ইভিএম-এ ভোট কেন?
আগামী জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম-এ ১৫০ আসনে ভোট গ্রহণের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার। কাকতালীয় কিনা জানি না, ১৫০ সংখ্যাটা আমাদের এর আগে চিনিয়েছিলেন রকিবুল
মোহাম্মদ খালেদ সাইফুল্লাহ সিদ্দিকী : বর্তমানে সারা দুনিয়া প্রচারমুখী হয়ে পড়েছে এবং প্রচার মাধ্যমগুলোর ছড়াছড়ির ফলে নানা মতামত-মতাদর্শ অবাধে প্রচারিত হচ্ছে। বিশেষভাবে ইসলামবিদ্বেষী মহলগুলো অবাধে ইসলাম ও মুসলমানদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার, কুৎসারটনা, ইসলামের বিকৃতি, অপব্যাখ্যা এবং কোরআন ও হাদীসের ওপর আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে। দেশি-বিদেশি ইসলামদ্রোহী শক্তিচক্র ভ্রান্ত চিন্তাধারা ও মতবাদ প্রচারে সুকৌশলে কাজ করে চলেছে। কিন্তু এ সবের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর যে ঐক্যবদ্ধ উদ্যোগ-প্রয়াসের প্রয়োজন, তার অভাব থাকলেও আমাদের দেশের সচেতন, সম্মানিত ওলামা, পীর-মাশায়েখ সকলেই আপন স্থান থেকে বিক্ষিপ্তভাবে হলেও এসব ব্যাপারে জনসভা, মিছিল-সমাবেশ এবং পত্রিকায় বয়ান-বিবৃতি দিয়ে সোচ্চার রয়েছেন এবং তাদের প্রতিবাদ বক্তব্যগুলো ব্যাপক প্রচারের ফলে সর্বত্র অনুকূল জনমত গঠিত হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে সংবাদপত্র গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এখানে আমরা বিশেষভাবে দৈনিক ইনকিলাবের ভূমিকার কথা উল্লেখ করতে চাই। দৈনিক ইনকিলাব ইসলামী আদর্শ ও শিক্ষার বাহক হিসেবে পরিচিত।
১৯৮৬ সালের ৪ জুন ইনকিলাবের শুভ জন্মদিন। ৩১ বছর পার করে এবার ৩২তম বর্ষে পদার্পণ করেছে। ইনকিলাবের প্রতিষ্ঠাতা এবং বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদাররেছীনের দীর্ঘকালের সভাপতি আলহাজ্ব মাওলানা এম. এ মান্নান (রহ.) যেসব মূলনীতি ও আদর্শের ভিত্তিতে ইনকিলাব প্রতিষ্ঠা করেছিলেন তার সবগুলো তিনি জীবদ্দশায় বাস্তবায়িত দেখে যেতে না পারলেও পত্রিকাটি বিশেষায়িত সেই নীতি-আদর্শ প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। মাওলানা এম. এ মান্নানের অবর্তমানে তার স্বপ্নের গুরুত্বপূর্ণ বেশ কিছু অংশ তার যোগ্য উত্তরসূরীর হাতে বাস্তবায়িত হয়েছে এবং আরো কিছু বাস্তবায়নের অপেক্ষায় রয়েছে। এ ক্ষেত্রে দৈনিক ইনকিলাব ও তার সম্পাদক এ এম এম বাহাউদ্দীন নিয়ামক ও কার্যকর ভূমিকা পালন করে যাচ্ছেন।
মাওলানা মরহুমের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্বপ্ন ছিল স্বাধীন বাংলাদেশে একটি স্বতন্ত্র ইসলামী আরবী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা। তিনি সেটি প্রত্যক্ষ করে যেতে পারেন নি। তার উত্তরসূরী, জমিয়াতুল মোদররেছীনের সভাপতি ও ইনকিলাব সম্পাদক ও তার জমিয়াত সহকর্মীদের আপ্রাণ প্রচেষ্টা এবং দৈনিক ইনকিলাবের অব্যাহত প্রচার-প্রচারণায় মাত্র কিছুদিন আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকার সেই দীর্ঘকালের প্রস্তাবিত ইসলামী আরবী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করে এক অনন্য কীর্তি স্থাপন করেছেন। এতে শিক্ষামন্ত্রীর ভূমিকা ছিল বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। তিনি এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনাকে যথাযথভাবে কার্যকর করেছেন। একই সঙ্গে বলতে হয়, মাওলানা মান্নান (রহ.) মাদরাসা শিক্ষক-কর্মচারীদের জীবন উন্নয়নের যে স্বপ্ন দেখেছিলেন, তাও বাস্তবায়িত হয়েছে জমিয়াত প্রধান ও ইনকিলাব সম্পাদক ও তার পত্রিকার প্রচারণায়।
ইসলামী ঐতিহ্য, মূল্যবোধ ও ইসলামের আদর্শ শিক্ষার বিস্তার-প্রসারে দৈনিক ইনকিলাব শুরু থেকে যে ভূমিকা রেখে আসছে তার যথার্থ ও সঠিক মূল্যায়ন করতে হলে দীর্ঘ পরিসর আবশ্যক। মাদরাসা শিক্ষা বন্ধের ষড়যন্ত্র এদেশে নতুন না হলেও স্বাধীন বাংলাদেশে তার ধারাবাহিকতা কখনো ব্যাহত হয়নি। ইনকিলাবের আত্মপ্রকাশ হতে এ যাবত নানাভাবে, নানা আঙ্গিকে মাদরাসা শিক্ষাবিরোধী তৎপরতার বিরুদ্ধে ভূমিকা রেখে চলেছে। এ ব্যাপারে বিশেষভাবে জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের পক্ষ হতে যেসব তৎপরতা চালানো হয় ইনকিলাব স্ববিস্তারে তা প্রচার করে থাকে এবং জমিয়াতের বাইরের সংগঠন, সংস্থা ইত্যাদি ছাড়াও ব্যক্তি পর্যায়ের লেখা, বিবৃতি, বয়ানসহ মাশায়েখ-উলামাদের বক্তব্যগুলো ইনকিলাবে ছাপা হয়। অনুরূপভাবে ইসলাম বিরোধী তৎপরতার বিরুদ্ধে নানা প্রকার অপতৎপরতা রোধে মাশায়েখ-ওলামার প্রতিবাদী বয়ান-বিবৃতি প্রকাশ করে ইনকিলাব সকলকে উৎসাহিত-উজ্জীবিত করে। তাছাড়া ইনকিলাব তার নিজস্ব নীতি-আদর্শ অনুযায়ী ইসলামবিরোধী সকল অপতৎপরতা রোধে বিশেষ ভূমিকা পালন করে, ইনকিলাবের দিক-নির্দেশনার ব্যাপক প্রভাব প্রতিফলিত হতে দেখা যায়।
ইনকিলাবের এক বিশাল ধর্মীয় লেখকগোষ্ঠী রয়েছে। তাদের জন্য ইনকিলাবের পাতাগুলো উন্মুক্ত, ইসলামের যে কোনো দিকের ওপর তাদের রচনাবলী ছাপা হয়ে থাকে। বিজ্ঞ লেখকগণ আধুনিক দৃষ্টিকোণ থেকে তাদের সুচিন্তিত গবেষণাধর্মী রচনাবলী প্রকাশের জন্য ইনকিলাবকে প্রচারবাহন হিসেবে ব্যবহার করে থাকেন। ইসলামের অপব্যাখ্যা, ইসলাম সম্পর্কে বিভ্রান্তি ছড়ানো, জাতীয় ও সামাজিক অপরাধ প্রবণতা, দুর্নীতি, উৎকোচ, ভেজাল, জুয়া, মাদক সেবন, ধোঁকা, প্রতারণা ইত্যাদির বিরুদ্ধে ইনকিলাবে অহরহ লেখা ছাপা হয়। ইসলামের বিভিন্ন বিষয়ে বিভ্রান্তির কড়া জবাব দিতে ইনকিলাব সব সময়ই সিদ্ধহস্ত ও বদ্ধপরিকর। ইনকিলাব পাপাচারের বিরুদ্ধে সোচ্চার।
আলেম সমাজকে ঐক্যবদ্ধ করার ব্যাপারে ইনকিলাব শুরু থেকে আন্তরিক প্রচেষ্টা চালিয়ে আসছে। তাদের মধ্যকার বিরোধ নিরসনে খোদ ইনকিলাব সম্পাদকের উদ্যোগ-প্রয়াস উল্লেখ করার মতো। পত্রিকায় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে তার বিশেষ রচনাবলী প্রেরণাদায়ক। তার নির্দেশনা অনুযায়ী ইনকিলাব সকল ইসলামী মহলের খবরাখবর প্রকাশ করে থাকে। যার ফলে ইসলামী নানা বিষয়ে জনমত সৃষ্টি হয়। গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন বিষয়ে সম্পাদকীয়তে সিদ্ধান্তমূলক ও পরামর্শমূলক বক্তব্যও প্রদান করা হয়। প্রতিদিনকার ইনকিলাবে বিভিন্ন ধর্মীয় মহলের খবর, প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার ফলে দেশে ইসলামী তৎপরতার চিত্র ফুটে উঠে। এদিক থেকে বলা যায় যে, ইনকিলাব এ দেশে ইসলামের মুখপত্রের ভূমিকা পালন করছে। ইনকিলাব তার অসংখ্য পাঠকের কাছে প্রতিদিন তুলে ধরছে মুসলিম উম্মাহর নানা খবরা-খবর, ঘটনাবলী এবং নানা সংবাদচিত্র। তাছাড়া প্রকাশ করছে ইসলামী উন্নয়ন তৎপরতার বিবরণাদি। দুনিয়ার কোথায় কোন মসজিদ-মাদরাসা নির্মিত হচ্ছে, কোথায় ইসলামী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে এবং ইসলাম গ্রহণের স্বচিত্র প্রতিবেদন যেমন ইনকিলাবে নিয়মিত প্রকাশিত হয়ে আসছে, তেমনি এসব ইতিবাচক খবরা-খবর ছাড়াও মুসলমানদের পক্ষে নেতিবাচক ঘটনাবলীও অহরহ প্রকাশিত হচ্ছে। ইসলামের বিরুদ্ধে, কোরআন হাদিসের বিরুদ্ধে এবং রাসূলের প্রতি ধৃষ্টতা প্রদর্শনমূলক ঘটনাবলীও পাঠকদের সামনে নিয়ে আসছে। মধ্যপ্রাচ্যসহ মুসলিম জাহানের নানাস্থানে পরাশক্তি এবং ইসলাম ও মুসলিম বিদ্বেষীচক্রগুলোর উস্কানিমূলক তৎপরতা এবং বিভিন্ন মুসলিম রাষ্ট্রে হানাহানি, খুনাখুনি এবং আভ্যন্তরীণ ব্যাপারে পরাশক্তিবর্গের অন্যায় হস্তক্ষেপ এবং অবৈধ নাক গলানোর বিরুদ্ধে ইনকিলাব সোচ্চার কণ্ঠ হিসেবে পরিচিত। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মুসলিম বিশ্বসহ নানা স্থানে যে জঙ্গী তৎপরতা চলছে ইনকিলাব সেগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর ও দ্ব্যর্থহীন বক্তব্য দিয়ে আসছে। দেশি-বিদেশি ইসলামবিরোধী চক্র যখনই ইসলামের ওপর আঘাত করার অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছে ইনকিলাব তাৎক্ষণিকভাবে তার বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছে এবং দেশের ওলামা-মাশায়েখের প্রতিবাদ, নিন্দা, সমালোচনা গুরুত্ব সহকারে প্রচার করেছে এবং সর্বদা এ দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে।
ধর্মীয় খুটিনাটি ব্যাপারে আলেম সমাজের মধ্যে বিরোধকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন সময়, বিভিন্ন স্থানে যেসব অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে থাকে ইনকিলাব মনে করে, এ বিরোধ-বিসংবাদ আলেম সমাজের ঐক্যে ফাটল ধরানোর চক্রান্তের অংশ। সব সময়ই ওলামায়েকেরামদের ঐক্য ও সংহতির পক্ষে ইনকিলাব। ইনকিলাব নীতিগতভাবে বিশ্বাস করে যে, মুসলমানদের জন্য বিঘোষিত নীতি হলো: ওয়াতাছামু বি-হাবলিল্লাহি জামিআন, ওয়ালা তার্ফারাকু। অর্থাৎ তোমরা সবাই আল্লাহর রজ্জু কে দৃঢ়ভাবে ধারণ কর এবং দ্বিধাবিভক্ত হয়ো না। আলেম সমাজের মুখে আমরা কোরআনের এ বাণী প্রায়ই শুনে থাকি, কিন্তু পরিতাপের বিষয় হলো, বাস্তবে আমাদের এখানে এবং নানা দেশে মুসলমানদের মধ্যে অনৈক্যের এক বিরাট পর্বত সৃষ্টি হয়ে আছে। বিশেষভাবে যারা সাধারণ লোকদের সত্য ও ধর্মের পথ প্রদর্শনের দায়িত্ব নিয়োজিত, সেই সম্মানি আলেম ও পীর-মাশায়েখ সমাজের বিভিন্ন শ্রেণির মধ্যে ধর্মীয় নানা গুরুত্বহীন বিষয়ে এমন তীব্র বিরোধ দলাদলি বিরাজ করছে, যা দেখলে মনে হয় সেগুলোই যেন ইসলামের মূল কিংবা ফরজ-ওয়াজেব।
এ ধরনের তৎপরতা কেবল সামাজিক বিশৃঙ্খলা-অশান্তিরই বড় কারণ নয়, বরং আলেম সমাজের জন্যই মর্যাদা হানিকর। আর এ প্রতিকুল পরিস্থিতি বিশেষভাবে আলেম সমাজের বৃহত্তর ইসলামী ঐক্যের পথে প্রধান প্রতিবন্ধক। পক্ষান্তরে ইসলামবিরোধী শক্তিবর্গ ইসলাম ও মুসলমানদের ধ্বংস সাধনে সবাই একতাবদ্ধ। যে সম্পর্কে হাদীসে বলা হয়েছে: আল কুফরু মিল্লাতুন ওয়াহেদাহ। অর্থাৎ কোফরের সকল গোষ্ঠী সম্প্রদায় ও শাখা-প্রশাখা ইসলামের বিরুদ্ধে এক।
আরো একটি দিকের ওপর বিশেষ ভাবে আলোকপাত করা জরুরি এবং তা হচ্ছে, ইসলামের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সরকারের পক্ষ হতে যেসব ইতিবাচক পদক্ষেপ গৃহীত হয়ে থাকে সেগুলোর প্রচারে ইনকিলাবের উদার নীতি কোনো কোনো মহলে ঈর্ষার কারণ হয়ে থাকে। একটি নিরপেক্ষ প্রচার মাধ্যম হিসেবে এবং ইসলামের বাণী বাহক হিসেবে সরকারের প্রশংসনীয় পদক্ষেপগুলো যথাযথ গুরুত্ব সহকারে প্রচার করা ইনকিলাব তার দায়িত্ব মনে করে। ইনকিলাব প্রয়োজনে সরকারের সমালোচনায় যেমন পিছপা হয় না, তেমনি গঠনমূলক পরামর্শ দিতেও দ্বিধা করে না। দেখা গেছে, বিভিন্ন ক্ষেত্রে সরকার ইনকিলাবের অনেক পরামর্শ-সুপারিশ সুবিবেচনায় নিয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এরূপ বহু উদাহরণ পেশ করা যেতে পারে। এ প্রসঙ্গে অতীতের সরকারগুলোর কথা বাদ দিলেও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের এ যাবতকাল গৃহীত ইসলাম ও ইসলামী শিক্ষা সংক্রান্ত বিভিন্ন বাস্তব পদক্ষেপ এবং সাম্প্রতিককালে ইসলাম বিরোধী জঙ্গীবাদ ও সন্ত্রাসী তৎপরতা দমনে সরকারি সাফল্যগুলো ইনকিলাব ফলাও করে প্রচার করে আসছে। সরকারি ব্যবস্থাদির পাশাপাশি রাজনৈতিক, অরাজনৈতিক, বেসরকারি, ধর্মীয়, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, প্রাতিষ্ঠানিক, সাংগঠনিক প্রভৃতি নানা শ্রেণি-পেশার পক্ষ হতে গৃহীত জঙ্গীবাদ বিরোধী সকল প্রকারের কর্মসূচী বাস্তবায়নের বিশদ বিবরণ ইনকিলাবে প্রকাশিত হয়েছে।
মসজিদ-মাদরাসা এবং পীর-মাশায়েখের দেশ বাংলাদেশে দুনিয়ার যেকোনো মুসলিম দেশের চেয়ে ইসলাম চর্চা তুলনামূলকভাবে এখানে বেশি ছাড়া কম নয়। এসব প্রতিষ্ঠানের পক্ষ হতে সারাদেশে অসংখ্য প্রচারধর্মী কর্মসূচী, অনুষ্ঠান, দাবি-দাওয়া, প্রস্তাব-সুপারিশ ইত্যাদি পেশ করা হয়। সমাবেশ, সম্মেলন ইছালে সওয়াব মাহফিল, মিলাদ মাহফিল প্রভৃতি দ্বীনি তাবলীগ কর্মসূচী পালন করা হয় এবং এসবের বিষয়াদি যথাসম্ভব ইনকিলাবে প্রকাশিত হয়। তা ছাড়া মাদরাসা ছাত্রদের নানা তৎপরতা ইনকিলাবেই প্রকাশ পায়। ইনকিলাব পদে পদে নানা প্রতিবন্ধকতা সত্তে¡ও এ দেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের আকীদা-বিশ্বাসে যে কোনো আঘাতের বিরুদ্ধে সর্বদা সতর্ক, সজাগ। ইসলামকে নিয়ে মস্কারা করা, ইসলাম ও কোরআন হাদীসের অবমাননা করাকে ইনকিলাব কিছুতেই প্রশ্রয় দেয় না। যারা ইসলামের বিকৃতি-অপব্যাখ্যার মাধ্যমে সাধারণ মুসলমানদের বিভ্রান্ত ও বিপদগামী করতে চায়, ইনকিলাব তাদের বিরুদ্ধে দৃঢ় অবস্থান নেয় এবং এসব ব্যাপারে আলেম সমাজকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানায়। ইসলাম শান্তির ধর্ম এ মূলমন্ত্রের আলোকে দেশে ফেতনা-ফাসাদ ও অশান্তি সৃষ্টির যে কোনো অপপ্রয়াসের বিরুদ্ধে ইনকিলাব। এ জন্য পত্রিকাটি বিশেষ করে আলেম সমাজের বৃহত্তর ঐক্যের ওপর গুরুত্ব আরোপ করে থাকে। দেশে ইসলামের এবং ইসলাহি নৈতিক মূল্যবোধের উন্নয়নে ইনকিলাব সদা তৎপর রয়েছে। দৈনিক ইনকিলাব দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব, নিরাপত্তা এবং জাতীয় স্বার্থ সংরক্ষণের পাশাপাশি ইসলামী ঐতিহ্য মূল্যবোধগুলোকে প্রচারের ক্ষেত্রে যেভাবে প্রাধান্য দিয়ে থাকে, তা অনন্য, অসাধারণ।
প্রতিদিনকার ইনকিলাবে প্রকাশিত হয় ইসলাম সংক্রান্ত নানাবিধ গুরুত্বপূর্ণ গবেষণাধর্মী রচনা, ইসলামী সাহিত্যের নানা কথা, বিজ্ঞান ও বিজ্ঞানীদের জীবন বৃত্তান্ত, ইসলামী প্রেরণাদায়ক কবিতা, হামদ-নাত এবং আম্বিয়া আওলিয়ার কেস্সা-কাহিনীর দুনিয়াময় প্রচার-প্রসার, ইসলামী পুস্তক পরিচিতিসহ আরো নানা বিষয়ে ইসলামের ওপর প্রবন্ধ-নিবন্ধ প্রকাশ ইনকিলাবকে করে তুলেছে সত্যিকারের ইসলামী সংবাদপত্র। তার এ শুভ জন্মদিনে আমরা তার প্রতি অশেষ শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।