Inqilab Logo

শনিবার ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

আলাদা নতুন সংস্থা হচ্ছে

| প্রকাশের সময় : ৫ জুন, ২০১৭, ১২:০০ এএম

সিভিল এভিয়েশন থেকে নতুন সংস্থা ‘এয়ারপোর্ট অথরিটি’ ও ‘বিমান দুর্ঘটনা তদন্ত বোর্ড’ অর্থমন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের অপেক্ষায়
উমর ফারুক আলহাদী : দেশের সকল বিমানবন্দরের সার্বিক নিরাপত্তা, অপারেশনাল কার্যাক্রম, প্রকৌশল বিভাগের উন্নয়ন সংস্কার কার্যক্রম, কমিউনিকেশনসহ সার্ভিস প্রোভাইডিংয়ের সব ধরনের  কার্যক্রম পরিচালনার জন্য নতুন সংস্থা গঠন করা হচ্ছে। আন্তর্জাতিক আদলে ‘এয়ারপোর্ট অথরিটি’ নামের এ সংস্থাটি   বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ থেকে আলাদা একটি সংস্থা হিসাবে কার্যক্রম পরিচালনা করবে। পাশাপাশি বিমানবন্দরে যে কোন ধরনের বিমান দুর্ঘটনা তদন্তের জন্য একটি স্বাধীন ‘বিমান দুর্ঘটনা তদন্ত বোর্ড’ গঠন করা হচ্ছে। ইন্টারন্যাশনাল সিভিল এভিয়েশন অরগানাইজেশন (আইকাও) এবং ফেডারেল এভিয়েশন এডমিনিস্ট্রেশন (এফএএ) এর সুপারিশে সিভিল এভিয়েশন এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে। এ লক্ষ্যে সিভিল এভিয়েশমনের পক্ষ থেকে একটি প্রস্তাব ইতোমধ্যেই অর্থ মন্ত্রণালয়ে দেয়া হয়েছে। নীতিগত সিদ্ধান্ত হলে তা বাস্তবায়নের জন্য খুব দ্রুত এ ব্যাপারে কার্যক্রম শুরু হবে বলে সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন। দেশের বেসামরিক বিমান চলাচল ও বিমান বন্দরগুলোর দ্রæত উন্নয়ন সংক্রান্ত কাজে গতি বৃদ্ধির লক্ষ্যেই সরকার এ ধরনের একটি গুরুত্বপুর্ণ পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে।
সিভিল এভিয়েশন জানায়, যে কোন বিমানবন্দরে ফ্লাইট অপারেশনের জন্য দীর্ঘ মেয়াদী, স্বল্প মেয়াদী ও তাৎক্ষণিক উন্নয়ন ও সংস্কার কাজের প্রয়োজন হয়। বিমানবন্দরের রানওয়ে বৃদ্ধি, লাইটিং সিস্টেম, রক্ষণাবেক্ষণ এবং নিরাপত্তা বাউন্ডারিসহ প্রয়োজনীয় সকল কাজ দ্রুত করার লক্ষ্যেই সিভিল এভিয়েশন থেকে আলাদা করে এয়ারপোর্ট অথরিটি নামের নতুন সংস্থাটি করতে যাচ্ছে সরকার। এ সংস্থার অধীনে থাকবে প্রকৌশলী বিভাগ, নিরাপত্তা বিভাগ এবং অন্যান্য সার্ভিস প্রোভাইডিং কার্যক্রম। এ জন্য নতুন করে জনবল নিয়োগসহ বিভিন্ন বিভাগকে ঢেলে সাজানো হবে। সিভিল এভিয়েশন শুধু প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনা করবে। আর এয়ারপোর্ট অথরিটি কারিগরিসহ অন্যান্য কার্যক্রম পরিচালনা করবে। এতে করে বাংলাদেশের বিমানবন্দরগুলো ও আকাশ পথে যোগাযোগের ক্ষেত্রে এক নতুন দিগন্তের সূচনা হবে। বাড়বে কর্মসংস্থানের সুযোগ। দ্রুততম সময়ের মধ্যে দেশের বিমানবন্দরগুলোর ব্যাপক উন্নয়নও সম্ভব হবে। ফলে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দেশের বিমানবন্দরগুলোর সুনাম বৃদ্ধির সুযোগ পাবে নতুন সংস্থাটি।
সংশ্লিষ্ট সুত্র জানায়, পৃথিবী উন্নত দেশগুলোসহ দক্ষিণ এশিয়ার অধিকাংশ দেশেই সিভিল এভিয়েশন থেকে আলাদ একটি সংস্থা রয়েছে এয়ারপোর্ট অথরিটি নামে। ওই সংস্থাই তাদের সকল বিমানবন্দরের নিরাপত্তা, প্রকৌশলী কার্যক্রম, বিমানবন্দরের সার্বিক উন্নয়ন, তথ্য প্রযুক্তি ও যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়ন, ফ্লাইট সেফটি ও নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রণসহ বিমানবন্দরের সকল কর্মকান্ড পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় লোকবল নিয়োগ ও নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। বাংলাদেশেও আন্তর্জাতিক আদলে গঠন করা হচ্ছে এয়ারপোর্ট অথরিটি। আর তা বাস্তবায়ন করতে সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ রেগুলেটর ও সার্ভিস প্রোভাইডার পৃথকীকরণের লক্ষ্যে কাজ করছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সিভিল এভিয়েশনের পরিচালক (ফ্লাইট সেফটি ও রেগুলেটর) চৌধুরী জিয়াউল কবীর ইনকিলাবকে বলেন, পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই বিমানবন্দরগুলোর সার্বিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য সিভিল এভিয়েশন থেকে বিমানবন্দরের নিজস্ব আলাদা সংস্থা রযেছে। সিভিল এভিয়েশন প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনা করে আর বিমানবন্দর অথরিটি বিমানবন্দরের প্রোভাইডিং সার্ভিস কর্মকান্ড পরিচালনা করে। তিনি বলেন, আইকাও এবং ফেডারেল এভিয়েশন এডমিনিস্ট্রেশনসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক নিয়ন্ত্রক সংস্থার সুপারিশে এ পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। এ কারণে সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রণালয়ের মতামত সাপেক্ষে এ বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং সিএএবি সার্ভিস প্রোভাইডার ও রেগুলেটরি কার্যক্রমকে আলাদা করণের জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
চৌধুরী জিয়াউল কবীর আরো বলেন, এয়ারপোর্ট অথরিটি পৃথক করার প্রয়োজনীয় দিক নিদের্শনা প্রাপ্তির লক্ষ্যে সিএএবি এর সাথে আইকাও এর কারিগরি সহায়তা ব্যুরোর একটি চুক্তি ইতোমধ্যে স্বাক্ষর হয়েছে। এ চুক্তির শর্ত অনুয়ায়ী বিমান দুর্ঘটনা তদন্তের জন্য একটি স্বাধীন ‘বিমান দুর্ঘটনা তদন্ত বোর্ড গঠনের পরিকল্পনা রয়েছে। এ বোর্ড সরাসরি বিমানমন্ত্রীর নিয়ন্ত্রণে থাকবে। যে কোন বিমান দুর্ঘটনার তদন্ত করতে মন্ত্রীর অধীনে এ তদন্ত বোর্ড কাজ করবে।
সিভিল এভিয়েশন জনসংযোগ শাখা জানায়, আইকাও এর একটি কারিগরি টিম বর্তমানে বাংলাদেশে অবস্থান করছে। সিএএবি এর আইন, সার্বিক কার্যক্রম, বর্তমান অবকাঠামো জনবল এবং বিভিন্ন আইনগত বিষয়গুলো নিয়ে সিভিল এভিয়েশন ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছে। এছারা আইকাও এর তিন সদস্যের একটি কারিগরি টিমের সাথেও এ বিষয়ে আলোচনা হচ্ছে। ওই টিমের কর্মকর্তারা সিভিল এভিয়েশনকে পৃথকীকরণের লক্ষ্যে অর্থাৎ সিএএবি এর সার্ভিস প্রোভাইডার এবং রেগুলেটরী কার্যক্রম  আলাদা করার বিষয়ে প্রয়োজনী পরামর্শও দিয়ে যাচ্ছে।
সিভিল এভিয়েশন প্রকৌশল বিভাগের একজন নির্বাহী প্রকৌশলী বলেন, পৃথিবীর প্রায় সব দেশের বিমানবন্দর অথরিটি হিসাবে একটি আলাদা ও স্বাধীন সংস্থা রয়েছে। বিমানবন্দরের সকল কারিগরি ও অপারেশনাল কাজকর্ম পরিচালনা ও উন্নয়নের জন্য প্রকৌশল বিভাগ রয়েছে এয়ারপোর্ট অথরিটির অধীনে। বাংরাদেশেও তাই করা উচিত। তাহলে বিমানবন্দরগুলোর উন্নয়নমূলক ও মেরামত কার্যক্রমে গতি আসবে। সিভিল এভিয়েশন থেকে আলাদা একটি সংস্থা গঠন এখন সময়ের দাবি বলে ওই প্রকৌশলী উল্লেখ করেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বিমানবন্দর

১৩ জানুয়ারি, ২০২৩
২৪ নভেম্বর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ