দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
মসজিদে লাখো মুসল্লির ঢল
রমজানের প্রথম জুম্মার নামাজ
| প্রকাশের সময় : ৩ জুন, ২০১৭, ১২:০০ এএম
স্টাফ রিপোর্টার : বিশ্ব দরবারে মসজিদের শহর হিসেবে পরিচিত ঢাকা যেন শুক্রবার হারানো ঐতিহ্য ফিরে পেয়েছিল। রমজানের প্রথম জুম্মার দিনে গতকাল শুক্রবার লাখো লাখো রোজাদার মুসল্লি জুম্মার নামাজ আদায়ে মসজিদে হাজির হন। রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশের প্রতিটি মসজিদে ছিল রোজাদার মুসল্লীদের উপচেপড়া ভীড়। মুসল্লিরা ধর্মীয় ভাবগম্ভির্য্যে প্রাণের উচ্ছ¡াসে জুম্মার নামাজ আদায়ে জড়ো হন মসজিদে মসজিদে। দুপুরে রাজধানী ঢাকা সত্যি সত্যিই ‘মসজিদের শহরে’ রুপ ধারণ করে। রাজধানীর ঢাকার অধিকাংশ মসজিদের জুম্মার নামাজের সময় দেখা গেছে মসজিদে এবং বারান্দায় স্থান সংকুলান না হওয়ায় অসংখ্য মুসুল্লি মসজিদের ছাদ, রাস্তায় পাটের ছালা-চট-মাদুর-চাটাই বিছিয়ে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে গেছেন জুম্মার নামাজ আদায়ে। রাজধানীর সব পথ মিশে গিয়েছিল মসজিদগুলোর দিকে।
রাজধানীসহ সারাদেশের বিভাগীয়, জেলা, উপজেলা শহর এমনকি গ্রামগঞ্জের হাটবাজার ও পাড়া মহল্লার মসজিদগুলোতে জুমা¥র নামাজের সময় তিল ধারণের ঠাঁই ছিল না। রোজাদার নামাজিদের মধ্যে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভে ছিল অভূতপূর্ব উদ্দীপনা। সকল পর্যায়ের কোটি কোটি রোজাদার ছুটে আসেন রমজানের প্রথম জুমা নামাজ একসঙ্গে পড়তে। রাজধানীর মসজিদগুলোতে বৃদ্ধ, তরুণ, কিশোর, শিশু লাখো মুসুল্লির স্বতঃস্ফূর্ত ও ধর্মীয় আবেগভরা উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। আল্লাহর রহমত প্রত্যাশী নানা বয়সী মানুষ যেন শ্রোতের গতিতে ছুটে এসেছিলেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ, মহাখালী মসজিদে গাউসুল আজম, গুলশান আজাদ মসজিদ, ধানমন্ডি সেন্ট্রাল মসজিদ, লালবাগ শাহী মসজিদ, সুপ্রিম কোট জামে মসজিদ, সোবহানবাগ মসজিদ, এলিফ্যান্ট রোড মসজিদ, বনানী বাজার মসজিদ, মহাখালী বায়তুল মাহফুজ, মিরপুর কাজীপাড়া জামে মসজিদ, শেওড়াপাড়া বড় মসজিদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদ, মতিঝিল ওয়াপদা মসজিদ, কাওরান বাজার আম্বারশাহসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার জামে মসজিদগুলোয়। রোজাদার পুরুষ মুসুল্লিদের পাশাপাশি রাজধানীর মহাখালী মসজিদে গাউসুল আজম, সোহবানবাগ মসজিদসহ অনেক মসজিদের মহিলা মুসুল্লিরা উপস্থিন হন জুম্মার নামাজ আদায়ে। রাজধানীর ঢাকার অধিকাংশ মসজিদের জুম্মার নামাজের সময় দেখা গেছে মসজিদে এবং বারান্দায় স্থান সংকুলান না হওয়ায় অসংখ্য মুসুল্লি রাস্তায় পাটের ছালা-চট-মাদুর-চাটাই বিছিয়ে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে গেছেন জুম্মার নামাজ আদায়ে। ইনকিলাবের চট্টগ্রাম, টিলেট, খুলনা, রাজশাহী, রংপুর, বগুড়া, ময়মনসিংহ, কুমিল্লাসহ বিভাগীয় জেলা প্রতিনিধিরা জানান, জুম্মার নামাজে শহরের প্রধান প্রধান মসজিদগুলোয় জায়গা না হওয়ায় রাস্তায় চট-ছালা বিছিয়ে মুসুল্লিরা নামাজ আদায় করেন।
রমজানের প্রথম জুম্মাবার জুম্মা নামাজের আজানের আগে থেকেই মুসুল্লিরা নামাজ আদায়ের লক্ষ্যে মসজিদে সমবেত হতে শুরু করেন। অনেক মুসুল্লি জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম, মহাখালির মহাখালী মসজিদে গাউসুল আজম, গুলশান আজাদ মসজিদ, সুপ্রিম কোটে জামে মসজিদসহ বড় বড় মসজিদগুলোতে জুম্মার নামাজ আদায়ের জন্য দূর দূরান্ত থেকে হাজির হন। রাজধানীর সকল মসজিদই ছিল পূর্ণ। পাড়া মহল্লার মসজিদগুলোতেও জুম্মার নামাজে ভবনের ছাদ-বারান্দা ভরে নামাজিদের কাতার চলে যায় সড়কে। নামাজ শেষে মসজিদে মসজিদে হয় দীর্ঘ মুনাজাত। ঈমাম ও খতিবদের বিশেষ মুনাজাতের সময় ছিল ‘আমিন আমিন ধ্বনি’ আর গুনাহ মাফ চেয়ে আল্লাহর কাছে কাঁন্না। ভাবগম্ভীর্য্য ইবাদত ও মুনাজাত গোটা রাজধানীর পরিবেশকে মোহিত করে তুলেছিল। পবিত্র আবহ বিরাজ করছিল মসজিদ নগরী ঢাকায়। ধর্মপ্রাণ মুসলমান রোজাদারদের ধর্মীয় ভাবাবেগ, প্রাণের উচ্ছ¡াসে আর হৃদয়ের টানে মসজিদে ছুটে আসা মানুষ নামাজ শেষে সারাবিশ্বের নির্যাতিত নিজ দেশ থেকে বিতাড়িত অভিবাসী নির্যাতিত মুসলিম ভাইবোন ও শিশুদের জন্য প্রার্থনা করেন। মুসলিম উম্মাহর ঐক্য ও শান্তি কামনার পাশাপাশি বিশেষ মোনাজাতে বাংলাদেশের উন্নয়ন-সমৃদ্ধি, জাতির সর্বাঙ্গীণ মুক্তি-সাফল্যের পথে সকল বাধা দূর করা, দুর্নীতি-লুটপাট, অন্যায়-অত্যাচার, অযোগ্যতা-দায়িত্বহীনতায় পূর্ণ নেতৃবৃন্দের হেদায়েত জন্যও আল্লাহর দরবারে দোয়া করেন।
চট্টগ্রাম প্রতিনিধি জানান, রমজানের প্রথম জুম্মা নামাজে নগরীর আন্দরকিল্লা শাহি জামে মসজিদে হাজারো মুসল্লি অংশ গ্রহণ করেন। মসজিদের আঙিনা, ছাদ ছাড়িয়ে মুসল্লিদের উপস্থিতি এসে পড়ে সামনের সড়ক পর্যন্ত। নগরীর জমিয়াতুল ফালাহ মসজদি, লালদীঘি জামে মসজিদ, সিজিএস কলোনী জামে মসজিদ, মুরাদপুর মসজিদে বেলাল, অলি খাঁ জামে মসজিদ, চন্দপুরা শাহী জামে মসজিদ, বায়তুশ শরফ জামে মসজিদ, চট্টেশ্বরাই গায়েবি মসজিদ, বহদ্দারহাট জামে মসজিদসহ নগরীর কোনো মসজিদে তিল ধারণের ঠাঁই ছিলো না। নামাজের আগে রমজানের তাৎপর্য তুলে ধরে বিশেষ খুতবা দেন ইমাম ও খতিবেরা। রাজশাহী, খুলনা, রংপুর, সিলেট, দিনাজপুর, বগুড়াসহ জেলা ও বিভাগীয় শহরগুলোর প্রধান প্রধান মসজিদের জুম্মার নামাজের পর বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
