Imran ৫ জুন, ২০১৭, ৫:৩১ পিএম says : 4
      Hefajot goru khayar jonno rastai nameni namacelo tader santipurno dabi adai er lokke.
  • সাইফ ৫ জুন, ২০১৭, ১:৫৭ পিএম says : 2
    আল্লাহপাকের অশেষ শুকরিয়া আদায় করি তিনি আপনার মত বিছক্ষন ব্যক্তিকে বর্তমান সময়ে বাংলাদেশের প্রধান মন্ত্রি বানিয়ে দিয়েছেন। অন্তত ঐসব মাথামোটা পুরুষদের ছেয়েতো হাজার গুন ভালো হয়েছে।
    Total Reply(0) Reply
  • ৫ জুন, ২০১৭, ১:৫৯ পিএম says : 0
    ১০০% একমত
    Total Reply(0) Reply
  • Mollah Rasel ৫ জুন, ২০১৭, ২:১২ পিএম says : 0
    আলহামদুলিল্লাহ্‌। প্রধানমন্ত্রীর কথা খুবই ভালো লাগল।আল্লাহ ওনার নেক হায়াত দান করুন। আমিন। কিন্তু মূর্তি যে পুনঃস্থাপন করা হলো এর কি হবে?
    Total Reply(0) Reply
  • মোহাম্মদ রাসেল খান ৫ জুন, ২০১৭, ৪:১৩ পিএম says : 2
    আলহামদুলিল্লাহ্‌। প্রধানমন্ত্রীর কথা খুবই ভালো লাগল। আল্লাহ ওনার নেক হায়াত দান করুন। আমিন। কিন্তু মূর্তি যে পুনঃস্থাপন করা হলো এর কি হবে? - একমত পোষণ করছি।
    Total Reply(0) Reply
  • mohammad iftakher uddin ৫ জুন, ২০১৭, ৪:২৯ পিএম says : 0
    Immediately should removed who does not follow Islam & Prim minister.
    Total Reply(0) Reply
  • M H khan ৫ জুন, ২০১৭, ৪:৩৯ পিএম says : 0
    প্রধানমন্ত্রী কে ধন্যবাদ সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য আমি আশাকরি ভবিষ্যতে আরোও যুগোপযোগী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে দেশকে আরো উন্নতির চরম শিখরে পৌছে দিবেন ইনশাআল্লাহ
    Total Reply(0) Reply
  • আব্দুল কাইয়ূম চৌধুরী ৫ জুন, ২০১৭, ৯:২৬ পিএম says : 0
    ইনকিলাবের আবারও ধন্যবাদ। আবারও এজন্য বললাম যে এর আগেও সব পক্ষের সংবাদ নিরপেক্ষভাবে প্রকাশ করার জন্য আগেও অনেকবার ধন্যবাদ জানিয়েছি। প্রেসক্লাবে দেওয়া প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য হুবহু প্রকাশ করেছ ইনকিলাব, অন্য পেপার গুলো কম বেশী প্রকাশ করলেও নয়দিগন্ত অনলাইন সংস্করনের খুঁজে পেলামনা যদিও খালেদা জিয়ার ইফতার পার্টির সংবাদ এবং ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেবের বক্তব্য ছাপা হয়েছে যাতে নতুনত্ব কিছু নেই।।
    Total Reply(0) Reply
  • nazruislam duku mia ৬ জুন, ২০১৭, ১২:৩৭ এএম says : 0
    Sutana kamal dormo wskany mulok kotabolay desh dongsu hotipary o.k.greptar korahhuc
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ